somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কায়রোর রাজপথে...

০১ লা এপ্রিল, ২০২০ রাত ৩:২১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :





২০২০!

সকাল:৯.৩০

হঠাতই বেজে ওঠা ফোনটা ধরতে নিজের সস্থানে থেকে কাউন্টারের দিকে ছুটে গেলেন মিস জুয়াইরিয়া হামিদ।

:"হ্যালো" :"আসসালামুআলাইকুম"

:"জ্বী ,অবশ্যই আমিই সবকিছু ঠিক করে ফেলার যথাসম্ভব চেষ্টা করবো "

:"জ্বী,ওয়ালাইকুম আসসালাম।" ফোনের ওপাশের কথার উত্তরে কথাগুলো বলেই আবারো কাজে ছুটে গেল ।

সহকর্মীদের সবকিছুর ব্যাপারে আবারে জোরালো নির্দেশনা দিয়ে নিজেও কাজে লেগে পড়লেন,আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিমেইল সেকশনের লাইব্রেরি ইনচার্জ মিস জুয়াইরিয়া হামিদ।

এই কয়েকটা দিন বেশ ব্যস্ততায় দিন কাটছে তার।পুরো লাইব্রেরি সেকশনটাই ঢেলে সাজাবার দায়িত্ব দেয়া হয়েছে তাকে এবং হাতে সময় খুব কম।পুরোনো অনেক বই সংগ্রহ করতে হচ্ছে।আবার নতুন অনেক বই সংযোজন করতে হচ্ছে।



বিশেষ করে'১৩ এর বিপ্লবে অংশগ্রহণকারী অনেক শিক্ষার্থীর ব্যক্তিগত বই,ডায়েরিসহ তাদের হ্যান্ডনোটগুলো সংরক্ষণ করে রাখার জন্যও বিশাল এক সেকশন যুক্ত করা হয়েছে সবার জন্য। বিশাল এক আক্টোপাসের অষ্ট পায়ে আবৃত থাকা মিশর, সেই ভয়াল এক একটি পা বির্দীণ করে,এই পবিত্র ভূমির স্বমহীমায় আর্বিভূত হয়েছে মাত্র কিছুদিন হলো।

বিশ্ব মোড়লদের কাচঁকলা দেখিয়ে মিশরবাসী দেখিয়ে দিয়েছে ঐক্যের শক্তি ও খোদার অপরিমেয় রহমতের এক অভূতপূর্ব নজির। নতুন উদ্দ্যমে মিশরবাসী শুরু করেছে তাদের পুর্নগঠনে কাজ।সেই কথাগুলোর মতো"বদরের প্রান্তরে দয়াময় যে প্রভু,মুমিনের সাথে ছিল অবিচল,হাজার বছর পরে রহম ও করমে, সেই প্রভু আজও আছে অবিকল"মিশর যেন তার বাস্তব সাক্ষ্য হয়ে উঠেছে।আল্লাহর সাহায্য পাওয়া কোন অকল্পনীয় ব্যাপার নয়,শুধু তার বান্দাদের মুমিনের মত মুমিন হত হয় মাত্র।




নতুন প্রজন্মের কাছে এই উজ্জল অতীত চির অম্লান করে রাখতে তাই লাইব্রেরিটাকে আরও সমৃদ্ধ করার চেষ্টা করা হচ্ছে।নতুন সেকশনটায় তাই একটু বেশিই কাজ করতে হচ্ছে। বিভিন্ন ডায়েরি, খাতা-পত্র আর নোট-বইগুলো অনেক আগের জব্দ করা এবং অনেক কিছুই বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিল।তাই সবগুলো জিনিস একত্রিত করতে বেশ কষ্ট আর ঝামেলা পোহাতে হয়েছে জুয়াইরিয়াকে।প্রায় অবহেলা আর অযত্নে ফেলে রাখা জিনিসগুলো কিভাবে এতদিন পরও অক্ষত অবস্থায় পাওয়া গেলো, তা ভেবেই সিজদায় নুয়ে পরে জুয়াইরিয়া।

