পত্রিকায় মাঝে মাঝে দেখি, বিভিন্নজন নানা সমস্যা নিয়ে লিখে। কেউ বলে, আমি সাদা কাগজে সাইন করে বিয়ে করেছি, আবার কেউ বলে একটা সাইন দিয়েছি, সেটা কাবিন নামা কিনা জানি না। মূলত পরিবারের অজ্ঞাতে যারা বিয়ে শাদী করে, তারা এমন অবস্হায় পড়ে। অনেক মেয়ে জানে না, সেটা কাবিননামা কিনা? কিছুদিন পরে যখন স্বপ্নভঙ্গ হয়, তখন কাবিননামা আর খুজে পায় না।
তাই স্কুলে থাকার সময়ই কাবিন নামা, বিয়ে, কাবিন, দেনমোহর, ডিভোর্স এইসব সম্পর্কে ধারণা দেওয়া উচিত। বিয়ে, কাবিন, ডিভোর্স সম্পর্কে সঠিক ধারণা না থাকার কারণে অনেকেই ইদানিং প্রতারিত হচ্ছেন। বিয়ের আগে ৫% মেয়েও জানে না কাবিন এর কাগজটার রং কি?
কেন বলছি এই কথা? তবে শুনুন।
আমি স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী। ২০১১ সালের ৫ আগস্ট আমার বড় বোনের বাসায় চাকরিজীবী একজনের সঙ্গে ভালোবেসে বিয়ে হয়। এখানে আমার স্বামীর পক্ষের কোনো মুরব্বি উপস্থিত ছিলের না। কারণ, তার বড় ভাই এখনো বিয়ে করেননি। আমার স্বামীর চাকরিতেও এই সময় বিয়ের অনুমতি নেই। তবে সাক্ষী হিসেবে তার তিনজন বন্ধু ছিলেন। আমাদের সম্পর্ক ভালোই যাচ্ছিল; কিন্তু ওর মা-বাবা সম্পর্কটা মেনে না নেওয়ায় আমাদের মধ্যে প্রায়ই ঝগড়া হতো।
বিয়ের দুই মাসের মাথায় আমি গর্ভবতী হই; কিন্তু আমার স্বামী আমাকে দিয়ে বাচ্চাটা নষ্ট করায়। আমাকে উঠিয়ে নেয়নি। কারণ, অফিসে জানলে তার চাকরি চলে যাবে। এর পরও আমরা ভালোই ছিলাম।
হঠাৎ গত ১৬ এপ্রিল আমি পরিস্থিতির শিকার হয়ে রাগের মাথায় কাজি অফিসে গিয়ে তালাকনামায় সই করে দিই। ঘটনার পরদিনই আমার স্বামীর সঙ্গে সব সমস্যা মিটে যায়।
আমি ও আমার স্বামীর এ ঘটনার পর একাধিকবার রাত যাপন করি। আমার কাছে এর প্রমাণও আছে।
এদিকে আমি ওই তালাকনামার কথা কাউকেই বলিনি। কারণ, আমাকে বোঝানো হয়েছিল, এতে কিছুই হয়নি। কিন্তু ছয় মাস যেতে না-যেতেই আমার স্বামী জানায়, সে আর আমার সঙ্গে থাকতে পারবে না।
গত সপ্তাহে আমার পরিবার আর তার পরিবার কথা বলতে বসলে হঠাৎ তারা সেই তালাকনামা বের করে দেয়। বলে, আপনার মেয়ে তো ছয় মাস আগেই তালাক নিয়েছে।
এখন, আমার বাবা বলছেন, তালাকের কয়েক দিন পরের তারিখ দিয়ে একটি সাধারণ ডায়েরি করে মামলা করবেন। সে ক্ষেত্রে কতটুকু কী হতে পারে? আমি একটি যৌতুকের মামলা করেছি জজ কোর্টে। সেটার সমন ২০১২ সালের ২৩ অক্টোবর।
উত্তর: আপনার চিঠিতে একটি খোলা তালাকের কপি সংযুক্ত আছে। সাধারণত, স্বামী ও স্ত্রীর সম্মতিতে কোনো তালাক কার্যকর হলে তাকে ‘খোলা’ তালাক বলে। আপনার সংযুক্তির তালাকনামায় সব দাবিদাওয়া বুঝে পাওয়ার ঘোষণা আছে। চিঠির তথ্য অনুযায়ী, আপনি নিজে তালাকনামায় সই করেছেন। তা ছাড়া এ ধরনের তালাকের চুক্তিতে অন্য রকম কিছু উল্লেখ না থাকলে সাধারণত মোহরানার দায় থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। তালাক-পরবর্তী সময়ে আপনার দায়ের করা যৌতুকের মামলাটি অগ্রহণযোগ্য ও অচল।
আজকের প্রথম আলোর নকশা থেকে নেওয়া।
আর একটা শুনেন।
আমি একজন চাকরিজীবী। কাজের সূত্রে উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার বাসায় রোজ বাজারখরচ পৌঁছে দিতে হয়। তাঁর স্ত্রী আমাকে জোরপূর্বক শারীরিক সম্পর্ক করাতে চান। আমি একপর্যায়ে সম্মতি দিই। এক বছর যাবৎ এ সম্পর্ক চলছে। আমি আপত্তি করলে তিনি আমাকে মেরে ফেলার হুমকি দেন। তিনি আমাকে বিয়ে করতে বলেন। আইনি ঝামেলা তিনি মেটাবেন বলে প্রতিশ্রুতি দেন। কিন্তু আমি তাঁর তুলনায় অতি নগণ্য। চাকরিটা আমার খুব প্রয়োজন। এ ব্যাপারে আমি কী করব?
নাম ও ঠিকানা প্রকাশে অনিচ্ছুক
একজন মুসলিম নারীর স্বামী জীবিত থাকা অবস্থায় এবং স্বামী কর্তৃক তালাকপ্রাপ্ত না হয়ে অন্য কোনো পুরুষের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হলে ওই বিয়ে বাতিল বলে গণ্য হবে। এ ছাড়া বিবাহিত নারীর সঙ্গে আপনার এ ধরনের অবৈধ সম্পর্কের দায়-দায়িত্ব আপনার ওপরও বর্তায়।
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই অক্টোবর, ২০১২ রাত ১০:১০