somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

দুই টুকরো কাগজ, একটা ছবি....... অত:পর........... হঠাৎই!

০৩ রা মার্চ, ২০০৯ দুপুর ১২:৪৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

দিনটা কবে ছিল মনে নেই, মাস তিন চার আগে হবে। এক সন্ধ্যায় মায়ের মুখে জানতে পারি জনৈক ব্যক্তি বাসায় হাজির হয়েছেন। সাথে নিয়ে এসেছেন কিছু প্রিন্টেড প্রোফাইল, কিছু ছবি। তার উদ্দেশ্য আমাকে একা থেকে দোকা করে দিবেন। লোকটাকে আমি কখনো দেখিনি, ইচ্ছা করেই দেখিনি, যদিও আমাকে উনি বাসায় এসে কয়েকবারই একটু দেখতে চেয়েছিলেন। যাই হোক উনি বিদায় হবার পর মা কয়েকটা খাম নিয়ে এসে বলল, "দেখ তো এই তিনটা সম্বন্ধ আমাদের পছন্দ হয়েছে...."। আমি বরাবরের মত নির্বিকার মুখে হাতে নিলাম খামগুলো। বের করলাম, পড়লাম বললে ভুল বলা হবে, চোখ বুলালাম। বললাম "দেখ তোমরা যা ভাল বুঝো..."। আমি বিয়ে করতে চাইনা তা না, কিন্তু এই এ্যারেঞ্জড বিয়ের কথা কখনোই সহজভাবে নিতে পারি না। তার উপর গত বছর বাবা মায়ের চাপে জীবনে প্রথম মেয়ে দেখার পর সেটা নিয়ে আমাকে কিছুটা ভোগান্তি পোহাতে হয়েছিল। তাই ব্যপারটা নিয়ে বেশি মাথা ঘামাবো না ঠিক করে রেখেছিলাম। আল্লাহ ভাগ্যে যা রেখেছে তাই হবে, এটা ভেবেই শান্তি পাওয়ার চেষ্টা করতাম।

এর মাঝে কখনো কারো সাথে ঘনিষ্ঠ হওয়ার সুযোগ হয়নি তা না। মাঝে মধ্যে মনে হত চেষ্টা করি। এ্যারেঞ্জড ভয় পাই তাই আমার পক্ষে স্বাভাবিক ছিল এদের মধ্যে কাউকে বেছে নেয়া। পারিনি... মন থেকে পারিনি। ভয় পেতাম... অনেক ভয়... কারো কাছে নিজের সবচেয়ে প্রিয় জিনিসটি দিয়ে চোখের সামনে সেটা ভেঙে খান খান হতে দেখার ভয়। অনেক বছর আগে এই ভুল করে আমি একবার মিলিয়ে গিয়েছিলাম, নিজের অস্তিত্বকে হারাতে বসেছিলাম। সামলে উঠলাম ধীরে ধীরে কিন্তু নিজেকে বদলে ফেললাম। তারপর অনেক অনেক দিন... অনেক অনেক স্মৃতি...

প্রায় ২ মাস পর মায়ের পিড়াপিড়িতে ১লা ফেব্রুয়ারি গেলাম দেখা করতে সেই ৩ জনের এক জনের সাথে। দেখা হল, কিন্তু তার সাথে কোন কথা হয়নি। তার মায়ের সাথে ভালই আড্ডা দিলাম। ঘন্টা খানেক থেকে চলে আসলাম। মেজাজ খারাপ হচ্ছিল কারণ মেয়ে আমাকে মোটামুটি কোন পাত্তাই দেয়নি। তাও বাসায় এসে বললাম মেয়েকে ভাল লেগেছে, তারা কিছু জানালে আমাকে জানাতে (কেন বলেছিলাম কে জানে!)। কয়েকদিন পর আমাকে মেয়ের ফোন নাম্বার দিয়ে বলা হল কথা বলতে। ফোন করলাম, তারপরই শুরু। যতই কথা বলছিলাম মনে হল আমার ভিতরের বন্ধ করে রাখা দরজা গুলো আস্তে আস্তে খুলে যাচ্ছে... যে অনুভূতিগুলোকে ঘুম পাড়িয়ে রেখেছিলাম, তারা আলতো ধাক্কা খেয়ে আড়মোড়া ভেঙে জেগে উঠতে লাগল। আমি প্রাণপনে আটকাতে চেষ্টা করি আবেগগুলোকে... ভয় হয়... ফিরে যেতে চাই! কিন্তু হায়.... পারলাম না। ভিতরের সেই অন্ধকার প্রকোষ্ঠগুলোকে আলোয় ভরিয়ে দিল যেখানে আমি ভুলেও পা রাখার কথা চিন্তাও করতামনা। গতকাল কেন যেন আবার হারিয়ে যেতে চাচ্ছিলাম আমার সেই আঁধার ভুবনে... সেই ডুবি ডুবি নেশার মতন মন খারাপের ঘোর... আবছা আলোয় হঠাৎ দেখলাম তার মুখ... বলল "আমাকে ছেড়ে কোথায় যাচ্ছেন?" .... আমি যাইনি, যেতে পারিনি.... যেতে চাইও না আর।

:) আগামী শুক্রবার আমার আকদ্‌, সেই মেয়েটির সাথেই। কিভাবে কি হয়ে গেল আমরা জানিনা... মাঝে মাঝে বিশ্বাসও হয়না... একটা ব্যাপারই জানি "আমরা অনেক খুশি।"

সবাই দোয়া করবেন।
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা মার্চ, ২০০৯ দুপুর ১২:৪৯
৩৫টি মন্তব্য ৩৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:০২



ইউটিউব হুজুর বললেন, মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে। তখন নাকি নিজ যোগ্যতায় ঈমান রক্ষা করতে হয়। আল্লাহ নাকি তখন মুমিনের সহায়তায় এগিয়ে আসেন না। তাই শুনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মহিলা আম্পায়ার, কিছু খেলোয়ারদের নারী বিদ্বেষী মনোভাব লুকানো যায় নি

লিখেছেন হাসান কালবৈশাখী, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯



গত বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল প্রাইম ব্যাংক ও মোহামেডানের ম্যাচে আম্পায়ার হিসেবে ছিলেন সাথিরা জাকির জেসি। অভিযোগ উঠেছে, লিগে দুইয়ে থাকা মোহামেডান ও পাঁচে থাকা প্রাইমের মধ্যকার ম্যাচে নারী আম্পায়ার... ...বাকিটুকু পড়ুন

জানা আপুর আপডেট

লিখেছেন আরাফআহনাফ, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৫৭

জানা আপুর কোন আপডেট পাচ্ছি না অনেকদিন!
কেমন আছেন তিনি - জানলে কেউ কী জানবেন -প্লিজ?
প্রিয় আপুর জন্য অজস্র শুভ কামনা।



বি:দ্র:
নেটে খুঁজে পেলাম এই লিন্ক টা - সবার প্রোফাইল... ...বাকিটুকু পড়ুন

বন্ধুর বউ কে শাড়ি উপহার দিলেন ব্যারিস্টার সুমন। বাটার প্লাই এফেক্ট এর সুন্দর উদাহারন।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:০৭



এক দেশে ছিলো এক ছেলে। তিনি ছিলেন ব্যারিস্টার। তার নাম ব্যারিস্টার সুমন। তিনি একজন সম্মানিত আইনসভার সদস্য। তিনি সরকার কতৃক কিছু শাড়ি পায়, তার জনগণের মাঝে বিলি করার জন্য।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×