এত্তবড় দায়িত্বটা কিভাবে আল্লাহ রাব্বিল আলামীন তার ওপরেই দিলো , তা ভেবেই কৃত্জ্ঞতায় ভরে ওঠে তার মন। একই সাথে কতটুকু দায়িত্বশীলতা আর আমনতদারিতার সাথে করতে পারবে তা ভেবেও চিন্তায় পরে যায় সে।তবে এই কাজ করতে গিয়ে যে পদে পদে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন অপরিসীম সাহায্য পেয়ে আসছে, তা খুব ভালোভাবেই অনুভব করেছে সে।




ডায়েরির রো'টায় লেভেল লাগানো ডায়েরিগুলো সেটআপ করতে নিজেই হাত লাগালো জুয়াইরিয়া। আনমনে ডায়েরিগুলো রাখতে গিয়ে, হঠাতই হাতে লাগা 'বদ্ধ এক ডায়েরি' সন্ধান পেয়ে বেশ অবাক হলো সে।

বেখেয়ালে এতদিন এই ডায়েরি এভাবেই পরে ছিল,তা ভেবে বেশ অবাক হলো জুয়াইরিয়া। কি করবে এই ডায়েরিটা নিয়ে ঠিক ভেবে পেল না ।শেষমেষ লাইব্রেরি অর্থোরিটির অনুমতি নিয়ে নিজেই ডায়েরির ভেতরটা আবিষ্কার করার সিদ্ধান্ত নিলো সে।



রাতে স্টাডি টেবিল বসে হঠাতই। সকালের ডায়েরিটার কথা মনে পরে যায় জুয়াইরিয়ার।তাড়াতাড়ি ব্যাগ থেকে ডায়েরিটা বের করে টেবিলে রাখলো ।

রাতের নিস্তদ্ধতা অনেক আগেই গ্রাস করেছে চারপাশের চঞ্চলতা। শুক্লা দ্বাদশীর চাঁদটা বহু আগেই পূর্ণ হয়ে উঠেছিল আকাশটায়।রাতের নিস্তদ্ধতার সাথে তাল মিলিয়ে বারবারই হিমেল বাতাস টা জানালার পর্দাগুলোকে দুলিয়ে বহুদূর পর্যন্ত গিয়ে আবারো মিলিয়ে যাচ্ছিলো।কেনো জানি দেয়াল জুড়ে অসংজ্ঞায়িত কিছু আবদ্ধ বিষাদ অনুভব করছিল জুয়াইরিয়া।

ডায়েরির প্রথম পাতাটা মেলে দেখলো জুয়াইরিয়া তার চোখের সামনে। ডায়েরির প্রথমে অসম্ভব সুন্দর হাতে লেখা নামটা পড়ে বেশ পুলকিত হলো সে।"হুমায়রা মারিয়াম"!



পৃথিবীর বুকে মিশে যাওয়া অব্যক্ত সব কথামালা,ধুলোয় ঢেকে যাওয়া কালের কফিন অথবা ভুলতে চাওয়া অতীতস্মৃতি গুলো, কালের গর্ভে বিলীন হতে হতে বেচে যাওয়া সুখস্মৃতিগুলোর সবচেয়ে প্রাচীন আর সহজ মাধ্যম সম্ভবত 'ডায়েরি'।। পৃথিবীর পটে পটে যুগ-যুগান্ত ধরে হেটে চলা মানব-সভ্যতাকে সম্ভবত এর চেয়ে অমিলন ভাবে আর কেউ আবিষ্কার করতে পারে নি। শুধু মানব সভ্যতা কেনো..এক একটি কালের গর্ভে হারিয়ে যাওয়া ক্ষুদ্র মানবপ্রাণকে আবিষ্কার করা যায় তো শুধু এই ডায়েরির মাধ্যমেই।

এই যে জুয়াইরিয়ার সামনের ডায়েরিটা,যেখানে অপরিচিত এক বালিকার মনের ভেসে চলা "সেই সাদা -শুভ্র মেঘের ভেলা অথবা তার জীবনের জোনাকি জ্বলে ওঠা সেই সব সিগ্ধ রাত আবার অন্য দিকে সেই সব উদভ্রান্ত দমকা হওয়াময় প্রতিটি ক্ষন, তারই মধ্যে রংধনু ছোয়া অনুপম সব অনুভূতি, যেখানে জায়গা করে নিচ্ছিল সব সপ্নিল মুগ্ধতা" একে একে ভেসে উঠতে লাগলো জুয়াইরিয়ার মানসচক্ষে। একের পর এক পাতা পাতা উল্টাতে লাগলো জুয়াইরিয়া।

