somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বৃষ্টিমুখর…

২৬ শে অক্টোবর, ২০১৯ রাত ৯:৪৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :








বৃষ্টি ফোঁটাগুলো পুকুরের পানি'টায় অদ্ভুত এক ছন্দ তৈরি করছে..নিবিষ্ট মনে পানির ছন্দটা ধরার চেষ্টা করছে তনয়।।
বিশ্ববিদ্যালয়ে জীবনের বেশ বড় একটা সময় তনয়ের কেটেছে এই পুকুরের পাড়টায় বসে থেকে... যখনই ভালো না লাগা মুর্হুতগুলো সামনে এসে দাড়িয়েছে , তখনই সেই মনভার মনটাকে শুদ্ধ জলের বিশুদ্ধ এই বাতাসটায় ভিজিয়ে নিতে তৎক্ষণাৎ এসে হাজির হতো এখান'টায়!!

সকাল থেকে সে কি এক টিপটিপ বৃষ্টি সারা শহর জুড়ে...কয়েকদিনের এই টানা বৃষ্টিতে প্রকৃতি টা বিষম এক নিস্তদ্ধ রূপ ধারণ করেছে।।
'কোথাও কেউ নেই' এই ধরণের এক করুণ শূন্যতা চারপাশটায় খাঁ খাঁ করছে।তনয় অবশ্য গত ছয় বছরের বৃষ্টির দিনের অভিজ্ঞতায় এই পরিবেশটায় বেশ পরিচিত হয়ে গেছে।।

পরিবার থেকে এত্ত দূরে এই খেই হারানো মুর্হুতগুলো মাঝে মাঝে বেশ কাতর করে তোলে তাকে..এই যে নিজের ভেতরটাকে নিয়ে এই অতলান্ত নিঃশেষ ভাবনায় ডুবে যেতে যেতে সময়ের ব্যস্তনুপাতিক সমীক্ষাগুলো 'কি পেলাম- কি পেলাম না' অথবা 'কোথায় ছিলাম -কোথায় এসে পৌছেছি'এই সব ধরণের অর্থহীন শব্দ মাথায় বুনে বুনে মন'টাকে অস্থির করে তুলতো, তখনই এই পুকুরপাড়ে জলে ভেজা মাটির গন্ধটায় ডুব দিতে মন চাইতো তার।।



তনয় বেশ গভীরভাবে বৃষ্টির ফোটাগুলো লক্ষ করছে।একটু খেয়াল করে বৃষ্টির ফোঁটাগুলোর পার্থক্যটাকে ধরার চেষ্টা করছে।বৃষ্টির ফোটাগুলো সে কি এক অদ্ভুত অন্তমিলে বড়-ছোট ফোটায় ঝরে পরে পুকুরের পানি'টায় বিভিন্ন আকৃতির গোলাকৃতি স্রোত তৈরি করে একে অন্যের মাঝে বিলীন হয়ে যাচ্ছে!!

আচ্ছা, বৃষ্টির এই অন্তমিলদের সাথে কি জীবনের স্বপ্নদেরও কোন অন্তমিল আছে..???

সময়ের পরিক্রমায় এই যে জীবনে চাওয়ার অথবা পাওয়ার ইচ্ছা জাগানিয়া স্বপ্নদের মধ্যে যে বিশাল তারতম্য কিংবা বিস্তর ফারাক...যার কিছু কিছু মনে পরলে এখনো নিস্তব্ধতার অনুভূতি গ্রাস করে তোলে।।



আচ্ছা,একজন মানুষের জীবনে রব্বুল আলামীন প্রদত্ত সবচেয়ে অসাধারণ অলংকারিক পাওয়াটা ঠিক হতে পারে..??

