somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সূর্যের পরীক্ষা দেওয়া

০৭ ই মে, ২০২০ রাত ৯:১৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

পনের দিন যেন দেখতে দেখতে চলে যাচ্ছে রুমের মধ্যে হৈ হুল্লোড় চলছে সূর্য চিন্তায় মগ্ন সামনে পরীক্ষা কি হবে। বড় সিলেবাস বলে পরে পড়ব পরে পড়ব করে পড়ায় হয়নি আর সময় যে কিভাবে চলে গেল তা ওর বোধগম্য হচ্ছে না। হাতে মাত্র আড়াই দিন সময় শেষ করতে হবে পাঁচ রকমের বিষয়ের হাজারো জিনিস।

সূর্য কিছু সময় চিন্তা করে দেখল যা হবার হয়ে গেছে এখন পরীক্ষা পরীক্ষা করে ভয় পেয়ে বসে না থেকে ভারত পাকিস্তান ক্রিকেট ম্যাচ বাদ দেওয়ার কোন মানেই হয় না। রুম থেকে বের হয়ে দেখল জ্ঞানী, হয়রান আলী, আর দাদা এক গাদা কাগজ পাতি নিয়ে ফটোকপির নিকট দাঁড়িয়ে আছে। দাদা তার কদুর বিচির মত দাত কেলিয়ে বলল লাগবে নাকি এক সেট। সূর্য বলল না লাগবে না রুমে এমনিতে জায়গা অনেক কম, এর মাঝে যদি আমি অতিরিক্ত কাগজের প্যাকেট নিয়ে রুমে যায় তাহলে জায়গা আরো কমে যাবে। ওর কথা শুনে হয়রান আলী বলল তুই কি রে ? তোর না আছে কোন চিন্তা না আছে ভাবনা। অনেক চেষ্টা তদবির করে বাকি তিন সদস্য মিলে রুমের মধ্যের জটলাকে কমিয়ে এনেছে। ওরা এমনিতে ওরা খুব ভাল কিন্তু সমস্যা হল অন্যের পরীক্ষার সময়ে তারা ডিস্টার্ব করে বেড়াবে এজন্যই এখন বাকিরা ওদের রুমে বসে এসে বসে আছে। সমস্যা বাড়তে থাকলে সূর্য এক সময় ভাবা বাদ দেয় এটা সূর্যের একটা বড় গুন। সূর্য রুমে বসে আছে বাকি তিন জন পড়ছে কেউ বায়োলজি, কেউ সমাজ বিজ্ঞান কেউবা পরিবেশ বিজ্ঞান নিয়ে মাথা খুটে মরছে। সূর্য আপন মনে একটআর পর একটা সিগারেট শেষ করছে আর মন দিয়ে ওদের পড়াগুলো শুনছে। রাত দশটা নাগাদ রুমে বসে থেকে ওর হাতে পায়ে জং ধরে গেল অবশ্য এর মাঝে ওর কিছু জিনিস দাদা, জ্ঞানী আর হয়রানের মুখস্ত হোক না হোক সূর্যের কিন্তু যে কাজ হবার হয়ে গেছে। সূর্য ভাবছে পরীক্ষা কেন এক দিনে সব গুলো হয়ে যায় না কেন? তাহলে ভাল হোক বা খারাপ হোক তা একদিনে শেষ হয়ে যেত।

মুক্তবলাকা থেকে বের হয়ে নিচের চায়ের দোকানে এসে আড্ডায় বসে গেল। হয়রান আলী একটু পর এসে যোগ দিল ওর সাথে। এসেই হয়রান আলী ওর সিগারেটের দিকে তাকিয়ে বলল আমি আধ পোড়া সিগারেট খেতে পারিনা এর পর যা নিয়মিত হয় তাই হল মানে হয়রান সিগারেট নিয়ে একটা চা দিয়ে আয়েশ করে খেতে লাগল, এই অবস্থা সূর্য গত দুই বছর ধরে দেখে আসছে। হয়রান বলল আচ্ছা তুই ভাল করে পড়িস না কেন? সূর্য বলল দেখ বেশি করে পড়ে গেলে না পারলে বেশি অতৃপ্তি থাকবে আর কম পড়ে গেলে যেটুকু পারব সেটুকুই বেশী মনে হবে। কথাটা হয়রান আলীর খুব মনে ধরল ও বলল তাহলে আমি আর পড়ছি না আজ। সূর্য বলল আছে আর ৪৮ ঘন্টা পড়ে আর কি করবি তুই তো আর ডিসটিংশোন এর জন্য লড়বি না। এই বলে সূর্য হয়রান আলীকে নিয়ে বেরিয়ে পড়ল। রাত এগারোটার দিকে হলের মাঠে বসে হয়রান আর সূর্য মিলে সিদ্ধি টানছে আর জ্ঞানের লাঠিতে চুমুক দিচ্ছে মানে সিগারেট ফুকছে