পৃষ্ঠার পরতে পরতে বেড়ে ওঠা "উর্ণাজালা স্মৃতি,মনের গহীনের প্রগাঢ় নিকুঞ্জ,বিমুগ্ধ বেদনার শান্তি,রঙিন সাঁঝে বেজে ওঠা বেদনার বীণ অথবা শেষমেষ আকস্মাৎ প্রসন্নতা" পথে হেটে হেটে থমকে দাড়ালো জুয়াইরিয়া।




এক পিরামিড সভ্যতার পিছনে কাহিনীর রক্তাক্তার ইতিহাস কতটা নির্মম আর ভয়ংকর, তা ইতিহাস বহু আগেই লিখে দিয়ে গেছে।একেকটি সভ্যতা যে কত সহস্র বলিদানের মধ্যে দিয়ে প্রতিষ্ঠিত হয় তা জানতে এক জীবনও সম্ভাবত যথেষ্ট নয় ।

সেই যে সৃষ্টির প্রথমদিন থেকে আলোকিত পথে চলার তীব্র ও আকৃত্রিম বাসনা নিয়ে এক -একটি সবুজ প্রাণ নিরন্তন পথ চলেছে.... আর পদে পদে বিপত্তির পরিণতিতে তাদের সেই অবিরত সুগন্ধি মাখা আত্মাগুলোর সুবাস ছড়িয়ে দিক-বিদিকে ... কেনো জানি তাদের সেই আত্মার সুবাসগুলো একদমই ব্যতিক্রম।

পদে পদে অসংখ্য হিংস্রতা আর বৈরিতা নিয়েও জীবন সায়ন্নে তাঁরা হেসেছে বিজয়ীর হাসি।ইতিহাস তাদের যত বেশি মুছে ফেলার চেষ্টা করছে, ততই তাঁরা প্রজ্জলিত হয়ে ওঠেছে সমগ্র মানবতা জুড়ে।।

পৃথিবীর জুড়ে খোদায়ী বিধান প্রতিষ্ঠার সেই নিরন্তর প্রচেষ্টা যে আজও ধারাবাহিক, তা পৃথিবীর প্রতিটি কোণে সূর্যালোর মতোই দিব্যমান।সেই চলার পথে কত মানুষের যে জীবনের স্বাভাবিকতার সুর কেটেছে, অঙ্গ-প্রতঙ্গের সাথে কেটে ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন হয়েছে মানব-হৃদয়,সেই খবর এই মর্ত্যলোক ছাড়িয়ে, শুধু আরশে-আজীমেই পৌঁছেছে।

জীবনের সুর কাটা মুর্হুতগুলো কখনো বলে কয়ে আসে না। হুমায়রাও জানতো না তার জীবনের সুর-কাটা সময়গুলো প্রতীক্ষমান।
তবে ,হুমায়রা সম্ভবত তার বাবার প্রদক্ষেপের চঞ্চলতা আর শষ্কাময় সেই মুখচ্ছবি দেখে কিছুটা আঁচ করতে পেরেছিল।একজন উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তা এবং খোদায়ী রঙে রঙিন মানুষটার সেই অস্থির চাহনিটা যে অন্য কিছুই বুঝাতে চাচ্ছে সেটা বুঝতে হুমায়রার সম্ভবত একটু দেরীই হয়েছিল।

সেই জন্যই সম্ভবত তিনি শেষ মুর্হুতে আর অস্থির সেই সময়েই আদরের মেয়ের একটা নতুন ঠিকানা দেখে যেতে চাচ্ছিলেন। কিন্তু শেষ দেখা সম্ভবত উপরওয়ালার মঞ্জুর ছিল না।বাবার মতো সেই নিরাপদ আশ্রয় যে হুমায়রার জীবনে ফুরিয়ে এসেছে সেটা সে ঘূর্ণাক্ষরেও বুঝতে পারে নি। হঠাত এই অর্ন্তধান এবং পরর্বতীতে বাবার কোন হদিস না পাওয়া একদমই মেনে নিতে পারে নি হুমায়রা।। মনে মনে ভাবলো জুয়াইরিয়া।



