somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মুভি রিভিও- 'In Time' (অদ্ভুত একটা ছবি)

১৫ ই জুন, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৩৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



গতকাল রাত জেগে বসে বসে একটা ছবি দেখলাম। ছবির নাম In Time।
একেবারে শুরু থেকে দেখেছি কিনা বলতে পারবো না। তবে বোধহয় প্রায় শুরু থেকেই দেখেছি। দৃশ্যটা বর্ণনা করি। Will Salas গল্পের নায়ক একটা বারে ঢুকে একজনকে বলে আপনি এখান থেকে পালান, কয়েক জন আপনাকে মেরে ফেলার পরিকল্পনা করছে। কিন্তু লোকটা প্রায় অর্ধ মাতাল অবস্থায় ছিলো। এ কথায় সে তেমন বিচলিত হলো না। এর প্রায় সাথে সাথে কয়েকজন পিস্তল নিয়ে বারে ঢুকে পড়ে। লোকটি মারতে উদ্যত হলে, লোকটি কয়েক মুহুর্ত সময় চায়। আর যখন সে টয়লেটে যায় এই ফাঁকে Will Salas তাকে নিয়ে পালায়।

মূল গল্পটি লিখেছেন Andrew Nicol, পরিচালক তিনিই। এক অদ্ভুত বিষয় নিয়ে লেখক বা পরিচালক গল্প ফেঁদেছেন। ধরুন, এখন আমাদের বিনিময়ের মাধ্যম কি? অর্থ। কিন্তু যদি বিনিময়ের মাধ্যম আমাদের জীবনের সময় হতো তবে কি হতো?

ছবিতে দেখা যাচ্ছে প্রতিটি মানুষের বা হাতে কদিনের সময় আছে তা প্রদর্শিত হচ্ছে। ধরেন আপনার আয়ু ২৫ বছর। প্রতিটি সেকেন্ড আপনার থেকে ক্ষয়ে যাচ্ছে। এটা আপনি হাতের দিকে তাকালেই বুঝতে পারবেন।

এবার আসুন বিনিময়ের ব্যাপার। আপনি হয়তো রুটি কিনবেন। কি দিয়ে কিনবেন? আপনার হাতের সময় দিয়ে কিনতে হবে। একটা Time readable মেশিনে ৫ মিনিট দিলেন বিনিময়ে পেয়ে গেলেন রুটি। একটা কল করতে হবে? আপনাকে জমা দিতে হবে মাত্র ১ মিনিট। গাড়িতে করে কোথায়ও যাচ্ছেন, জায়গার গুরুত্বের উপর আপনাকে জমা দিতে হবে দিন, সপ্তাহ, মাস। আপনি হোটেলে থাকবেন, আপনার কক্ষের গুরুত্বের উপর নির্ভর করছে কত দিন জমা দিতে হবে। একটা দামী স্যূট এর জন্য আপনাকে এক বছর সময় ও ব্যয় করতে হতে পারে। অর্থাৎ সব কিছুর বিনিময় হচ্ছে আয়ু দিয়ে। আরো মজার বিষয় হলো, সময় কিনতে পাওয়া যায়। আমাদের মোবাইল ফোনের ব্যালেন্স এর মতো। ব্যাংক আছে। সেটা Time Bank. যে কোনো সময়, সময় চুরি হয়ে যেতে পারে, ডাকাতি হতে পারে, তাই সময় যাতে সুরক্ষিত থাকে এর জন্য আছে Time Bank. এই ব্যাংকে আয়ু বা সময় জমা রাখলে সুদ ও পাওয়া যায়। এক কথায় অদ্ভুত একটা বিষয়। এখানে গরীব বা ধনী বিবেচনা করা হয়, কার কাছে কত সময় আছে। কারো কাছে ১০০০ বছর আছে মানে সে যথেষ্টই ধনী। তবে ইচ্ছা করলেই মানুষ মারা যেতে পারে। রোগে নয়। যেমন কেউ গুলি করলো। এতে মারা যেতে পারে। তবে কেউ যদি মারা যাওয়ার আগে তার সময় গুলো কাউকে দিতে না পারে তবে সেই সময় গুলো নষ্ট হবে। এই সময় রক্ষনাবেক্ষনের জন্য রয়েছে Timekeeper. তাকে বলা যায় প্রধান বিচারপতির মতো। সে যে কারো কে শাস্তি দিতে পারে। Timekeeper কে প্রতিটি সেকেন্ডের রক্ষণাবেক্ষন করতে হয়। এ এক হুলুস্থুল কান্ড। আমি যত দেখছিলাম ততই মুগ্ধ হচ্ছিলাম। লেখকের কি চিন্তা শক্তি!