হুম,সম্ভবত সেই মানুষটার স্বপ্নগুলো।সেই স্বপ্নগুলো যেগুলোর একমাত্র তার চোখে,তার চোখের পাতায়, তার নিজস্ব অভিব্যক্তির আলোকে চোখের তারাটায় এসে জমা হয়। প্রত্যেকটি মানুষই যে তার স্বপ্নের সমান বড়।।

একই স্বপ্ন লালন করা অসংখ্য মানুষ থাকা সত্ত্বেও প্রত্যেকটি মানুষের স্বপ্নগুলো আলাদা, ঠিক যেমনটা প্রত্যেকের হাতে আঙ্গুলের ভিন্ন ভিন্ন রেখা বা অঙ্কনগুলো।।

আর তাই তো মানুষ তার নিজস্ব সত্তাকে আবিষ্কার করতে পারে শুধুমাত্র তার স্বপ্নগুলোর মধ্যে দিয়ে।তার ব্যক্তিত্বের সবচেয়ে অসাধারণ রূপটি মেলে ধরতে পারে বিশাল এই দুনিয়া'টার সামনে।।



প্রথমত, তনয়ের সবচেয়ে বেশি মনে পরে সেই সময়টার কথা যেখানে শুধু কিছু সামষ্টিক আলাপ আর কিছু পুঁথিগত বই ছাড়া আর কোন বিচরণ কিংবা চিন্তার জায়গাই ছিলো না তার জীবনে। তার মতো সদ্য কিশোর হয়ে ওঠা অন্য কিশোরগুলো যখন ডাক্তার কিংবা সাইন্টিস্ট হওয়ার স্বপ্নে দুনিয়ার বুকে নতুন কোন রেখা এঁকে দেয়ার স্বপ্নে বিভোর, তখন তার চোখে পৃথিবীটা শুধুমাত্র ভিডিওতে দেখা চলমান কোন যুদ্ধক্ষেত্রে চিত্রগুলো।জীবন কিংবা পৃথিবীটাকে উপলদ্ধি কিংবা মানে'টা শুধু ততটুকুই।।

সেই এক ধারার তথাকথিত ধর্মীয় শিক্ষার সীমাবদ্ধ ক্ষেত্র'টা ছাড়া জীবনবোধের এর চেয়ে উচ্চতর কোন স্তর তার ছিলোই না।।

ঐ যে বলা হয়ে থাকে চোখের সামনের বর্ণিল এক চশমক...এক এক চশমায় ভিন্ন ভিন্ন চোখে আমরা সকলেই এই জগতটাকে দেখি।।

ঠিক যে রঙের চশমা আমাদের চোখে থাকে, জীবনটা ঠিক সেই রূপ বা রঙে আমাদের সামনে ধরা দেয়...তনয়ের ক্ষেত্রেও সম্ভবত ব্যাপারটা ঠিক সেই রকমই কিছু ছিলো।।

তার সামনে জীবনের অনুপম সত্য কিংবা জীবনের মানে ছিল শুধু সেই যুদ্ধচিত্রগুলো।।

অসত্যের পথে সত্য পথের পথিকদের যুদ্ধ তো চিরন্তন..তবে,তনয়ের আফসোসটা এখানেই যে এমন এক যুদ্ধের জন্য তাকে স্বপ্ন দেখানো হতো, যার সাথে সংস্কৃতি বা সভ্যতাগত দ্বন্দের নিরাসনে বিরাট এক প্রস্তুতির আয়োজন আর প্রস্তুতি প্রয়োজন।।

বুদ্ধিবৃত্তিক দৈন্যতায় যে কোনে সমাজের নূন্যতম মূল্যবোধগুলোও যেখানটায় বিলীন,ঠিক সেই সামাজিক প্রেক্ষাপটে দাড়িয়ে আমাদের এই সামাজিক বাস্তবতায় স্বপ্নগুলো কত বড় বাতুলতাই না ছিলো।।

এ যেনো ঢাল -তলোয়ারবিহীন এক নিরস্ত্র সেপাহীকে এক যুদ্ধ ময়দানে রেখে আসা।।

বুদ্ধিভিত্তিক পার্থক্যে একজন কতটা মহত আর কতটা দৈন্য হতে পারে তা সম্ভবত মানুষগুলোর চিন্তা আর সেই সাথে তার স্বপ্নের পরিকাঠামো দ্বারাই একমাত্র অনুভব করা যায়।।



দ্বিতীয়ত, তনয় তার জীবনে এর পরর্বতী কথিত স্বপ্নগুলোর বাস্তবিক কল্পনায় চিন্তা করতে আজও নিজেই নিজেকে নিয়ে পরিহাসে পরে যায়।।

