somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মোবাইল ফোন কোম্পানীগুলোর ভূয়া কাস্টমার ডাটাবেজ ছোট-বড়-জঘন্য নানাবিধ অপকর্মের অন্যতম অনূঘটক।

০৪ ঠা মার্চ, ২০০৯ দুপুর ১:৩৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মোবাইল ফোন কোম্পানীগুলোর একটি কাস্টমার ডাটাবেজ রয়েছে। এগুলোকে 'তথাকথিত' ডাটাবেজ বলাই শ্রেয়:। মোটাদাগে বলা যায় এটি ভূয়া। জিপি, বাংলালিংক, একটেল, ওয়ারিদ, সিটিসেল, টেলিটক সব শিয়ালের এক রা- এক্ষেত্রে। বিশেষত: প্রি-পেইডের কোটি কোটি নাম্বারের বিপরীতে যে তথ্য (কাস্টমারের নাম, পিতা/মাতা, স্থায়ী/বর্তমান ঠিকানা, ফটো) তাদের কম্পিউটারে আছে তা 'কাল্পনিক।' অনিবার্য কূফল হিসেবে মিস কল, ফালতু কল, টিজিং, চাদাঁবাজি, সংঘবদ্ধ অপরাধ, হত্যা, গণহত্যা ইত্যাকার নানাবিধ কূকর্মে নিজের মোবাইল ফোনটি ব্যবহার করতে লোকজন ২য় বার চিন্তা করছেনা। ফলে অপরাধ বিস্তারে মোবাইল ফোন ব্যাপক ও নজিরবিহীন ভূমিকা রাখছে। বিশেষত: 'লেজবিহীন' মোবাইল নাম্বার। লেটেস্ট আর্মি নিধনযজ্ঞেও এর চরম অপব্যবহার হৈছে।

সিম ও ফ্লেক্সি বিক্রির জন্য কোম্পানীগুলোর যে অহর্নিশি জোর প্রচেস্টা তার কণাভাগ ও 'কাস্টমার ডাটা সত্যতা'র ব্যাপারে নেই। যে পরিমাণ সিম বিক্রি হৈল সে পরিমান 'পেপারের স্ক্যান' তথাকথিত ডাটাবেজে ঢুকাতে পারলেই বিটিআরসির আইনে 'কাম শেষ'। ঐসব কাগজে কি লেখা আছে তা আলোচ্য বিষয় নয়। পরিস্থিতি এমন যে সচেতন কোন কাস্টমার সত্যি সত্যি সব তথ্য, ছবি, আইডি কপি দিয়ে সিম কিনলেও ডাটাবেজে যে উহা ঢুকবেই তার কোন নিশ্চ্য়তা নেই। কারন দোকানদারের/ডিস্ট্রিবিউটরের নিজস্ব সিস্টেমে (!) ফিলআপের 'হোল সেল' প্রচেসে তা হারিয়ে যেতে পারে। অনেক সময় সিম বেচার আগেই ফরম ফিলআপ হয়ে যায়! আমি নিজে ১ বছর আগে একটি সিম কিনেছিলাম ও নিয়মানুযায়ী সাবস্ক্রিপশান ফরম, ২ কপি ছবি ও পাসপোর্টের কপি দিই। মাস ছয়েক আগে সিম হারানোর ফলে উক্ত মোবাইল কোম্পানীর দারস্থ হলে দেখা যায় এ সিমের মালিক আমি নই! 'লাস্ট রিচার্জ কত? এফ এন এফ নাম্বার বলেন?- সৌভাগ্যত: প্রস্নদ্বয়ের সঠিক উত্তর দিতে পেরে মালিকানা ফিরে পাই!! ঘটনার ফ্যাঁকড়ায় পরে অনুসন্ধানে নেমে পরি -কিভাবে হৈল কূকামটা? কে করল? কেমনে করল? উত্তর নিম্নরূপ:

