সারা পৃথিবী জুড়ে করোনা ভাইরাস যে মহামারী আকার ধারণ করেছে তা নিয়ে আমরা সকলেই চিন্তিত। যদিও বলা হয়, এ ভাইরাস নিয়ে আতংকিত হওয়ার কিছু নেই, সচেতনতাই মূখ্য।
হয়ত ভয়টা এজন্যই বেশি। কারণ আমরা জাতি হিসেবে খুবই অসচেতন। দিন দিন করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়া এর বড় প্রমাণ।
আতংকিত এই আমরা যারা সাধারণ মানুষ, তারা আল্লাহর উপর ভরসা রেখে এমুহূর্তে সরকারের কাছে কামনা করি সুন্দর কিছু পদক্ষেপের জন্য।পূর্বে কি হয়েছে বা বর্তমানে কি করা হচ্ছে সেটার সমালোচনা করা এখন মূখ্য নয়। এ মুহূর্তে কেবল উচিত মানুষকে ঘরে রাখা, সচেতনতা আরো অনেক বৃদ্ধি করা, আর নির্দিষ্ট কিছু গুরুত্বপূর্ণ সেবা বাদে পুরোপুরিভাবে এদেশের সবকিছু লকডাউন, প্রয়োজনে ১৪৪ ধারা জারি করে ফেলা এবং তা কার্যকর করা। যেমন কেবল কিছু নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের দোকান, ফার্মেসি বা হাসপাতাল -ক্লিনিক ব্যতীত ..।হ্যা, আমরা জানি লকডাউন চলছে কিন্তু একেমন লকডাউন যেখানে নির্দিষ্ট সময় ব্যাংক খোলা থাকে আর জনগন ব্যাংকে গিয়ে গায়ে গা ঘেসে চিপকাইয়া থাকে..সত্যি কিনা জানিনা,তবে শুনেছি এখনো কিছু কারখানা খোলা.. এ কেমন ব্যাপার! পুরো দেশে আসলেই জরুরি অবস্থা জারী করা উচিত আগামি ১ মাস, অন্ততপক্ষে ২১ দিন। আমাদের আসলে কঠোরভাবে বাধ্য করা উচিত ঘরে থাকতে। নিতান্তই উপযুক্ত কোন প্রয়োজন ছাড়া এই আদেশ পালন না করলে জেলে দিয়ে দেওয়া উচিত, তবে তারআগে সুষ্ঠুভাবে অবশ্যই কিছু নীতিমালা প্রণয়নকরে তা বাস্তবায়নে যাওয়া উচিত যাতে করে এ সময় কাউকেই ঘরের বাহিরে যেতেই না হয়, কাউকে যেন অনাহারে রাত দিন কাটাতে না হয় ইত্যাদি ব্যাপারগুলো।
যারা নিম্ন আয়ের আছে, তাদেরকে সরকারিভাবে সহযোগিতা করার ব্যবস্থা আরো জোরদার প্রয়োজন,নূন্যতম হলেও অন্ন-বাসস্থান গুলো। হয়ত যাদের সামর্থ্য আছে তারাও আরো এগিয়ে আসবেন। যেদেশে নিজেদের অর্থায়নে পদ্মা সেতু করতে পারি.. সেদেশে আরো ২১-৩০ দিন সাধারণ নাগরিকের নূন্যতম ভরণ পোষণ সম্ভব না,এটা কিভাবে হতে পারে!
অনুগ্রহ করে এই কয়েকটা দিন কেবল জাত,শ্রেনী, ধর্ম.. রাজনীতি আর ক্ষমতার দাপট বা লাভ এর লালসা থেকে বের হয়ে সকলেই সকলের কথা একটু ভাবি।
আমি একজন মুসলিম হিসেবে মনে প্রাণে বিশ্বাস করি.. আল্লাহ মহান, ক্ষমাশীল। আমিও অন্তর থেকে মানি, সকল ক্ষেত্রেই মহান আল্লাহতালা একমাত্র ভরসা সকল কিছুর। কিন্তু এটা ভেবে একেরপর এক অসচেতনতা বা খামখেয়ালিপনায় ভুল কদম ফেলে চলা মূর্খতা ছাড়াও কিছু নয়।
আমাদের শ্রেষ্ঠ নবী রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ) বলেছেন,
"অসুস্থকে সুস্থের মধ্যে নেয়া হবে না "
এছাড়া এও বলেছেন,
‘যদি তোমরা শুনতে পাও যে, কোনো জনপদে প্লেগ বা অনুরূপ মহামারীর প্রাদুর্ভাব ঘটেছে তবে তোমরা তথায় গমন করবে না। আর যদি তোমরা যে জনপদে অবস্থান করছ তথায় তার প্রাদুর্ভাব ঘটে তবে তোমরা সেখান থেকে বের হবে না।'
আর ছোটবেলা থেকে জেনে আসা "প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধ বেশি কাম্য"
এ কথাটি কি আমরা জানি না!
আসলে সব কিছুর পরেও একটাই কথা এমুহুর্তে, সময় ফুরানোর আগেই.. আমাদের সকলকে নির্দিষ্ট স্থানে থাকতে হবে, প্রয়োজনে বাধ্য করতে হবে নিস্বার্থ ভাবে কাজ করে যাওয়া আর্মি-পুলিশ প্রশাসন দিয়ে আরো কঠোরতার সাথে।
সেসাথে আমাদের ডাক্তারদের তাদের প্রয়োজন অনুযায়ী পর্যাপ্ত সামগ্রী সরবরাহ করে এদেশের সকলের সেবা করার সুযোগ সৃষ্টি করে দেওয়াটাও অতীব জরুরি ব্যাপার।
কারণ এমুহূর্তে সঠিক পরামর্শ ও সকল বিপর্যয় হতে পরিত্রাণের পথ কেবল এই মানুষগুলোই দেখাতে পারবেন।
মহান আল্লাহতালা আমাদের সকলের সহায় হোন। একমাত্র আল্লাহ পারেন সকল প্রকার মহামারী ও বিপদ আপোদ থেকে আমাদের রুক্ষা করতে।