এই বিশ্বচরাচরের সবচেয়ে দামী আর অসাধারণ বইটি ধারণ করে যেখানে কি না পুরো বিশ্বকে সত্য আর সুন্দরতায় জয় করার স্বপ্ন দেখা যায়, সেখানে কি না সে স্বপ্ন দেখতো এক সাধারণ ঘরের মালিক হবার।।

যেখানে কি না অসংখ্য অনুচর সকাল -বিকাল ব্যক্ত্বিতের অবকাশ না রেখেই তার সেবায় নিয়োজিত থাকবে।জীবনবোধের কি ভয়ংকর সব ক্ষুদ্রতা'তেই সে ডুবে ছিলো সেই সব স্বাপ্নিক কল্পনায়।।

তার সেই ক্ষুদ্র স্বপ্নগুলোর জন্য সে অবশ্য শুধুমাত্র তার নিজেকেই দায়ী মনে করে না...প্রচলিত এই সমাজব্যবস্থায় তার সেই সময়ের মতো পোশাক সম্বলিত মানুষদের নিয়ে, তার চারপাশের মানুষগুলো যে এর চেয়ে বেশি কিছু ভাবতেই যে অক্ষমতা ছিলো দারুণ।।



জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দেয়া মুহূর্তগুলোকে ঠিক কি বলা যেতে পারে..??সোনালী ক্ষণ নাকি রূপালি মুহূর্ত।নাকি কোন এক আলোর ফোয়ারা নিয়ে এগিয়ে আসা আলোকিত কোন ব্যক্তি।।

পৃথিবীতে কিছু মানুষের হৃদয়ের প্রাজ্জলতার বর্ণন সম্ভবত কোন শব্দে প্রকাশ করা সম্ভব না... হাফিজ ভাই ঠিক তেমনই একজন মানুষ তনয়ের জীবনে। না হলে কিভাবে এই মানুষটি তার মতো প্রচলিত শিক্ষা ব্যবস্থায় প্রায় নিরক্ষর একজন কিশোরকে এতটা ভালোবেসে সেই কঠিন পথটায় ছায়ার মতো আশ্রয় দিয়ে গেলেন।।

জীবনবোধের নতুন নতুন সব স্বপ্নে দুনিয়ার সাথে তনয়কে পরিচয় করিয়ে দিতে লাগলেন।।
সেই দিনগুলো আর সেই মানুষগুলোর দেখা না পেলে তো সম্ভবত আজকের এই বিমূর্ত অসাধারণ জলজ সকালটার দেখা তনয় কোন দিনই পেতো না তার জীবনে।



প্রিয়জন হারানো কতটা অসহায়ত্বের অনুভূতির সৃষ্টি করে থেকে তা শুধুই ব্যক্তির একান্ত অনুভবের।অসহায়ত্ব মনুষ্য জাতির নিদারুণ সঙ্গী। স্বাভাবিকত্বের জীবনযাত্রার উনিশ থেকে বিশ হলেই মানুষ তা হাড়ে হাড়েই উপলদ্ধি করতে পারো।।

কিন্তু প্রিয়জনদের এই বিরাট অনাকাঙ্ক্ষিত অসুখ সম্ভবত অসহায়ত্বের সকল সীমা পার করে দেয়।আর্থিক থেকে মানসিক সকল ক্ষেত্রে নিঃশেষ করে দেয়ার জন্য এই রকম কোন দুরারোগ্য রোগে আক্রান্ত অতি আপনজন হারানোই সম্ভবত যথেষ্ট।। তবুও মানুষ ঘুরে দাড়ায়...বেঁচে থাকার স্বপ্ন দেখে আবারো।।



বৃষ্টির প্রতিটি ফোটায় ভিজে ওঠা সোদা মাটির গন্ধটায় হারানো সময়গুলোর জং ধরা একটা গন্ধ এসে নাকে লাগছে তনয়ের।।

সেই সাথে একে একে তাজা হয়ে ওঠেছে মস্তিষ্কের ভাজেঁ ভাজেঁ ঢাকা পরা সব তিক্ত অথবা সজল অনুভূতিগুলো। স্বপ্ন যাত্রার সেই বিশাল পথপরিক্রমায় হোঁচট খাওয়া মুহূর্তগুলোও তো কম ছিল না তনয়ের জীবনে।প্রতিটি জয়ের পিছনে আইচবার্গের মতো লুকিয়ে থাকা পিছনের গল্পগুলো সম্ভবত কখনোই অন্য কাউকে বলা হয়ে ওঠে না অথবা জানানোই হয় না. ..কারণ সেই প্রাপ্তির অনুভূতিগুলো একান্তই উপলদ্ধির!! ব্যক্তি নিজে ছাড়া সেই উপলদ্ধির ক্ষমতা আর তা অনুভবও কেউই করতে পারে না।।



আচ্ছা,স্বপ্নের সর্বোচ্চ চূড়াটায় কি কেউ আরোহণ করতে পারে..??

