somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ব্ল্যাক আউট: স্ট্রং ইমেইজের কাব্যময় চলচ্চিত্র

০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০১০ রাত ১:১১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ব্ল্যাক আউট: স্ট্রং ইমেইজের কাব্যময় চলচ্চিত্র

একটি ব্যক্তিগত অনুভূতির প্রকাশ,
২০০৬-২০১০ সাল, বিগস্ক্রিনে পাঁচবার কম্পিউটার স্ক্রিনে একবার এভাবে একে একে মোট ছয়বার অন্তরঙ্গ পরিবেশে ব্ল্যাক আউট দেখা হল... কথা হল... আর অনুভূতির অনুগুলো পেল প্রচন্ড গতিময়তা। শেষবার ব্ল্যাকআউট’র স্পর্শ অনুভব করে বুঝলাম এখনও তার প্রতি ভালবাসা খুব একটা কমেনি। যা ভালোলাগে তার কারন খুঁজতে যাইনা, তাতে ভালোলাগার সুখানুভূতিটুকু নষ্ট হয়। তবুও নিজের অজান্তেই মনের গহীনে প্রতিধ্বনিত হয় দুটি শব্দ- ব্ল্যাক আউট ব্যতিক্রম। ব্ল্যাক আউট এ আছে কাব্যময়তা-ব্ল্যাক আউট’র আছে স্ট্রং ইমেইজ। সিনে ইমেইজ-যা একজন নির্মাতা তার সমস্ত চলচ্চিত্রীয় উপাদান প্রয়োগ করে সৃষ্টি করেন এবং শেষ পর্যন্ত এই ইমেইজই দর্শক মনে জন্ম দেয় অনুভূতির।

ব্ল্যাক আউট’র কবি ও নির্মাতা আংশিকভাবে সংলাপের সাথে ভিজ্যুয়ালযোগে যে কাব্যময় সিনেভাষ্কর্য রচনা করেছেন তা এককথায় অসাধারন এবং ইতিপূর্বে আমার অদেখা। একইসাথে এওসত্য যে ব্ল্যাক আউট আপাদমস্তক একটি সতেজ ও সজীব কবিতা। ব্ল্যাক আউট স্বাভাবিক নয়... ব্ল্যাক আউট অস্থির... ব্ল্যাক আউট চঞ্চল... ব্ল্যাক আউট অব্যক্ত... ব্ল্যাক আউট যন্ত্রনার সমষ্টি... ব্ল্যাক আউট প্রচন্ড বিষ্ফোরনে বাস্তবতা ও কল্পনার যৌনমিলনে সৃষ্টি নির্মাতা টোকন ঠাকুর’র প্রথম অবাধ্য সন্তান।

ব্ল্যাক আউট আম জনতার লাইফ প্রেজেন্টেশন নয়। গতানুগতিক কোন গল্প নেই এতে, প্রয়োজনও অনুভব হয়নি কখনো। একেবারেই আলাদা, বলতে গেলে-আগুন, পানি, বাতাস খেকো সর্বদা মানসিক ও জৈবিক যন্ত্রনায় বসবাসরত দুটি রেয়ার জীব-কবি মাদল আর আর্টিষ্ট রাফির জীবনের খন্ডকালীন চিত্র। দিন তারিখের গানিতিক আইডেন্টিটি যাদের কাছে অর্থহীন, যাদের সকাল শুরু হয় ছাইয়ের স্বাদে-সো হোয়াট...নট ব্যাড!

মিটি আর্টিষ্ট রাফি’র মডেল। রাফি মিটিকে কামনা করে... সঙ্গ চায়... কিন্তু সুন্দরী মেয়েদের যাবতীয় রহস্যময়তা নিয়ে উপস্থিত মিটি। ধরি মাছ না ছুঁই পানির পুকুরে মিটি নাকানি চুবানি খাওয়ায় রাফি’কে। রাফি ধরাশায়ী কাজেই সে নাকানিচুবানি খায় ইচ্ছায় অনিচ্ছায়। রাফি ও মাদল’র আস্তাবলে মিটি বেড়াতে আসে। রাফি সুযোগ নিতে চায় আর মাদল’র মাঝে জেগেওঠে জৈবিক যাতনা। মাদল কল্পনা ভ্রমনে সাাত করে তার প্রিয় শালমলি’র সাথে। শালমলি- এ লাভ উইদাউট প্রেজেন্স। সবুজ ল্যান্ডস্কেপের মাঝে কবি মাদল’র প্রিয় শালমলি তাজা ফুলে আচ্ছাদিত। শিশিরে সিক্ত তাজাফুল সরালে বেরিয়ে আসে প্রিয় শালমলি’র কামনার্ত লাল ঠোঁট-জাগে সুতীব্র চুম্বনের বাসনা-মিলিয়ে যায় শালমলি-রচিত হয় অসামান্য একটি স্বপ্নদৃশ্যের। বারবার ফিরে আসে এই দৃশ্য, কারণ কল্পনাই কবি’র সর্বোচ্চ অবলম্বন। আমরাও কামনা করি এ দৃশ্যের সঙ্গ। রাফি মাদল কারোরই জৈবিক যাতনার যথাযোগ্য উপশম হয় না, হয় অবদমনের বিকৃতিতে বাস্তবতার প্রকাশ। এই আহত ঘোড়াদ্বয় অবদমন প্রশমিত করতে চোখ রাখে একে অপরের চোখে কিন্তু লাগাম টেনে ধরেন নির্মাতা-দিস ইজ বাংলাদেশ, ঢাকা... বাস্তবতা থেকে সরে দাড়ান নির্মাতা, রচনা করেন এক সিনেম্যাটিক বাস্তবতার। রাফি মাদলকে জিজ্ঞেস করে একটি বিয়ে করতে খরচ কত? উত্তরে মাদল প্রচন্ড হাসিতে ফেটে পড়ে-হাসির শব্দে প্রকাশিত হয় তাদের আর্থিক দৈন্যতার কথা। একঘেয়েমি জীবনের ঘূর্নন চক্র থেকে বের হতে পারেনা এই মরা ফড়িংদ্বয়। জীবন যুদ্ধে কান্ত... বিষন্ন... বিপর্যস্থ। কবিকে ছেড়েছে কবিতা আর আর্টিষ্টকে ছেড়ে চলে গেছে তার মডেল মিটি। কিন্তু কবি আর আর্টিষ্ট একজন আরেকজনকে ছাড়তে পারেনি। ভয়াবহ ভঙ্গিতে থেমে যাওয়া জীবন প্রবাহকে গতি দিতে সাহায্যকরে সময় শব্দের ফরিয়াদী সুর। তবুও যদি তাদের জীবনের পালে লাগে হাওয়া।