হয়রান আলীঃ মামা বই,চোতার সব কিছু না চোখের উপর ভাসছে
সূর্যঃ ভাল করে দেখার চেষ্টা কর না হলে ভাল চশমা দিয়ে চেষ্টা কর পরিস্কার দেখতে পাবি
হয়রান আলীঃ হয় হয় মামা চশমা দিলাম, এখন বড় পর্দার টিভিতে বায়োলজির ছবি একদম ক্লি ক্লি ক্লি
সূর্যঃ কি ক্লি ক্লি করছিস ঠিক করে বল
হয়রান আলীঃ একদম ক্লিয়ার একদম ক্লিয়ার রে মামা
সূর্যঃ হয় রে মামা এতেই শান্তি, এতেই সব, জয় বাবা ভোলানাথের জয়, বোম ভোলে
হয়রান আলীঃ ওই যে পরিবেশ ওই যে সমাজ

রাত কয়টা বাজে তার ঠিক বুঝতে পারছে নে সূর্য আশেপাশে চেয়ে দেখে বুঝে ওঠার চেষ্টা করছে কি হচ্ছে ওর সাথে। চোখে প্রচন্ড্র নেশাতুর ঘুম তারপরও কোন রকমে নিজেকে জাগিয়ে উঠে বসল। চোখের উপর মিটমিটে মোবাইলের আলো পড়তেই চোখ খুলে তাকিয়ে দেখল বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা কর্মে নিয়োজিত এক শিক্ষক সাথে নিরাপত্তা কর্মীদের এক বিশাল বহর। সূর্য দ্রুত নিজেকে সামলে নিয়ে বলল এখানে কি যজ্ঞো হচ্ছে না মরা মানুষের দাফন এর আয়োজন হচ্ছে যে এত মানুষ। শিক্ষক মহাশয় বললেন রাত বেরাতে নেশা করে পড়ে থাকবে আর বড় বড় কথা। সূর্য বলল মাথা ঠান্ডা করার দরকার ছিল তাই রাতের আকাশের তারা গুনতে এসেছিলাম। ওর কপাল আজ খারাপ তা না হলে হয়রান কে নিয়ে আসে, পাশে তাকিয়ে দেখে কোথাও হয়রানের দেখা নেই। কিছুক্ষন পর বুঝতে পারল আসলে কি ঘটেছে। সূর্য যখন চোখ বন্ধ করে বসে ছিল তখন হয়রান বিড় বিড় করতে উঠে যেয়ে বিল্ডিংয়ের দেওয়ালের গায়ে কাদা মাটি দিয়ে চোখের উপর ভেসে বেড়ানো বিদ্যা জাহির করতেছিল আর সেই মুহূর্তে টহল বাহিনীর হাতে ধরা পড়ে সব স্বীকার করে তাদের সূর্যের কাছে নিয়ে এসেছে। সূর্য দেখল শিক্ষক বেচারা নতুন আর মুচলেকার কাগজে সই করলে পরে ঝামেলায় পড়তে হবে তাই হয়রান কে বলল মামা দৌড় লাগা আমি দেখছি। হয়রান এই কথা শুনেই দৌড় শিক্ষক আর নিরাপত্তা বাহিনী কিছু বুঝে ওঠার আগে সূর্য বলল সিগারেট খাওয়া যদি কোন অপরাধ হয় তাহলে আপনিও সমান অপরাধী। আপনি একজন নিরীহ ছাত্রকে রাতে সিগারেট খাওয়া অবস্থায় দেখে নিজের ক্রেডিট বাড়ানোর জন্য গাঁজাখোর বলে চালানোর চেষ্টায় আছেন ঠিক আছে আমি কাল প্রেসক্লাবে সব বলব। শিক্ষক বেকায়দা দেখে বলল আসলে হয়েছে কি, আচ্ছা তুমি যাও, সূর্য বলল না যাব না এখন তারা গুনব বলে এক তারা, দুই তারা, তিন তারা করতে করতে চলে গেল। এদিকে সূর্য প্রায় ভোর রাতে মুক্ত বলাকায় পৌছে দেখে হয়রান আলী বাইরে বসে আছে আর রুমের মধ্য থেকে সবাই হাসছে কারন হয়রান আলীর সারা গায়ে বিশ্রী গন্ধ আর কাদামাটি। সূর্য ওদের মূল ঘটনা বলার পর ঘন্টা খানেক ধরে সবাই হাসতে লাগল এর পর হয়রানের ভাগ্যে কি হল সেটা অনুমান করে নেওয়া কঠিন না।