উত্তরটা সম্ভবত 'না'!!

কারণ, মানুষের স্বপ্নের চূড়াগুলো তো অনেক সময় এভারেস্টের চেয়ে বড় কিংবা তার চাইতেও বিশাল।। স্বপ্নগুলোর পরিসীমা কিংবা সবোর্চ্চ উচ্চতার নাগাল পাওয়াটা কি কখনো সম্ভব??

এই উত্তরটাও সম্ভবত 'না'..।।

কারণ,প্রতিটি স্বপ্ন পূরণ যে নতুন নতুন আরো নানান স্বপ্নের প্রতিনিয়ত জন্ম দিতে থাকে।তবে, সম্ভবত স্বপ্নের উচ্চতা'টার একেক পযার্য়ে নতুন নতুন সব বাঁক নিতে থাকে।।

১০

তাই,যে দিন তনয় প্রথম দেশের পতাকাটা বুকে জড়িয়ে আমেরিকার হাউস অব স্টেটের মঞ্চে দাড়িয়ে 'পিস টকিং ' ডিবেটিংটায় প্রথম হয়েছিলো, সেটা সম্ভবত জীবনের সেই রকমই কোন এক নতুন বাঁক ছিলো,যার স্পর্শ তনয় করতে পেরেছিলো।।

বেশ অসাধারণ অনুভূতিময় একটা দিন ছিল সেটা তনয়ের জীবনে।আজকে দিনটার মতো অঝোর এক কান্নায় ভাসিয়ে দিয়েছিলো তার ভিতরের সত্তাটাকে।।

তিল তিল করে গড়ে ওঠা ঘুমের গভীরে দেখা স্বপ্নটা অক্লান্ত পরিশ্রমের পর ধরা দিয়েছিলো সে দিন।। হুম,তনয় আবারো বেশ ভালোভাবেই উপলদ্ধি করেছিলো," স্বপ্নেগুলো কোন দিন হাতে এসে ধরা দেয় না,স্বপ্নদের পথে হেঁটে চলতে হয় অবারিত"!!

১০

সময়ের পরিক্রমাটা জীবনকে নানান কিছু দিয়ে যায় নানান আঙ্গিকে।এই পথচলায় চারপাশ'টা আবিষ্কারের যাত্রা'টাও খুব একটা কম ছিলো না তনয়ের জন্য।।

আপাত অভিজ্ঞতায় বিশ্ববিদ্যালয় জীবনটাকে, মানুষকে দেখার আর মানুষকে চেনার কর্মযজ্ঞ এক পাঠশালা মনে হয়েছে তনয়ের কাছে।।
দিন শেষে পরিবার, সুখ্যাতি আর দলতন্ত্রের উর্ধে গিয়ে শুধু মাত্র সুন্দর মনের মানুষগুলোর সুন্দরতায় ডুবে থাকা সুন্দর আর সত্য কথাগুলোকে ভালবাসার আপ্রাণ চেষ্টা করে গেছে তনয়।।

মানুষগুলোর সেই সবুজ মন দেখে নিজের জন্যও এক টুকরো আলো খুজে নিয়ে আর মানুষগুলোর ক্ষুদ্রতাগুলো দেখে নিজের জন্য তা জয় করে নেয়ার ঐকান্তিক ইচ্ছেটা সাথে নিয়ে,সেই মহান করুণাময়ের পছন্দীয় পথে আরোও প্রত্যয় দীপ্ত হয়ে ওঠার ঐকান্তিক কামনা নিয়ে বেঁচে থাকা।

১১

সম্ভবত বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের শেষের দিকটাতেই প্রথম কেউ তার নিজের অস্তিত্বের স্বরূপ নিয়ে আত্মপ্রকাশ করতে শুরু করে।।