ব্ল্যাক আউট’র সাথে পরিচয়, সাাত এবং আনন্দ ভ্রমন মনে সুখানুভূতির জন্ম দেয়- আগেই বলেছি। কালের স্রোতে ব্ল্যাক আউট তলিয়ে যাবে নাকি ভেসে থাকবে সে বিচার কালের। আমরা দর্শক, দায়িত্ব-শুধু তাকিয়ে দেখা আর আনন্দের রসাস্বাদন। অনেক কিছুই বলা হলনা... গেলনা... আসলে পারলাম না... শব্দকি আসলেই পারে মনের সব অনুভূতিকে প্রকাশ করতে? তাহলে কেনইবা জন্ম কবিতার আর কেনইবা চিত্রকলার? পূর্নতা কি পায় তবুও, যখন প্রচন্ড শক্তিতে সবকিছুকে আপন করে প্রকাশিত হয় চলচ্চিত্র?

আলাদাভাবে উল্লেখ করতেই হয় এই ছবির ব্যাকগ্রাউন্ট মিউজিক ও গ্রাফিক্স ডিজাইনের কথা। ছবিটির পোষ্ট প্রোডাকশনে যতখানি সময় ব্যয় করা হয়েছে প্রিপ্রোডাকশনে তত নয়। ক্যামেরা ওয়ার্ক আরেকটু গোছানো হলে সম্ভবত ছবিটির সাফল্য আরো কয়েকধাপ এগিয়ে যেতো। জানি, প্রথম কাজে এতকিছু হয়ে উঠেনি... হয়না... হবে। শ্রদ্ধা রইল... আশা রইল... ভালোবাসা রইল... এরপর.....এরপর........এরপর............মনে নেই।

ইতি
অন্ত আজাদ
(চলচ্চিত্র-প্রথম ও শেষ ভালোবাসা)
২৮-০১-২০১০
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১০ সকাল ১১:৪৩
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ইন্টেরিম সরকারের শেষদিন : গঠিত হতে যাচ্ছে বিপ্লবী সরকার ?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:২২


ইরাক, লিবিয়া ও সিরিয়াকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার আন্তঃদেশীয় প্রকল্পটা সফল হতে অনেক দিন লেগে গিয়েছিল। বাংলাদেশে সে তুলনায় সংশ্লিষ্ট শক্তিসমূহের সফলতা স্বল্প সময়ে অনেক ভালো। এটা বিস্ময়কর ব্যাপার, ‘রাষ্ট্র’... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিচার চাই? না ভাই, আমরা "উল্লাস" চাই

লিখেছেন মাথা পাগলা, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৩৭





দীপু চন্দ্র দাস একটি পোশাক শিল্প কারখানায় চাকরি করতো। সম্প্রতি দীপু দাস তার যোগ্যতা বলে সুপার ভাইজার পদে প্রমোশন পেয়েছিলো।

জানা যায়, সুপারভাইজার পজিশনটির জন্য আরও তিনজন প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

মব সন্ত্রাস, আগুন ও ব্লাসফেমি: হেরে যাচ্ছে বাংলাদেশ?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৩:৫২


ময়মনসিংহে হিন্দু সম্প্রদায়ের একজন মানুষকে ধর্মীয় কটূক্তির অভিযোগে পুড়িয়ে মারা হয়েছে। মধ্যযুগীয় এই ঘটনা এই বার্তা দেয় যে, জঙ্গিরা মবতন্ত্রের মাধ্যমে ব্লাসফেমি ও শরিয়া কার্যকর করে ফেলেছে। এখন তারই... ...বাকিটুকু পড়ুন

তৌহিদি জনতার নামে মব সন্ত্রাস

লিখেছেন কিরকুট, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৪




ছবিঃ অনলাইন থেকে সংগৃহীত।


দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রতিক সময়ে ধর্মের নাম ব্যবহার করে সংঘটিত দলবদ্ধ সহিংসতার ঘটনা নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে তৌহিদি জনতা পরিচয়ে সংঘবদ্ধ হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুখ গুজে রাখা সুশীল সমাজের তরে ,,,,,,,,

লিখেছেন ডঃ এম এ আলী, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:০৫


দুর্যোগ যখন নামে আকাশে বাতাশে আগুনের ধোঁয়া জমে
রাস্তা জুড়ে কখনো নীরবতা কখনো উত্তাল প্রতিবাদের ঢেউ
এই শহরের শিক্ষিত হৃদয়গুলো কি তখনও নিশ্চুপ থাকে
নাকি জ্বলে ওঠে তাদের চোখের ভেতর নাগরিক বজ্র
কেউ কেও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×