somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

রাতের আগন্তুক

০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০২১ ভোর ৪:০৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



এটি ছিল একটি ঠান্ডা, অন্ধকার রহস্যময় রাত। অদ্ভুত কালো মেঘের নির্মম খপ্পর থেকে পালানোর জন্য চাঁদ সংগ্রাম করছিল।
রাস্তার কুকুরগুলো কোথাও কাঁদছিল, এক ঝলকা বাতাস বটগাছের পাতায় চুমু খেল।

নোরা বারবার জি-বাংলা এবং ষ্টার জলসা চ্যানেলের মধ্যে স্যুইচ করছিল। হঠাৎ তার চোখ আটকে গেল ।

ব্রেকিং নিউজ: চিটাগাং সেন্ট্রাল এসাইলাম থেকে একজন সাইকোটিক হত্যাকারী পালিয়েছে এবং অতর্কিত তাণ্ডব চালিয়েছে আজ রাতে । এতে ওই বাড়িতে একা থাকা দুই নারী নিহত হয়। তাদের মধ্যে একজন ছিলেন সিডিএ এলাকায় ।

নোরা ভয় পেয়ে গেল। সিডিএ এলাকায় যেখানে খুন এই বাড়িটা ছিল তার থেকে কাছেই । এবং হটাৎ করে সে বুঝতে পারল যে সে এই বাড়িতে একা।

পাশের কামিনী গাছ থেকে পেঁচা হুটহুট্ করছিল। রাস্তার নিচে কোথাও একটা নষ্ট বাল্ব ফ্লিকার করতে করতে নিভেই গেল.। অন্ধকার ছড়িয়ে গেল সামনের রাস্তায়। /

হঠাৎ নোরা দরজায় ঠান্ডা ঠকঠক শব্দ শুনতে পেল। তার শিরা -উপশিরায় রক্ত ​​হিম।

সে আস্তে আস্তে দরজার দিকে এগিয়ে গেল। তার পা কাঁপছিল।

পিপিহোল দিয়ে দেখা যায় না. কেউ একজন দাঁড়িয়ে।

সে আস্তে আস্তে দরজা খুলল।


২.

একজন ফ্যাকাশে মানুষ।


তার বয়স চল্লিশের কাছাকাছি।

তার চোখ রক্তের মত টকটকে লাল।

নোরা এর বুকে হার্টবিট বেড়ে গেল যখন সে চোখগুলো লক্ষ্য করল।

লোকটি আস্তে আস্তে জিজ্ঞেস করলো এটা কি খুকিমনির বাড়ি?

নোরা মাথা নাড়ল।

লোকটির মুখ উজ্জ্বল হয়ে উঠল, "হ্যালো ম্যাডাম। আমি টিপু কিবরিয়া , খুকিমনির এর বন্ধু, উনার একটা সিনেমায় প্রোডাকশন এসিস্ট্যান্ট ছিলাম।।" বলতে বলতে আরচোখে নোৱার সুগঠিত বক্ষের দিকে তার লোভী চোখ চলে যাচ্ছে।

নোরা তাড়াতাড়ি গলার নিচের বোতাম আটকে নিল পরনের শার্র্ট এর।

তা দেখে এবার তিনি কঠোর এবং তীক্ষ্ণ কণ্ঠে বললেন। "আমার গাড়ী নষ্ট হয়ে গেছে. মেকানিক না আসা পর্যন্ত আমি কি আ বাড়িতে কিছুক্ষণ থাকতে পারি?


নোরা ইতিমধ্যে সেই চোখ দেখে ভয় পেয়েছিল, এবং স্পষ্টভাবে আপত্তি করল. "এত রাতে ......."

কিন্তু একগুঁয়ে কিবরিয়া বারবার তাকে ঢুকতে দিতে বিরক্ত করছিল। অবশেষে সে খুকিমনিকে তার সাথে কথা বলতে বলল।

নোরা মাথা নেড়ে বলল ”খুকিমনি খুব অসুস্থ জামিন পাবার পরপরই । সে ওষুধ দিয়ে ঘুমাচ্ছে। আমি তাকে জাগাতে পারি না। অনুগ্রহ করে চলে যান".

কিন্তু কিবরিয়া লোকটি এত জেদি ছিল, যে নোরা মনে মনে একটি পরিকল্পনা ভেবে নিল ।

নোরা লোকটিকে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করতে বললেন এবং দৌড়ে উপরে গেলেন।



নোরা একটি গভীর শ্বাস নিল, তারপর তার কণ্ঠকে সামান্য চেঞ্জ করল এবং ভাব করল যেন খুব অসুস্থ।

"কিবরিয়া। আমার অস্বস্তি বোধ করছি. আমার বিশ্রাম দরকার. আমরা আগামীকাল দেখা করব ”জোরে জোরে বলল যাতে কিবরিয়া এটা শুনতে পায়।

