somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমাদের বণিকবৃত্তি ও হিংসার রাজনীতি

০৯ ই মার্চ, ২০১০ সকাল ৮:৪১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

অবস্থাদৃষ্টে মনে হয় হিংসার রাজনীতিই শক্তিশালী। অন্যের বিরুদ্ধে কুৎসা, নিন্দা কিংবা অযৌক্তিক আক্রমণত্মক বক্তব্য ছাড়াই যেন কোনো দলের রাজনৈতিক এজেন্ডা নেই। যেসব বিষয় রাজনীতির মৌলিক বিষয় হয়ে উঠার কথা ছিল সেসব বিষয় সবসময়ই আস্তকুড়ে নিক্ষিপ্ত হয়।
১/১১-এর পর অনেকের ধারণা ছিল, রাজনীতিবিদদের একটু হলেও কাণ্ডজ্ঞান খুলবে। কিন্তু ১/১১-এর হুতাদের অতিউৎসাহ তাদেরকে খলনায়কের প্ররিণত করেছে। ফলে যেসব নষ্ট রাজনীতিবদরা তটস্থ ছিলেন নিজেদের অপরাধবোধে তারা এখন আরো ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেছেন। তারা সংসদের ভেতরে-বাইরে সমানভাবেই সক্রিয়। প্রবীণ সাংবাদিক ফয়েজ আহমদ এক টিভি চ্যানেলের টকশোতে সুরঞ্জত সেনকে বলেছিলেন, ও ঐটা, আওয়ামী লীগের লাইটটাল? সবাই মুখটিপে হাসলেও সাহসী এই প্রাজ্ঞ সাংবাদিক বয়সের ভারে খানিকটা অচল থেকেও রাজনীতিবিদের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য সনাক্ত করতে ভুল করেননি। একইভাবে সাকা চৌধুরী গং-এর মুখবাজী পলিটিক্স সর্বজস্বীকৃত।
আমরা এসব চরিত্র থেকে বেরিয়ে আসতে পারিনি। এখানেই আমাদের জাতীয় দৈন্যতা। কাউকে এককভাবে দোষ দিয়ে কোনো লাভ নেই। সময়ের চাকা ঘুরবে কিন্তু চরিত্র পাল্টাবে না।
এমতাবস্থায় আমাদের কীইবা করণীয় হতে পারে। কোনো দেবদূত এসে কি আমাদের বদলে দেবে? আমরা নিজের দিকে তাকাতে না পারলে কোনো কিছুই বদলাবে না। হ্যা, আমরা সুন্দর সুন্দর শ্লোগান রপ্ত করেছি, 'ডিজিটাল বাংলাদেশ', 'বদলে দাও বদলে দাও' ইত্যাদি। এসব শ্লোগানের ভেতরে কি? ভেতরে এর কোনো উল্লেখযোগ্য চরিত্র আছে বলে কি আমরা মনে করি? যদি উল্লেখযোগ্য কোনো মরতবা লুকিয়ে থাকে তা কি আমরা সনাক্ত করতে পারছি? অবশ্যই না। আমরা বাইরের চকচকে প্রিন্ট কিংবা মাইক্রফোনে ধ্বনিত শ্লোগানটাকেই মৌলিক ধরে নিয়েছি।
যে রাষ্ট্রটিকে কর্পোরেট মার্কেট নিয়ন্ত্রণ করে, কর্পোরেট বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণ করে পুজিবাদী বিশ্ব তথা দেশীয় এজেন্ট, ব্যুরোরা তাদের খলচরিত্র সম্বন্ধে আমরা ওয়াকিবহাল নই। এই যে পুজিবাদ, কর্পোরেট ইত্যাদি শব্দ এগুলোকে কেবল গালভরা শব্দ হিসেবেই ধরে নিয়েছি। এর জন্য এর মূলচরিত্রও অনেকটা আমাদের নিজেদের মতো হয়ে উঠেছে। আসলে হয়ে উঠে নাই - আমরা এই চরিত্রের ভেতর আবর্ত হচ্ছি যার দরুণ আয়নার সামনে নিজেকে চিনতে ভুল হয়।
একটি মোবাইল ফোন ব্যবহারের পূর্বে আমরা কখনই ভেবে দেখেছি কি এটি আমাদের ব্যক্তিজীবনে কতটা প্রয়োজন? যখন এই ফোনগুলো ছিল না তখন কি আমাদের জীবন একেবারেই অচল হয়ে গিয়েছিল?
আমাদের শ্রেণী চরিত্রে অপ্রয়োজনকে প্রয়োজন করে তুলেছে এই দানব-বণিকরা। এই দানবীয় বানিজ্যনীতি থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে না পারলে রাষ্ট্র তথা অন্যের ভালোমন্দ বুঝতে সক্ষম হবো না কোনোদিন। কথাটা দীর্ঘায়িত না করে সংক্ষিপ্তভাবে বলতে চাই, রাষ্ট্রের কর্ণধাররা যে স্রোতের ভেতর রাজনীতি চর্চা করছেন তারা কখনই রাষ্ট্রনীতি ভৌগলিকভাবে ভাবছেন না, তারা সব কিছু বণিকচর্চার ভেতর দিয়ে রাজনীতি চর্চা করছেন। এখানেই আমাদের দুর্ভাগ্য।
এই ব্লগের রিডারদের মানসিকতা থেকেও অনেক কিছু অনুমান করা যায়। এখানে যদি কোনো রাজনৈতিক দলের সমালোচনা করা দেখা যাচ্ছে, বক্তার বক্তব্যের যৌক্তিক বিষয়কে উপেক্ষা করে মাসুলবৃত্তি নিয়ে তারা মন্তব্য নিয়ে আসেন। ব্লক করো, মাইনাস দেও ইত্যাদিই সর্বোচ্চ ভাষা। একটি ন্যাশনকে বুঝতে হলে তার এই নর্মগুলোকে অস্বীকার করার উপায় নেই।
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মৌলবাদ: ইতিহাসের সবচেয়ে ব্যর্থ প্রযুক্তি

