আজকাল ফ্রিলায়েন্সার বা ফ্রিলায়েন্সিং শব্দ দুটি নিয়ে মাতামাতি হচ্ছে নানা কারনে। আউটসোর্সিং করে ফ্রিলায়েন্সিং এর কাজ করে ঘরে বসে আয় করার হরেক রকম রকমারি বিজ্ঞাপন আজ হর হামেশাই আমাদের নজরে পড়ে। আসলে এগুলি কি, বা এইসব বিজ্ঞাপনের আড়ালে কি হচ্ছে তা আমরা অনেকেই জানিনা। আবার এইসকল চটকদার বিজ্ঞাপনের ধোকায় পড়ে প্রতারনার স্বীকার হয়ে অনেকে আবার ধরেই নিয়েছেন এইগুলি সব বাটপারি ব্যাবসা। আবার ইদানিং অনেক পিটিসি কোম্পানী নিজেদেরকে আউটসোর্সিং কোম্পানী বলে দাবী করে অনেকের মনে এই ধারনার জন্ম দিতে সক্ষম হয়েছেন যে আউটসোর্সিং অথবা ফ্রিলায়েন্সিং মানে হচ্ছে এমএলএম কোম্পানী। এইসকল ধারনার উপরই বর্তমানে আমাদের দেশের আউটসোর্সিং জগতের অনেকটাই দখল করে আছে। আসলে বাস্তবে কি তাই ??
আসলে তা না, এ ব্যাপারে জনসচেতনতা সৃষ্টির জন্য ইতিমধ্যে দেশের পত্র পত্রিকায় অনেক লেখা লেখি হচ্ছে এবং বিভিন্ন সেমিনার সিম্পোজিয়ামে দেশের খ্যাতনামা ফ্রিলায়েন্সার রা অনেক গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য দিয়ে আমাদের মনের ভুল ধারনা গুলোর অনেকটাই দূর করতে সক্ষম হয়েছেন। যারা এখনো ভূলের স্বর্গেই বাস করছেন তারাও আশা করি খুব সীঘ্রই বাস্তব জগতে ফিরে আসবেন এবং ফ্রিলায়েন্সার হিসাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে আগ্রহী হবেন।
ফ্রিলায়েন্সিং কি ?
প্রথমেনি বলে নেই, ফ্রিলায়েন্সিং বিষয়টা আসলে কি ? ফ্রিলায়েন্সিং মানে হল মুক্ত পেশা। অর্থাৎ মুক্ত বা স্বাধীন ভাবে কাজ করার সুযোগ। আমরা আমাদের প্রাত্যহিক জীবনে জীবন ধারনে তাগিদে অফিস আদালতে বা যার যার কর্মক্ষেত্রে যে কাজগুলো করি, বর্তমান ভার্চুয়াল জগতে এই কাজগুলিই কোন অফিসিয়াল পরিবেশ ছাড়াই যেকোন স্থান থেকেই করা যায়। যেমন ধরুন একজন ডিজাইনার তার অফিসের বা কোম্পানীর যাবতীয় ডিজাইনের কাজ গুলো করে থাকেন এবং এর জন্য তিনি মাস শেষে মাইনে নেন। ঠিক এই কাজটিই অপর একজন ব্যাক্তি কোন বেতনভুক্ত ডিজাইনার না রেখেই করতে পারেন একজন ভার্চুয়াল ওয়ার্কার দিয়ে। অনলাইনে তিনি সেই ওয়ার্কারকে কাজটি করার অর্ডার দিবেন, কাজ করে ওয়ার্কার ঐ ব্যাক্তিকে কাজটি বুঝিয়েও দিতে পারেন অনলাইনের মাধ্যমে। কাজ বুঝে পেলে তিনি ওয়ার্কারকে কাজের বিনিময় বুঝিয়ে দেনও অনলাইনের মাধ্যমে। এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে কাজ করাকেই বলে আউটসোর্সিং। এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে যে কোন ধরনের কাজ করা যায়। অর্থাৎ যে ব্যাক্তি যে বিষয়ে দক্ষ সে বিষয়েই কাজ করে ভার্চুয়াল জগত থেকে উপার্যন করতে পারেন বাড়তি অর্থ। এই প্রক্রিয়ায় কোন এমএলএম প্রক্রিয়াতো নাইই এমনকি এই কাজ পেতে কোন প্রকার অর্থও দেয়া লাগে না। অর্থাৎ আপনি যে কোন একটি বষয়ে নিজেকে দক্ষ করে তুলোন, তারপর সেই কাজের উপর মার্কেটপ্লেস থেকে কাজ নিয়ে কাজ করে ঘরে বসেই বাড়তি আয় করতে পারেন।