কিছুক্ষণ পর সে নীচে নেমে গেল। সে সাবধানে দরজা খুলল। সে দেখতে পেল সেই ঠান্ডা রক্তের লাল চোখ তার দিকে তাকিয়ে আছে। "কিবরিয়া আমি দুখিত। "নোরা দুর্বল কণ্ঠে সেই ভয়াবহ চোখ এড়িয়ে বলল এবং সাথে সাথে দরজা বন্ধ করে দিল।

নোরা একটি গভীর শ্বাস নিল, তারপর তার কণ্ঠকে সামান্য চেঞ্জ করল এবং ভাব করল যেন খুব অসুস্থ।

"কিবরিয়া। আমার অস্বস্তি বোধ করছি. আমার বিশ্রাম দরকার. আমরা আগামীকাল দেখা করব ”জোরে জোরে বলল যাতে কিবরিয়া এটা শুনতে পায়।

কিছুক্ষণ পর সে নীচে নেমে গেল। সে সাবধানে দরজা খুলল। সে দেখতে পেল সেই ঠান্ডা রক্তের লাল চোখ তার দিকে তাকিয়ে আছে। "কিবরিয়া আমি দুখিত। "নোরা দুর্বল কণ্ঠে সেই ভয়াবহ চোখ এড়িয়ে বলল এবং সাথে সাথে দরজা বন্ধ করে দিল।


নোরা নিজেকে শান্ত করার চেষ্টা করল। টিভিতে ভাল কিছু দেখার চেষ্টা করল ।

সে আবার দরজায় র শব্দ শুনে চমকে উঠল। এটাকে কিবরিয়া ভেবে সাড়া দিল না । চুপ করে রইল, কিন্তু দরজায় কড়া নাড়ার শব্দটি আরও জোরে এবং ক্রমাগত হয়ে উঠছিল। অবশেষে নোরা দরজায় কে ছিল তা খুঁজে বের করার জন্য কিছু সাহস জোগাড় করল।




যেই মুহূর্তে সে দরজা খুলল একটা ঠান্ডা ভয় তাকে জড়িয়ে ধরল। সে ভয়ে নিথর হয়ে গেল। এটা ছিল একজন বুড়ো লোকের মুখে কুটিল হাসি এবং কাঁধের উপর একটি ব্যাগ। কিবরিয়া তখনও তার সাথে অধৈর্য হয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন।

" সালাম মেডাম,, আমাকে এক গ্লাস পানি দেবেন? ”বৃদ্ধ লোকটি ফিসফিস করে বলল। নোরা দ্বিধায় পড়ে গেল। বৃদ্ধ আবার বকবক করলেন "মেডাম, আমার তৃষ্ণা মেটাতে হবে"।

নোরা দরজা বন্ধ করে রান্নাঘরে পানি আনতে ছুটে গেল। টেলিভিশনে তখনও খবর জ্বলছিল। সে আস্তে আস্তে এক গ্লাস পানি দিয়ে দরজা থেকে তার হাত বের করে দিল।

হঠাৎ বিদ্যুৎ চলে গেল। শুধু কুকুরের আর্তনাদ শোনা গেল। এটি ছিল মৃত নীরবতা তার পরে একটি রহস্যময়, মন্দ, ধূর্ত এবং পৈশাচিক হাসি শোনা গেল। বুড়ো এবং কিবরিয়া দেখতে পেলেন যে বিদ্যুৎ পুনরায় চালু হওয়ার সময় নোরা দরজা দিয়ে চলে গেছে।

কিবরিয়া নোরাকে ডেকেছিলেন। সে সেখানে নেই । দুজনেই নোরাকে ডেকে বাড়ির ভিতরে প্রবেশ করল।

টেলিভিশনে তখনো ব্রেকিং নিউজ জ্বলছিল। তারা তার সন্ধানে রান্নাঘরে গেল। হঠাৎ বিদ্যুৎ চলে গেল। কিবরিয়ার ঘাড়ে ঠান্ডা হাত ছুড়ে গেল। তিনি আতঙ্কিত হয়ে চিৎকার করতে লাগলেন। বৃদ্ধ লোকটি আতঙ্কিত ছিল এবং কি ঘটছে তার কোন ধারণা ছিল না। কিবরিয়া অনুভব করতে পারে যে হাতটি তার গলা চেপে ধরেছিল । তিনি কঠিন শ্বাস নিচ্ছিলেন, তার জীবনের জন্য লড়াই করেছিলেন। সৌভাগ্যক্রমে বিদ্যুৎ পুনরায় চালু হল। তাদের বিস্ময়ের জন্য কেউ সেখানে ছিল না, এমনকি এক মিনিটের শব্দও ছিল না।