"আচ্ছা,মানুষের জীবন তার নিজের জন্য সবচেয়ে রহস্যময় বিষয়টা আসলে কি.?? তার সামনে মানুষদের মনকে বুঝতে না পারা নাকি নিজের মন নিজেই পড়তে না পারা..??সম্ভবত তার নিজের মনকে পড়তে না পারা.." গ্রীন ট্রির কাপটায় শেষ চুমুক দিয়ে বারান্দায় দাড়িয়ে আনমনেই ভাবতে লাগলো সে। হুমায়রার সাথেও সম্ভবত এই রকম কিছুই ঘটেছিল তখন।

হঠাতই আসা অচেনা বেলি ফুলের মায়া সম্ভবত প্রথম ঝলকে কেউই বুঝতে পারে না।তাই সম্ভবত বেখেয়ালী জানালায় অচিন মানুষের ডাক আর তারই সমস্বরে বাবারও একই সিদ্ধান্ত সবই অমূলক ঠেকছিল তার কাছে।

তবে,কিছুদিন পরেই যে বাবার ইচ্ছেটার বহি:প্রকাশটা তার মনেও কোন একদিন বেজে উঠবে মোটেই বুঝতে পারে নি।

আর ভাববেই না কেনো..সেই অস্থির সময়ের জীবন সন্ধিক্ষণে কোন এক সত্যপ্রাণ মানুষের পদচারণা যে বারবার হুমায়রাকে আনমনে বিমোহতি করে তুলছে, সেটা তার লেখার বিশেষণপূর্ণ অভিব্যক্তি দ্বারা ভালোভাবে বোঝা যাচ্ছে।

হুম,তাঁর সেই প্রদীপ্ত অগ্নিঝরা কথামালায় যে শত সহস্র মানুষের সাথে হুমায়রাকে এবং সেই সাথে রাজপথটাকেও প্রকম্পিত করে তুলছিল।



জীবনে ঘটমান সময়গুলোর সবচেয়ে ভয়ংকর একটা সময়ের জানান পাচ্ছিলো হুমায়রা। তার লেখার ছন্দের ভিন্নতাও যেন সে কথার প্রমাণ দিচ্ছে। শব্দগুলোর জালে আটকা পড়লো জুয়াইরিয়া।শব্দের বর্ণনাভঙ্গিগুলো যেন প্রাণচঞ্চল হয়ে একে একে দৃশ্যমান হয়ে ওঠতে চাইলো জুয়াইরিয়ার চোখে।

"শত-সহস্র মানুষ,দৌড়াদৌড়ি, টিয়ার-গ্যাস,প্রকান্ড শব্দ, রক্ত" শব্দের পরিভাষায় সেই দৃশ্য বর্ণন চেষ্টা নিতান্তই ব্যর্থ। হুমায়রা সেই জীবন্ত অভিব্যক্তিগুলো যেন মধ্যরাতের নিরবতা ভেঙ্গে খান -খান করে দিচ্ছিলো । নিস্তদ্ধ পৃথিবীতে শুধু যেন রাত-জাগা পাখিগুলোই জুয়াইরিয়ার সেই মুষরে পরা অভিব্যক্তির সঙ্গ দিতে ডানা ঝাপটিয়ে সঙ্গ দিয়ো যাচ্ছিলো ।

১০

নিস্তদ্ধতাকে বারবার দূরে ঠেলে সামনে এগিয়ে যেতে চাইলো জুয়াইরিয়া। শেষমেষ দৃঢ়তার সাথে আবারো ডায়েরির পাতা খুলে বসলো জুয়াইরিয়া। আজকে রাতেই ডায়েরিটা পড়ে শেষ করা চাই।

তাদের যাপিত জীবনের অতিক্রান্ত সময়গুলোও যে প্রভাবক হয়ে হুমায়রার উচ্ছলতাকে নতুন মাত্রা দিয়ে যাচ্ছিলো বারবার তাও রীতিমত স্পষ্ট হয়ে ওঠেছে।সেই যে ভয়ংকর সেই ছোটাছোটির সময়ও একে-অন্যের সামনে পরে যাওয়া,হুমায়রাকে নিরাপদ স্থানে সরে যাওয়ার নেই আকুল আহবান আর সেই স্বরের প্রতিটি শব্দে হুমায়রার চলন শক্তিরোধের নিরব শক্তি দৃশ্যপটকে না চাইতেও নতুন রূপে সাজতে বাধ্য করছিল।

