somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মাধ্যমিক শিক্ষা খাতের সংস্কার

৩০ শে জুন, ২০০৭ সকাল ৯:০০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



সম্প্রতি সংবাদপত্রে প্রকাশিত খবরে জানা যায় যে, বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশের মাধ্যমিক শিক্ষা খাতের সংস্কার কর্মসূচী বাস্তবায়নে ৭ শত কোটি টাকা (১০০ মিলিয়ন ডলার) ঋণ প্রদান করিবে। ইতিমধ্যে আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা (আইডিএ) ও বাংলাদেশ সরকারের মধ্যে একটি ঋণচুক্তিও স্বাক্ষরিত হইয়াছে। এই ঋণ সহায়তা ব্যবহার করা হইবে শিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক গৃহীত তৃতীয় পর্যায়ের মধ্যমেয়াদী বিভিন্ন সংস্কার কর্মসূচী বাস্তবায়নের জন্য। জানা গিয়াছে, বার্ষিক ০.৭৫% সুদে ৪০ বছরে (১০ বছরের গ্রেস পিরিয়ডসহ) ঋণটি পরিশোধযোগ্য। থার্ড এডুকেশন সেক্টর ডেভেলপমেন্ট সাপোর্ট ক্রেডিটের আওতায় মূলত মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে একটি ব্যয় সাশ্রয়ী ও মানসম্পন্ন শিক্ষা ব্যবস্থা গড়িয়া তুলিতে এবং শিক্ষাব্যবস্থায় সুশাসন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যেই ঋণের এই অর্থ ব্যয়িত হইবে। চুক্তিতে যে সকল বিষয়ের উপর জোর দেওয়া হইয়াছে সেইগুলির মধ্যে উল্লেখ্যযোগ্য (ক) সরকার ও সমাজের প্রতি মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলির জবাবদিহিতা বৃদ্ধি, (খ) মাধ্যমিক বিদ্যালয়সমূহের সরকারী সহায়তার বিষয়টি সম্পৃক্ত করা, (গ) বিদ্যালয়ে শিক্ষা গ্রহণের ক্ষেত্রে বৈষম্য-বৈপরীত্য দূর করা, (ঘ) নিয়োগ পদ্ধতির উন্নয়ন ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে শিক্ষকদের গুণগত মান উন্নয়ন করা এবং (ঙ) পাঠ্যপুস্তক প্রণয়ন ও প্রকাশনার ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা বৃদ্ধি ও পাঠ্যসূচীকে আরও প্রাসঙ্গিক ও চাহিদাভিত্তিক করা।

চুক্তিতে যে সকল বিষয়ের উপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হইয়াছে তাহা যেমন প্রাসঙ্গিক, তেমনি জরুরী। বস্তুত সময়ের সঙ্গে খাপ খাওয়াইয়া আধুনিক কালের আশা-আকাঙক্ষা ও মননের সহিত যোগ ঘটাইয়া আমাদের মাধ্যমিক শিক্ষা ব্যবস্থাকে ঢালিয়া সাজাইবার প্রয়োজনীয়তাই আজ অত্যধিক হইয়া দেখা দিয়াছে। সঠিক অর্থে আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থাকে একদিকে যেমন আধুনিকীকরণ করিতে হইবে তেমনি অন্যদিকে একবিংশ শতাব্দীর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করিবার জন্যও উহাকে সুসম্পন্ন ও সুবিন্যস্ত করিয়া গড়িয়া তুলিতে হইবে। এজন্য মান্ধাতার আমলের ধারাবাহিকতাকে অবশ্যই আমাদের বাদ দিতে হইবে এবং বাস্তব জীবনে সঠিকভাবে প্রয়োগ করার জন্য একই সঙ্গে এই শিক্ষা ব্যবস্থাকে অবশ্য অবশ্যই ‘প্র্যাগমেটিক’ও হইতে হইবে। শিক্ষার্থীদের বয়ঃসন্ধিকালের শিক্ষাকে অত্যন্ত সাবধানতার সঙ্গে বিবেচনা করিয়া দেখিতে হইবে। কেননা এই বয়সের শিক্ষাটাই কোমলমতি শিক্ষার্থীদের মনে-প্রাণে গাঁথিয়া যায়। শিক্ষা বিভাগের সচেতন উদ্যোগী কর্মকর্তাদের ইহা না জানার কথা নয়। সার্টিফিকেট সর্বস্ব শিক্ষা যেন শিক্ষার্থীর সৃজন ক্ষমতাকে বন্ধ্যা করিয়া দিতে না পারে, একই সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সকলকে তাহাও চিন্তাভাবনা করিয়া দেখিতে হইবে। এই ব্যাপারে শিক্ষার্থী, শিক্ষক এবং অভিভাবকদেরও সম্মিলিত মনোযোগ আকর্ষণ আবশ্যক। তবে এ বিষয়ে সবচাইতে বেশী আবশ্যক দক্ষ এবং অভিজ্ঞ শিক্ষকমণ্ডলী। অভিভাবকদিগকেও হইতে হইবে সন্তানের শিক্ষা গ্রহণের ব্যাপারে অধিকতর সচেতন ও দায়িত্বশীল। প্রতিটি স্কুলের ছাদকে যেমন শক্ত করিয়া গড়িয়া তুলিতে হইবে, তেমনি মানসম্মত করিতে হইবে শিক্ষাদান পদ্ধতিও। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা কমিটিকে হইতে হইবে নীতিনিষ্ঠ এবং শিক্ষার্থীদের সার্বিক উন্নতিকল্পে আত্মনিবেদিত। ভুলিলে চলিবে না যে, প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার মধ্য দিয়া জীবনের বিরাট বিশাল পরিসরে শিক্ষার্থীদের প্রবেশ করিতে হয়। আর সেকারণেই জীবনের দিগন্তটিকে প্রতিমুহূর্ত মেলিয়া ধরার এবং নতুন নতুন দিগন্ত সৃষ্টি করার প্রয়োজনীয়তা কখনই ফুরাইবার নয়।

