somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অভিমান(Abhimaan) মুভি রিভিউ (৪) =p~ =p~ :D

০২ রা এপ্রিল, ২০১০ দুপুর ১:১৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

উহু যারা ৯০ এর দশকে জন্মেছেন, তাদের এ মুভির নাম শোনার কথা না। ৮০ বা ৭০ এর দশকের মানুষজনকে জিজ্ঞেস করলে হয়তো স্মৃতি হাতড়ে মনে করার চেষ্টা করতে পারেন। হুম, আবছা আবছা মনে পড়ছে কি? না মনে পড়লে আরেকটু পেছন থেকে ঘুরে আসি। এই অসাধারন ক্লাসিক মুভিটি ১৯৭৩ সালে নির্মিত। প্রয়াত হৃষিকেশ মুখার্জির আরো অনেক অনন্য সৃষ্টির মধ্যে একটি। অনেকেই হয়তো জানেন না, তিনি বাঙ্গালী ছিলেন। এই গুণী পরিচালকের হাত দিয়ে আমরা পেয়েছি অনুপমা,চুপকে চুপকে, গোলমাল এরকম আরো অনেক কালজয়ী সিনেমা।

অভিমান হিন্দিতে নির্মিত খুবই চমৎকার ড্রামা মুভি। আপনি চাইলে মিউজিকাল ড্রামাও বলতে পারেন, কোন ক্ষতি নেই। পৌনে দুই ঘন্টার এই মুভিতে ৭/৮ টি গান আছে। মুলত দুজন শিল্পী ও তাদের সঙ্গীতসত্তাকে উপজীব্য করে এর কাহিনী গড়িয়েছে। ও আচ্ছা, আপনি তাদের টানাপোড়েন নিয়ে জানতে অতটা আগ্রহী নন!! ঠিকাছে, তারপরো পিছপা হবেন না। এ ছবির সঙ্গীত পরিচালকের নামটা জেনে রাখতে পারেন, হয়তো মত পাল্টাতেও পারেন ......গ্রেট শচীন দেব বর্মন। অসাধারন সুর আর সঙ্গীতের জন্যেও এ মুভিটি বিখ্যাত। লতা মুঙ্গেশকার, কিশোর কুমার আর মোহাম্মদ রফির অনন্য ট্রায়ো আর কোথায় পাবেন?

খুবই সরল আর সাধারন কাহিনী নিয়ে যে গল্পের শুরু, কাহিনীর টানাপোড়েনে আর কলাকুশলীর মুন্সিয়ানায় তা-ই একসময় অসাধারন হয়ে ওঠে। ছবির মূল দুই ক্যারেক্টার সুবীর (অমিতাভ বচ্চন) আর তার স্ত্রী রমা (জয়া ভাদুরী)। সুবীর উঠতি গায়ক, পসারও ভালো। সঙ্গীত আর সাফল্য দুয়ে মিলে ভালোই চলে যাচ্ছিল, তবু কোথায় যেন এক নিষ্পাপ শূন্যতা সুবীরের মনে। তাই মাসীর বাড়ি গিয়ে যখন রমার সাথে পরিচয় হয়, সুবীর তাকে সারাজীবনের মতো নিজের জীবনে জড়িয়ে নিতে চায়। বিয়েটা যেন হয়ে যায় হুট করেই। মজার ব্যাপার হলো রমাও খুব ভালো গান জানে, বাবার কাছে সে শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের তালিম নিয়েছে।সুবীরও রমার প্রেমে পড়ে এই গান শুনেই। একজন প্রতিষ্ঠিত কমার্শিয়াল গায়ক (অমিতাভ বচ্চন) আর আরেকজন (জয়া ভাদুরী)গান করে শুধুই প্রানের টানে । ধীরে ধীরে স্বামীর হাত ধরে, কিছুটা অনিচ্ছায় রমাও প্রবেশ করে সঙ্গীতের জগতে। দুজনেই গান করে, কখনো একসাথে, কখনো সুবীরের অনুরোধে একা। খ্যাতি,প্রশংসা, পুরস্কার সবই আসতে থাকে, হয়তো সুবীরের চেয়ে একটু বেশিই প্রাপ্তি ঘটে রমার ভাগ্যে।একসময় অজান্তে হোক আর পরিস্থিতির পরিনতিতেই হোক রমাকেই যেন প্রতিদ্বন্দী মনে হতে থাকে সুবীরের কাছে। সুবীর কি পারবে এই টানাপোড়েনকে পাশ কাটিয়ে রমাকে আবার আগের মতো কাছে ডাকতে? রমা কি ভুলে যাবে সুবীরের ত্যাগের কথা? নাহ আর বেশি কথা নয়, বাকীটুকু সেলুলয়েডের ফিতায় বাঁধা থাকুক। ইউটিউবেও পাবেন যদি পুরনো এই কাহিনীর আমেজ পেতে চান।

