somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

রোদেলার ক্লান্তিবোধ ও বামরাজনীতির বাম থেকে ক্রমশ চরম হয়ে উঠার প্রক্রিয়া

১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১০ সন্ধ্যা ৭:৫৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

রাজনৈতিক সংবাদ-ভাষ্যে রোদেলা খাতুন ক্লান্তিবোধ করলে ব্লগার কবি ফকির ইলিয়াস, তমিজউদ্দীন লোদী, কাজল রশীদ, আবু মকসুদ, সুশান্ত দ্রবিণ, সৈয়দ মবনু, রেজওয়ান মারুফ, শাহ শামীম আহমেদ, ফয়সাল আইয়ুব, সৈয়দ নাসির আহমেদ, এস সুলতানা, আহমদ ময়েজ, সৈয়দ হিলাল সাইফ, মুহাম্মদ কামরুল ইসলাম, কামরুল ইসলাম সুমন, লাজুক কবি কাইয়ুম আবদুল্লাহ ও আহমদ ছফা রাষ্ট্রসভার সদস্য-শুভাকাঙ্খি ফরহাদ মজহার গঙ বিপন্নবোধ করেন। প্রসঙ্গক্রমে মাজহারীয় চিন্তায় শ্রেণীসংগ্রাম তত্ত্বে চিড় ধরলে চরমপন্থী-বামের বদহজম শুরু হয়। বিশ্বরাজনৈতিক পর্যালোচনার দৃষ্টিভঙ্গি ভিন্নধারায় প্রবাহিত হলে রোদেলা খাতুনরাও মানস-কামনা নিয়ে গুটিয়ে থাকতে স্বস্তিবোধ করেন। এই প্রতিক্রিয়াটি অনেকের বোধের ভেতর রাজনীতি একটি নেতিবাচক বিষয় হয়ে দঁড়ায়।

ব্লগের ভেতর ব্যক্তি পর্যায়ে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ব্লগ রয়েছে। রাজনৈতিক ঘরানার ব্লগেও রয়েছে একই চর্চা। রাজনৈতিক-রাষ্ট্র যতই বিজ্ঞান মনস্ক-চর্চায় উৎসাহী হতে চায় ব্যক্তি-মানুষ ততই খন্ডিত চিন্তার ভেতর ক্ষুদ্র হতে থাকলেও কোনো ব্যক্তিই রাজনীতির বলয় বহির্ভূত নন, এটি একটি চরম-সত্য বলেই বিবেচনা পায়। ব্যক্তিমানুষটি রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত না হলেও তার বেড়ে উঠা কিংবা পরিবেশ রাজনীতির বাইরের জগত নয়। স্বেচ্ছায় নিজের মধ্যে একা হয়ে থাকা ভিন্ন প্রসঙ্গ। সেটি দার্শনিক কিংবা কবিদের সঙ্গে মানিয়ে গেলেও রাষ্ট্র-মানুষটির ক্ষেত্রে রাজনীতি উপেক্ষিত হতে পারে না।

উপরোক্ত মানসিকতার ভেতর ব্যক্তি থেকে রাষ্ট্র পর্যায় সংক্রামিত হলে হুমায়ুন আজাদরা আক্রান্ত হন - শিল্প-সাহিত্য-কাব্য-কলায় চিড় ধরে, ভাঙতে ভাঙতে মোহেনজোদায় বিলীন হয়ে যায়। আমরা তখন গরুখোঁজা দিয়ে ক্লান্ত হই, কে রোদেলা খাতুন আর কে ইমন সরওয়ার কিংবা অন্যান্যরা। রোদেলা খাতুনরা সংক্রামিত হয়েও টের পান না হুমায়ুন আজাদরাও প্রগতির লেবেলে থেকে অন্য এক প্রতিক্রিয়াশিলতার ভেতর বেড়ে উঠেন। নিজেরা ‘সব কিছু নষ্টদের দখলে যাবে’ - উচ্চারণ করেও প্রগলভ হতে লজ্জা লাগে না। তাদের ভাবশিস্যরা সামন্তবাদী মানসিকতার কারণেই নারীকে পণ্যভাবে, রক্ষিতা ভাবে, মানুষ ভাবতে পারে না। তখন রোদেলারা ক্লান্তিবোধ করেন না। কেন করবেন? তারা তো ক্রমশ অভ্যাসের দাস হতে পছন্দ করেন। সুশীল সমাজের একটা পস ভাষা আছে যা নিজেদের মধ্যে আলাপচারিতায় ব্যবহৃত হয়। আমাদের মতো শূদ্রদের জন্য তারা তুলে রেখেছেন অন্য এক ভাষা যা সামন্তপ্রভুকর্তৃক ব্যবহৃত হতো, হচ্ছে - ইতর, ছোটলোক, পামর, মুর্খ ইত্যাদি বলে। এসব অভিধায় যখন মানুষ রক্তাক্ত হয়, রোদেলারা তিব্বত-টেলকম পাউডারের আস্তর সরিয়ে বেরিয়ে আসতে পারেন না মানুষের কাতারে। মানুষের শোনিত-প্রবাহ তাদের বহুজাতিক কোম্পানীর পারফিউম নষ্ট হবার ভয়ই থাকে সর্বক্ষণ। ফলে আমরা প্রতিদিন হায়ওয়ান হতে থাকি, ইতর হতে থাকি, মুর্খ হতে থাকি আর তাহারা (চরমপন্থীরা-মৌলবাদীরা) অজ্ঞতায় আকণ্ঠ ডুবে থাকে।

রোদেলারা পানীয়তে আসক্তি কী না আমরা জানি না। এসব সামন্তবাদী গালি রপ্ত করতে হলে পানীয়ের সাথে (মদ) গলদঃকরণ করে উগরে দিতে হয়। ব্যক্তি মানুষটির ভেতর যে বোধশক্তি সুপ্ত থাকে পানীয়ের ক্যামিকেল শক্তি তা রোধ করে দেয় বলেই জন্মগত মানুষটির ভেতর পশুশক্তি জেগে উঠে। সে আর মানুষ থাকে না। আমরা কি প্রতিদিন পশুই হবো হায়নার সাথে হায়নার যুদ্ধ হবে বলে?

