somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ইরানি নারী রেহানের মৃত্যুদণ্ড এবং প্রকৃত সত্য । আমাদের স্বভাব খুব ই খারাপ! যাচাই না করেই আমরা সব বিশ্বাস করি

৩০ শে অক্টোবর, ২০১৪ দুপুর ২:০৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


Reyhaneh Jabbari defends herself during the first hearing of her trial in 2008. Photograph: Golara Sajadian/AFP

ইরানের রেহানে জাব্বারি নামে এক মহিলার মৃত্যুদণ্ড নিয়ে সারা বিশ্বে ব্যাপক অপপ্রচার চলছে কদিন ধরে, এর বাইরে নেই বাংলাদেশও। গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলোয় ঝড় উঠেছে ওই নারীর পক্ষে তবে নিতান্তই অসত্যের পক্ষে। যারা সত্য অনুসন্ধান করতে চান তারা সত্যের সন্ধান পাবেন আর যারা সত্য অনুসন্ধান করতে চান না তাদের জন্য নিশ্চয় কুতর্কের খোরাক হবে। এমনটাই লিখেছেন সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে প্রকাশিত সাপ্তাহিক দেশের খবর পত্রিকায় উপসম্পাদকীয় বিভাগে সিরাজুল ইসলাম।

পত্রিকাটিতে লেখা হয়েছে, বাংলাদেশের বেশিরভাগ গণমাধ্যমের সীমাবদ্ধতা হলো বিদেশি খবর যাচাই বাছাই করার সুযোগ নেই। সে কারণে পশ্চিমা গণমাধ্যম বিশেষ করে এএফপি, রয়টার্স, এপি, ভোয়া বা বিবিসি যা দেয় তাই চোখ বন্ধ করে গিলতে হয়। আর মিডিয়ার শীর্ষ পর্যায়ে যারা বসে আছেন তারাও এগুলো নিয়ে এত মাথা ঘামান না অথবা মাথা ঘামালেও ওই পশ্চিমাদের পক্ষ নেবেন। আর নারী বা কথিত মানবাধিকার ইস্যু হলে তো কথাই নেই।

পশ্চিমা গণমাধ্যমগুলোয় বলা হচ্ছে রেহানেকে অন্যায়ভাবে ফাঁসি দেয়া হয়েছে। আরো বলা হচ্ছে ধর্ষণ থেকে আত্মরক্ষা করতে গিয়ে মহিলাটি ওই লোকটিকে খুন করেছেন। অর্থাৎ নিজেকে বাঁচাতে গিয়ে, ধর্ষণ প্রতিরোধ করতে গিয়ে খুনের ঘটনাটি ঘটেছে। তারপরও তাকে মৃত্যুদন্ড দেয়া হয়েছে! তার মানে হচ্ছে নারীর এই প্রতিরোধকে স্বীকার করা হলো না, নারীর অধিকারকে স্বীকার করা হলো না। কেউ কেউ বলছেন, এই বিচারের মাধ্যমে ধর্ষণকে উৎসাহ দেয়া হলো।

অথচ প্রকৃত সত্য হলো রেইহানা ধর্ষণ প্রতিরোধ করতে গিয়ে খুন করেননি। ভুলভাবে উপস্থাপন করা হচ্ছে। ইরানের বিচার বিভাগ এতটা নারীবিদ্বেষী নয় যে, অন্যায়ভাবে একজন নারীকে ফাঁসি দেবে। হত্যাকান্ডটি পূর্বপরিকল্পিত ছিল। ওই মহিলা তার দোষও স্বীকার করেছেন আদালতে। রেহানে নিজেকে নির্দোষ প্রমাণেও ব্যর্থ হয়েছেন।

ঘটনাটি হচ্ছে দু’জনের অবৈধ সম্পর্কের জের ধরে এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে টানাপোড়েন সৃষ্টি হয় এবং এই খুনের ঘটনা ঘটে। সে ক্ষেত্রে পুরুষ লোকটি যে ভালো মানুষ ছিলেন তা বলার সুযোগ নেই। টানাপোড়েনের একটি পর্যায়ে বেশ কিছু ঘটনা ঘটেছে যার কারণে রেহানে লোকটিকে খুনের সিদ্ধান্ত নেন। খুনের দুই দিন আগে রেহানে নতুন ছুরি কিনেছিলেন এবং তার এক বান্ধবীকে এসএমএস করেছিলেন যে, খুনের ঘটনাটি ঘটতে যাচ্ছে। এখানে আরেকটি বিষয় রয়েছে যে, এই মহিলার সঙ্গে ইরানের আদালতের এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি যে তাকে ফাঁসি দিয়ে দুনিয়া থেকে বিদায় দিয়ে দেবে। অথবা এই মহিলা ইরানের জন্য কোনো হুমকি ছিলেন সে কারণে তার ফাঁসি কার্যকর করা হলো। বরং যদি এমন হতো যে, খুন হয়নি বরং অবৈধ সম্পর্ক বা ধর্ষণের ঘটনার বিচার হচ্ছে তাহলে ওই পুরুষ লোকটাও মৃত্যুদন্ডের মুখে পড়ত। এবং এ ক্ষেত্রেও ইরানের আইন অনুসরণ করা হতো- দেখা হতো না কে পুরুষ আর কে নারী; যেমনটি দেখা হয়নি রেহানের ক্ষেত্রে।

