''গান ছাড়ছে জাইমা নুর'' শিরোনামে একটি সংবাদ এসেছে গনমাধ্যমে। মেয়েটার গান আগে কখনও শোনা হয়নি। খবরটা পড়ে তার গান শুনতে ইউটিউবে সার্চ দিয়ে দেখি অসাধারন সব গান গেয়েছে মেয়েটি। অসম্ভব সুরেলা কন্ঠ ও দরদ দিয়ে গান গায় মেয়েটি। ব্লগারদের অনুরোধ করছি মেয়েটির '' আমার একটা মন ছিল '' এবং '' বাবা'' গান দুটো শুনে দেখার। এত অসম্ভব সুন্দর গানগুলো আগে কেন শোনা হয়নি তাই ভাবছি। মেয়েটি সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে গিয়ে জানলাম-
জাইমা নূরের জন্ম রাজশাহী বিভাগের চাপাইনওয়াবগঞ্জে। মাত্র ৬ বছর বয়সে ২০১৫ সালে রমজান মাসে বৈশাখী টিভির সংগীত প্রতিযোগিতা ‘লক্ষ প্রাণের সুর’-এ ইসলামী নাশীদ গাওয়ার মাধ্যমে যাত্রা শুরু হয় জাইমা’র। সুললিত কণ্ঠ, বিমোহিত সুরে প্রতিটি গানই অল্প সময়ে জনপ্রিয়তা পেয়েছে। গত ছয় বছরে বিভিন্ন টেলিভিশনে রমজানে সংগীতানুষ্ঠান থেকে শুরু বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মঞ্চে গেয়েছে অসংখ্য গান। গতবছর রমজান মাসে বেসরকারি টেলিভিশন বাংলাভিশনে আয়োজিত কুরআন তেলাওয়াত প্রতিযোগিতার অনুষ্ঠানে ‘বাবা’ গান গেয়ে ব্যাপক পরিচিতি পায় জাইমা। এখন পর্যন্ত বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে এই গানটি প্রায় সাড়ে ১১ কোটি বার দেখা হয়েছে। জাইমা মূলত ইসলামী নাশীদ ও দেশাত্মবোধক গান গেয়ে থাকে। একটি সংগীত প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে গানে হাতেখড়ি হয় তার। এখন পড়াশোনা করছে পঞ্চম শ্রেণিতে। সুত্র ইত্তেফাক''
এত চমৎকার গান গাইতে পারা মেয়েটি কেন হঠাত গান ছেড়ে দিল? মাত্র পঞ্চম শ্রেনীর একটি বালিকা গান ছাড়ার বিষয়ে যে ব্যখ্যা দিয়েছে তা নিতান্তই শিখিয়ে দেয়া বক্তব্য বলে মনে হচ্ছে। মেয়েটির বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় বিভিন্ন কমেন্ট সেকশনে ধন্যবাদের ঝড় বয়ে যাচ্ছে !! গান না ছাড়ার অনুরোধ সংক্রান্ত কোন কমেন্ট চোখে পড়েনি!
ইদানিং লোকদেখানো ধর্মের কালচার দিনদিন বাড়ছে যার মারাত্মক প্রভাব পড়ছে মানুষের জীবন যাত্রায়। আমাদের বাল্যকালে ধর্ম এবং সামাজিক জীবন যাপনের মাঝে একটা ব্যলেন্স ছিল। ধর্মকে আলিঙ্গন করাতে শেখানো হয়েছে আমাদের , জোড়পুর্বক চাপিয়ে দেয়া নয়। এর মানে কি আমাদের পিতা মাতা , ময় মুরুব্বীরা ধার্মিক ছিলেন না? অবস্যই তারা ধার্মিক ছিলেন। আমরা আমাদের পিতা মাতা , ময় মুরুব্বী সবাইকে নামাজ, রোজা, যাকাত , সামর্থনুসারে হজ্বসহ সকল ফরজ আদায় করতে দেখেইতো বড় হয়েছি যা এখন আমরা নিজেরাও পালন করে থাকি। আমাদের সময়ে ধর্মীয় রীতি পালনের তাৎপর্য শেখানো হত। ধর্মীয় আলোকে সততা, সত্যবাদিতার পাঠ পড়ানো হত। কিন্ত একই সাথে সামাজিক ও সাংস্কৃতিক জীবনব্যবস্থাকেও গুরুত্ব দেয়া হত।
অত্যন্ত দুঃখজনক যে লোকদেখানো ধর্মীয় কালচারের নিষ্ঠুর শিকার হচ্ছে ইদানিং শিশুরা। যে বয়সে শিশুদের খেলাধুলা করার কথা, গান গাইবার কথা , দুরন্ত শৈশবকে দারুনভাবে উপভোগ করার কথা সেই বয়সে তারা ধর্মীয় বুলি আউড়াচ্ছে!! এসবতো তাদের নিজের কথা নয়, তোতা পাখির মত শেখানো কিছু বুলি। গান যে গাইতে পারে তার পক্ষে কোনদিনও গানকে ভুলে থাকা সম্ভব নয়। জাইমা নামের এই দুর্দান্ত ক্ষুদে গায়িকার গান গাইবার পরিবেশ যদি নিশ্চিত করা সম্ভব হত, তাহলে মেয়েটি কোনদিনও গানকে বিদায় জানাতো না।
পোস্টটা একটু এডিট করে একজন মুসলিম স্কলারের গান বাজনা সম্পর্কিত বক্তব্য যুক্ত করছি।
The Muslim scholar al-Qaradawi states that singing and music in itself is permissible and pleasurable. He places several restrictions on them though. The content of the song should not be against the morals and teachings of Islam or be accompanied by other forbidden things in Islam like alcohol.
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে জুলাই, ২০২২ সকাল ৭:০১