somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নগ্নবেলা

১৩ ই জানুয়ারি, ২০১০ রাত ৯:১২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

কিস্তি-১

সেল ফোনের রিং বাজছে।
অদ্ভুত রিং টোন। বেশ কর্কশ। কানের কুহরে আছড়ে পড়ছে। যেন হাতুড়ি পেটানোর প্রতিযোগিতা চলছে। খুব পছন্দের রিং টোন। অথচ এমন কর্কশ ও বিরক্তিকর লাগছে কেন বুঝতে পারছে না অহনা।
আহাম্মক না হলে এত সকালে কেউ ফোন করে?
আচ্ছা এটা কত নম্বর আহাম্মক! শুনেছি দশ ধরনের আহাম্মক আছে। যেমন- আহাম্মক নম্বর এক, ছোট হয়ে বড়’র সঙ্গে যে দেয় ঠেক। আহাম্মক নম্বর দুই, পরের পুকুরে যে ছাড়ে রুই। আহাম্মক নম্বর তিন, বড় হয়ে ছোট’র কাছে যে করে ঋণ। আহাম্মক নম্বর চার, ঘরের কথা যে করে বার। আহাম্মক নম্বর পাঁচ, সীমানায় যে লাগায় গাছ। আহাম্মক নম্বর ছয়, স্ত্রী’র কাছে যে মর্ম কথা কয়। আহাম্মক নম্বর সাত, স্ত্রী’র সঙ্গে রাগ করে যে না খায় ভাত। আহাম্মক নম্বর ...।
না, আর মনে করতে পারছে না সে। চোখ দু’টো বেশ ঘুমে কাতর।
ঘুমের ঘোরে এটা কত নম্বর আহাম্মক ঠিক করতে পারে না অহনা। তবে সে নিশ্চিত এটা বড় ধরনের আহাম্মক।
সেল ফোনটা কিছুক্ষণের জন্য মুখে তালা দিয়েছে। এখন আর গর্জন করছে না। যাক, এবার নিশ্চিন্তে আরও একটু ঘুমানো যায়। আড়মোড়া ভেঙে পাশ ফিরে শোয় অহনা। কোলবালিশটা বুকে চেপে ধরে একটি পা উঠিয়ে দেয় তার ওপর। ঘুমে ভেঙে আসে চোখ। আবারও চিৎকার করে ওঠে সেল ফোনটা। সেই বেসুরা কর্কশ কণ্ঠ। চরম বিরক্তি নিয়ে চোখ না খুলেই এক হাত বাড়িয়ে ফোনটাকে কানের ফুটোয় চেপে ধরে অহনা। ঘুম কাতুরে অস্পষ্ট জড়ানো কণ্ঠে উচ্চারণ-
হ্যা...লো...।
অপর প্রান্ত থেকে ভেসে আসে- কেমন আছো?
জড়ানো কণ্ঠে অহনা জানতে চায়- কে বলছেন?
আমি।
আমি কে?
আমি, আমি।
আমি তো বুঝলাম, কিন্তু আমিটা কে?
তোমার শুভাকাঙ্ক্ষী।
ও আচ্ছা।
যাক চিনতে পেরেছো তাহলে?
হ্যাঁ।
বলো তো কে?
মেজাজটা সপ্তমে চড়ে গেল অহনার। ইচ্ছে করছে সেলটা ছুঁড়ে ফেলে দেয়। আর লোকটাকে হাতের কাছে পেলে কষে বাম হাতের একটা চড়। এ ধরনের লোককে ডান হাতে চড় দেয়া অপমানজনক। এ সময় অপর প্রানত্ম থেকে প্রশ্ন-
কই বললে না তো আমি কে?
মুখ বিকৃত করে দাঁত চিবিয়ে অহনা বলে- আহাম্মক নম্বর নয়।
মানে?
সাত সকালে সেল ফোনে যেজন কথা কয়, সেই ব্যাটা অবশ্যই আহাম্মক নম্বর নয়।
আরে বাহ! ওয়ান্ডারফুল। ব্র্যাভো মাই হার্ট। যথার্থ উপমা দিয়েছ।
এটুকুতেই এত বাকবাকুম? আরও আছে।