তারা ভয়ে ভয়ে উপরের দিকে চলে গেল এই ভেবে যে খুকিমনি তাদের সাহায্য করতে পারে। সিঁড়িটা তাদের পায়ের নিচে চেপে গেল। উপরের তলায় ছিল অন্ধকার। তারা সুইচটি খুঁজে পায়নি। খুকিমনির শয়নকক্ষ কিভাবে তারা খুঁজে পেয়েছিল। কিবরিয়া দরজায় নক করল। কোন সাড়া নেই। সেখানে হৃদয় জোরে ধাক্কা দিচ্ছিল। তারা ধীরে ধীরে দরজা খুলল।

অস্পষ্ট চাঁদের আলোয় ঘরটা ঝাপসা হয়ে গেল। ‘খুকিমনি। খুকিমনি’ কিবরিয়া কে ফোন করে আশা করেছিল যে সে উত্তর দেবে। হঠাৎ কিছু ঠাণ্ডা কিবরিয়ার পা স্পর্শ করল। তিনি হঠাৎ আগুনের মধ্যে বিড়ালের মত লাফিয়ে উঠলেন ।বয়স্ক ব্যক্তি তার ব্যাগ থেকে একটি টর্চ নিলেন।

এটা ছিল রক্ত। বিশুদ্ধ রক্ত. খুকিমনি তার খোলা গলা থেকে রক্তের পুকুরে মৃত অবস্থায় পড়ে ছিল। হঠাৎ পিছন থেকে একটা মানসিক হাসির শব্দ শোনা গেল। এটি অন্ধকারে অন্ধকারে ছিল যার হাতে রক্ত ঝরছিল ছুরি। ভয়ঙ্কর চিত্রটি তাদের কাছে এসেছিল।

বৃদ্ধ লোকটি মূর্তির মুখের দিকে টর্চ জ্বালালেন ।দু পুরুষের মুখে ঠান্ডা মৃত্যুর অভিব্যক্তি ছিল। র‍্যাচেল ছাড়া আর কেউ নয়,


একটি দীর্ঘ নীরবতার পর রক্তের ফিনকি ছোটার শব্দ শোনা গেল।





__শেষ__



নোরা একজন হত্যাকারী। তিনিই খুকিমনিকে হত্যা করেছিলেন


পুরনো বিদেশি একটি প্রচলিত গল্প / কাহিনীর ছায়া অবলম্বনে



সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০২১ ভোর ৪:১৯
৩টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মুসলিম কি সাহাবায়ে কেরামের (রা.) অনুরূপ মতভেদে লিপ্ত হয়ে পরস্পর যুদ্ধ করবে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪৯




সূরাঃ ৩ আলে-ইমরান, ১০৫ নং আয়াতের অনুবাদ-
১০৫। তোমরা তাদের মত হবে না যারা তাদের নিকট সুস্পষ্ট প্রমাণ আসার পর বিচ্ছিন্ন হয়েছে ও নিজেদের মাঝে মতভেদ সৃষ্টি করেছে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদে মসজিদে মোল্লা,ও কমিটি নতুন আইনে চালাচ্ছে সমাজ.

লিখেছেন এম ডি মুসা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সকাল ১০:২৩

গত সপ্তাহে ভোলার জাহানপুর ইউনিয়নের চরফ্যাশন ওমরাবাজ গ্রামের এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। লোকটি নিয়মিত মসজিদে যেত না, মসজিদে গিয়ে নামাজ পড়েনি, জানা গেল সে আল্লাহর প্রতি বিশ্বাসী ছিল, স্বীকারোক্তিতে সে... ...বাকিটুকু পড়ুন

গল্পঃ অনাকাঙ্ক্ষিত অতিথি

লিখেছেন ইসিয়াক, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ দুপুর ১:১২

(১)
মাছ বাজারে ঢোকার মুখে "মায়া" মাছগুলোর উপর আমার  চোখ আটকে গেল।বেশ তাজা মাছ। মনে পড়লো আব্বা "মায়া" মাছ চচ্চড়ি দারুণ পছন্দ করেন। মাসের শেষ যদিও হাতটানাটানি চলছে তবুও একশো কুড়ি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগে বিরোধী মতের কাউকে নীতি মালায় নিলে কি সত্যি আনন্দ পাওয়া যায়।

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১৮

ব্লগ এমন এক স্থান, যেখানে মতের অমিলের কারণে, চকলেটের কারণে, ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শের কারণে অনেক তর্কাতর্কি বিতর্ক কাটা কাটি মারামারি মন্তব্যে প্রতিমন্তব্যে আঘাত এগুলো যেনো নিত্য নৈমিত্তিক বিষয়। ব্লগটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগার'স ইন্টারভিউঃ আজকের অতিথি ব্লগার শায়মা

লিখেছেন অপু তানভীর, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ১১:০৫



সামুতে ব্লগারদের ইন্টারভিউ নেওয়াটা নতুন না । অনেক ব্লগারই সিরিজ আকারে এই ধরণের পোস্ট করেছেন । যদিও সেগুলো বেশ আগের ঘটনা । ইন্টারভিউ মূলক পোস্ট অনেক দিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×