ছায়া মৃত্যু
দর্পণ কবীর
একটি ছায়ার মৃত্যু নিয়ে সেকী উত্তপ্ত রাজপথ! এমন কি-শহরের
ময়দানে জনসমুদ্রে উঠলো প্রতিবাদের তুমুল ঢেউ! রাষ্ট্রযন্ত্রে
বসে যারা দিব্যি কথার ফানুস উড়ান, তারাও ছায়ার অপমৃত্যুতে
কথাবিহীন হল বিষণœ বিহবলতায়। যারা বিরোধীতার
নামে হরতাল, সংঘর্ষ বা জ্বালাময়ী ভাষণে পারদর্শী, তারা তো ছায়াকে
‘ছায়া’ বলতেও নারাজ। একান্ত স্বজন হারানোর কান্নায়
তারা মূষড়ে পড়লো খুব। ছায়ার অনাহূত মৃত্যু নিয়ে
উথাল-পাতাল তোলপাড় আছড়ে পড়লো ঢাকার অলি-গলি থেকে
বঙ্গোপসাগরের জলতরঙ্গে। অনেক রক্তক্ষয় হল, অনেকটা পেছনে ফিরে
যাওয়া হল-তবু ছায়ামৃত্যুর শোক কাটল না কিছুতেই। কয়েকজন
অকর্মণ্য রাজনীতিবিদ ছায়াটির শবযাত্রার আয়োজন করে একটা কিছু
হাতিয়ে নেবার ফন্দি আঁটলো। ওরা জানে, পুলিশ ঘুষের নেশায় বুঁদ, র্যাব-সেনা
রেশনের সুবিধার লিস্ট বাড়ানোর দ্বন্দ্বে আমজনতাকে
‘আনসিভিলাইজড’ গাল দিয়ে হিং¯্র নখ ও দাঁত লুকিয়ে রাখতে ব্যস্ত।
ওই রাজনীতিবিদরা এদিক-ওদিক, দুদিকেই হাওয়া দিতে লাগল। শোরগোল
থেকে ছায়ার মৃত্যু নিয়ে জাতিসংঘেও উঠলো শোক প্রস্তাব!
কিন্তু ছায়াটির নাড়ি টিপে কেউ দেখলো না আদৌ ওর মৃত্যু হয়েছে কিনা! একটি
কলহপ্রিয় জাতির অনিশ্চিত ভবিষ্যতের কথা ভেবে তুমি অবশেষে
ঘর থেকে বেরিয়ে এসে বললে, ‘ওটি ছায়া নয়, ওটি আমার হারিয়ে
যাওয়া দীর্ঘশ্বাস স্বপ্নবিমুখ হয়ে রাজপথে পড়ে আছে।’ জানো কি, অনবরত
ব্যর্থতার অন্ধকারে আমরা প্রত্যেকে দীর্ঘশ্বাস বা ছায়া হয়ে যাই।
৬ আগষ্ট, ১০, নিউইয়র্ক।