সেল ফোনটা কিছুক্ষণের জন্য মুখে তালা দিয়েছে। এখন আর গর্জন করছে না। যাক, এবার নিশ্চিন্তে আরও একটু ঘুমানো যায়। আড়মোড়া ভেঙে পাশ ফিরে শোয় অহনা। কোলবালিশটা বুকে চেপে ধরে একটি পা উঠিয়ে দেয় তার ওপর। ঘুমে ভেঙে আসে চোখ। আবারও চিৎকার করে ওঠে সেল ফোনটা। সেই বেসুরা কর্কশ কণ্ঠ। চরম বিরক্তি নিয়ে চোখ না খুলেই এক হাত বাড়িয়ে ফোনটাকে কানের ফুটোয় চেপে ধরে অহনা। ঘুম কাতুরে অস্পষ্ট জড়ানো কণ্ঠে উচ্চারণ-
হ্যা...লো...।
অপর প্রান্ত থেকে ভেসে আসে- কেমন আছো?
জড়ানো কণ্ঠে অহনা জানতে চায়- কে বলছেন?
আমি।
আমি কে?
আমি, আমি।
আমি তো বুঝলাম, কিন্তু আমিটা কে?
তোমার শুভাকাঙ্ক্ষী।
ও আচ্ছা।
যাক চিনতে পেরেছো তাহলে?
হ্যাঁ।
বলো তো কে?
মেজাজটা সপ্তমে চড়ে গেল অহনার। ইচ্ছে করছে সেলটা ছুঁড়ে ফেলে দেয়। আর লোকটাকে হাতের কাছে পেলে কষে বাম হাতের একটা চড়। এ ধরনের লোককে ডান হাতে চড় দেয়া অপমানজনক। এ সময় অপর প্রান্ত থেকে প্রশ্ন-
কই বললে না তো আমি কে?
মুখ বিকৃত করে দাঁত চিবিয়ে অহনা বলে- আহাম্মক নম্বর নয়।
মানে?
সাত সকালে সেল ফোনে যেজন কথা কয়, সেই ব্যাটা অবশ্যই আহাম্মক নম্বর নয়।
আরে বাহ! ওয়ান্ডারফুল। ব্র্যাভো মাই হার্ট। যথার্থ উপমা দিয়েছ।
এটুকুতেই এত বাকবাকুম? আরও আছে।
তাই নাকি? বলো তো শুনি।
আপনি একটা বেহায়া। বিশ্ববেহায়া। অপদার্থ। উল্লুক। ভল্লুক। আর...
আর...
তেল্লাচোরা। আপনি একটা তেল্লাচোরা।
সেটা আবার কি জিনিস?
যে প্রাণীটাকে আমি সবচেয়ে ঘৃণা করি। এতই ঘৃণা করি যে নাগালে পেলে লাত্থি দিয়ে উল্টে দেই।
কেন, উল্টে দাও কেন?
আরে বেক্কল ব্যাটা উল্টে দিলেই তো ওইটার বাহাদুরি শেষ। আর সোজা হতে পারে না। হাত-পা ছড়িয়ে খালি তড়পায়। আমি তখন প্রাণ খুলে হাসি। খুব মজা পাই।
কিন্তু প্রাণীটা এখনও চিনলাম না।
তোমার মতো কাপুরুষের জন্য ওটা জরম্নরি নয়।
আরে বাহ! আপনি থেকে তুমি! বেশ সাহসী হয়ে উঠছো দেখছি। এই তো চাই।
সাহসের দেখেছিস কি? আর চাইছিস যখন, তখন একবার সামনে আয়। তোর জন্য কনিষ্ঠ আঙুলের একটা টিপই যথেষ্ট।
মাঝে মাঝে তুমি এমন ঐচ্ছিক ভাষায় কথা বলো যে, আগামাথা কিছুই বুঝি না। একটা টিপ যথেষ্ট মানে?
আরে ব্যাটা ছাড়পোকা মারতে কি কেউ দুই টিপ দেয়?
আরে বাহ! এ জন্যই তোমাকে আমার এত ভাল লাগে। তুমি যা উপমা দাও না! সত্যি, বিলকুল লা-জবাব! তবে হ্যাঁ, তুমি চাইলে ছাড়পোকা হতেও আমার বিন্দুমাত্র আপত্তি নেই। কারণ মারা পড়ার আগে অন্তত তোমার রক্তের স্বাদ তো পাবো।
অহনা হতভম্ব। কিংকর্তব্যবিমূঢ়। কিছুটা হতাশও। একি রক্তে মাংসে গড়া মানুষ? নাকি রোবট। লাজ-লজ্জা বলে কিছুই নেই!
ধৈর্যের বাধ ভেঙে যায় তার। মাথায় দাউ দাউ দাবাগ্নি। কি ভীষণ ঘৃণা, ক্রোধ, হিতাহিত জ্ঞানশূন্য। সকাল বেলার এমন মধুময় ঘুমে ব্যাঘাত ঘটার কষ্টে তার চোখে জল।
লোকটির সঙ্গে আর কথা বলতে ইচ্ছে হয় না। লাইন চালু রেখে হাত থেকে বিছানার ওপর ছুড়ে মারে ফোনটি। মনে মনে বলে- নে ব্যাটা, এবার যত পারিস বক বক কর। দেখি তোর মোবাইলে কত ব্যালেন্স আছে।
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই মার্চ, ২০১০ সন্ধ্যা ৬:১৭
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হাদির হত্যাকান্ড ও সরকারের পরবর্তি করণীয়!