যেখানটায় দাড়িয়ে তাকে জানান দিতে হয় নিজের ব্যক্তি আর ব্যক্তিত্বের সম্মিলনে এক পরিপূর্ণ মানুষ হিসেবে।।

যে কিনা সত্য-মিথ্যার প্রভেদ করতে জানার সাথে সাথে নৈতিক -অনৈতিকতা মানদন্ডে উত্তীর্ণ হবার যোগ্যতা নিয়ে পুরো পরিবার, সমাজ আর রাষ্ট্র এবং পৃথিবীর পটে নিজের ভবিষ্যৎ পথচলার সুন্দতার চিত্র আকাঁর তুলিটা বুকপকেটে নিয়ে পথ চলতে পারবে।।

ঘড়ির কাঁটা'টাও তাই বলছে। অনেকটা সময়.. না না, অনেকটা না..বেশ লম্বা একটা সময়ই কাটিয়ে ফেলেছে সে এই জায়গাটায়।।

১২

জগন্নাথ হলের পেছনের গেইটা দিয়ে বের হয়ে 'ফুলার রোড'টা দিয়ে হাটতে শুরু করলো তনয়।।

এই রাস্তাটার শতবর্ষী গাছগুলো থেকে অনেক কিছু পেয়েছে তনয় সেই ফেলা আসা বছরগুলোতে।এই পাওয়াগুলো ঠিক শব্দে অথবা আঙ্গিক বিচারে প্রকাশ করার কোন সুযোগ নেই।।

শীতের সকালের তীব্র শীতময় সকালটা অথবা ঝিমিয়ে পরা বিকালের সেই এক রশ্মি আলোয় কিংবা ঘুটঘুটে আধাঁরে রাতের পাতার ফাঁক থেকে খুজে নেয়া এক ফালি চাঁদের আলো!!সব কিছু সে খুজেঁ নিয়েছে এই জায়গা'টা থেকে।।

গাছের মতো তো আর মানুষদের আপাত শতবর্ষী হওয়া সম্ভব না। তবে এই যে সুভাসিত মনের এক পথিকের জন্য তীব্র প্রশান্তির এক পলকা বাতাস হয়ে তীব্র গ্রীষ্মের দিনে অথবা এই টিপটিপে বৃষ্টির দিনে সজলতায় মুখর করে দেয়ার যে তীব্র প্রেরণা মন কাননে জাগিয়ে দিয়ে যায় এই বৃক্ষগুলো, তা সত্যি অসাধারণ।।

১৩

জীবনের সেই অন্ত মিলহীন,ছন্দহীন অথবা ছন্ন-ছাড়া মুর্হুতগুলোকে এক সুতোয় আজ আবারো বাঁধতে মন চাইলো তনয়ের।।

এই শর্তবর্ষী গাছগুলোর নিচে দাড়িয়ে পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর অনুভূতি'টা আজ আবারো অনুভব করে নিলো তনয়।সেই যে "সেই পরম পরাক্রমশালী আর জ্ঞানবান সত্তা ছাড়া সে আর কারো মুখাপেক্ষী নয়",এর চেয়ে অসাধারণ অনুভূতি আর কি হতে পারে কোন বিশ্বাসীর জীবনে।।

দিনের প্রথম সূর্যকিরণটা থেকে শুরু করে রাতে চাঁদের সেই রূপালি আলোর সেই রশ্মিটা,সে শুধু নিয়ে নিবে নিজের আত্মপ্রত্যায়ী পথচলার পাথেয়টুকু।।

১৪

বৃষ্টির গতিটা প্রতিমুর্হূতে বেশ প্রখর তীব্রতা নিয়ে শর্তবর্ষী বৃক্ষগুলোয় নতুন করে করে প্রতাপশালীরূপে ধরা দিচ্ছে তনয়ের চোখে।বাতাসে সাথে গাছের পাতাদের পরম আত্মিক ঘর্ষণে বেশ বিকট কিন্তু অন্তমিল সমৃদ্ধ এক শব্দের সৃষ্টি করছে।।

আচ্ছা,বৃষ্টির ফোঁটারা কি মানুষদের মনে দুশ্চিন্তাহীন আর নির্ভারময় কোন অনুভূতি এনে দিতে পারে..???

"সম্ভবত পারে"!!

