somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নাস্তিকের সংখ্যাবৃদ্ধি- এতো নাস্তিক এলো কোথা থেকে!

২০ শে জুন, ২০১৩ বিকাল ৫:১৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

কয়েক মাস আগে নাস্তিকদের সংখ্যা বৃদ্ধি নিয়ে একটা খবর দৃষ্টি কেড়েছিল। খবরটি কৌতুহলউদ্দীপক নিঃসন্দেহে। স্রষ্টায় অবিশ্বাসই নাস্তিকতা। নাস্তিকতা ব্যক্তির স্বাধীন ইচ্ছা, নিজে থেকে নির্বাচন করার ব্যাপার- এটাকে আপাত সেরকমই মনে হয়। কিন্তু দেখা গেছে ধর্মানুসারীদের মত নাস্তিকতাও স্বেচ্ছা নির্বাচনের বিষয় নয়। নাস্তিকদের সংখ্যা বৃদ্ধির খবর শুনে মূল খবরে গিয়ে তারই প্রতিফলন পাওয়া যাবে। অবশ্য খুব অবাক করা ব্যাপার ছিল সংবাদটি পরিবেশনের ধরণ। কালেরকন্ঠে এ খবরটি আসছে এভাবে ‘বিশ্বের প্রতি ছয়জনে একজন ধর্মহীন’। বিশ্বে প্রতি ছয়জনে পাঁচজনের ধর্ম আছে সেটা শুনার চেয়ে একজনের যে ধর্ম নেই তা বলার মধ্যে এক ধরণের থ্রিল কাজ করে বুঝা যায়। কুকুর মানুষ কামড়ালে খবর হয় না কিন্তু মানুষ কুকুর কামড়ালে সেটি যেমন খবর হয়।

প্রগতিশীল ধর্মনিরপেক্ষ মানবতাবাদী গোষ্ঠী নামের নাস্তিকগোষ্ঠীও (প্রগতিশীলতা, ধর্মনিরপেক্ষতা, মানবিকতা একে অপরকে ছাড়া চলতে পারে না!) যেভাবে তথ্যটি দিয়েছে সেখানেও দেখা যায় প্রতি ছয়জনে একজন প্রথাগত ধর্মে বিশ্বাস করে না। কিন্তু যারা এই গবেষণা করেছে ও যাদের গবেষণার উপাত্ত জনে জনে ব্যবহার করছে তারা খবরটিকে মানুষের কুকুর কামড়ানোর মতন ঘটনা হিসেবে দেখে নাই। মূল গবেষণাকারী প্রতিষ্ঠান Pew Forum প্রতি দশজনে আটজন নিজেদের ধর্মীয় গ্রুপের অন্তর্ভুক্ত বলে বিবেচনা করাকে গুরুত্বসহকারেই স্থান দিয়েছে। তবে প্রতি ছয়জনে একজন যে প্রতিষ্ঠিত ধর্মের সাথে সম্পর্ক নেই সেটাও উল্লেখ করেছে।

যাক পিউ ফোরাম এর মূল লেখায় ঢুকে বিষয়টি পরিষ্কার হল। অধার্মিকদের অনেকেরই বিশ্বাস ও আধ্যাত্নিকতা আছে, নির্ভেজাল নাস্তিক না। সেটা এমন কিছু না, কারণ আস্তিকদের মধ্যেও ভেজাল আছে, মুনাফেক আছে আর আছে বর্ণচোরা। তবে মূল ঘটনা হল এই নাস্তিকরা মূলত বামপন্থী মতবাদের বাইপ্রোডাক্ট। আর সেটি স্বেচ্ছা নির্বাচনের বিষয়তো না-ই। দেখা গেছে এই ধর্মহীনদের শতকরা '৬২ ভাগ'ই চীনা। সাংস্কৃতিক বিপ্লবের নামে লক্ষ লক্ষ লোক হত্যা করেই সমাজতন্ত্র আসছে, আর তার হাত ধরে নাস্তিকতার ক্ষেত্রও তৈরী হয়েছে। আর এই অধার্মিকদের ৭৬ ভাগই এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলের। উত্তর আমেরিকাতে মাত্র ৫% এবং ইউরোপে ১২%।

এই অধার্মিকরা যেখানে সংখ্যাগরিষ্ঠ সেখানেও বামরাজত্ব! চেক রিপাবলিক (৭৬%), উত্তর কোরিয়া (৭১%), এস্তোনিয়া (৬০%), জাপান (৫৭%), হংকং (৫৬%) এবং চীন (৫২%)! চেক রিপাবলিকে প্রায় ৪১ বছর কমিউনিস্ট শাসনাধীন ছিল, এস্তোনিয়া ১৯৪০ সাল থেকে রাশিয়া দ্বারা দখল হবার পর প্রায় ৫০ বছর কমিউনিস্ট শাসনাধীনে, উত্তর কোরিয়াতো এখনও কমিউনিজমের লীলাভুমি! বস্তুবাদী জাপান ও হংকং এক্ষেত্রে কিছুটা ব্যতিক্রম! নাস্তিকতা বামজাত, কিন্তু বাম নাস্তিকসহ আপামর নাস্তিকরা বাম ও নাস্তিকরে যেন তেল-জলের মতো দেখে। এই সম্পর্ক ঢাকতে তারা ভেক ধরে প্রগতিশীলতা, আধুনিকতা ও মুক্তমনার

