somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

হাদিসঃ শোয়ার সময় দোয়া দরুদ, দান ও সদকা সর্ম্পকে রাসুল সাঃ এর বানী

২৯ শে আগস্ট, ২০১০ বিকাল ৪:২৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
মহানবী (সাঃ) এর বানীঃ শোয়ার সময় তাকবীর ও তাসবীহ পাঠ করা.....ঘুমের পূর্বে সূরা ইখলাস, ফালাক ও নাস পড়া...অযূ অবস্থায় শয্যা গ্রহণ করা:=========================================
শোয়ার সময় তাকবীর ও তাসবীহ পাঠ করাঃ
আলী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, ফাতেমা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট একটি চাকর চাইলে তিনি বললেন: ‘আমি কি তোমাদের দু’জনকে এমন জিনিস বলে দেব না, যা তোমাদের জন্য চাকরের চেয়েও উত্তম? তোমরা যখন বিছানায় শুতে যাবে অথবা শয্যা গ্রহণ করবে, তখন ৩৪ বার আল্লাহু আকবার, ৩৩ বার সুবহান আল্লাহ্ এবং ৩৩ বার আলহামদুলিল্লাহ্ পড়বে। এটা তোমাদের জন্য চাকরের চেয়েও উত্তম।

[বুখারী: ৬৩১৮, মুসলিম: ৬৯১৫]
ঘুমের পূর্বে সূরা ইখলাস, ফালাক ও নাস পড়াঃ
আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহা থেকে বর্ণিত, “নবী কারীম সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রতি রাতে শয্যা গ্রহণের সময় তালুদ্বয় একত্রিত করে তাতে ‘ক্বুল হুওয়াল্লাহু আহাদ’ (সূরা আল-ইখলাস) এবং ‘ক্বুল ‘আউযুবি রব্বিল ফালাক্ব’ (সূরা আল-ফালাক) এবং ‘ক্বুল আ’উযু বিরব্বিন্ নাস’ (সূরা আন-নাস) পড়ে ফুঁ দিতেন। অতঃপর হাতদ্বয় দ্বারা শরীরের যতদূর পর্যন্ত বুলানো সম্ভব হত, ততদূর পর্যন্ত বুলিয়ে নিতেন। স্বীয় মাথা, চেহারা ও শরীরের সামনের দিক থেকে আরম্ভ করতেন। এভাবে তিনি তিন বার করতেন।” [বুখারী: ৫০১৭]

অযূ অবস্থায় শয্যা গ্রহণ করাঃ
নবী কারীম সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বারা ইবনে ‘আযেব রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুকে বলেন: “যখন তুমি তোমার শয্যা গ্রহণের ইচ্ছা করবে, তখন সালাতের ন্যায় অযূ করে ডান কাত হয়ে শয়ন করবে।”

[বুখারী: ৬৩১১, মুসলিম: ৬৮৮২]
=========================================

দান-সদকা সম্পর্কে:
১৮৫. রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন- সুমহান আল্লাহ্ বলেছেন, “হে আদম সন্তান! আল্লাহর জন্য তুমি ব্যয় কর, তোমার জন্য ব্যয় করা হবে। কারণ আল্লাহর দণি হাত পরিপূর্ণ ও দানশীল, দিনরাতের দান ওর কিছুই হ্রাস করতে পারে না।”
দারুকুতনী এ হাদীসটি হযরত আবূ হুরায়রা (রা) থেকে উদ্ধৃত করেছেন।

১৮৬. রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন- জিবরাঈল (আঃ) আমাকে বলেছেন, “মোবারক ও মহান আল্লাহ বলেছেন, “নিশ্চয়ই এটা এরূপ একটি ধর্ম, যা আমি আমার নিজের জন্য পছন্দ করি, আর কিছু কখনও এর শুদ্ধি করতে পারবে না। এতএব যত দিন তোমরা ওর সাথে সংশ্লিষ্ট থাক ততদিন ওকে দানশীলতা ও সচ্চরিত্রতা দ্বারা সম্মান দাও।”
ইবনু আসাকির এ হাদীসটি হযরত জাবির (রা) থেকে সংগ্রহ করেছেন।

১৮৭. রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন- সুমহান আল্লাহ বলেছেন, “আমার উদ্দেশ্যে ব্যয়কারী আমাকে ঋণ দিয়ে থাকে। আর নামায আদায়কারী আমার সাথে গোপনে বাক্যালাপ করে।”
এ হাদীসটি দায়লামী সংগ্রহ করেছেন।