৭ বছর আগের ঘটনা এটি; এমন নয় যে, তাড়াহুড়ো করে একজন নারীকে ফাঁসি দিয়ে আদালত একটা বিরাট কিছু করে ফেলছে। বাস্তবতা হচ্ছে, এটা নিতান্তই মার্কিন নেতৃত্বাধীন পশ্চিমা গণমাধ্যম ও কথিত মানবাধিকার কর্মীদের প্রচারণা।

যদি ঘটনাটা পুরুষের বেলায় ঘটত তাহলে কি পুরুষ লোকটা বেঁচে যেতেন? নিশ্চয় নয়, ইরানের আইনের মূলভিত্তি হচ্ছে ইসলামি বিধান। যে অন্যায় ঘটেছে তার জন্য নারী-পুরুষ মুখ্য বিষয় নয়; মুখ্য বিষয় হচ্ছে আইন এবং তার বাস্তবপ্রয়োগ। ইরানে ইসলামি বিপ্লবের পর বহু খুনের ঘটনার বিচার হয়েছে এবং মৃত্যুদন্ড দেয়া হয়েছে দোষীদের; সেখানে নারী-পুরুষ কখনো বিবেচ্য বিষয় হয়ে ওঠেনি; বিচার হয়েছে অপরাধের।

২০০৭ সালে সংঘটিত হয় আলোচ্য হত্যাকাণ্ডটি। ঘটনাটি সাত বছর ধরে পুঙ্খানুপঙ্খ বিচার বিশ্লেষণ করে তারপর ইরানের আদালত রায় দিয়েছে। এ নিয়ে উচ্চ আদালতে পরে আবার বিচার হয়েছে এবং রায় বহাল রাখে। তারপরও এক মাস দেরি করা হয়েছে যে ভিক্টিম পরিবার যদি মাফ করে দেয় তাহলে ফাঁসিটি কার্যকর করা হবে না। কিন্তু ওই পরিবার মাফ করেনি। ইরানের বিচার ব্যবস্থায় খুনের ঘটনায় কারো মৃত্যুদন্ড হলে ভিক্টিম পরিবার ছাড়া কারো পক্ষে সে রায় উল্টানোর সুযোগ নেই এমনকি প্রেসিডেন্ট বা সর্বোচ্চ নেতাও পারেন না।

সুত্রঃ প্রিয় ডট কম
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে অক্টোবর, ২০১৪ রাত ৯:২১
৮টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের (সা.) পক্ষ নিলে আল্লাহ হেদায়াত প্রদান করেন

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৬:৪২



সূরা: ৩৯ যুমার, ২৩ নং আয়াতের অনুবাদ-
২৩। আল্লাহ নাযিল করেছেন উত্তম হাদিস, যা সুসমঞ্জস্য, পুন: পুন: আবৃত। এতে যারা তাদের রবকে ভয় করে তাদের শরির রোমাঞ্চিত হয়।অত:পর তাদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগটা তো ছ্যাড়াব্যাড়া হয়ে গেলো :(

লিখেছেন সাখাওয়াত হোসেন বাবন, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৫৭



আমি আমার ব্লগিং শুরু করি প্রথম আলো ব্লগে লেখালেখির মাধ্যমে। ব্লগটির প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। কারণ প্রথম আলো ব্লগ আমায় লেখালেখিতে মনোযোগী হতে শিখিয়েছে । সে এক যুগ আগের কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

লুঙ্গিসুট

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:২৪



ছোটবেলায় হরেক রঙের খেলা খেলেছি। লাটিম,চেঙ্গু পান্টি, ঘুড়ি,মার্বেল,আরো কত কি। আমার মতো আপনারাও খেলেছেন এগুলো।রোদ ঝড় বৃষ্টি কোনো বাধাই মানতাম না। আগে খেলা তারপর সব কিছু।
ছোটবেলায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বর্ণাক্ষরে লিখে রাখার মত মুফতি তাকি উসমানী সাহেবের কিছু কথা

লিখেছেন নতুন নকিব, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:২৫

স্বর্ণাক্ষরে লিখে রাখার মত মুফতি তাকি উসমানী সাহেবের কিছু কথা

ছবি কৃতজ্ঞতা: অন্তর্জাল।

একবার শাইখুল হাদিস মুফতি তাকি উসমানী দামাত বারাকাতুহুম সাহেবকে জিজ্ঞেস করা হল, জীবনের সারকথা কী? উত্তরে তিনি এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

সবুজ চোখের মানুষের ধাঁধা

লিখেছেন করুণাধারা, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:২৯



এই ধাঁধার নাম সবুজ চোখের মানুষের ধাঁধা; নিচের লিংকে এটার ভিডিও আছে।

স্বৈরশাসকের বন্দী

এই ধাঁধাটি আমার ভালো লেগেছিল, তাই অনেক আগে আমার একটা পোস্টে এই ধাঁধাটি দিয়েছিলাম। কিন্তু সেই পোস্টে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×