০২.
পশুশক্তির বিলুপ্তি ঘটে না। এ সর্বদা সুযোগসন্ধানী বলে একে নির্মূল করা যায় না (নির্মূল শব্দটিও চরমপন্থী মানসিকতায় মোড়া)। রূপ বদলিয়ে ভিন্নভাবে এরা প্রকাশ পায়। অনেক গণতন্ত্রমনা রাজনৈতিক দলের ছত্রছায়ায় থেকেও তাদের জঙ্গিসম্পৃক্ততা ত্যাগ করতে পারে না। জঙ্গিনেতারা আক্রান্ত হলে অন্যব্যানারে এর একটি সামাজিক চাপ তৈরি করে তাকে আইনের উর্ধ্বে নিতে সক্ষম হয় (এসব সম্ভব হয় দুর্বলরাষ্ট্র নায়কদের কারণেই)। অথচ আমরা জানি কোনো কিছুই আইনের উর্ধ্বে নয়। এই ধূর্ত-শঠদের কথা অন্য একসময় বলা যাবে - যারা এখনও আওয়ামী লীগ ও বিএনপি’র ছত্রছায়ায় ঘাপটি মেরে বসে আছে।

প্রাজ্ঞশিক্ষক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী যখন ‘বামেরও বাম আছে, যেমন ডানেরও ডান’ বিশ্লেষণে ব্যাপ্ত হন তখন এই বামের ক্রমশঃ বাম থেকে আরো বামের দিকে সরে যাওয়ার ব্যাখ্যা না করলেও ডানের সরে যাওয়াকে পর্যায়ক্রমে আরো প্রতিক্রিয়াশীল হয়ে উঠার ব্যাখ্যা করতে সক্ষম হন। কিন্তু অন্য প্রতিক্রিয়াশিলতা গোপনই থেকে যায় ‘গোকুলে বেড়ে উঠা’র মতো। বাম যে একই পদ্ধতিতে বাম থেকে বামের দিকে সরে যেতে যেতে চরমপন্থার পথে পা বাড়ায় সে খবর তিনি রাখতে অপারগ। আমার প্রিয় লেখকের এই খন্ডিত বিশ্লেষণ রোদেলাকে পীড়িত না করলেও প্রজন্মের কাছে তা প্রশ্নবিদ্ধ হয়। প্রশ্নটি তুলে আনতে পারাই সকেলর কর্ম হোক। রোদেলাদের ক্লান্তিও দূর হোক। রোদেলার সময় নিজের সহায়শক্তিরূপে আবির্ভূত হোক এই বাসনা থাকলো।
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১০ রাত ৯:১৯
৮টি মন্তব্য ৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আইনের ফাঁকফোকর-০৩

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৪২

যেকোনো চাকরির নিয়োগের পরীক্ষা চলছে। সেটা পাবলিক সার্ভিস কমিশন, বিভিন্ন সংস্থা, বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক বা উপজেলা পর্যায়ের কোনো কার্যালয়ে হতে পারে। এই নিয়োগ পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁস হতে পারে। একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

গল্পঃ অনাকাঙ্ক্ষিত অতিথি

লিখেছেন ইসিয়াক, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ দুপুর ১:১২

(১)
মাছ বাজারে ঢোকার মুখে "মায়া" মাছগুলোর উপর আমার  চোখ আটকে গেল।বেশ তাজা মাছ। মনে পড়লো আব্বা "মায়া" মাছ চচ্চড়ি দারুণ পছন্দ করেন। মাসের শেষ যদিও হাতটানাটানি চলছে তবুও একশো কুড়ি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগে বিরোধী মতের কাউকে নীতি মালায় নিলে কি সত্যি আনন্দ পাওয়া যায়।

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১৮

ব্লগ এমন এক স্থান, যেখানে মতের অমিলের কারণে, চকলেটের কারণে, ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শের কারণে অনেক তর্কাতর্কি বিতর্ক কাটা কাটি মারামারি মন্তব্যে প্রতিমন্তব্যে আঘাত এগুলো যেনো নিত্য নৈমিত্তিক বিষয়। ব্লগটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

সিকান্দার রাজার চেয়ে একজন পতিতাও ভালো।

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ৮:০৭

সিকান্দার রাজা কোকের বোতল সামনে থেকে সরিয়ে রাতারাতি হিরো বনে গেছেন! কিন্তু তাকে যারা হিরো বানিয়েছেন, তারা কেউ দেখছেন না তিনি কত বড় নেমকহারামি করেছেন। তারা নিজেদেরকে ধার্মিক বলে দাবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগার'স ইন্টারভিউঃ আজকের অতিথি ব্লগার শায়মা

লিখেছেন অপু তানভীর, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ১১:০৫



সামুতে ব্লগারদের ইন্টারভিউ নেওয়াটা নতুন না । অনেক ব্লগারই সিরিজ আকারে এই ধরণের পোস্ট করেছেন । যদিও সেগুলো বেশ আগের ঘটনা । ইন্টারভিউ মূলক পোস্ট অনেক দিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×