somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নানামুখী সংকটে জর্জরিত শালবন বিহার : দর্শনার্থীদের নিরাপত্তা নাজুক

১৯ শে নভেম্বর, ২০১২ দুপুর ১:৩৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


ব্যাংক ও ট্যাংকের শহর হিসেবে সুপরিচিত দেশের প্রাচীর শহর কুমিল্লার দর্শনীয় স্থানগুলোর মধ্যে কোটবাড়ির ময়নামতির শালবন যাদুঘর অন্যতম। কুমিল্লা শহর থেকে প্রায় ৬ মাইল পশ্চিমে কোটবাড়ির ময়নামতিতে শালবন বিহার অবস্থিত। এই ঐতিহাসিক শালবন বিহার ও ময়নামতি জাদুঘরে প্রতিদিন হাজার হাজার দেশি-বিদেশী পর্যটকের সমাগম হচ্ছে। ফলে টিকেট বিক্রি ,বুকলেট বিক্রি ,গাড়ি পার্কি, পিকনিক স্পট,বিশ্রামাগার বাবদ প্রতিদিন প্রচুর অর্থ আয় হচ্ছে, ফলে সরকারের রাজস্ব আয়ও দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এদিকে শালবন বিহার ও ময়নামতি জাদুঘরে লোকবল সংকট রয়েই গেছে। গত ৫ বছর ধরে অনেকগুলো কর্মকর্তা-কর্মচারীর পদ শূন্য রয়েছে এই প্রতœতত্ব অঞ্চলটিতে। যার ফলে সার্বিক কাজকর্মে ব্যাঘাত সৃষ্টি হচ্ছে। এদিকে যাতায়াত ও পর্যাপ্ত সংখ্যক লোকবলের অভাবে নিরাপত্তা সুবিধা পুরোপুরি পাচ্ছে না দর্শনার্থীরা। তাছাড়া প্রায় সময়ই যাদুঘরে ও বিহারে প্রবেশ নিয়ে সংর্ঘষের ঘটনা হচ্ছে। বিগত ৫ অর্থবছরে শালবন বিহার ও ময়নামতি জাদুঘরে রাজস্ব আয় হয়েছে ১ কোটি ৯২ লক্ষ ৫৯ হাজার ৭৯৬ টাকা। এর মধ্যে ২০১০-১১ অর্থবছরের অর্থাৎ ২০১০ সালের জুলাই মাস থেকে ২০১১ সালের জুন মাস পর্যন্ত শালবন বিহার ও ময়নামতি জাদুঘরে রাজস্ব আয় হয়েছে ৫৫ লক্ষ ১৭ হাজার ৬৯৭ টাকা। ২০০৯-১০ অর্থবছরে শালবন বিহার ও ময়নামতি জাদুঘরে রাজস্ব আয় হয়েছিল ৫০ লক্ষ ৭ হাজার ৮৬ টাকা। ২০০৮-০৯ অর্থবছরে রাজস্ব আয় হয়েছিল ৪২ লক্ষ ১৮ হাজার ৮শ টাকা। ২০০৭-০৮ অর্থবছরে রাজস্ব আয় হয়েছিল ২৬ লক্ষ ২৪ হাজার ১৬ টাকা এবং ২০০৬-০৭ অর্থবছরে ১৮ লক্ষ ৯২ হাজার ১শ ৯৬ টাকা রাজস্ব আয় হয়েছিল। রাজস্ব আয়ের মধ্যে শালবন বিহার ও ময়নামতি জাদুঘরের প্রবেশ মূল্য,ভ্রমণে আসা পর্যটকদের বহরকারী গাড়ি পার্কিং,প্রকাশনা সামগ্রী বিক্রি, পিকনিক স্পট, শুটিং ফি ও বিশ্রামাগার ফি।