একদিন বাকি আছে তাই আর পড়া লেখা না করে দাদার লেকচার শুনে দিন পার করল এর পর নিচে চলে গেল ভাল কিছু কলম, কিছু সাইন পেন, পেন্সিল, স্কেল কিনে আনার জন্য। প্রতিবার পরীক্ষার আগে ও নতুন কাপড় কেনে এবারো তার ব্যতয় হল না। মুক্তবলাকায় রাতে ফিরে এসে সবাইকে নানা প্রকার সাজেশন দিতে লাগল। পরীক্ষা ওর কাছে সব সময় ঈদের মত কারন এক একটা পরীক্ষা শেষ হওয়া মানে এক একটা পাথর নেমে যাওয়া। রাতে রুমে পড়ার নেশায় সবাই মত্ত। টাক মাথার জ্ঞানী বাকি চুল ফেলে দিয়ে গুন গুন করে পড়ছে, হয়রান এমনিতেই মাথা গরম মানুষ তার পর সেই রাতের ঘটনা আর পড়ালেখার চাপ সব মিলিয়ে ওর প্রস্রাব পায়খানা বন্ধ হবার অবস্থা। দাদ সব সময়ের মত ফুরফুরে মেজাজে আছে কারন সব কিছু তার মুখস্ত।

সূর্য যদিও সারাক্ষন শয়তানি, বদমাইশি আর দুষ্টামি করে বেড়ালেও আদতে ও অত্যন্ত মেধাবী মানুষ তা না হলে কেবল শুনে শুনে কেউ ডিস্টিংশনের কাছাকাছি ফলাফল করতে পারে। সকালে উঠেই দাদাকে বলল দাদা এখন ভোর পাঁচটা দুই আগামী তিন ঘন্টা আমাকে যা পড়েছিস তার সারাং করে দিবি বাদ বাকি আমার দায়িত্ব। সূর্য দাদার সাথে গল্প করে আর পরীক্ষার সবক নেই। সূর্য আর দাদা নেমে জোস নাস্তা করে পরীক্ষার উদ্দেশ্যে রওনা হয়ে গেল। দাদা যেয়ে নিজের জায়গা খুজে পেয়ে এক মনে বসে রাম রাম করছে সূর্য অন্য চিজ সে পুরো পরীক্ষা হল ঘুরে দেখছে, কে কোথায় বসেছে সেটা দেখছে। একজন শিক্ষক এর দুই জন শিক্ষিকা আছেন রুমের মধ্যে। এর মধ্যে একজন খুব আধুনিক শিক্ষিকা বলে মনে হল কেননা সে বড় গলার পিঠ খোলা টাইট ব্লাউজ আর পাতলা শিফন শাড়ি পরে এসেছে, শিফন শাড়িটার মধ্য দিয়ে ম্যাডামের নাভি ও তলপেটের কিছু অংশ দেখা যাচ্ছে। সূর্য মনে মনে ভাবল এরকম হলে পরীক্ষা কিভাবে দেবে, যা যা মনে করে এসেছিল তা ভুলে বসে আছে এখন যা দেখছে সবই গোল গোল। ওর মনে হল বুয়েটে ভর্তি পরীক্ষার সময় এক এক ম্যাডাম ওর টেবিলের উপর পিছন ফিরে বসেছিল আর তাতেই ওর পরীক্ষা লাটে উঠেছিল। পরীক্ষা শুরু হলে প্রশ্ন দেখে বুঝল তিন ঘণ্টার পরীক্ষা দু ঘন্টায় শেষ হয়ে যাবে মানে ও যেটুকুর উত্তর দিতে পারবে তা মোটেই দুই ঘন্টার বেশি সময় নেবে না।

