মাত্র একটি দিন অপেক্ষা, তারপর দলের ছয় সদস্যদের সবাই লাখপতি। লাখপতি হওয়ার আশায় তারা বিনিয়োগও করেছে ৪৪ হাজার ২০০ টাকা করে। না কোন ব্যবসায় এ বিনিয়োগ নয়। একটি বিষাক্ত কেউটে (স্থানীয় ভাষায় হানাই সাপ) ৩ লাখ টাকায় কিনে ২০ লাখ টাকায় বিক্রি করে রাতারাতি লাখপতি হতেই তাদের এই বিনিয়োগ। ঘটনাটি ঘটেছে চট্টগ্রামের সাতকানিয়ার কালিয়াইশ ইউনিয়নের পূর্ব কাটগড় বিওসির মোড়ে।
স্থানীয় ইউপি মেম্বার আবদুল গফুর মুক্তা এবং স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, চন্দনাইশ বাদামতলী এলাকার নুরুল আলম সওদাগর নামে এক ব্যক্তি এসে বিওসির মোড়ের কয়েকজনকে জানায় হানাই সাফ পেলে সে প্রতিটি সাপ ২০ লাখ টাকায় করে কিনে নেবে। এতে সাড়া দেয় এলাকার ছয় ব্যক্তি। তারা পার্বত্য জেলা বান্দরবানে সাপের খবর পেতে লোক লাগায়। এক পর্যায়ে তারা খবর পায় বান্দরবানের বাকীঝিরি নামক স্থানে উপজাতিদের হাতে একটি হানাই সাপ ধরা পড়েছে এবং তা বিক্রি করা হবে। সেটি ২ লাখ টাকায় কিনে এবং সেটি বিওসির মোড়ে পৌছানো বাবদ আরো ১ লাখ ১০ হাজার টাকা প্রদান করে সেটি নিয়ে আসা হয়। ৩ লাখ ১০ হাজার টাকায় কেনা সাপটির খবর মূল ক্রেতা নুরুল আলম সওদাগরকে জানালে তিনি সাপটি তার কাছে পৌঁছে দিতে বলেন। অতিরিক্ত লাভের আশায় সাপটি কিনে আনা লোকগুলো সাপটিকে তিনদিন পালন করার পর একটি সিএনজি অটোরিকশাযোগে সাপটির মূল ক্রেতা নুরুল আলম সওদাগরের কাছে পৌঁছে দেয়। এ পর্যায়ে মূল ক্রেতা প্রতিশ্রুত টাকা প্রদানে গড়িমসি শুরু করেন। ফলশ্রুতিতে যারা এই সাপের ব্যবসার সাথে জড়িত ছিলেন তারা বড় ধরণের লোকসানের সম্মুখীন হন। এ ব্যাপারে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. গাজী মোহাম্মদ আসমত বিশ্বের কোথাও এরকম দামে সাপ বিক্রি হওয়ার নজির নেই উল্লেখ করে বলেন, এ সাপ নিয়ে ব্যবসাটি পাগলামী ছাড়া আর কিছু নয়। তবে ধরা পড়া সাপটিকে দুর্লভ বিষধর কেউটে প্রজাতির সাপ বলে অভিহিত করেন তিনি। এ প্রজাতির সাপ এখন প্রায় বিলুপ্তির পথে বলেও তিনি জানান।
Click This Link