somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সন্তানের সাথে মাতা-পিতার আচরণ (মানবতা বিরোধী কার্যকলাপ হতে মাকে অবশ্যই বিরত থাকতে হবে)

০২ রা নভেম্বর, ২০১১ বিকাল ৫:৪৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ইসলামই একমাত্র ধর্ম যা সঠিক ও রুচিশীল পদ্ধতিতে সন্তানদের লালন-পালন করার শিক্ষা দেয়। সুতারাং আমাদের সন্তানদের লালন পালনও ঐ সোনালী পদ্ধতিতেই করা বাঞ্চনীয়। সন্তান প্রতিপালনে সবচেয়ে গুরত্বপূর্ন হলো মাতা-পিতার। যদি মাতা-পিতা আন্তরিকভাবে কামনা করেন ও দোয়া করেন, তাহলে তাদের সন্তানও সুসন্তান হবে। এটাতো বাস্তব সত্য যে, সন্তানদের প্রাথমিক বিদ্যালয় হল মায়ের কোল।

শিশুদের অনর্থক জিদ্দিপনার কারনে অথবা কথা না মানার কারনে কিংবা সারাক্ষণ বিরক্ত করার কারনে মায়ের প্রচন্ড ক্রোধের উদ্রেক হয়। তখন মায়ের মুখ দ্বারা এমন ভুল, ক্ষতিকারক ও ধ্বংসাত্মক বাক্য নিসৃত হয় , যা শিশুর ভবিষ্যত জীবনের উপর কুপ্রভাব পড়ে। যেমনঃ

১. “তুই জন্ম নেয়ার সময় মরে গেলেই ভাল হত।”
২. “কতই না ভাল হত, যদি তুই আমার সন্তান না হতি।”
৩. “তোর ছেলে-মেয়েরা ও যেন তোরে এমন জ্বালায়।”
৪. “তোরে কলেরা ধরে না কেন?”
৫. আজরাঈল তোকে নেই না কেন? ইত্যাদি ইত্যাদি।

এই বদ দু’আ সম্বলিত বাক্যগুলো ছাড়াও মায়ের ভূল সিদ্ধান্ত হল, ক্রোধ, মাত্রাতিরিক্ত শাস্তি দেয়া। যেমনঃ

১. জামা-কাপড় খুলে বিবস্ত্র অবস্থায় ঘরের বাইরে দাড় করিয়ে রাখা,
২. সারাদিন কিছু খেতে না দেয়া,
৩. বুভু অবস্থায় বাথরুমে বেঁধে রাখা, ষ্টোর রুমে বেঁধে রাখা ইত্যাদি।
৪. প্রহার করে আধমরা করে ফেলা,
৫. চেহেরা মুখাবয়বে অথবা শরীরের কোন স্থানে স্বজোরে এমন থাপ্পড় মারা যদ্ধারা দাগ প্রকাশ পেয়ে যায়।
৬. পাতলা ছুরি, চাকু বা কোন স্কেল দ্বারা এমন ভাবে প্রহার করা, যার কারনে রক্ত জমে যায়, ইত্যাদি ইত্যাদি।

মানবতা বিরোধী এহেন কার্যকলাপ হতে মাকে অবশ্যই বিরত থাকতে হবে। যদি শিশুর জিদ্দিপনা বা এক গুয়েমির কারনে মাথায় মাত্রাতিরিক্ত ক্রোধ চেপে বসে, তাহলে নীরবতা পালন করুন। কেননা, নীরবতা ও চুপ থাকা ক্রোধাগ্নি প্রশমনের জন্য উত্তম চিকিৎসা। আর বিশ্ব মানবতার মহান চিকিৎসক, মহান মনোবিজ্ঞানী প্রিয় নবীজী(সাঃ) ইরশাদ করেন, “যখন তোমাদের কেউ রাগাম্বিত হয়, সে যেন চুপ থাকে। (মুসনাদে আহমদ)

