আমরা কিন্তু না মিলেনিয়াল, না খাটি ৯০এর কিডস। আমাদের জীবন গড়ার বয়সটা ছিল ২০০০এ। আমরা হইছি গিয়া একটা হাইব্রিড জাতি। একটা হাইব্রিড জেনারেশন। আমরা একদম কলম দিয়ে ক্যাসেট যেমন ঠিক করছি তেমনি কলেজ শেষ করতে করতে সোশ্যাল মিডিয়াতে বুদ হয়ে গেছিলাম আবার ভার্সিটি শেষ করতে করতে স্পটিফাই আর ইউটিউব এবং ইন্সটাগ্রাম ধরে ফেলছি।
একারনে আমরা ইউনিক টাইপের অসুখী এবং বিভ্রান্ত। আমাদের আগের পরের জেনারেশন এঁর চেয়ে সম্পূর্নই ভিন্ন।
সোশ্যাল মিডিয়ার ইম্প্যাক্ট আমাদের উপর পজিটিভ এবং নেগেটিভ দুইভাবেই আসে।এই পেইজে আমরা পজিটিভ নিয়া কথা বলি না।তাই নেগেটিভ গুলাই আলাপ হবে।পজিটিভ এঁর জন্য সুন্দর সুন্দর মোটিভেশনাল পেইজ আছে।ফিল্টার দিয়ে কোটেশন শেয়ার দেয়। আর না হয় টাকা খরচ করে মোটিভেশন নেন।ফ্রি তে আমরা দুঃখই বিক্রি করবো।
সোশ্যাল মিডিয়ার ব্যাপার টা বলি এভাবে।যারা আমরা কলোণী কিংবা বিশ্ববিদ্যালয় টাইপ জায়গায় থাকতাম ওইসব জায়গায় এক ধাচের আন্টি/আংকেল ছিল যাদের কাজই ছিল প্যাসিভলি নিজের ছেলে মেয়েদের বিজ্ঞাপন করে বেড়ানো। রাস্তা ঘাটে দেখলে এইসব ধরনের কনভার্সেশন করতেন,
"কিরে বাবা,কেমন আছো? রোল কত হইছে?আমার ছেলে তো একদম পড়েনাই তাই সেকেন্ড হইছে,আরেকটু পড়লে ফার্স্ট হবে"
নিজেরাই বলতেন, উত্তর শুনার প্রয়োজন বোধ করতেন না।
আবার অনেক সময় আমরা নিজেরা হয়তো খারাপ করছি কিছু একটায় কিন্ত বন্ধু করছে ভালো। তখন আমরা নিজেরা ঘরের ভিতর ঢুকে থাকতাম।ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুত করতাম।এভয়েড করতাম ওই বন্ধুর আনন্দ গুলোকে। নিজের ভালোর জন্যেই, বন্ধুর প্রতি ঘৃনা বা ওইসব কিছু না। ইনসুলেশন মাঝে মাঝে ক্ল্যারিটি দেয়।মাথা ক্লিয়ার করে।
সোশ্যাল মিডিয়া দিয়া আমরা এই না চাওয়া জিনিস গুলো কে ঘরের ভিতরে নিয়ে আসছি। পাশের বাড়ির আন্টির মেয়ে কয়টা জিপিএ ৫ পাইছে সেটা আমার পকেটে আসে, মিষ্টি খাওয়া দেওয়ার ছবি আসতেছে, সফল বন্ধু বান্ধবীরা আনন্দের ছড়াছড়ি করতেছে দেখি, বিদেশে থাকা বন্ধু বান্ধব রা বেড়াইতেছে,ঠান্ডা বরফ ধরে উষ্ণ ছবি দিয়ে দেশের জন্য আহা উহু করতেছে। এই জিনিস গুলো আমরা টানা ২৪ ঘন্টা ৭ দিন চোখের সামনে রাখি আর ভাবি আমি কেন অসুখী???
কেন সাফারিং করতেছি??কারন আমরা এডিক্টেড এইটার প্রতি। এছাড়াও আমরাও টুকটাক ভালো কিছু করে এইখানে দিতে চাই যাতে আমাদের কেও ভালো বলে। আমাদের কন্টেণ্ট দেখেও যাতে অনেকের এরকম হিংসা হয় সেটাই আমরা চাই। এটা একটা দারুন সার্কেল।ভালো চোখে দেখলে ভালো আর নাহয় আমাদের মতো কুতসিত চোখেও দেখেও হতাশ হওয়া যায় নতুন করে।
তবে,এখন একটা সুবিধা হইছে। কিছু ছাগল টাইপের মানুষের কারনে আমরা হালকা পাতলা প্রতিশোধ ও নিতে পারি এইসবের। ইনস্টাগ্রাম এবং অবারিত পর্ন সাইটের সুবাদে এইসব আন্টি আংকেল দের সফল মেয়েদের অর্ধনগ্ন(ক্ষেত্রবিশেষে সম্পূর্ন নগ্ন) অথবা অনতরংগ দৃশ্য ও আমাদের হাতে চলে আসে এবং আমাদের মতো লুজার দের মধ্যে যারা অতি নিম্ন তারা হাত মারে চুপেচাপে,ঝোপেঝাড়ে। বাকিরা যারা এক্টিভ ছেলেপেলে তারা গর্বের সাথে সাইবার ক্রাইম এবং ব্ল্যাকমেইল শুরু করে। বাংলা পর্ন সাইট বানায় কিংবা গুগল ড্রাইভ লিংক বানায় শেয়ার করে।
কে বলছে বাংলাদেশে তরুন উদ্যোক্তা দের অভাব? এদের উচিত ভার্সিটি গুলোতে ইমার্কেটিং এন্ড ডিস্ট্রিবিউশন নিয়ে কাজ করা। এটলিস্ট ফেসবুকের এড এলগরিদমের চেয়ে ভাল হবে।
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে জানুয়ারি, ২০২১ দুপুর ১২:৫০