আশার কথা এই যে, বিগত কয়েকটি বছরে শিক্ষার পরিস্থিতির খানিকটা উন্নতি হইয়াছে। পরীক্ষায় নকল প্রবণতা অনেকাংশে কমিয়া গিয়াছে। পরীক্ষায় নকলমুক্ত পরিবেশও শিক্ষা ও জ্ঞান অর্জনের জন্য এক অপরিহার্য শর্ত। শিক্ষার্থী, শিক্ষক, অভিভাবক একযোগে এক বিকশিত শান্তিপূর্ণ সামাজিক পরিবেশকে নিশ্চিত করিতে পারিলেই স্বদেশ মাতৃকার আদর্শ সন্তান গড়িয়া তুলিবার কাজটি সফল ও সার্থক হইবে। আর দেশবাসীর প্রত্যাশা ইহাই।



০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

একাত্তরের এই দিনে

লিখেছেন প্রামানিক, ০১ লা মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৬


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

আজ মে মাসের এক তারিখ অর্থাৎ মে দিবস। ১৯৭১ সালের মে মাসের এই দিনটির কথা মনে পড়লে এখনো গা শিউরে উঠে। এই দিনে আমার গ্রামের... ...বাকিটুকু পড়ুন

হুজুররা প্রেমিক হলে বাংলাদেশ বদলে যাবে

লিখেছেন মিশু মিলন, ০১ লা মে, ২০২৪ রাত ৯:২০



তখন প্রথম বর্ষের ছাত্র। আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে আমাদের আরেক বন্ধুর জন্মদিনের উপহার কিনতে গেছি মৌচাক মার্কেটের পিছনে, আনারকলি মার্কেটের সামনের ক্রাফটের দোকানগুলোতে। একটা নারীর ভাস্কর্য দেখে আমার... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইসলামের বিধান হতে হলে কোন কথা হাদিসে থাকতেই হবে এটা জরুরী না

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০১ লা মে, ২০২৪ রাত ১০:৫৫



সূরাঃ ৫ মায়িদাহ, ৩ নং আয়াতের অনুবাদ-
৩। তোমাদের জন্য হারাম করা হয়েছে মৃত, রক্ত, শূকরমাংস, আল্লাহ ব্যতীত অপরের নামে যবেহকৃত পশু, আর শ্বাসরোধে মৃত জন্তু, প্রহারে মৃত... ...বাকিটুকু পড়ুন

লবণ্যময়ী হাসি দিয়ে ভাইরাল হওয়া পিয়া জান্নাতুল কে নিয়ে কিছু কথা

লিখেছেন সম্রাট সাদ্দাম, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১:৫৪

ব্যারিস্টার সুমনের পেছনে দাঁড়িয়ে কয়েকদিন আগে মুচকি হাসি দিয়ে রাতারাতি ভাইরাল হয়েছিল শোবিজ অঙ্গনে আলোচিত মুখ পিয়া জান্নাতুল। যিনি একাধারে একজন আইনজীবি, অভিনেত্রী, মডেল ও একজন মা।



মুচকি হাসি ভাইরাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবন চলবেই ... কারো জন্য থেমে থাকবে না

লিখেছেন অপু তানভীর, ০২ রা মে, ২০২৪ সকাল ১০:০৪



নাইমদের বাসার ঠিক সামনেই ছিল দোকানটা । দোকানের মাথার উপরে একটা সাইনবোর্ডে লেখা থাকতও ওয়ান টু নাইন্টি নাইন সপ ! তবে মূলত সেটা ছিল একটা ডিপার্টমেন্টাল স্টোর। প্রায়ই... ...বাকিটুকু পড়ুন

×