''বোবা স্বপ্ন''
(উৎসর্গঃ- পৃথিবীর সকল ঝড়ে পড়া কলিদের)
কলির মুখে হাসি ফুটাতে ব্যস্ত সবাই-
বাগানের মালিক সুখ কিনে দিয়েছে ডিগ্রীধারী জামাই।
গাড়ি আছে, বাড়ি আছে, আছে ব্যাংক-ব্যালেন্স,
কলি তার ফুল হয়ে ফুটবে সুখের নাই রে শেষ।
সুখ কি ধরে গাছে নাকি টাকায় কেনা যায়-
আহাঃ কি মধুর মধুর কথা বলেছিল ঘটক মালি মশাই।
দিন মাস ঘুরে বছর এলো শেষে-
স্বপ্নগুলো ভেঙ্গে গেলো নিমিষে।
অফিস শেষে মাতাল হয়ে জামাই ফিরে গভীর রাতে-
কলির বোবা স্বপ্নগুলো তখন ডুকরে কাঁদে।
মাঝে মাঝে রক্তাক্ত স্বপ্নের গায়ে নুনের ছিঁটা-
কলির স্বপ্নগুলো হয়েছে আজ বলির পাঁটা।
কলি ফুটে হল গোলাপ-
গোলাপের স্বপ্ন থাকা পাপ।
বাগানের বৃক্ষটি তখনও দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে কাঁদে-
অভিশাপ দিল বাগানের মালিক কে কলি ছেঁড়ার অপরাধে।
শূন্যতার প্রিয়তায় নারীর পবিত্রতায় পরম ভালবাসায়-
মুখ বুঝে তবুও সংসার সাজাচ্ছিল প্রভুর চরম অবহেলায়।
বিয়ে নামের একটি ভুলে কলির স্বপ্নগুলো গেলো ঝরে-
তাজা গোলাপের আত্মহত্যা চাইল না কেউ ফিরে।
সংসারে রেখে গেলো দীর্ঘশ্বাসের নিষ্পাপ কলি-
কলি আবার ফুল হয়ে ফুটবে আমি সেই কথায় বলি।
গোলাপ চেয়েছিল বৃক্ষের নিকট একটুখানি আশ্রয়-
পারেনি বৃক্ষ লোকলজ্জার ছিল ভয়।
বৃক্ষের ডালপালা ছিল না, ছিল বিরহ ব্যাথা-
কলির বোবা স্বপ্ন ছিল বৃক্ষ, বৃক্ষের ছিল না লতাপাতা।
নাম তার বৃক্ষ ফলে পরিচয়-
বাগানের মালিকের ভুলে একটা কলির ক্ষয়।
কেউ জানলো না গোলাপের বোবা স্বপ্নের কথা-
ধ্রুব মানববৃক্ষ রচনা করে গেলো এই কবিতা।
মানুষ স্বার্থের পূজারী, আমি বৃক্ষ-- ফুল,ফল,সৌন্দর্যের অধিকারী-
তাইতো বারে বারে আমি বৃক্ষ হেরে গিয়েও জয়ী।
----------------ধ্রুব নয়ন
শাহবাগ, ঢাকা- ০৯/০৯/২০১৬ ইং।
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ৩:০৩