- এক দিন সময়।

আবার ইচ্ছা করলে আপনি সহজেই অন্যকে আয়ু দিতে পারবেন। হাতের উপর হাত রেখে আয়ু বা সময় ট্রান্সফার করা যায়। একটা খেলা আছে না, পাঞ্জা খেলা, তেমনি এই খেলা জনপ্রিয়ো। যে জিতবে সে অন্যের সময় পেয়ে যাবে আর যে হারবে সে মারা যাবে সাথে সাথে। এদের কে বলে ফাইটার।

- Will Salas

সে যাই হোক। গল্পের শুরু কিন্তু যা শুরুতে বলে ছিলাম সেখান থেকে। Will Salas যাকে নিয়ে পালায় তিনি আর বেঁচে থাকতে চাননা। আত্মহত্যা করবেন বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। তাই তার থেকে সময় নিয়ে নেয়া হবে। যেন কিছুতেই সময়ের অপচয় না হয়। নায়ক তাকে বাচিয়ে নিয়ে এলেন পরের দিন সকালে লোকটি তার প্রায় ১,০০০ বছর Will Salas কে দান করে আত্মহত্যা করে, ব্রীজ থেকে পড়ে যায় নদীর মধ্যে আয়ু শেষ হওয়ার সাথে সাথে। কিন্তু এই সময় দান করা Timekeeper এর চোখে অপরাধ। এই সময় Will Salas ব্যাবহার করতে পারেন না। কেননা সে লোকটিকে Time Keeper এর লোকদের কাছ থেকে বাচিয়ে অপরাধ করেছে। এরপর চলে Will Salas কে ধরার চেষ্টা। Will Salas তার এই সময় নিয়ে কিভাবে জীবন কে সাজাবে সেই চেষ্টা। এরপর সময়ের সবচেয়ে বড় ব্যবসায়ীর মেয়ের সাথে প্রেম তাকে নিয়ে আলাদা করে বাঁচার লড়াই, সব কিছু মিলিয়ে একটা অসাধারণ ছবি।

- Sylvia Weis

ছবিটি মুক্তি পায় ২০১১ সালে। Will Salas এর ভূমিকায় অভিনয় করেছেন Justin Timberlake। নায়িকা Sylvia Weis এর ভূমিকায় অভিনয় করেছেন Amanda Seyfried। Time Keeper (Cillian Murphy) এর ভূমিকায় অভিনয় করেছেন Raymond Leon। গল্পের ধারাবাহিকতা এত দ্রুত এগুচ্ছিলো যে এদের অভিনয় শৈলী নিয়ে চিন্তা করার সময় পাইনি। দেখলে আনন্দ পাবেন এটা নিসন্দেহে বলা যায়।

- TimeKeeper.

এত কষ্ট করে মুভি রিভিউ পড়ার জন্য ধন্যবাদ।
১৩টি মন্তব্য ১৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আপনি কি বেদ, উপনিষদ, পুরাণ, ঋগ্বেদ এর তত্ত্ব বিশ্বাস করেন?

লিখেছেন শেরজা তপন, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫২


ব্লগে কেন বারবার কোরআন ও ইসলামকে টেনে আনা হয়? আর এই ধর্ম বিশ্বাসকে নিয়েই তর্ক বিতর্কে জড়িয়ে পড়ে সবাই? অন্য ধর্ম কেন ব্লগে তেমন আলোচনা হয় না? আমাদের ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

দুলে উঠে

লিখেছেন সাইফুলসাইফসাই, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:৫৬

দুলে উঠে
সাইফুল ইসলাম সাঈফ

মন খুশিতে দুলে দুলে ‍উঠে
যখনই শুনতে পাই ঈদ শীঘ্রই
আসছে সুখকর করতে দিন, মুহূর্ত
তা প্রায় সবাকে করে আনন্দিত!
নতুন রঙিন পোশাক আনে কিনে
তখন ঐশী বাণী সবাই শুনে।
যদি কারো মনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

তরে নিয়ে এ ভাবনা

লিখেছেন মৌন পাঠক, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১০:৩০

তরে নিয়ে এ ভাবনা,
এর শুরু ঠিক আজ না

সেই কৈশোরে পা দেয়ার দিন
যখন পুরো দুনিয়া রঙীন
দিকে দিকে ফোটে ফুল বসন্ত বিহীন
চেনা সব মানুষগুলো, হয়ে ওঠে অচিন
জীবনের আবর্তে, জীবন নবীন

তোকে দেখেছিলাম,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আপনি কি পথখাবার খান? তাহলে এই লেখাটি আপনার জন্য

লিখেছেন মিশু মিলন, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১০:৩৪

আগে যখন মাঝে মাঝে বিকেল-সন্ধ্যায় বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিতাম, তখন খাবার নিয়ে আমার জন্য ওরা বেশ বিড়ম্বনায় পড়ত। আমি পথখাবার খাই না। ফলে সোরওয়ার্দী উদ্যানে আড্ডা দিতে দিতে ক্ষিধে পেলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কষ্ট থেকে আত্মরক্ষা করতে চাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৯



দেহটা মনের সাথে দৌড়ে পারে না
মন উড়ে চলে যায় বহু দূর স্থানে
ক্লান্ত দেহ পড়ে থাকে বিশ্রামে
একরাশ হতাশায় মন দেহে ফিরে।

সময়ের চাকা ঘুরতে থাকে অবিরত
কি অর্জন হলো হিসাব... ...বাকিটুকু পড়ুন

×