৪. বাংলাদেশে ১৯৭১ এর গনহত্যার পরিকল্পনা কাদের?
“মাসের পর মাস ধরে চলা এই হত্যাকান্ড চলে। এই হত্যালীলা কোন একদল উত্তেজিত যুবকের রাগের মাথায় ঘটানো কোন ঘটনা নয় - বরঞ্চ একদল সুপ্রশিক্ষিত আর পেশাদার আর্মি অফিসারের পরিকল্পনার সফল বাস্তবায়ন। মুসলমান সৈন্যদের পাঠানো হয়েছে তাদের স্বধর্মের মানুষকে হত্যা করতে আর তারা যান্ত্রিক ভাবে সুচারু রূপে সেই আদেশ পালন করেছে। যান্ত্রিক ভাবে এই হত্যাকান্ড চালাতে চালাতে তারা নিরস্ত্র মানুষ হত্যার নেশায় পড়ে গিয়েছিলো (সিগারেটের নেশারমতো) ...যা রাশিয়া দখলের পরে হিটলারের বাহিনীর মধ্যে দেখা গেছে। (Payne, Massacre, p. 29.)
রবার্ট পাইনের মতে বাংলাদেশের গনহত্যা বর্তমান সময়ের গনহত্যাগুলোর মধ্যে একটি অত্যন্ত সুপরিকল্পিত হত্যাকান্ড - একদল সামরিক কর্তার সুচিন্তিত পরিকল্পনার ফসল। যারা এই পরিকল্পনার প্রনেতা ছিলো - তারা হলো -
১) প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান,
২)জেনারেল টিক্কা খান,
৩) চিফ অফ স্টাফ জেনারেল পীরজাদা,
৪) নিরাপত্তা প্রধান জেনারেল উমর খান ও
৫) ইন্টেলিজেন্স চিফ আকবর খান।
(ম্যাসাকার পৃ. ১০২)।
এই গণহত্যা ও জেন্ডার ভিত্তিক আক্রোষ নিচু ব্যাংকের মিলিটারিদের মধ্যেও ছিলো - যারা স্বপ্রনোদিত হয়ে এই হত্যাকান্ডে অংশ নিয়েছে। যার মধ্যে বাঙালী জাতির প্রতি ঘৃনা (রেসিজম)ও একটা কারন। অধিকাংশ পাকিস্তানী সৈন্য মনে করতো - “বাঙালীরা বানর আর মুরগীর সাথে তুলনীয়।“
ইস্টার্ন কমান্ডার জেনারেল নিয়াজি মনে করতো - “বাঙ্গালিরা নিচু জায়গায় থাকা নিচু জাতের মানুষ।” তার অধস্তনরাও একই মতবাদে বিশ্বাসী ছিল।
সাংবাদিক ড্যান কগিন (Dan Coggin) জানান, “ এক পাঞ্জাবি ক্যাপ্টেন তাঁকে বলে যে আমরা যাকে খুশি হত্যা করতে পারি, কোন জবাবদিহিতা করতে হবে না।!” (রামেল, ডেথ বাই গভার্নমেন্ট, পৃ. ৩৩৫)
মুল রচনা: জেন্ডারোসাইট ওয়াচ
http://www.gendercide.org/
[জোন্ডারোসাইট ওয়াচ সাধারন মানুষের বিরুদ্ধে পরিকল্পিত হত্যালীলার বিষয়ে গবেষনা করে। তাদের মতে নিরস্ত্র মানুষের উপর সংগঠিত হত্যাকান্ড বা গনহত্যা বর্তমান শতাব্দীতে বিশ্বমানবতার বিরুদ্ধে বড় একটা হুমকী]
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই এপ্রিল, ২০০৮ রাত ৮:৫৪