লিখেছেন আহলান, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:৫১

হাদির প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা। সে দেশকে ভালোবেসে, দেশের মানুষকে ইনসাফের জীবন এনে দিতে সংগ্রাম করেছে। তাকে বাঁচতে দিলো না খুনিরা। অনেক দিন ধরেই তাকে ফোনে জীবন নাশের হুমকি দিয়ে এসেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মব রাজ্যে উত্তেজনা: হাদির মৃত্যুতে রাজনৈতিক পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৪২

রোম যখন পুড়ছিল নিরো নাকি তখন বাঁশি বাজাচ্ছিল; গতরাতের ঘটনায় ইউনুস কে কি বাংলার নিরো বলা যায়?



বাংলাদেশ প্রেক্ষাপটে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পদটি সবসময় ছিল চ্যালেঞ্জিং।‌ "আল্লাহর... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্টেরিম সরকারের শেষদিন : গঠিত হতে যাচ্ছে বিপ্লবী সরকার ?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:২২


ইরাক, লিবিয়া ও সিরিয়াকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার আন্তঃদেশীয় প্রকল্পটা সফল হতে অনেক দিন লেগে গিয়েছিল। বাংলাদেশে সে তুলনায় সংশ্লিষ্ট শক্তিসমূহের সফলতা স্বল্প সময়ে অনেক ভালো। এটা বিস্ময়কর ব্যাপার, ‘রাষ্ট্র’... ...বাকিটুকু পড়ুন

মব সন্ত্রাস, আগুন ও ব্লাসফেমি: হেরে যাচ্ছে বাংলাদেশ?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৩:৫২


ময়মনসিংহে হিন্দু সম্প্রদায়ের একজন মানুষকে ধর্মীয় কটূক্তির অভিযোগে পুড়িয়ে মারা হয়েছে। মধ্যযুগীয় এই ঘটনা এই বার্তা দেয় যে, জঙ্গিরা মবতন্ত্রের মাধ্যমে ব্লাসফেমি ও শরিয়া কার্যকর করে ফেলেছে। এখন তারই... ...বাকিটুকু পড়ুন

তৌহিদি জনতার নামে মব সন্ত্রাস

লিখেছেন কিরকুট, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৪




ছবিঃ অনলাইন থেকে সংগৃহীত।


দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রতিক সময়ে ধর্মের নাম ব্যবহার করে সংঘটিত দলবদ্ধ সহিংসতার ঘটনা নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে তৌহিদি জনতা পরিচয়ে সংঘবদ্ধ হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×