somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

জিনের বাদশা গনিমতের মাল - ছাগফার্মার সিনেম্যাটিক বলোগিং- ইউনিভার্স ১৮+ না

০৯ ই জুন, ২০২১ রাত ১২:৫৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



ছাগফার্মার চরিত্রটি আসবে, তার কান্ড কীর্তি কলাপ নিয়ে কিছু মজার অদ্ভুতুড়ে গল্প আসবে , এই গল্পগুলো "বাউন্টি হান্টার " সিরিজের অংশ নয়, তবে ছাগফার্মার চরিত্রটি একই. "বাউন্টি হান্টার " সিরিজের প্রিকুয়েল বলা যায় More Info

ছাগফার্মার সাহেবের অপ্রকাশিত ডায়েরির পাতা থেকে :


আমি নবম শ্রেণীতে; হুজুরে মামুনুল হুজুর আমাদের স্পোর্ট টিচার।
পুড়ালেখা তো কাঁচকলা, কলম হাতে বসিয়ে রাখে গাছতলা। স্কুলে ইন্সপেক্টর আসার আগে কোস্চেন দিয়ে দে যাতে এর সামনে ম্যান সম্মান থাকে। পরীক্ষার আগেও একই অবস্থা। কোস্চেন ফাঁস না হলে ওই তল্লাটে ৪বারের মেট্রিক পাস্ হত না কারো।
হাটহাজারী সকুলের সাথে আমরা ছোহবৎ ম্যাচ খেলছি, হুজুর তারিখ কনফার্ম কর্ম রার চিঠিখানা আমার হাতে দিয়ে বললেন ঐ স্কুলের হেড-হুজুরসাহেবকে দিয়ে আসতে।
পিনাকীকে সাথে নিলাম। বাসে আসতে যেতে ঘণ্টা দুয়েক লাগে। আমরা দেড় ঘণ্টায় কাজ সেরে ফেললাম। ক্লাশে ফেরত যেতে ইচ্ছে হচ্ছিল না, দু'দুজনে গেনোল ছাগলার দোকানে আড্ডা দিতে গেলাম। গেনোল ছাগলা আমাদের ক্লাশমেট ছিল, সে বাবার মুদি দোকান চালাচ্ছে, পড়ালেখা শেষ। বাজারের শেষ প্রান্তে দোকানটি, দুপুরে লোকজন নেই, গেনোল ছাগলা চা আনালো, খাচ্ছি; হঠাৎ ক্লাশমেট আনোয়ার দোকানে উপস্হিত, "চল, বিএসসি হুজুর ডাকছন।"


-হুজুর কি করে জানলো? -মালালা এসেছিল পোষ্ট অফিসে, সে তোদের দেখে গেছে। হুজুর ইচ্ছামত বকা দিল; হুজুর চলে যাওয়ার পর সবাই অপেক্ষা করছে মালালাকে আমি কি করি।
কিছু না করলে মান-সন্মান থাকে না; আমি বললাম, "এই মালালা, তোর ঐ ছোট চোখে কতদুর দেখিস?" -
“গর্দব দেখতে বড় চোখের দরকার হয়না। “
আমি বুঝলাম, কথা বাড়ালেই আমিই বিপদে পড়ব; মালালার সাথে কথায় পেরে উঠা মুশকিল ছিল।
নিজের মুখ রক্ষার্থে বলর্থে লাম, "তোরে দেখে নেবো"। -
“তোর ভয়ে আমি সকুল ছেড়ে দেবো, কাল থেকে আর আসব না। “
মেয়েরা সবাই হাসলো।

দেখলাম সুবিধে হচ্ছে না, আমি করিডোরে চলে গেলাম, তেমন জমলোনা, সবাই হতাস।
মালালার একটা সমস্যা ছিল, সে ভুতের ভয় পেতো। এইতো সুজোগ, ভুতের ভয় দেখিয়ে গনিমতের মাল বানানো।
পরিকল্পনা খুব সহজ. জীন সেজে ভয় দেখাব। এরপর জিনের বাদশা সেজে কাছে গেলে বলব আমার্ খেদমত করিলে তার ৩ ইচ্ছে পূরণ করবো। খেদমত মানে তো খেদমতই, জিনিস বাদশাকে নিশ্চ্য় ভাল মত খেদমত করিবে বিবির মতো।

তাদের বাড়ী আর আমাদের বাড়ীর মাঝখানে একটি ছোট মাঠ।
আমি কাছারী ঘরে একা থাকতাম। মাঝ-রাত, শুক্ল-পক্ষের চাঁদচাঁ,
আমি বিছানা চাদরখানা হাতে নিয়ে ওদের উঠানের এক প্রান্ত হয়ে ওর জানালার পাশে এসে দাঁড়া দাঁ লাম; জানাল খোলা, ঘুমাচ্ছে।