লিখেছেন মহিউদ্দিন হায়দার, ১২ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৫১




মজার বিষয়—

আজকের মৌলবাদীরা রোকেয়া বেগমকে মুরতাদ ঘোষণা করে বুক ফুলিয়ে হাঁটে, অথচ নিজেদের অস্তিত্ব টিকেই আছে যাদের ঘৃণা করে— সেই “কাফেরদের” বিজ্ঞান আর প্রযুক্তিতে। ইতিহাস পড়লে এদের বুকফুলা হাওয়া বের... ...বাকিটুকু পড়ুন

জাতী এখন পুরোপুরিভাবে নেতৃত্বহীন ও বিশৃংখল।

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১২ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:১৩



শেরে বাংলার নিজস্ব দল ছিলো, কৃষক প্রজা পার্টি; তিনি সেই দলের নেতা ছিলেন। একই সময়ে, তিনি পুরো বাংগালী জাতির নেতা ছিলেন, সব দলের মানুষ উনাকে সন্মান করতেন। মওলানাও জাতীয়... ...বাকিটুকু পড়ুন

সাময়িক পোস্ট

লিখেছেন আরোগ্য, ১২ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:১৬



ওসমান হাদী অন্যতম জুলাই যোদ্ধা, ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র, স্পষ্টবাদী কণ্ঠ, প্রতিবাদী চেতনা লালনকারী, ঢাকা ৮ নং আসনের নির্বাচন প্রার্থী আজ জুমুআর নামাজ পড়ে মসজিদ থেকে বের হওয়ার পর গুলিবিদ্ধ হয়েছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদিকে গুলি করলো কে?

লিখেছেন নতুন নকিব, ১২ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১১:২৬

হাদিকে গুলি করলো কে?

ছবি অন্তর্জাল থেকে নেওয়া।

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা ৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী রাজপথের অকুতোভয় লড়াকু সৈনিক ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদিকে গুলিবিদ্ধ... ...বাকিটুকু পড়ুন

মানুষের জীবনের চেয়ে তরকারিতে আলুর সংখ্যা গণনা বেশি জরুরি !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:১৭


বিজিবির সাবেক মহাপরিচালক জাহাঙ্গীর আলম স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে দেশবাসী একটা নতুন শব্দ শিখেছে: রুট ভেজিটেবল ডিপ্লোম্যাসি। জুলাই আন্দোলনের পর যখন সবাই ভাবছিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×