সেই জন্যই সম্ভবত হুমায়রার চেয়েছিল তার মায়ের সাথে সাক্ষাতের সময় তাদের এই বিষয়টা নিয়ে কথা হোক।

১১

তার সেই অস্বাভাবিক চাওয়ায় যে সবাই পেরেশান হবে,তা হুমায়রা খুব ভালো করেই জানতো।আর তার প্রতিক্রিয়াও যে কি হতে পারে, তাও সে বেশ আঁচ করতে পারছিল ।

কেউই যে তাকে সে মুর্হুতে বুঝতে পারবে না,সেটাই তো স্বাভাবিক।তাই সম্ভবত হুমায়রা তার মনের কথাগুলো সযত্নে ডায়েরির পাতায় তুলে রেখেছে।সে যে অপার্থিব কিছু পাওয়ার জন্যই ব্যাকুল হয়েছিল, সে কথাই পই পই করে সে লিখে গেছে ডায়েরির পাতায়।

রাজপথে সেই আহ্বান যে সে একমুর্হতের জন্যও অগ্রাহ্য করতে রাজি না, সেকথাও সে দৃঢ়শব্দে বর্ণনা করে গেছে। পার্থিবতাকে পিছনে ফেলে সে যে অন্তনকালের সেই ভুবনের সহযাত্রী হতেই বেশি আগ্রহী,সেই কথা তাকে বোঝাতে না পারার ব্যর্থই তাকে ব্যথিত করে তুলছিল।

"হুমায়রার জীবনের সেই অদ্ভূত শূন্যতাময় খাঁ খাঁ অনুভূতির কি নাম দেয়া যেতে পারে..!!" ঝাপটে ধরা এই আনমনা অনুভূতিকে পাশে ঢেলে রেখে সামনে এগোতে লাগলো জুয়াইরিয়া। তবুও,বেখেয়ালী জানালা পথ বেয়ে ওঠা সেই অলেখ্য অনুভূতির কোন নাম দিতে না পারার ব্যর্থতা আকঁড়ে ধরলো তাকে ।

১২

চারপাশের সেই অসহ্য আর নিশ্চুপ অন্ধকারচ্ছান্নতার মাঝে এক বিন্দু আলোর হাতছানি পেয়ে যেন জ্বোনাকি জ্বলে ওঠা রাতের সিগ্ধতায় নিজেকে আবিষ্কার করলো হুমায়রা।

জ্বোলাকির আলো পথিককে গন্তব্য পৌছে দেয় না..তবে পথিকের মনের সেই তিমিরকুন্তলা পথে এক ঝলক বিমুগ্ধ বেদনার শান্তি হয়ে শক্তির সঞ্চরণ করে।

হুমায়রাও সম্ভবত সেই বেদনার সরোবরের অতলে ডুবন্ত অবস্থা থেকে স্বপ্নের রুপালি নীড়ের সখ্যতা খুজে নিয়েছিল।

উদাস দুপুরের শব্দহীন নিশ্চুপতায় আবিষ্কার করেছিল,উঠোন ছাপিয়ে আছড়ে পরা ঝুম বৃষ্টি।

সম্ভবত প্রাণ মোহনায় আগাম চলার সুরধ্বনি ঝঙ্কারিত ছন্দ অপেক্ষার জানালা ছুয়ে সস্থির নিশ্বাস ফেলছিল।
হুম,শুধুমাত্র এক টুকরো "চিরকুট "!!


১৪

ডায়েরিতে এর পরে আর কোন রেখা খুজে পাই নি জুয়াইরিয়া। তবে..

"তবে, মুষরে পরে থাকা এই টুকরো চিরকুটের কথাই কি বলছিল হুমাইরা..??" অবাক বিস্ময়ে ডায়েরির শেষ পাতায় সদ্য আবিষ্কৃত কাগজের টুকরোর দিকে তাকিয়ে নির্বাক হয়ে নিজেকেই প্রশ্ন করলো জুয়াইরিয়া।

সন্তর্পণে ধীরে ধীরে কাগজের ভাজগুলো খুলতে লাগলো জুয়াইরিয়া।

নাহ,খুব সামান্য কিছু কথা.. তবে কথাগুলো আর বলতে না চায় জুয়াইরিয়া..শোনাতে চায়...

