somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

'মা'

১১ ই মে, ২০১৪ সকাল ১০:১৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

'মা' 'মা' 'মা'.......
আরো জোরে ডেকে দেখুন, বুকের ভেতরকার সব কষ্ট যেনো নিমেষেই কর্পুর হয়ে উরে যায়!!!!!

'মা'
এক অক্ষরের একটা শব্দ, একটা নাম। কিন্তু কী গভীর মায়ের মমতা!
কী বিস্তৃত মায়ের সোহাগের আঁচল! সন্তানের জন্যে মায়ের কত ব্যাকুলতা!
জীবন সূচনার আদি লগ্নে পরম মমতার আলিঙ্গনে যিনি প্রথম চুম্বনে ললাটে একে দিয়েছিলেন ভালবাসার চিহ্ন তিনি সেই মমতাময়ী 'মা'।

আসলে 'মা-বাবা' সবার জীবনেই অতি অসাধারণ দুইজন ব্যাক্তিত্ব। জীবনের প্রথম বিদ্যালয় যদি হয় পরিবার ; তাহলে 'মা-বাবা' নিঃসন্দেহে প্রথম শিক্ষক। খেলার সাথী, জীবনের প্রথম বন্ধু......

পৃথিবীর সকল 'মা-বাবা'ই চাই তাদের সন্তান হোক পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ সুখী।
'মা-বাবা' জন্যে আবার আলাদা বিশেষ দিন কি??? প্রতিদিন, প্রতি ক্ষণেই 'মা-বাবা'কে স্মরণ করি।
সন্তানের প্রতি 'মা-বাবা'র ভালোবাসা,স্নেহ, মায়া-মমতা কোন পুস্তিকা কিংবা রচনায় অথবা আধুনিক যুগের স্ট্যাটাসে বর্ণনা করে শেষ করা যায়????????????????
না! কখনোই না!!

জীবনের বহু স্মৃতি মেঘের মতো নয়নে ভেসে এসে বৃষ্টি হয়ে ঝরে!!!!
সেই স্মৃতিচারণায় কান্নায় ভেঙ্গে পরি, সইতে পারিনা। তবু স্মৃতি গুলো আমার খুবই মনে পড়ে........

আমার হাইস্কুলটা বাড়ি থেকে কয়েক মিটার দুরে মাত্র। স্কুল-ঘন্টার শব্দও শুনা যায় বাড়ি থেকে। তবে বর্ষা কালে দুরত্ব বেড়ে যায়! বর্ষার পানিতে তলিয়ে যায় মাঠ। যার ফলে নৌকা ছাড়া আর স্কুলে আসা যেতো না এমন কি সময় মতো নৌকাও থাকতো না ঘাটে। একদিন টিফিনের সময় আমি বসে আছি ঘাটে, নৌকা নেই। ঐপাড় থেকে আমার 'মা' থাকিয়ে আছে আমার পানে ব্যকুল নয়নে! আমিও দেখছি 'মা' থাকিয়ে আছে....! যদি পারতো পাখির মতো উরে এসে আমায় নিয়ে যেতো। কতক্ষন অপেক্ষা করে নৌকা না পেয়ে রাগে স্কুলে চলে গেলাম আবার! আর ঐপাড়ে আমার 'মা' কষ্টে ছটফট করছে, আহারে ছেলে আমার না খেয়েই চলে যাচ্ছে...

পরদিন টিফিনের সময় আমি ঘাটে এসে দেখি..........
'বাবা' নতুন নৌকা নিয়ে আমার আগমনের প্রহর গুনছে! আমি লাফিয়ে নৌকায় উঠলাম। আর উনি বললেন "এতোক্ষনে টিফিন দিছে! আমি কতক্ষন ধইরা বইসা আছি"!
আমি জিঙ্গেস করলাম "আব্বা, নাউ কার? "আব্বা বললেন
"কালকা না খাইয়া গেছস গা, তোর মা কয়লো একটা নাউ কিনতে।!"
"ইড্ডা আমরার নাউ "
"হ আজকা কিনছি"......
নৌকা চলছে, ঐ পাড়ে বসে আছেন আমার 'মা জননী'
গতকালের বিষয়টা মেনে নিতে না পেরে যতটা উদ্বিগ্ন ছিল, আজ ততটায় আনন্দিত।
শুধু ঐ দিন না। এরপর থেকে প্রতিদিন 'বাবা' নদীটা পাড় করে দিতো, আবার টিফিন এবং ছুটির সময় নৌকা নিয়ে ঘাটে বসে থাকতো....!