যাক, নাস্তিকতা যেমনেই বাড়ুক (!) বাড়ছেতো। এত নাস্তিক, দিশাহীন! দিশা ঠিক করার জন্য দরকার একটা উপাসনালয়! এর জন্য একটা ভিত্তি তৈরী করা হয়ে গেছে আগেই, এথিইস্ট বাস নিয়ে লম্ফঝম্ফ কম হয় নাই, দিকনির্দেশনামূলক বইও লিখা হইতেছে। যাই হোক ওই উপাসনালয়ে থাকবে অমালিন শান্তি, ভালোবাসা আর বন্ধুত্ব, আফটার অল মানবধর্মও তাই বলে! উপাসনালয় ছাড়া এগুলো যে জমে না প্রকারান্তরে সেটাই যেন তারা স্বীকার করে নিয়েছে! আর প্রতিযোগিতাটাতো ধার্মিকদেরই সাথে! ঈশ্বর ছাড়া নাস্তিকও হওয়া যায় না, উপাসনালয় ছাড়া তাদের চলবে কী করে।

তথ্যসুত্রঃ
১. Click This Link
২. Click This Link
৩. Click This Link
৪. Click This Link

নোটঃ আমি সদালাপে 'শামস' নামে লিখে থাকি। লেখাটি ইতিপূর্বে সদালাপে প্রকাশিত হয়েছিল।
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে জুন, ২০১৩ বিকাল ৫:১৭
৬টি মন্তব্য ৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ইন্টেরিম সরকারের শেষদিন : গঠিত হতে যাচ্ছে বিপ্লবী সরকার ?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:২২


ইরাক, লিবিয়া ও সিরিয়াকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার আন্তঃদেশীয় প্রকল্পটা সফল হতে অনেক দিন লেগে গিয়েছিল। বাংলাদেশে সে তুলনায় সংশ্লিষ্ট শক্তিসমূহের সফলতা স্বল্প সময়ে অনেক ভালো। এটা বিস্ময়কর ব্যাপার, ‘রাষ্ট্র’... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিচার চাই? না ভাই, আমরা "উল্লাস" চাই

লিখেছেন মাথা পাগলা, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৩৭





দীপু চন্দ্র দাস একটি পোশাক শিল্প কারখানায় চাকরি করতো। সম্প্রতি দীপু দাস তার যোগ্যতা বলে সুপার ভাইজার পদে প্রমোশন পেয়েছিলো।

জানা যায়, সুপারভাইজার পজিশনটির জন্য আরও তিনজন প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

মব সন্ত্রাস, আগুন ও ব্লাসফেমি: হেরে যাচ্ছে বাংলাদেশ?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৩:৫২


ময়মনসিংহে হিন্দু সম্প্রদায়ের একজন মানুষকে ধর্মীয় কটূক্তির অভিযোগে পুড়িয়ে মারা হয়েছে। মধ্যযুগীয় এই ঘটনা এই বার্তা দেয় যে, জঙ্গিরা মবতন্ত্রের মাধ্যমে ব্লাসফেমি ও শরিয়া কার্যকর করে ফেলেছে। এখন তারই... ...বাকিটুকু পড়ুন

তৌহিদি জনতার নামে মব সন্ত্রাস

লিখেছেন কিরকুট, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৪




ছবিঃ অনলাইন থেকে সংগৃহীত।


দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রতিক সময়ে ধর্মের নাম ব্যবহার করে সংঘটিত দলবদ্ধ সহিংসতার ঘটনা নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে তৌহিদি জনতা পরিচয়ে সংঘবদ্ধ হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুখ গুজে রাখা সুশীল সমাজের তরে ,,,,,,,,

লিখেছেন ডঃ এম এ আলী, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:০৫


দুর্যোগ যখন নামে আকাশে বাতাশে আগুনের ধোঁয়া জমে
রাস্তা জুড়ে কখনো নীরবতা কখনো উত্তাল প্রতিবাদের ঢেউ
এই শহরের শিক্ষিত হৃদয়গুলো কি তখনও নিশ্চুপ থাকে
নাকি জ্বলে ওঠে তাদের চোখের ভেতর নাগরিক বজ্র
কেউ কেও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×