রুপেশ্বরী ম্যাডাম আজ ওর জন্য শাপে বর হয়ে এসেছে। এক পরীক্ষক ম্যাডাম খাতা পাতি দিয়ে তার কর্ম শেষ মনে করে মোবাইলে যে গিলে খেয়ে ফেলছে আর অন্য শিক্ষক তার সব কাজ ভুলে রুপেশ্বরী ম্যাডামের পেট, পিঠ হা করে গিলে খাচ্ছে আর নানা ছুতোয় তার সাথে গল্প করে মানে খুব কাছাকাছি গিয়ে দাঁড়িয়ে থাকছে এই ফাকে সূর্য বার কয়েক দাদার সাথে ভাব বিনিময় করে এল। ওর বান্ধবী জেমি পরীক্ষার সময় এলে ওর কাপড় চোপড় যেন আমূল বদলে যায় সূর্য পরীক্ষার সময় একবার বাইওরে যাবেই। দুই ঘন্টা হতে কিছুটা সময় বাকি সূর্য বাইরে গেল। ফেরার পথে মানে জেমির দিকে তাকিয়ে বলল লাভ নেই আজ তুই হেরে গেছিস রুপেশ্বরী তোর থেকে সেক্সি সবার নজর ম্যাডামের দিকে। জেমি বলল যেটুকু আছে তাতে জাকের মত চলে যাবে তুই যা। শিক্ষক মহাশয় একবার জেমির দিকে আর একবার রুপেশ্বরী ম্যাদামের দিকে দিকে তাকায়। সূর্য মাঝে মধ্যে নানা ছুতোয় স্যার কে ডেকে আনে, একবার বলে স্যার প্রশ্নে ভুল আছে, তো আর একবার বলে স্যার বেঞ্চি ভাল না, পরের বার বলে স্যার পানি খাব। সূর্যের উৎপাতে শিক্ষক বিরক্ত হয়ে ওকে শায়েস্তা করার জন্য হুট করে এসে বলল তুমি বার বার বেঞ্চের থেকে কি নকল করছো। সূর্য ব্যাপারটা বুঝে গিয়েছিল কি কারনে এ প্রশ্ন। আসলে পরীক্ষার টেবিল গুলোতে বছরের পর বছর একই বিষয়ের বিভিন্ন ব্যাচের পোলাপানের পরীক্ষা হয়ে চলেছে আর অধিকাংশ টেবিলে ভাল করে খুজলে যে কোন প্রশ্নের উত্তরের কিছুটা হলেও পাওয়া যাবে। ওদিকে দাদার ধুকপুকানি শুরু হয়ে গেছে কারন দাদার খাতার এক অংশ সূর্যের কাছে এবং সূর্যের একটা শিট ও দাদার কাছে। সবাই পরীক্ষা বাদ দিয়ে শিক্ষক আর সূর্যের কথোপকথন শুনছে। সূর্যের খাতা আর প্রশ্ন স্যারের হাতে।

শিক্ষকঃ জান টেবিলে নকল করার অপরাধে আমি তোমাকে এক্সপেল্ট করে দিতে পারি
সূর্যঃ জ্বি না স্যার আপনি পারেন না, কোন শক্ত প্রমান নেই
শিক্ষকঃ আচ্ছা বল দেখি পরিবেশ ও প্রতিবেশ এর পার্থক্য কি? কি?
সূর্যঃ স্যার আমি মুখস্ত পারিনা লেখার সময় মনে আসে
শিক্ষকঃ এই যে এই যে টেবিলে লেখা আছে পরিবেশ কি ? কত প্রকার? তুমি চলে যাও
সূর্যঃ না স্যার আমি যাচ্ছি না, খাতা দিয়ে দেন