সবকিছু ছাপিয়ে এই ছবির আরেক আকর্ষন অমিতাভ আর জয়া ভাদুরীর চমৎকার অভিনয়।আমার সবসময়ই মনে হয়ে হয়েছে হিন্দি ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে 'সুচিত্রা সেন' কেউ যদি থেকে থাকেন, তবে তিনি জয়া ভাদুরী।ভাবনাটা যে খুব মিথ্যে নয়, এখানে তিনি তার ছাপ রেখেছেন। অমিতাভও ভালো কাজ করেছেন। বাকী সবাইও মানানসই।

এবার আসা যাক, কিছু মজার কথায়। Akon এর lonely গানটা অনেকেই শুনে থাকবেন। গানের শুরুতে যে সুর ব্যবহার করা হয়েছে, তার সাথে এই ছবির বহুল ব্যবহৃত একটি আবহ সঙ্গীতের অসম্ভব মিল আছে। Akon এর গানের সাথে কি করে শচীন দেব বর্মনের করা সুর মিলে গেল, এটা আবিষ্কার করা মুশকিল, হয়ত মনের মিল (!!)। আগেকার দিনে (বেশিদিন আগে নয়, এইতো ১৯৭৩ সালে), হসপিটালে ব্রাদাররা যে হাফ প্যান্ট পড়তেন একথা কি জানেন? না জানলে, আপনার জন্য আরো অনেক কিছুই জানার আছে সেসময়কার জীবন, জীবনদর্শন আর অনুভূতি নিয়ে। উপভোগ করুন 'অভিমান', কোন এক সন্ধ্যায়, প্রিয়ার হাত ধরে, যাকে আপনি কখনোই হারাতে চাইবেন না।

(এই রিভিউ টমেটো ল্যাংগুয়েজে লিখতে ইচ্ছা করেনি, মুগ্ধতা মানুষকে মাঝে মাঝে সুশীল বানিয়ে দেয়.......

দিতে পারো ১০০ মুভি এনে, আজন্ম সুশীল সাধ
একদিন ব্লগের পাতায় একটু শুদ্ধ ভাষায় লেখা লিখি !! ;)
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই এপ্রিল, ২০১০ রাত ৯:৩৬
১১টি মন্তব্য ৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

একাত্তরের এই দিনে

লিখেছেন প্রামানিক, ০১ লা মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৬


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

আজ মে মাসের এক তারিখ অর্থাৎ মে দিবস। ১৯৭১ সালের মে মাসের এই দিনটির কথা মনে পড়লে এখনো গা শিউরে উঠে। এই দিনে আমার গ্রামের... ...বাকিটুকু পড়ুন

হুজুররা প্রেমিক হলে বাংলাদেশ বদলে যাবে

লিখেছেন মিশু মিলন, ০১ লা মে, ২০২৪ রাত ৯:২০



তখন প্রথম বর্ষের ছাত্র। আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে আমাদের আরেক বন্ধুর জন্মদিনের উপহার কিনতে গেছি মৌচাক মার্কেটের পিছনে, আনারকলি মার্কেটের সামনের ক্রাফটের দোকানগুলোতে। একটা নারীর ভাস্কর্য দেখে আমার... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইসলামের বিধান হতে হলে কোন কথা হাদিসে থাকতেই হবে এটা জরুরী না

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০১ লা মে, ২০২৪ রাত ১০:৫৫



সূরাঃ ৫ মায়িদাহ, ৩ নং আয়াতের অনুবাদ-
৩। তোমাদের জন্য হারাম করা হয়েছে মৃত, রক্ত, শূকরমাংস, আল্লাহ ব্যতীত অপরের নামে যবেহকৃত পশু, আর শ্বাসরোধে মৃত জন্তু, প্রহারে মৃত... ...বাকিটুকু পড়ুন

লবণ্যময়ী হাসি দিয়ে ভাইরাল হওয়া পিয়া জান্নাতুল কে নিয়ে কিছু কথা

লিখেছেন সম্রাট সাদ্দাম, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১:৫৪

ব্যারিস্টার সুমনের পেছনে দাঁড়িয়ে কয়েকদিন আগে মুচকি হাসি দিয়ে রাতারাতি ভাইরাল হয়েছিল শোবিজ অঙ্গনে আলোচিত মুখ পিয়া জান্নাতুল। যিনি একাধারে একজন আইনজীবি, অভিনেত্রী, মডেল ও একজন মা।



মুচকি হাসি ভাইরাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবন চলবেই ... কারো জন্য থেমে থাকবে না

লিখেছেন অপু তানভীর, ০২ রা মে, ২০২৪ সকাল ১০:০৪



নাইমদের বাসার ঠিক সামনেই ছিল দোকানটা । দোকানের মাথার উপরে একটা সাইনবোর্ডে লেখা থাকতও ওয়ান টু নাইন্টি নাইন সপ ! তবে মূলত সেটা ছিল একটা ডিপার্টমেন্টাল স্টোর। প্রায়ই... ...বাকিটুকু পড়ুন

×