তা না হলে,
মাথার ওপর থেকে ছাতা'টা সরিয়ে দিয়ে,কানের ভিতর হেডফোনটা গুঁজে দিয়ে তার সেই পুরোনো খুব পছন্দের গান'টা বৃষ্টির ছন্দে অনেকদিন পর আজ আবারো শুনতে মন কেনো চাইছে???

“ Raindrops are falling on my head
And just like the guy whose feet are too big for his bed
Nothing seems to fit
Those raindrops are falling on my head, they keep falling
So I just did me some talking to the sun
And I said I didn't like the way he got things done
He's sleeping on the job
Those raindrops are falling on my head, they keep fallin'
But there's one thing I know
The blues they send to meet me
Won't defeat me
It won't be long 'till happiness steps up to greet me
Raindrops keep falling on my head
But that doesn't mean my eyes will soon be turning red
Crying's not for me
'Cause, I'm never gonna stop the rain by complaining
Because I'm free
Nothing's worrying me.”






গল্পকথাঃখুব ইচ্ছে ছিল কোন এক ঝুম বৃষ্টির রাতে প্রকৃতি যখন জলে টইটুম্বুর করবে, সে রকম কোন রাতে গল্পটা পোস্ট করবো।আপাতত প্রকৃতির বৃষ্টির চিন্তা বাদ দিয়ে গল্পে বৃষ্টি জলে ডুবে যাওয়া যাক।।


উৎসর্গঃপ্রতিটি বৃষ্টিপাগল সিক্ত অন্তরাধিকারীদের!!

সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে অক্টোবর, ২০১৯ রাত ৯:৫৬
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শ্রমিক সংঘ অটুট থাকুক

লিখেছেন হীসান হক, ০১ লা মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪৮

আপনারা যখন কাব্য চর্চায় ব্যস্ত
অধিক নিরস একটি বিষয় শান্তি ও যুদ্ধ নিয়ে
আমি তখন নিরেট অলস ব্যক্তি মেধাহীনতা নিয়ে
মে দিবসের কবিতা লিখি।

“শ্রমিকের জয় হোক, শ্রমিক ঐক্য অটুট থাকুক
দুনিয়ার মজদুর, এক হও,... ...বাকিটুকু পড়ুন

কিভাবে বুঝবেন ভুল নারীর পিছনে জীবন নষ্ট করছেন? - ফ্রি এটেনশন ও বেটা অরবিটাল এর আসল রহস্য

লিখেছেন সাজ্জাদ হোসেন বাংলাদেশ, ০১ লা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৪

ফ্রি এটেনশন না দেয়া এবং বেটা অরবিটার


(ভার্সিটির দ্বিতীয়-চতুর্থ বর্ষের ছেলেরা যেসব প্রবলেম নিয়ে টেক্সট দেয়, তার মধ্যে এই সমস্যা খুব বেশী থাকে। গত বছর থেকে এখন পর্যন্ত কমসে কম... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রতিদিন একটি করে গল্প তৈরি হয়-৩৭

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ০১ লা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৫১




ছবি-মেয়ে ও পাশের জন আমার ভাই এর ছোট ছেলে। আমার মেয়ে যেখাবে যাবে যা করবে ভাইপোরও তাই করতে হবে।


এখন সবখানে শুধু গাছ নিয়ে আলোচনা। ট্রেনিং আসছি... ...বাকিটুকু পড়ুন

একাত্তরের এই দিনে

লিখেছেন প্রামানিক, ০১ লা মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৬


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

আজ মে মাসের এক তারিখ অর্থাৎ মে দিবস। ১৯৭১ সালের মে মাসের এই দিনটির কথা মনে পড়লে এখনো গা শিউরে উঠে। এই দিনে আমার গ্রামের... ...বাকিটুকু পড়ুন

হুজুররা প্রেমিক হলে বাংলাদেশ বদলে যাবে

লিখেছেন মিশু মিলন, ০১ লা মে, ২০২৪ রাত ৯:২০



তখন প্রথম বর্ষের ছাত্র। আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে আমাদের আরেক বন্ধুর জন্মদিনের উপহার কিনতে গেছি মৌচাক মার্কেটের পিছনে, আনারকলি মার্কেটের সামনের ক্রাফটের দোকানগুলোতে। একটা নারীর ভাস্কর্য দেখে আমার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×