শিক্ষক গগনবিদারী চিৎকার দিয়ে বলল কি যাবে না? তুমি একপেল্ট। সূর্য গম্ভীর ভাবে বলল না যাব না। পরীক্ষা শেষ হতে মিনিট বিশেক বাকি আছে এই সময় রুপেশ্বরী ম্যাডাম রুমে এসে বলল কি ব্যাপার রফিক স্যার চিৎকার করছেন কেন? আপনি কি নরম মোলায়েম ভাবে কিছু বলতে পারেন না? মনে হয় নরম ভাবে কিছু করতেও পারেন না? ব্যাপার হল কতক্ষন আর পুরুষের চোখের খাদ্য হওয়া যায় এই কারনে ম্যাডাম বাইরে যেয়ে জানালা দিয়ে ছেলে মেয়েদের দিকে তাকিয়ে ছিল। সুযোগ মত এসে সূর্যের খাতা নিয়ে টেবিলের সাথে মিলিয়ে লাস্যময়ী হাসি হেসে বলল রফিক সাহেব পরীক্ষা বায়োলজিক্যাল সায়েন্সের আর টেবিলে লেখা আছে অগাস্ট কোঁত এর সামাজিক বিজ্ঞান টাইপের সংজ্ঞা। আর কিছু বলা লাগল না রফিক স্যার খাতাটা দিয়ে বলে ইয়ে মানে মানে আমি তো ভেবেছিলাম আজ আজ…...। রুপেশ্বরী ম্যাডাম বলল চোখে সমস্যা হলে এক জোড়া চশমা নিয়ে নিন ভাল করে দেখতে পাবেন। দাদা এক ফাকে এসে খাতা নিয়ে গেছে সূর্য ওর খাতা জমা দিয়ে দিয়েছে যাবার সময় স্যার কে বলল স্যার চোখ একটা এক্সরে লাগিয়ে নেন।

যা হোক পরের কিছু পরীক্ষা ভাল করে শেষ হয়ে গেল। শেষ পরীক্ষার আগে সূর্য ও বন্ধুরা মিলে আগের রাতে পিকনিক করে কাটিয়ে দিল। অবশ্য পরীক্ষার হলের কাজ ও শেষ করে এনেছে সূর্য ও তার দুই বন্ধু দাদা ও হয়রান আলী। পরীক্ষা হবে সাগর-মহাসাগর এর বিষয় বস্তু নিয়ে। ব্যাপার হল, কিছু বড় বড় ছবি ও চিত্র দেখলেই এ পরীক্ষার সব কিছু লিখে ফেলা যাবে। এজন্য পিয়ন কে ঘুষ দিয়ে পরীক্ষার রুমের মধ্যে আগে থেকে ঝুলিয়ে রাখা কিছু ছবি সরিয়ে ওদের প্রয়োজনীয় ছবি লটকিয়ে দিয়ে এসেছে। পরেদিন পরীক্ষার হলে যেয়ে খোশ সূর্য কিছু চিত্রের উপর মোমের প্রলেপ দিয়ে ছবি করে নিয়ে এসেছে যাতে কাজ হলে ভেঙ্গে ফেলে দিতে পারে। পরীক্ষায় বসে দেখল ছবি আর মোম থেকে মোটামুটি আশিভাগ উত্তর দেওয়া যাবে তাই কোন দিক না তাকিয়ে কেবল সামনের দোয়ালের দিকে তাকিয়ে প্রথম দেড় ঘন্টায় যা লেখার লিখে ফেলল এখন কিছু ছবি আকলেই খেল খতম এমন সময় কোর্সের শিক্ষক প্রশ্ন হাতে রুমে ঢুকে জানতে এসেছিল পরীক্ষা কেমন হচ্ছে কিন্তু রুমে প্রবেশ করে দেওয়ালে ওশানোগ্রাফির বিভিন্ন ছবি দেখে তাজ্জব বনে গেল, কিছু বলতে গেলে অন্য বিভাগের শিক্ষকের সামনে নিজের মান সন্মান যায় এই ভয়ে রুম থেকে দ্রুত বের হয়ে গেল। সূর্য পরীক্ষার শেষ হবার ঘন্টাখানেক আগে পানি খাওয়ার নাম করে বের হয়ে গেল। প্রথমেই গেল মুত্র বিসর্জন দিতে। টয়লেট থেকে বের হয়েছে মাত্র শিক্ষক বলল আমাকে বলতেই হবে ছবি এনেছে কে তা না হলে সবাইকে ফেল করিয়ে দেব। সূর্য বলল সে আপনার ব্যাপার আপনি যদি বাজে শিক্ষক হতে চান তাহলে সেটাই হবে। শিক্ষক আর কিছু বলতে পারলেন না, কিন্তু গজ গজ করতে করতে চলে গেল। এছাড়া আসলে কিছু করার ছিল না কেননা সাড়া টার্মে সে পড়িয়েছে মাত্র তিন দিন। সূর্য কি মনে করে সিগারেট আর চা খেতে চলে গেল। যখন পরীক্ষার কথা মনে হল পড়িমরি করে হলের দিকে দৌড় দিল। এর মধ্যে ত্রিশ মিনিট পার হয়ে গেছে। শিক্ষক অরুপ বাবু খুব কঠিন গলায় বলল মিথ্যা বলে লাভ হবে না আমি চার তলার প্রতিটি টয়লেটে মানুষ পাঠিয়েছি তোমাকে খুজে পাওয়া যায়নি, কোথাই ছিলে বল। সূর্য দেখল এর সাথে প্যাচানো যাবে না তাই সোজা বলে দিল স্যার গলা ব্যাথা করছিল চা খেতে গিয়েছিলাম সাথে সিগারেট খেতে যেয়ে দেরি হয়ে গেছে। অরুপ বাবু বললেন এই কোর্স পরের বারে নিতে হবে, বাইরে ত্রিশ মিনিট নষ্ট করা, চা- সিগারেট খাওয়ার জন্য পরীক্ষা বাতিল করা হল। সূর্য বলল স্যার আমি পরীক্ষার আগেই নিয়ম পড়ে দেখেছি সেখানে এই ধরনের কোন নিয়মের কথা বলা নেই। অরুপ বাবু এক নিষ্ঠ নিয়মের মানুষ সে সাথে সাথে খাতার পিছনে নিয়ম দেখে বলল চোরের দশ দিন বাড়িওয়ালার এক দিন। সূর্য মনে মনে বলল দশ দিন লাগবে না আজ বাঁচলেই হবে।
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই মে, ২০২০ রাত ৯:১৮
৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

