ইদানিং পারিবারিক শিক্ষা নিয়ে একটি শ্রেণী বেশ সরব। বিশেষ করে সদ্য ক্ষমতা হারানো শ্রেণী, যারা কথায় কথায় ভুল ধরছেন এর মধ্যে আছেন তারাও যারা এতদিন ভয়ে মুখ খুলতেও শাহস করত না তারাও, বিশেষ করে কিছু শিক্ষকের চেয়ারে বসা কুশিক্ষকদের নিয়ে এদের বেশ মুখ খুলতে দেখা যাচ্ছে। লক্ষনীয় ব্যাপার হল- যে এলাকার ঘটনা সে এলাকার লোক খুশি হলেও খুশি হতে পারছে না কিছু ফেসবুক জনতা, আমার দৃষ্টিতে তারা মূলত আফসোস কাতর ইস্যু পাগলা মানুষ।
এসব লোকেরা হাসান মাহমুদের বেয়াদিব বক্তিতায় খুব উপভোগ করত, বাংলার ফাটাকেস্ট খ্যাত কাদের সাহের তুচ্ছ তাচ্ছিল্যমূলক রসালো কথায় আনন্দে মুখরিত হত, আর নেত্রী যখন আরেক নেত্রীর সন্তানকে কুলাঙ্গার বলে জসম্মুখে গালি দিত তখন খুবই আনন্দময় ছিল সে দিনগুলি তাদের কাছে, আর নোবেল বিজীয় ইউনুস সাহেবকে গালি দেয়াতো ছিল সুখের, আবার মাহি’র শর্ত (কেও গর্ত পড়িয়েন না) খোজা মুরাদের মুখের ভাষার কথা না হয় বাদই দিলাম, তখন এতসব সুশিল খুজে পাওয়া যায় নাই কোথাও।
আচ্ছা! সব শিক্ষা কী পরিবার দিতে পারে? কিছু শিক্ষা দেয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, কিছু শিক্ষা দেয় সমাজ, আর কিছু শিক্ষা দেয় পরিবেশ। আপনি বিগত ১৫বছর ধরে কোনরূপ ভিত্তিছাড়া দাঁড়ি টুপিওয়ালাদের রাজাকার, তুইতুকারি শেখালেন প্রকাশ্যে সেসময় কোথায় ছিলেন ভাই? সেসময় তো বলেন নাই এই পরিবর্তন কী চেয়েছিলাম আমরা। ১/১১ সরকারের পর তো পরিবর্তন হয়েছিল। কত শিক্ষককে তুলে নিয়ে ডান্ডা বেড়ি দিয়ে কোর্টে নিয়েছে, কত ঈমামকে পিটিয়ে রক্তাক্ত করেছেন তখন কোথায় ছিলেন? তখন আপনারা ইনজয় করেছেন, আনন্দ করেছে। কিন্তু সাধুজন- আপনারা কিন্তু এর আনন্দের মাঝে একটা সামাজিক শিক্ষা দিয়েছেন সমাজকে, যে বাপু ভিন্নমত তাই বেয়াদবি করো, পিটাপিটি করো, গালি দাও আর যাই করো না কেন কোন সমস্যা নাই ক্ষমতা আমাদের, সর্বকালের সেরা আমরাই ইজারা নিয়েছি দেশকে। আর সে শিক্ষার ফল সামান্য পাঁকা শুরু করেছে, পাঁকবে আরো ধৈর্য্য ধরেন।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পবিত্র চেয়ারে বসা শিক্ষকেরাও কম যায় নাই। তারা যাস্ট একটু সুদৃষ্টির আসায় ক্লাসেই জয় বাংলা জয় বঙ্গ বন্ধু স্লোগান দিয়েছেন, মুজিব সাহের মুর্তিতে সালাম করতে বাধ্যে করেছেন সেটি একটা মুসলিম জ্ঞানসম্পন্ন সন্তানের জন্য কতটা কষ্টের ছিল ভেবে দেখেছেন কী একবারও? কোন কোন শিক্ষকতো কৌশলে ক্লাসেই গালি দিত, আরে রাজাকারের দল দেশটা ধ্বংশ করল, তাদের লাথি দিয়ে বের করে দিতে হবে দেশ থেকে, তাদের ছেলে মেয়েরা এদেশে থাকে কোন লজ্জায়! ইত্যাদি কথোপকথোন দিয়ে আঘাত করত আর ভদ্র নম্র নামাজি ছেলেকে ইজ্ঞিত দিত জঙ্গী বলে কখনও বা প্রকাশ্যেই তখন আপনাদের কোথাও দেখা যায়নি বাপু। তো শিক্ষক সমাজ আপনারা কিন্তু শিখিয়েছেন কীভাবে গালি দিতে হয়। আর মারামারির ব্যাপারটাও আপনারাই শিখিয়েছেন এক শিক্ষক আরেক শিক্ষকের গায়ে হাত তুলে, গালাগাল দিয়ে। এখন একটু ভোগ করছেন তাতে এতটা অস্থির হওয়ার কী আছে, কী শেখালেন এতদিন একটু পরীক্ষা করে দেখবেন না।
আর আপনারা অনেকেই পারিবাকি শিক্ষা নিয়ে বেশ সরব। বাপু সত্যকে সত্য, ন্যায়কে ন্যায় বলার শিক্ষাই আপনাদের নাই বা আপনার পরিবার দিতে পারে নাই আপনাদের আপনারা কীভাবে আরেক জনের সন্তানের পারিবারিক শিক্ষা নিয়ে কথা বলেন? কথা বললে যে আপনার বাবা মায়ের উপরও পরছে সেটি খেয়াল করছেন কী?
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে আগস্ট, ২০২৪ সকাল ১০:১৪