ইভ টিজিং ম্যানিয়ায় পেয়ে বসেছে পুরো জাতিকে। দেশ জুড়ে চষে বেড়াচ্ছে ভ্রাম্যমণ আদালত। ইভ টিজিং হলেই ১ বছরের কারাদ- দিচ্ছে আদালত। যেন আদালতের সামনে কোনো ইভ টিজার একবার বলে কয়ে পড়লে হয়. লাল দালানে ১ বছর খোরাকিসহ বসবাসের নিশ্চয়তা!! এ প্রসঙ্গে মনে পড়ছে ১/১১ পরবর্তী অবৈধ স¤ক্সদ অর্জনের অভিযোগে বিচার এবং দণ্ডের কথা। বিপুল পরিমাণ জরিমানা সহ ১৩ বছরের জেল ছিল নিয়মিত ব্যাপার। ফলে কারও বিরু™দ্ধে ওই সময় অভিযোগ হলে আমরা ধরেই নিতে হত ১৩ বছরের জেলের ঘানি নিশ্চিত।
যেমনটি ঘটছে ইভ টিজারদের ক্ষেত্রে। স¤ম্প্রতি ঢাবির আওতাধীন একটি স্কুলের এক শিক্ষকের পরীক্ষার হলে ইভ টিজিংয়ের অভিযোগে এক বছরের কারাদণ্ড হল। বিষয়টি মিডিয়া দারুন খেয়েছে। পরীক্ষার হলে একজন শিক্ষক কী ধরনের টিজ করতে পারে যার জন্য ১ বছরের জেল হয়, তা আমার মাথায় ঢুকছে না। অদ্ভুদ ব্যাপার। ওই শিক্ষকের বিরু™দ্ধে অভিযোগ হল:
১. তিনি ওই শিক্ষার্থীর দিকে বার বার তাকাচ্ছিলেন
২. তার কাছে গিয়ে দাঁড়িয়েছিলেন।
৩. এবং অভিযোগকারী ছাত্রীর ভাষ্যমতে, তাকে আপত্তিকর কথা বলছিলেন।
এখন প্রশু হচ্ছে, যে মেয়েটিকে ওই শিক্ষক এর আগে কোনো দিন দেখেননি। তাকে কেন তিনি প্রথমেই আপত্তিকর ইঙ্গিত করতে যাবেন? এটাতো পাড়ার চরম বখাটের যে কোনো মেয়ে দেখে শিষ দেওয়ার মতো ঘটনা। আর পরীক্ষার হলে শ’ শ’ শিক্ষার্থীর সামনে এটা কি আদৌ সম্ভব ???? আর তা কি একজন সজ্ঞান শিক্ষকের বেলায় গ্রহণযোগ্য বাস্তøব? মজার ব্যাপার হচ্ছে, ওই শিকের বিরু™দ্ধে বড় অভিযোগ, ‘তিনি মাদ্রাসা থেকে পাশ করেছেন এবং এর আগেও একই ধরনের অপরাধ একাধিকবার করেছিলেন এবং এজন্য তাকে সতর্ক করা হয়েছিল’-এমনটি বলছে সংশিè®দ্ব স্কুল কর্তৃপক্ষ। তাহলে কি তার এই শাস্তি পূর্ব পাপের প্রায়শ্চিত্যের জন্য, ওই মেয়েটিকে উত্যক্ত করা স্রেফ আইওয়াশ!!!! তবে কি এমন প্রশুও জাগে না , স্কুলের কেউ ব্যক্তিশত্রুতাকে চরিতার্থ করতে কাঙ্ক্ষিত সময়ে উপযুক্ত সুযোগের সদব্যবহার করছেন? মাদ্রাসা পড়া কি অন্যায় ?? কিন্তু একথা তো সবাই জানি, ঢাকা বিশ্ব্বদ্যালয় কিংবা জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ব্বদ্যালয়ে ছাত্রী যৌন নিপীড়নের অসংখ্য ঘটনা বাতাসে বুক ফুলিয়ে ওড়ে। সেসব ঘটনা সব সময় থাকে ধরা-ছোঁয়ার বাইরে। এ পর্যšø একজন অভিযুক্ত শিকের শাস্তিও কি নিশ্চিত করা গেছে? না, যায়নি!!! [এই দেশে সবই সল্ফ¢ব]।
এ কথার মানে কখনোই এমনটি নয় যে, আমি টিজারদের সমর্থক। তাদের দুধের বাচ্চা বলে মা করার কথা বলছি। ইভ টিজারদের অবশ্যই শাস্তি হওয়া উচিত। অধিকাংশ সময় এসব টিজাররা টিজিংয়ের আরিক অর্থ ছাড়িয়ে যৌন নিপীড়ন সহ বাধাদানকারীকে হত্যা করতেও পিছপা হচ্ছে না। ফলে তাদের অবশ্যই শাস্তি হতে হবে। তা সব সময় ১ বছর নয়। অপরাধের মাত্রা অনুযায়ী বেশিও হতে পারে। তবে এটাও লক্ষ্য রাখতে হবে যেন , নিরপরাধ কোনো ব্যক্তি যেন হয়রানির শিকার না হয়। কেননা এই অদালতের সহায়তায় অনেক মেয়ে এমনকি অনেক অভিভাবক তার মেয়েকে টিজিংয়ের অজুহাতে তার শত্রুকে[যে নিরপরাধ] বিচারের মুখোমুখি করতে পারে। এতে করে ওই নিরপরাধ ব্যক্তির জীবনে বড় ধরনের বিপর্যয় নেমে আসতে পারে। যেমনটি দেখছি ওই শিক্ষকের বেলায়। তিনি যদি সত্যি অপরাধী হন তবে কথা থাকে না। আর যদি না হন, তবে তিনি কি তার চাকরি টা ফেরত পাবেন ?? তার যে সম্মানহানী হল তা কি ফেরত পাবেন???? কিছু প্রশ্নেরই যেন জন্ম হয়, চিরকাল উত্তরহীন প্রশ্ন হয়েই !!!!
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে নভেম্বর, ২০১০ বিকাল ৫:৩৩