পানির অপচয় রোধ: ইসলামের চিরন্তন শিক্ষা এবং সমকালীন বিশ্বের গভীর সংকট

লিখেছেন নতুন নকিব, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৮:৪৬

পানির অপচয় রোধ: ইসলামের চিরন্তন শিক্ষা এবং সমকালীন বিশ্বের গভীর সংকট



পানি জীবনের মূল উৎস। এটি ছাড়া কোনো প্রাণের অস্তিত্ব সম্ভব নয়। পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তা'আলা ইরশাদ করেন:

وَجَعَلۡنَا... ...বাকিটুকু পড়ুন

মায়াময় স্মৃতি, পবিত্র হজ্জ্ব- ২০২৫….(৭)

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৭

ষষ্ঠ পর্বের লিঙ্কঃ মায়াময় স্মৃতি, পবিত্র হজ্জ্ব- ২০২৫-….(৬)

০৬ জুন ২০২৫ তারিখে সূর্যোদয়ের পরে পরেই আমাদেরকে বাসে করে আরাফাতের ময়দানে নিয়ে আসা হলো। এই দিনটি বছরের পবিত্রতম দিন।... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদিকে shoot করে লাভবান হলো কে?

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:২৪


শরিফ ওসমান হাদি যিনি সাধারণত ওসমান হাদি নামে পরিচিত একজন বাংলাদেশি রাজনৈতিক কর্মী ও বক্তা, যিনি জুলাই গণঅভ্যুত্থান-পরবর্তী সময়ে গঠিত রাজনৈতিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র হিসেবে পরিচিত। তিনি ত্রয়োদশ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আধা রাজাকারি পোষ্ট ......

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৫৬


আমি স্বাধীন বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করেছি। আমার কাছে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা, বা পূর্ব পাকিস্তানের সঙ্গে আজকের বাংলাদেশের তুলনা—এসব নিয়ে কোনো আবেগ বা নস্টালজিয়া নেই। আমি জন্মগতভাবেই স্বাধীন দেশের নাগরিক, কিন্তু... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্দিরা কেন ভারতীয় বাহিনীকে বাংলাদেশে দীর্ঘদিন রাখেনি?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:২০



কারণ, কোল্ডওয়ারের সেই যুগে (১৯৭১সাল ), আমেরিকা ও চীন পাকিস্তানের পক্ষে ছিলো; ইন্দিরা বাংলাদেশে সৈন্য রেখে বিশ্বের বড় শক্তিগুলোর সাথে বিতন্ডায় জড়াতে চাহেনি।

ব্লগে নতুন পাগলের উদ্ভব ঘটেছে;... ...বাকিটুকু পড়ুন

×