২০১০-১১ অর্থবছরের ২০১০ সালের জুলাই মাস থেকে চলতি বছরের জুন মাস পর্যন্ত বিহার ও জাদুঘরে প্রবেশ ফি বাবদ ৫০ লক্ষ ৬৯ হাজার ৫শ টাকা আয় হয়েছে, প্রকাশনা সামগ্রী বিক্রি বাবদ ১৯ হাজার ৭৭৫ টাকা টাকা আয় হয়েছে, গাড়ি পার্র্কিং বাবদ ২ লক্ষ ৯১ হাজার ৩ শ টাকা আয় হয়েছে, শুটিং ফি বাবদ ৩ হাজার, ভ্যাট বাবদ ৫৪ হাজার ৩৩১ টাকা, বিশ্রামাগার বাবদ ৭৮০ টাকা ,দরপত্র দলিলাদি বাবদ ১১ হাজার ১০০ টাকা, নিলাম, ইজারা বাবদ ৬৭ হাজার ৯১০ টাকা আয় হয়েছে। এর মধ্যে ১১ ফেব্র“য়ারী ৭৬ হাজার টাকা ও ১৪ ফেব্র“য়ারী ৬৯ হাজার টিকিট বিক্রি হয়েছে বলে জাদুঘর কর্তৃপক্ষ জানায়। জাদুঘরে ও বিহারে পৃথকভাবে বাংলাদেশসহ সার্কভুক্ত ৭টি দেশের জনগণের জন্য প্রবেশ ফি ১০ টাকা, বিশ্বের অন্যান্য দেশের দর্শনার্থীদের জন্য ১০০ টাকা, বাস পার্কিং বাবদ ১১৫ টাকা, মাইক্রোবাস র্পাকিং বাবদ ৫৭ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। ২০১১-১২ অর্থবছরে শালবন বিহার ও জাদুঘরে ৪ লক্ষ ৯৭ হাজার ৫ জন, ২০১০-১১ অর্থবছরে ৪ লক্ষ ৫৬ হাজার ৩২১ জন এবং ২০০৮-০৯ অর্থবছরে ৩ লক্ষ ৮৬ হাজার ৪৩১ জন দর্শনার্থী প্রবেশ করেছে। সূত্রমতে,

কুমিল্লা শালবন বিহারে প্রতিদিনই দর্শনার্থীদের ঢল নামলেও উল্লেখযোগ্যহারে দর্শনার্থীদের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছেনা। এর কারণ হিসেবে জানা যায়, কোটবাড়ি থেকে শালবন বিহারে যাতায়াতরত রাস্তাটি এবড়ো-থেবড়ো হয়ে গেছে, এই রাস্তায় চলাচল করতে গিয়ে যানবাহনের বেশ বেগ পেতে হয়। তাছাড়া বার্ডের সামনে থেকে বিহারে যাওয়ার আধা ঘন্টা রাস্তায় যেতে অটো সিএনজির ভাড়া অনেক বেড়ে গেছে। ফলে অধিক ভাড়ার জ্বালা পোহাতে হয় দর্শনার্থীদের।

কিন্তু শালবন বিহার ও ময়নামতি জাদুঘর এলাকায় জনবল সংকট রয়েই গেছে। গত ৫ বছর ধরে অনেকগুলো কর্মকর্তা-কর্মচারীর পদ শূন্য রয়েছে এই প্রতœতত্ব অঞ্চলটিতে। যার ফলে সার্বিক কাজকর্মে ব্যাঘাত সৃষ্টি হচ্ছে। শালবন বিহার ও ময়নামতি জাদুঘর এলাকায় কাস্টোডিয়ানের পদটি শূন্য থাকায় সহকারী কাস্টোডিয়ান (৮ বছর ধরে এখানে অবস্থান করছেন) তার দায়িত্বও পালন করছেন।

