যদিও আমি আদার ব্যাপারী তবুও লিখতে ইচ্ছে হইলো মূলত ক্রোধে লিখসি । শুরুতেই একটু ছোট গল্প দিয়ে শুরু করি ।
কোন এক পার্কের বেঞ্চে বসে আছে ২টা বাচ্চা আসলে তারা যমজ, একি রকম দেখতে , একজন টিশার্ট পরা একজন পাঞ্জাবী । টিশার্ট পরা বাচ্চাটাকে আমি সম্বোধন করলাম হল বাবু নামে, পাঞ্জাবী পরা বাচ্চাটাকে হুযুর !! ভেবেদেখুন, আপনি তাই করতেন, ১০০% করতেন । পার্থক্যটা আপনি আমিই তৈরি করে দিচ্ছি । একটা ছোট বাচ্চা তার সব কিসছুই অন্ন সব বাচ্চার মত মনটাও তাই । তবুও আমরা তাকে অন্ন সকল বাচ্চাদের চাইতে আলাদা করে দেখসি, আলাদা সুযোগ সুভিদা তার অন্যরকম সম্মানের ধরন । সাধারণত আমরা মাদ্রাসায় পরা সকল স্টুডেন্টকে ছোট চোখে দেখি, আর সেটা শুরু হয় শৈশব থেকেই, তখন থেকে যখন আমরা একটু একটু করে বুঝতে শিখি !! আর ঠিক তখন থেকেই মনস্তাতিক ভাবে একটা একটা ক্রোধ দানা বাধে, বয়স যতই বারে ব্যাপারটা ততই বারতে থাকে । যদিও আমি আমার লাইফে এমন অনেক মেধাবী মানুষ দেখেছি যারা মাদ্রাসায় পড়াশোনা করেছেন । এবং অসম্ভব রকমের সফল ।
যেমন ধরেন, একজন ড্রাইভার যখন গারীতে কাউকে চাপা মারে তখন আমরা যতটুকু না রাগ হই তার চেয়ে বেসি খেপে যাই, যখন একটা ধনী পরিবারের ছেলে কাউকে চাপা দেয় । কেন ? কারন আমাদের দেশের অধিকাংশ মানুষ মধ্যবিত্ত, আমাদের সামর্থ্য নাই একটা গারি অ্যাফোর্ড করার অন্যদিকে একটা বাচ্চা ছেলে গারী চলায় এইটা আমাদের মধ্যে একটা বড় ধরনের চাপা ক্ষোভের সৃষ্টি করে । যেমন কয়েদিন আগেই গুলশানে একটা ছেলে গারী দিয়ে রিক্সা চাপা দেয়িয়ে ২/৩ জন মানুষ মারে ফেলসিল, আর এই নিয়ে এমন কোন মানুষ নাই যারা স্ট্যাটাস দিয়ে প্রতিবাদ করে নাই !! কিন্তু একটু ভেবে দেখেন পরতিদিন গারী অ্যাকসিডেন্টে কত মানুষ মারা যাচ্ছে কয় জন স্ট্যাটাস দিসেন ?
ঠিক সেইম ভাবে ওই মাদ্রাসায় পরা ছেলাটার মনেও আমি আপনি ক্রোধ ঢেলে দিচ্ছি, স্লোও পয়জনের মত করে !!! আর এই ক্রোধই পরবর্তীতে তাদের অন্ন পথে নিয়ে যায় ।
এখন আসি গুলশানের ব্যাপারটা নিয়ে, ওইদিন রাতে যখন দেখসিলাম জনে হচ্ছিল হলিউডের কোন মুভি দেখছি :O ভাবছিলাম পরের দিন সকালে ঘুম থেকে উঠে পাঞ্জাবী পরা, দারি টুপি লাগানো কয়েকজন মধ্য বয়স্ক মানুষকে দেখব !! ওমা কি দেখলাম !!! এত দেখি একেবারে সমাজের উচ্চ শ্রেণীর মানুষ তাও আবার আমার বয়সী ছেলেপেলে :O NSU , scholastica তে পরা স্টুডেন্ট !! আরও একটা ব্যাপার মনে পরে গেল, অভিজিৎ আর থাবা বাবা কে যারা হত্যা করে ছিল তাদের মধ্যেও অনেকেই আমাদের সমাজের উপরের শ্রেণীর ছিল !! একজন ঢাবির আর একজন NSU তে পরা স্টুডেন্ট ছিল !! আমার প্রশ্ন হচ্ছে এই কদিন আগে বাবুল আক্তারের স্ত্রী হত্যার পরে পুলিশ প্রায় ৫০ হাজার মানুষ গ্রেফতার করলো তাদের মধ্যে কয় জন ঢাবির অথবা NSU য়ের স্টুডেন্ট ছিল ?
কোন ধরনের জঙ্গি একটিভিটি হলেই জেভাবে আমাদের পুলিশ মাদ্রাশা গুলতে ঝাপিয়ে পরে মনে হয় ওখানে সব জঙ্গি লুকিয়ে লুকিয়ে আছে, বাকি সব দুধে ধোয়া । এখন খুব অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছি, এই ইন্সিডেন্টের পরে পুলিশ প্রশাসন কি করে তা দেখার জন্য ?
শেষ করছি একটা ভয়ানক অ্যাঙ্গেল দিয়ে, আপনাদের সবার মনে থাকার কথা, ইন্ডিয়াতে মাঝে মাঝেই জঙ্গি হামলা হচ্ছে, কিন্তু কিভাবে হচ্ছে খেয়াল করেছেন ? আসলে হামলা গুলোর প্ল্যান হচ্ছে পাকিস্তানে এবং ওখান থেকেই বর্ডার ক্রস করে পাকিস্তানীরা ইন্ডীয়াতে এসে হামলা চালচ্ছে !!
এবার একটু খেয়াল করুন আমাদের দেশে জঙ্গি হামলা কিভাবে হচ্ছে ? প্ল্যান কোথায় হচ্ছে বাংলাদেশে, হামলা কারা চালাচ্ছে বাংলাদেশীরা !! কারা মারা যাচ্ছে বাংলাদেশীরা, আন্তর্জাতিক ভাবে কাদের সম্মান নষ্ট হচ্ছে বাংলাদেশী দের :O ব্যাপারটা ক্লিয়ার আম ছালা দুইটাই আমাদের আমরা হাত দিয়ে নিজের পায়ে কুড়াল মারছি, তাও আবার প্ল্যান করে কোন অ্যাংগেলে মারলে পাটা পুরোপুরি কাটা যাবে :O
আর এইগুলো কেন হচ্ছে ওই বৈষম্মের কারনে, লেখার শুরু তে যে দুইটা জমজ বাচ্চার কথা বলেছিলাম তারাই একজন আরেক জনকে মারছে । যতদিন পর্যন্ত আমরা পার্থক্যটা সরিয়ে না দিচ্ছি, এগুলো হতেই থাকবে । বাংলাদেশ বাচুক আর না বাচুক ।
আল্লাহ্ মাফ করুন আমাদের । প্রিয় দেশটায় শান্তি ফিরুক ।