"জানো হুমায়রা, আমি আমার রবের কাছে ঐ দুনিয়াতেও একটুকরো এই রাজপথ চেয়ে নিবো।।আমাদের দেখাটা না হয় সেই রাজপথেই আবার হবে!!"




বি:দ্র: ১.গল্পটা লিখেছিলাম সম্ভবত পাচঁ -ছয় বছর আগে।।সেই ভয়ংকর মুর্হুতগুলোর কিছুদিন পরেই।হাত কাঁপতে কাঁপতে এক মুর্হুতের জন্য নিশ্বাসটা বন্ধ করে 'সময়টা' লিখছিলাম..একটাই চাওয়া ছিল,মিশরটা যেন অন্তত সেই 'সময়টার ' মধ্যে আবার সেই জায়গাটায় ফিরে যায়।।

তাই সামান্য কিছু রদবদল না করে 'সময়টা' অপরিবর্তিত রেখে আবারো লিখলাম।

২.গল্পটা লেখার অনেকদিন পর নিজেই গল্পটা পড়ে বেশ অবাক হয়েছে।এমন একটা সেনসিটিভ বিষয় নিয়ে এই রকম অদ্ভুত থিম মাথায় কোথা থেকে এসেছিল, তা বুঝতে না পেরে হয়রান হয়েছি।১


সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে অক্টোবর, ২০২৩ বিকাল ৩:১৪
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কিভাবে বুঝবেন ভুল নারীর পিছনে জীবন নষ্ট করছেন? - ফ্রি এটেনশন ও বেটা অরবিটাল এর আসল রহস্য

লিখেছেন সাজ্জাদ হোসেন বাংলাদেশ, ০১ লা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৪

ফ্রি এটেনশন না দেয়া এবং বেটা অরবিটার


(ভার্সিটির দ্বিতীয়-চতুর্থ বর্ষের ছেলেরা যেসব প্রবলেম নিয়ে টেক্সট দেয়, তার মধ্যে এই সমস্যা খুব বেশী থাকে। গত বছর থেকে এখন পর্যন্ত কমসে কম... ...বাকিটুকু পড়ুন

সম্পর্ক

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ০১ লা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৪২


আমারা সম্পর্কে বাঁচি সম্পর্কে জড়িয়ে জীবন কে সুখ বা দুঃখে বিলীন করি । সম্পর্ক আছে বলে জীবনে এত গল্প সৃষ্টি হয় । কিন্তু
কিছু সম্পর্কে আপনি থাকতে চাইলেও থাকতে পারবেন... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রতিদিন একটি করে গল্প তৈরি হয়-৩৭

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ০১ লা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৫১




ছবি-মেয়ে ও পাশের জন আমার ভাই এর ছোট ছেলে। আমার মেয়ে যেখাবে যাবে যা করবে ভাইপোরও তাই করতে হবে।


এখন সবখানে শুধু গাছ নিয়ে আলোচনা। ট্রেনিং আসছি... ...বাকিটুকু পড়ুন

একাত্তরের এই দিনে

লিখেছেন প্রামানিক, ০১ লা মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৬


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

আজ মে মাসের এক তারিখ অর্থাৎ মে দিবস। ১৯৭১ সালের মে মাসের এই দিনটির কথা মনে পড়লে এখনো গা শিউরে উঠে। এই দিনে আমার গ্রামের... ...বাকিটুকু পড়ুন

হুজুররা প্রেমিক হলে বাংলাদেশ বদলে যাবে

লিখেছেন মিশু মিলন, ০১ লা মে, ২০২৪ রাত ৯:২০



তখন প্রথম বর্ষের ছাত্র। আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে আমাদের আরেক বন্ধুর জন্মদিনের উপহার কিনতে গেছি মৌচাক মার্কেটের পিছনে, আনারকলি মার্কেটের সামনের ক্রাফটের দোকানগুলোতে। একটা নারীর ভাস্কর্য দেখে আমার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×