এবার আসা যাক আমাদের মূল বিষয়ে। আজ এই লেখার মাধ্যমে সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন নিয়ে কথা বলব। সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন বা এসইও হল বিপনণ ব্যাবস্থার একধরনে উন্নত তর ভার্সন বলতে পারেন। সাধারনত বিপনন বা মার্কেটিং বলতে আমরা বুঝি কোন পণ্যের বাজরজাত করার জন্য মার্কেটে বা বিভিন্ন জায়গায় মানুষের কাছে ঐ পণ্যের গুনগত মান সহ ইত্যাদি বিষয় বুঝিয়ে পন্যের বিপনন বৃদ্ধি করা। আর এসইও এর মাধ্যমে এই কাজটি করা যায় বিশ্বব্যাপী, আরো বৃহৎ পরিসরে সুন্দর ও সহজ উপায়ে।
একটু সহজ করে বলি। আধুনিক বিশ্বে প্রায় প্রতিটি কোম্পানী তাদের প্রতিষ্ঠানের প্রচারের একটি বিকল্প ব্যাবস্থা হিসাবে নিজস্ব ওয়েবসাইটের মাধ্যমে পণ্যের গুনাগুন সহ বিভিন্ন দিক বিশ্বব্যাপী প্রচার করার চেষ্টা করে থাকেন। এই প্রক্রিয়ায় সহজে এবং অল্প সময়ে বিশ্বব্যাপী মানুষের কাছে পণ্যের প্রচার করা সম্ভব। এই প্রক্রিয়াটাকেই আরও দ্রুততর এবং সহজ করে দেয় এসইও। অর্থাৎ এসইও করার মাধ্যমে যে কোন সাইটকে বিশ্বব্যাপী জনপ্রীয় করে তোলা যায় এবং প্রচারের দিক থেকে সামনের সাড়ির ওয়েবসাইট হিসাবে পরিচিত করে তোলা যায়। তাই এই কাজের জন্য অনেক বড় বড় কোম্পানী তাদের ওয়েবসাইটের এসইও করার জন্য লক্ষ লক্ষ টাকা ব্যায় করেন। কারন যে ওয়েবসাইট যত বেশী জনপ্রিয় সেই সাইটের পাঠক বেশী তাই প্রচারও হয় বেশী।
কিভাবে করবেন এসইও ?
আমাদের দেশে দক্ষ জনশক্তির তুলনায় অদক্ষ জনশক্তির পরিমানই বেশি। যাদের কম্পিউটার সম্পর্কে সাধারন ধারনা আছে, ইংরেজীতে মোটামোটি পারদর্শী, ওয়েবসাইট ভিজিট করতে স্বাচ্ছন্দ বোধ করেন তারা অতি সহজে এসইও এর কাজে পারদর্শী হতে পারেন। কোন প্রোগ্রামিং ভাষা জানার তেমন দরকার নাই বিধায় এই কাজ অতি সহজে রপ্ত করে দ্রুত কাজ শুরু করা যায় বলে বিশ্বব্যাপী এই কাজে নিয়োজিত আছেন লক্ষ লক্ষ মানুষ। আমাদের দেশেও হাজার হাজার তরুন-যুবা এসইও'র কাজ করে বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয় মার্কেটপ্লেস গুলোতে বেশ জনপ্রীয়তা অর্জন করেছে। পাশাপাশি দক্ষতার পরিচয় দিয়ে বিশ্বব্যাপী নজর কাড়তে সক্ষম হয়েছে।
কোথায় শিখবেন এসইও ?
আমাদের দেশে ইতিমধ্যে বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান প্রফেশনাল ভাবে এসইও'র কাজ শিখাচ্ছে। তাই ভাল করে খোজ খবর নিয়ে এদের যেকোনটিতেই শিখতে পারেন এসইও'র কাজ। প্রায় সবগুলো প্রতিষ্ঠানেই এক থেকে দুই মাসের মধ্যে এসইও'র কোর্সগুলো করিয়ে থাকে। সুতরাং আর দেরী না করে আজই কোন একটি প্রতিষ্ঠানের সাথে যোগাযোগ করে আপনার ক্যারীয়ারে ভিন্ন স্বাদ আনতে ফ্রিলায়েন্সার হিসাবে নিজেকে গড়ে তুলতে এসইও'র উপর নিজেকে দক্ষ করে গড়ে তুলুন।
আজ এ পর্যন্তই। আগামীতে এ সম্পর্কে আরও যে যে বিষয়ে ফ্রিলায়েন্সিং করে ভাল করা যায় সেই বিষয়ে লিখব ইনশাআল্লাহ।
এ সম্পর্কে আরও বিস্তারিত জানতে আমাকে লিখতে পারেন এই ইমেইল ঠিকানায় : [email protected],
web : নিউট্রন আইসিটি http://wwwtheoutsourcingbd.blogspot.com,
ফেইসবুকে পাবেন : https://www.facebook.com/neutronict, SEO ইস্কুল
অথবা ফোন করতে পারেন এই নাম্বারে : ০১৬১৬ ৩৬৩২১৯, ০১৮৩৬ ৩৬৩২১৯
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই জুন, ২০১২ দুপুর ১:৫৩