মোবাইল ফোন কোম্পানী ডিলার ও দোকানদারকে সিমের সাথে আরো ২টি জিনিস সাপ্লাই করে- বিটিআরসি নির্দেশিত সাবস্ক্রিপশান ফরম ও বিটিআরসি নির্দেশিত প্রত্যয়ন পত্রের ছক (যে সব ক্রেতার ছবিযুক্ত আইডি নাই- এটির ফটোকপিও জায়েয)। ডিলার ও দোকানীর প্রতি চাপ থাকে যে কটি সিম বেচা হৈছে অতিদ্রুত সে কটি পেপার কোম্পানিকে জমা দিতে। নির্দিস্ট সময়ের মধ্যে তা জমা দিতে ব্যর্থ হলে ঐ বাবদ কমিশন বাদ কিংবা জরিমানাও হৈতে পারে। সুতরাং দোকানীরা ক্রেতার মুখাপেক্ষী না হয়ে নিজেরাই সব কাজ কৈরা ফেলে। কিছু ক্রেতার ফরম ফিলাপে অনীহা, ফরমালিটি বাবদ বেচাবিক্রির সময় নস্ট না করার মনোবৃত্তি ন্যক্কারজনক কর্মটির প্রসারে হেল্প করেছে। এজন্য আলাদা লোকবল, সময়, মালমসলা কে কেন্দ্র করে রীতিমত নতুন শিল্প গৈড়া উঠছে। স্টুডিও/ডিজিটাল প্রিন্টার থেকে ১টাকা/ছবি, জনপ্রতিনিধি বা গেজেটেড অফিসারদের কিছু ভুয়া সিল ও পরিমানমত স্টাফ নি্য়ে দোকানি বা ডিলারেরা দোকানের ভেতরে ব্যাক অফিসে- আলতু মিয়া, পিং- ফালতু মিয়া, ৫৬ নরসুন্দর লেন, ঢাকা ১০০০ তথ্য সম্বলিত ইতোমধ্যে ৩ কোটিরও বেশি মানুষের ডিজিটাল ডাটাবেজ বানিয়েছে!!!
গতবছর বিটিআরসি 'রি-রেজিস্টেশনের' জন্য মোবাইল কোম্পানীদের ঠ্যাংগানি দিলে এ কাজটি আরো ব্যাপকতা লাভ করে! কাস্টমার যাতে হারাতে না হ্য় কোম্পানিগুলো দোকানদারদের কাছে লক্ষ লক্ষ নাম্বারলিস্ট পাঠায় এবং পেপার পাঠাতে বলে! সাথে বিশেষ কমিশন ঘোষনা করে। বুঝুন ঠেলা! কোন কালে কার কাছে সিম বিক্রি কৈরেছি- এখন তারে কৈ পামু! সুতরাং- ফটোর দাম বেড়ে ২/৩ টাকা প্রতি পিস হয়ে যায়। তবে এ সময় বেশ কিছু কাস্টমার সঠিক তথ্য দিতে পেরেছেন।

ফটো সম্বলিত আইডির যে বিকল্পটি (বিটিআরসি নির্দেশিত প্রত্যয়ন পত্রের ছক যা কোন গেজেটেড অফিসার বা জনপ্রতিনিধি সত্যায়ন করবেন) বিদ্যমান তাই এহেন প্রকাশ্য জালজালিয়তিকে টিকিয়ে রেখেছে। ১০ টাকা দিয়ে সিল বানিয়ে যে কেউ এটা করতে পারে। এবং "কাস্টমার সংখ্যা = পেপার সংখ্যা" হলেই বিটিআরসির যে আত্নতৃপ্তি তা ২য় বড় কারন। পেপারে লেখা তথ্য গুলো যদি দৈবচয়ন ভিত্তিতে হলেও 'সত্যতা' যাচাই করা হত তা হলে এত লার্জ স্কেলে চুরিটা হতনা।

সুতরাং, ব্যক্তি, পরিবার, রাস্ট্র সবার নিরাপত্তার জন্য সরকার তথা বিটিআরসির উচিত-
১। মোবাইল ফোন কোম্পানীর কাস্টমার ডাটাবেজ সহিহ করার সময় বেধেঁ দেয়া
২। পাসপোর্ট, জাতীয় পরিচয়পত্র ইত্যাদি ধরনের কার্ড ছাড়া আর কোন নতুন সিম না বেচা নিশ্চিৎ করা