১৮৮. রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন- সুমহান আল্লাহ্ বলেছেন, “হে আদম সন্তান! তোমার জন্য প্রয়োজনের অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় করে ফেলা কল্যানকর। আর তা সঞ্চিত রাখা তোমার জন্য অমঙ্গলজনক। তোমরা জীবিকার সমপরিমাণ (তোমার হাতে) রাখার জন্য তুমি নিন্দনীয় নও। নিজ পরিবারের লোকজন থেকে ব্যয় করা শুরু কর। নিচের হাত থেকে উপরের হাত উত্তম।”
বায়হাকী এ হাদিসটি হযরত আবূ উমামা (রা) থেকে সংগ্রহ করেছেন।

১৮৯. রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন- মহান ও পরাক্রান্ত আল্লাহ বলেছেন, “তুমি আল্লাহর পথে ব্যয় কর, তোমার জন্য ব্যয় করা হবে।”
বুখারী ও মুসলিম এ হাদীসটি হযরত আবূ হুরায়রা (রা) থেকে সংগ্রহ করেছেন।

১৯০. রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন- অতঃপর হে মানব সম্প্রদায়! তোমরা নিজেদের জন্য আগে ভাগে কিছু পাঠাও। অতঃপর তার প্রতিপালক নিশ্চয় তাকে বলবেন, “তার কোন মধ্যস্থ ব্যক্তি থাকবে না, যে তার সম্মুখে মধ্যস্থতা করবে। তোমার কাছে কি কোন রাসূল আসে নি, যে তোমার কাছে আমার বার্তা পৌছে দিয়েছে? আর তোমাকে আমি কি কোন সম্পদ দেইনি এবং তোমার উপর অনুগ্রহ করিনি? অতঃপর তুমি তোমার নিজের জন্য কি অগ্রিম পাঠিয়েছি? তখন সে নিজের ডানে ও বামে তাকাতে থাকবে, কিন্তু কিছুই দেখতে পাবে না। অতঃপর সে তার সামনের দিকে তাকাবে কিন্তু তখন সে দোযখ ছাড়া আর কিছুই দেখতে পাবে না। অতএব যে পারে সে যেন নিজেকে দোযখের আগুন থেকে রক্ষা করে, যদিও তা এক টুকরো খেজুরের বিনিময়ে হোক, সে যেন নিশ্চয় তা করে, আর যার কাছে তাও নেই, সে মধুর কথা ধারা তা করুক। কারণ তা দিয়েও পূণ্যের প্রতিদান দশগুন থেকে সাতশ’ গুণ পর্যন্ত দেয়া হবে। আর আল্লাহর রাসূলের প্রতি শান্তি বর্ষিত হোক।”
হান্নাদ এ হাদীসটি হযরত আবূ সালমার ইবনে আবদুর ইবনে আওফ (রা) থেকে সংগ্রহ করেছেন।

১৯১. রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন- সুমহান আল্লাহ্ বলেছেন, “দানকারী আমার (বন্ধু) এবং আমি তার (বন্ধু)”।
এ হাদীসটি দায়লামী সংগ্রহ করেছেন।

১৯২. রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন- সুমহান আল্লাহ্ নিজে হাতে চিরস্থায়ী জান্নাত ‘আদন’ সৃষ্টি করলেন। তাতে এমন বস্তু সৃষ্টি করলেন, যা কোন চোখ দেখেনি এবং কোন মানুষের অন্তরে যার কল্পনা জাগ্রত হয়নি। অতঃপর তিনি ওটাকে বললেন, “কথা বল” অনন্তর তা বলল, “নিশ্চয়ই বিশ্বাসীগণ সফলকাম হয়েছে।” অনন্তর তিনি বললেন, “তোমার নিকটে কোন বখীল (কৃপণ) আমার প্রতিবেশী হতে পারবে না।”
তিবরানী এ হাদীসটি হযরত ইবনে আব্বাস (রা) থেকে সংগ্রহ করেছেন।