দর্শনাথীদের মতে,বনবিভাগের ভূমিতে পিকনিক স্পট এবং জাদুঘরের পার্শ্ববর্তী ২০ টি প্রতœতত্ব মুড়ায় যাতায়াত সর্ম্পকে সঠিক দিক নির্দেশনা থাকলে কিংবা প্রতœতত্ব অধিদফতর গাড়ির ব্যবস্থা করলে এবং ওই সব স্থানগুলোতে যথাযথ নিরাপত্তার ব্যবস্থা করলে রাজস্ব আয় আরো বাড়তো। যাতায়াত ও পর্যাপ্ত সংখ্যক লোকবলের অভাবে নিরাপত্তা সুবিধা পুরোপুরি পাচ্ছে না দর্শনার্থীরা। তাছাড়া প্রায় সময়ই যাদুঘরে ও বিহারে প্রবেশ নিয়ে সংর্ঘষের ঘটনা হচ্ছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক স্থানীয় সূত্র জানায়, পর্যটকদের যথেষ্ট নিরাপত্তার অভাব রয়েছে এখানে। চুরি, ছিনতাইয়ের ঘটনা প্রায় ঘটনা ঘটে এখানে।

ময়নামতি জাদুঘর ও শালবন বিহারের ভারপ্রাপ্ত কাস্টোডিয়ান সাদেকুজ্জামান জানান, এই এলাকায় লোকবল সংকট রয়েছে। আসলে প্রত্যেকটি সরকারি প্রতিষ্ঠানেই লোকবল সংকট থাকে। এখানে মাষ্টার রোলের ২৮ জন লোক দিয়ে এখানকার কার্যক্রম চালিয়ে নেয়া হচ্ছে। মাঝে-মধ্যে উচ্ছৃংখল কিছু যুবক বিহারে টিকেট ছাড়া ঢুকতে না পেরে সংঘর্ষ করতে চায়।

বিস্তারিত :
নানামুখী সংকটে জর্জরিত শালবন বিহার : দর্শনার্থীদের নিরাপত্তা নাজুক
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে নভেম্বর, ২০১২ দুপুর ১:৩৯
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিসিএস-পরীক্ষার হলে দেরিঃ পক্ষ বনাম বিপক্ষ

লিখেছেন BM Khalid Hasan, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



বর্তমানের হট টপিক হলো, “১ মিনিট দেরি করে বিসিএস পরীক্ষার হলে ঢুকতে না পেরে পরীক্ষার্থীর স্বপ্ন ভঙ্গ।” প্রচন্ড কান্নারত অবস্থায় তাদের ছবি ও ভিডিও দেখা যাচ্ছে। কারণ সারাজীবন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের কার কি করা উচিৎ আর কি করা উচিৎ না সেটাই আমারা জানি না।

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:২৮




আমাদের কার কি করা উচিৎ আর কি করা উচিৎ না সেটাই আমারা জানি না। আমাদের দেশে মানুষ জন্ম নেয়ার সাথেই একটি গাছ লাগানো উচিৎ । আর... ...বাকিটুকু পড়ুন

মানবতার কাজে বিশ্বাসে বড় ধাক্কা মিল্টন সমাদ্দার

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ২:১৭


মানুষ মানুষের জন্যে, যুগে যুগে মানুষ মাজুর হয়েছে, মানুষই পাশে দাঁড়িয়েছে। অনেকে কাজের ব্যস্ততায় এবং নিজের সময়ের সীমাবদ্ধতায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারে না। তখন তারা সাহায্যের হাত বাড়ান আর্থিক ভাবে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিসিএস দিতে না পেরে রাস্তায় গড়াগড়ি যুবকের

লিখেছেন নাহল তরকারি, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৫৫

আমাদের দেশে সরকারি চাকরি কে বেশ সম্মান দেওয়া হয়। আমি যদি কোটি টাকার মালিক হলেও সুন্দরী মেয়ের বাপ আমাকে জামাই হিসেবে মেনে নিবে না। কিন্তু সেই বাপ আবার ২০... ...বাকিটুকু পড়ুন

×