আমি বিছানা চাদর দি্য়ে নিজকে ঢেকে সামান্য আওয়াজ করলাম; না, সে ঘুমাচ্ছে। গাছের একটা ছোট ডালা নিলাম ওর গায়ে ছুঁড়ে মারতে।
এমন সময় ওদের উঠানে ওর দু'চাচা, চাচাতো ভাই ব্রজ ও চাকর ছেলে চীৎকার শুরু করলো, "ডাকাত, ডাকাত"।
আমি ওদের পুকুর-পাড় হয়ে, দৌড়ে মাঠ পেরিয়ে কাচারীতে নিজ বিছানায়।
গ্রামের লোক লাঠি হাতে চিৎকার দিতে দিতে মালালাদের বাড়ীর পানে ছুটলো।
মা এসে আমাকে ডেকে তুললো, "শাহাদের বাড়ীতে ডাকাত পড়েছে, তাড়াতাড়ি যা"। হায়রে বিপদ। আমি সবার শেষে উপস্হিত হলাম, ততক্ষণে ওদের উঠোনভর্তি লোকজন। বাড়ীর চারিপাশ তল্লাশী হলো। সবাই জটলা পাকাচ্ছে, চাকর ছেলে কাছারী থেকে দেখেছে ১০/১২ জন ডাকাত ঢুকেছিল বাড়ীতে। সবার জন্য চা এলো, ১৫/২০ জন সারারাত বাড়ী পাহারা দিবে। চা দেওয়ার সময় মালালা বের হলো মুড়ির টিন হাতে।
আমার দিকে কড়মড় করে তাকালো; ভয়ে ভয়ে বাড়ী ফিরলাম।

পরদিন ইচ্ছা করে দেরিতে ক্লাশে গেলাম, ব্রজ ডাকাতদের কাহিনী বলছে, হুজুরসহ সবাই শুনছে, প্রশ্ন করছে। আমি চুপ করে শুনলাম। সবাই মালালাকে সহানুভুতি দেখাচ্ছে; আমি বললাম, "কয়জন ডাকাত এসেছিল মালালা?" মালালা বললো, "আমি একজন দেখেছি, তুই কয়জন দেখেছিস?" আমি চুপ।
ক্লাশ শেষ, আমি বল খেলতে যাবার জন্য তৈরি হচ্ছি, মালালা করিডোর থেকে ডাকলো। -বল খেলার দরকার নেই, বাড়ী চল। আমার নিশ্বাস বন্ধ হওয়ার উপক্রম। আমরা দুজন, অন্য মেয়েরা চলে গেছে। মাঠের মাঝখানে আসার পর সে বললো, "তোর মত ইডিয়ট আমি জীবনে কখনো দেখি নাই, কি করে তুই এ কাজ করলি?" -তুই আমারে দেখেছিলি? -আমি শুয়েছিলাম, তখনো ঘুমাইনি, তোর মত বেকুব ভূত পৃথিপৃ বীতে আর নাই; তুই ইডিয়ট। আমার পা চলছিল না। বললাম, "বস, আমি হাঁটহাঁ তে পারছি না।" -হাঁটহাঁ তে থাকেন মহা বেকুব ভুত।
মালালার বাবা মিষ্টি পছন্দ করতেন, মিষ্টি কিনে স্কুল থেকে মালালাসহ তাদের বাড়ী গেলাম। কাকা প্রশ্ন করলো, তুই স্কুলে কিছু একটা করেছিস?" -আমি কিছু করিনি, করেছে ঐ ইডিয়ট। আমি প্রণাম করে মাফ চাইলাম। মালালা বললো, "বাবা ডাকাত মাকাত কিছু না, এই বেকুব এসেছিল আমাকে ভূতের ভয় দেখাতে।"

যাক তাও ভাল, গনিমতের মাল বানানোর ইচ্ছাখান তো গোপন রাখা গেল.

সর্বশেষ এডিট : ১০ ই জুন, ২০২১ রাত ১২:৫৬
৫টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছবির গল্প, গল্পের ছবি

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৩:১৫



সজিনা বিক্রি করছে ছোট্ট বিক্রেতা। এতো ছোট বিক্রেতা ও আমাদের ক্যামেরা দেখে যখন আশেপাশের মানুষ জমা হয়েছিল তখন বাচ্চাটি খুবই লজ্জায় পড়ে যায়। পরে আমরা তাকে আর বিরক্ত না করে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে লীগ আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে জামাত

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৪৬


বাংলাদেশে রাজনৈতিক ছদ্মবেশের প্রথম কারিগর জামাত-শিবির। নিরাপত্তার অজুহাতে উনারা এটি করে থাকেন। আইনী কোন বাঁধা নেই এতে,তবে নৈতিক ব্যাপারটা তো অবশ্যই থাকে, রাজনৈতিক সংহিতার কারণেই এটি বেশি হয়ে থাকে। বাংলাদেশে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৪৩

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

চা বাগানের ছবি কৃতজ্ঞতা: http://www.peakpx.com এর প্রতি।

আমাদের সময় একাডেমিক পড়াশোনার একটা আলাদা বৈশিষ্ট্য ছিল। চয়নিকা বইয়ের গল্পগুলো বেশ আনন্দদায়ক ছিল। যেমন, চাষীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×