১৯৩. রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন- নিশ্চয় আল্লাহ্ চির নিবাস বেহেশতে নিজ হাতে এক এক বৃক্ষ রোপন করলেন এবং তা সুসজ্জিত করলেন এবং ফেরেশতাদের নির্দেশ দিলেন। সে মতে তারা তাতে নির্ঝরণী প্রবাহিত করল এবং গাছে ঝুলন্ত অবস্থায় ফলাদী ধরল। অতঃপর তিনি (আল্লাহ) তার উজ্জ্বল্য ও সৌন্দর্য্যের প্রতি তাকিয়ে বললেন, “আমার মর্যাদা ও আরশের উপরে প্রতিষ্ঠিত আমার উচ্চ অবস্থানের কসম! তোমার নিকটে কোন বখীল(কৃপণ) লোক আমার প্রতিবেশী হতে পারবে না।”
ইবনু নাজ্জার এ হাদীসটি হযরত আব্বাস (রা) থেকে সংগ্রহ করেছেন।

১৯৪. রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন- জান্নাত বলল, “হে আমার প্রতিপালক! আমাকে তুমি সৌন্দর্যমন্ডিত করেছ এবং আমার ভিত্তিস্তম্ভ গুলো সুন্দর করেছ।” অতঃপর আল্লাহ্ তার প্রতি প্রত্যাদেশ পাঠালেন, “আমি তোমার ভিত্তিসমূহকে হাসান, হুসাইন ও পূণ্যবান আনসারদের দ্বারা সুশোভিত করেছি। আমার ইযযত ও মহত্বের কসম! তোমার মধ্যে কোন রিয়াকার ও বখীল প্রবেশ করবে না।”

আবূ মূসা মুদায়নী এ হাদীসটি হযরত আব্বাস ইবনে বুযাই আযদীরী (রা) থেকে সংগ্রহ করেছেন।


সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে আগস্ট, ২০১০ বিকাল ৪:২৯
৪টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভারতে পচা রুটি ভাত ও কাঠের গুঁড়ায় তৈরি হচ্ছে মসলা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৪ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৩০

আমরা প্রচুর পরিমানে ভারতীয় রান্নার মশলা কিনি এবং নিত্য রান্নায় যোগ করে খাই । কিন্তু আমাদের জানা নেই কি অখাদ্য কুখাদ্য খাচ্ছি দিন কে দিন । এর কিছু বিবরন নিচে... ...বাকিটুকু পড়ুন

One lost eye will open thousands of Muslims' blind eyes

লিখেছেন জ্যাক স্মিথ, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ২:২৭



শিরোনাম'টি একজনের কমেন্ট থেকে ধার করা। Mar Mari Emmanuel যিনি অস্ট্রেলীয়ার নিউ সাউথ ওয়েলসের একটি চার্চের একজন যাজক; খুবই নিরীহ এবং গোবেচারা টাইপের বয়স্ক এই লোকটি যে... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাফসান দ্য ছোট ভাই এর এক আউডি গাড়ি আপনাদের হৃদয় অশান্ত কইরা ফেলল!

লিখেছেন ব্রাত্য রাইসু, ১৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৫২

রাফসান দ্য ছোট ভাইয়ের প্রতি আপনাদের ঈর্ষার কোনো কারণ দেখি না।

আউডি গাড়ি কিনছে ইনফ্লুয়েন্সার হইয়া, তো তার বাবা ঋণখেলাপী কিনা এই লইয়া এখন আপনারা নিজেদের অক্ষমতারে জাস্টিফাই করতে নামছেন!

এই... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঁচতে হয় নিজের কাছে!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:২৮

চলুন নৈতিকতা বিষয়ক দুইটি সমস্যা তুলে ধরি। দুটিই গল্প। প্রথম গল্পটি দি প্যারবল অব দ্যা সাধু।  লিখেছেন বোয়েন ম্যাককয়। এটি প্রথম প্রকাশিত হয় হার্ভার্ড বিজনেস রিভিউ জার্নালের ১৯৮৩ সালের সেপ্টেম্বর-অক্টোবর সংখ্যায়। গল্পটা সংক্ষেপে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার অন্যরকম আমি এবং কিছু মুক্তকথা

লিখেছেন জানা, ১৫ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৬



২০১৯, ডিসেম্বরের একটি লেখা যা ড্রাফটে ছিল এতদিন। নানা কারণে যা পোস্ট করা হয়নি। আজ হঠাৎ চোখে পড়ায় প্রকাশ করতে ইচ্ছে হলো। আমার এই ভিডিওটাও ঐ বছরের মাঝামাঝি সময়ের।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×