সেই দিন গুলো কি ভুলা যাবে জীবনে??????
না, আমি মরে গেলেও ভুলতে পারবোনা!

এতো গভীর ভালোবাসার বন্ধন ছিন্ন করে হঠাৎ 'বাবা' চলেগেলেন.......
'বাবা' তোমার প্রতিটা কথা আজ কানে বাণীর মতো বাজে!
'মাগো'
কেমনে তোমায় ভুলে থাকি????
প্রতিনিয়ত তোমার হাসিমাখা মুখখানি ভেসে উঠে নয়নে। 'মা' তোমার মুখের পানে থাকালে বাবা হারানোর বেদনা মুহুর্তেই ভুলে যেতাম। হাসি মুখে পাশে বসে যখন পরম মমতায় মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে তখন মনে হতো আমার চেয়ে সুখী কেউ নেই পৃথিবীর বুকে!!!
'মাগো'তোমার সন্তান কেমন আছে, কোথায় আছে কত কিছু জানার আকুলতা ছিলো তোমার.... তোমার ব্যাকুলতা আমাকে প্রতিনিয়ত কাঁদায়....
'মাগো' সেই তুমিও 'বাবা'র পথে পারি দিলে........

'মাগো'
এখন কেউ আর বলেনা "বাবারে তোর জন্যেই আমার যত চিন্তা। সাবধানে থাকিস"


{জানিনা আমার মতো কত 'মা-বাবা'হারা হতভাগা এই স্ট্যাটাসটা পড়ছে!}

আমার মতো যারা 'মা-বাবা'হারা হতভাগা! তাদের 'মা-বাবা'র আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি। হে আল্লাহ তুমি আমার 'মা-বাবা'র সমস্ত গোনাহ ক্ষমা করে দাও। পৃথিবীর সকল 'মা-বাবা'কে জান্নাতুল ফিরদাউস নসিব কর। (আমিন)
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই মে, ২০১৪ সকাল ১০:২২
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

দেশ এগিয়ে যাচ্ছে; ভাবতে ভালই লাগে

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০২ রা মে, ২০২৪ দুপুর ১:০৩


বিশ্বব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ১৯৭২ সালে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার ছিল নেতিবাচক। একই বছরে পাকিস্তানের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার ছিল প্রায় ১ শতাংশ। ১৯৭৩ সালে পাকিস্তানের অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রবৃদ্ধি ছিল ৭... ...বাকিটুকু পড়ুন

যুক্তরাষ্ট্রে বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ ঠেকাতে পুলিশি নির্মমতা

লিখেছেন এমজেডএফ, ০২ রা মে, ২০২৪ দুপুর ১:১১



সমগ্র যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসগুলোতে বিক্ষোভের ঝড় বইছে। যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ কর্মসূচী অব্যাহত রয়েছে। একাধিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিক্ষোভ দমনের প্রচেষ্টা চালালেও তেমন সফল... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ ০১

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ৯:৫৫



নতুন নতুন শহরে এলে মনে হয় প্রতি টি ছেলেরি এক টা প্রেম করতে ইচ্ছে হয় । এর পেছনের কারন যা আমার মনে হয় তা হলো, বাড়িতে মা, বোনের আদরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

হিটস্ট্রোক - লক্ষণ ও তাৎক্ষণিক করণীয়

লিখেছেন ঢাকার লোক, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:০৭

সাধারণত গরমে পরিশ্রম করার ফলে হিটস্ট্রোক হতে পারে। এতে দেহের তাপমাত্রা অতি দ্রুত বেড়ে ১০৪ ডিগ্রী ফারেনহাইট বা তারও বেশি হয়ে যেতে পারে।

হিটস্ট্রোক জরুরি চিকিৎসা প্রয়োজন। চিকিৎসা... ...বাকিটুকু পড়ুন

আল্লাহকে অবিশ্বাস করার সংগত কোন কারণ নাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৩



সব কিছু এমনি এমনি হতে পারলে আল্লাহ এমনি এমনি হতে সমস্যা নাই। বীগ ব্যাং এ সব কিছু হতে পারলে আল্লাহও হতে পারেন। সব কিছুর প্রথম ঈশ্বর কণা হতে পারলে আল্লাহও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×