বলতে ইচ্ছা হয়- ব্যাংক একাউন্ট, বিটিসিএল, তিতাস, ডেসা ইত্যাদি ইউটিলিটি কোম্পানীর ডাটাবেজ ১০০% ভাগ শুদ্ধ হতে পারলে মোবাইল হবে না কেন? মোবাইলের পোস্টপেইড হতে পারলে প্রি-পেইড হতে পারবেনা কেন? না পারার কারণ- বদভ্যাস। এটা কোম্পানী, ডিলার ও দোকানী সবার। কিছু কিছু কাস্টমারের। আর না পারার কারন- সরকারের ঢিলেঢালা আইন বা তদস্থিত ফাঁক।

নিজের সঠিক ছবি ও তথ্য ডাটাবেজে রেখে বড় ধরনের নাশকতা বা হত্যাযজ্ঞ তো দুরের কথা অপরিচিত নারী (বা পুরুষ) কন্ঠের লোভে মিস কলও সহজে কেউ দিবে না। দিলে ও শতবার চিন্তার পর!!!
১১টি মন্তব্য ৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হুজুররা প্রেমিক হলে বাংলাদেশ বদলে যাবে

লিখেছেন মিশু মিলন, ০১ লা মে, ২০২৪ রাত ৯:২০



তখন প্রথম বর্ষের ছাত্র। আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে আমাদের আরেক বন্ধুর জন্মদিনের উপহার কিনতে গেছি মৌচাক মার্কেটের পিছনে, আনারকলি মার্কেটের সামনের ক্রাফটের দোকানগুলোতে। একটা নারীর ভাস্কর্য দেখে আমার... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইসলামের বিধান হতে হলে কোন কথা হাদিসে থাকতেই হবে এটা জরুরী না

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০১ লা মে, ২০২৪ রাত ১০:৫৫



সূরাঃ ৫ মায়িদাহ, ৩ নং আয়াতের অনুবাদ-
৩। তোমাদের জন্য হারাম করা হয়েছে মৃত, রক্ত, শূকরমাংস, আল্লাহ ব্যতীত অপরের নামে যবেহকৃত পশু, আর শ্বাসরোধে মৃত জন্তু, প্রহারে মৃত... ...বাকিটুকু পড়ুন

লবণ্যময়ী হাসি দিয়ে ভাইরাল হওয়া পিয়া জান্নাতুল কে নিয়ে কিছু কথা

লিখেছেন সম্রাট সাদ্দাম, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১:৫৪

ব্যারিস্টার সুমনের পেছনে দাঁড়িয়ে কয়েকদিন আগে মুচকি হাসি দিয়ে রাতারাতি ভাইরাল হয়েছিল শোবিজ অঙ্গনে আলোচিত মুখ পিয়া জান্নাতুল। যিনি একাধারে একজন আইনজীবি, অভিনেত্রী, মডেল ও একজন মা।



মুচকি হাসি ভাইরাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবন চলবেই ... কারো জন্য থেমে থাকবে না

লিখেছেন অপু তানভীর, ০২ রা মে, ২০২৪ সকাল ১০:০৪



নাইমদের বাসার ঠিক সামনেই ছিল দোকানটা । দোকানের মাথার উপরে একটা সাইনবোর্ডে লেখা থাকতও ওয়ান টু নাইন্টি নাইন সপ ! তবে মূলত সেটা ছিল একটা ডিপার্টমেন্টাল স্টোর। প্রায়ই... ...বাকিটুকু পড়ুন

দেশ এগিয়ে যাচ্ছে; ভাবতে ভালই লাগে

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০২ রা মে, ২০২৪ দুপুর ১:০৩


বিশ্বব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ১৯৭২ সালে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার ছিল নেতিবাচক। একই বছরে পাকিস্তানের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার ছিল প্রায় ১ শতাংশ। ১৯৭৩ সালে পাকিস্তানের অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রবৃদ্ধি ছিল ৭... ...বাকিটুকু পড়ুন

×