নবী করিম (সাঃ) যদি কোন সাহাবীকে নিজ সন্তানে প্রতি বে-রহম, দয়ামায়াহীন দেখতেন, তাহলে তাকে সাবধান করতেন। হযরত আয়েশা (রাঃ) বলেন, একদা এক গ্রাম্য লোক নবীজীর (সাঃ) দরবারে উপস্থিত হল এবং বলল, আপনারা আদর সোহাগচ্ছলে নিজ সন্তানদের চুম্বন করেন? আমরা তো চুম্বন করি না। তখন মহানবী (সাঃ) ইরশাদ করেন, “যদি আল্লাহ তায়ালা তোমাদের অন্তর থেকে দয়া-মায়া দুর করে দেন তাহলে আমি কি আর করতে পারি?”

তাই প্রতিটি আদর্শ মায়ের কর্তব্য এই যে, সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলতে-ফিরতে, উঠতে-বসতে, কথা-বার্তায় সন্তানদের সাথে দুর্ব্যবহার, মারপিট, কুশাষন ও অশালীন আচরণ না করে বরং তাদেরকে আল্লাহ প্রদত্ত স্নেহ-মায়া, আদর সোহাগ দিয়ে ইসলামী অনুশাসনের মাধ্যমে আদর্শ সন্তান হিসেবে গড়ে তোলার চেষ্টা করবেন।

শিশুদের আনন্দিত রাখার ফযিলতঃ

শিশুদের আনন্দ দেয়ার ফযিলত সম্বলিত একটি হাদিস কানযুল উম্মাল গ্রন্থে বর্ণিত হয়েছে।
মহানবী (সাঃ) ইরশাদ করেন- “জান্নাতে একটি গৃহ রয়েছে, যাকে দারুল ফারহ (আনন্দের ঘর) বলা হয়। তাতে ঐ সমস্ত লোকেরা প্রবেশ করবে, যারা নিজ সন্তানদের সন্তুষ্ট রাখবে।

উল্লেখিত হাদিসে রাসুলুল্লাহ (সাঃ) নিজ সন্তানদের সন্তুষ্ট রাখার প্রতিদান স্বরুপ জান্নাতের শুভ সংবাদ দান করেছেন। এতে জানা গেল যে, সন্তানদের সন্তুষ্ট রাখা আল্লাহ তায়ালা সন্তুষ্টির কারন।

শিশুদের সন্তুষ্ট রাখার কয়েকটি পন্থা রয়েছে, যেমনঃ

১. শিশুরা যখন খেলা-ধূলা করবে, তখন তাদের সাথে খেলা-ধুলায় শরীক হওয়া।
২. শিশুদের ছোট ছোট বৈধ আবদার ও দাবীসমুহ পূর্ন করা।
৩. শিশুদের সাথে সুন্দর ব্যবহার ও হাসিমুখে কথা বলা।
৪. শিশুদেরকে এমন এমন কেচ্ছা-কাহিনী ও কৌতুক শুনানো যাতে হেসে লুটোপুটো খায়। কিন্তু খেয়াল রাখতে হবে যে, হাসি কৌতুক যেন মিথ্যায় ভরা না হয় এবং এর দ্বারা কারো অপমান উদ্দেশ্য না হয়।
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা নভেম্বর, ২০১১ সন্ধ্যা ৬:০৯
৫টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্মৃতিপুড়া ঘরে

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৩০



বাড়ির সামনে লম্বা বাঁধ
তবু চোখের কান্না থামেনি
বালিশ ভেজা নীরব রাত;
ওরা বুঝতেই পারেনি-
মা গো তোমার কথা, মনে পরেছে
এই কাঠফাটা বৈশাখে।

দাবদাহে পুড়ে যাচ্ছে
মা গো এই সময়ের ঘরে
তালপাতার পাখাটাও আজ ভিন্নসুর
খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯




মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজীব নূর কোথায়?

লিখেছেন অধীতি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪

আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×