somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ফেসবুকে সাবধান! আপনার তথ্য অন্যরা ব্যবহার করছে!

০১ লা এপ্রিল, ২০১১ দুপুর ১:৪১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

হু নোজ ইউ বেস্ট? আপনাকে কে সবচেয়ে ভালো জানে? খুব নির্দোষ ও নিরীহ একটি প্রশ্ন। উত্তর না দেওয়ার কোনো কারণ নেই। নিজেকে সামাজিক হিসেবে প্রমাণ করতে চাইলে যেকোনো জায়গায় এর উত্তর দিতে পারেন। কোনো সমস্যা নেই। তবে সামাজিক যোগাযোগের জনপ্রিয় ওয়েবসাইট ফেসবুকে এই সামাজিকতা করেছেন তো নিজেকে জড়িয়েছেন ভীষণ এক ফেঁকড়ায়! এই ফেঁকড়ার নাম সাইবার ছিনতাই! আপনাকে কে ভালো জানে? এটা জানানোর মধ্য দিয়ে হ্যাকারদের গোপন পাসওয়ার্ড, বিশেষ করে ব্যাংক অ্যাকাউন্টের পাসওয়ার্ডের মতো গোপন বিষয়গুলো জানিয়ে দেবে নিজের অজান্তেই! কিন্তু এর থেকে সমাধান কী? এককথায় বললে—সাবধানতা।
ওয়েবসাইটের বিভিন্ন সমস্যা-আশঙ্কা নিয়ে বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশ করে ‘ব্লু কোট’ নামের একটি প্রতিষ্ঠান। ইন্টারনেট নিরাপত্তাদাতা এই প্রতিষ্ঠানের পণ্য বিপণনের প্রধান টম ক্লেয়ার জানিয়েছেন, ওয়েবসাইটে ধোঁকাবাজির ভালো একটি ক্ষেত্র হয়ে উঠেছে সামাজিক যোগাযোগের জনপ্রিয় ওয়েবসাইট ফেসবুক। এত দিন ধরে পর্নো ও সফটওয়্যার-শেয়ারিং সাইটগুলোর মাধ্যমেই সবচেয়ে বেশি প্রবঞ্চনার শিকার হতো ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা। তবে ব্লু কোট জানাচ্ছে, গত বছর ওই সাইটগুলোকে পেছনে ফেলে সামাজিক যোগাযোগের ওয়েবসাইটগুলোই বেশি ‘ছলনাময়’ হয়ে উঠেছে। উঠে এসেছে সবচেয়ে প্রবঞ্চনাকর সাইটগুলোর চার নম্বরে। বুঝতেই পারছেন, ফেসবুকই সবচেয়ে ভালো ক্ষেত্র হিসেবে পছন্দ করে সাইবার অপরাধীরা।
এখন প্রশ্ন: ১. কেমন করে এই সমস্যায় জড়িয়ে পড়ছি আমরা?
২. কী কী ক্ষতি হতে পারে এসব ক্ষেত্রে? এবং
৩. এর সমাধানই বা কী?
দুই নম্বর প্রশ্নের উত্তরটাই আগে জেনে নিই। ওয়েবসাইটে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা ওইসব ফাঁদে পা দিলে আপনি খোয়াতে পারেন আপনার ক্রেডিট কার্ড ও ব্যাংক সাইনইন-সম্পর্কিত যাবতীয় তথ্য।
ফেসবুকে কারও ওয়ালে কোনো একটি বার্তা দিয়ে রাখা।হয়তো সেখানে লেখা থাকল, হুজ নো ইউ বেস্ট। এখন কিছু না বুঝে না শুনে ওই লিঙ্কে ক্লিক করলেই বিপদ! একগুচ্ছ প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হবে আপনাকে। প্রশ্নগুলো হতে পারে এ রকম—মাই মিডল নেম, মাই এজ, মাই ফেবারিক সোডা, মাই বার্থ ডে, হুজ দ্য লাভ অব মাই লাইফ, মাই বেস্ট ফ্রেন্ড, মাই ফেবারিট কালার, মাই আই কালার, মাই হেয়ার কালার, মাই ফেবারিট ফুড ও মাই মমস নেম। শেষে হয়তো লেখা থাকে, পুট দিজ এস ইউর স্ট্যাটাস অ্যান্ড সি হু নোজ ইউ বেস্ট।
আপনি হয়তো সরল মনে প্রশ্নের উত্তরগুলো দিয়ে বসলেন। এখন প্রশ্ন, এই উত্তরগুলো থেকে হ্যাকাররা কী করে আপনার গোপন পাসওয়ার্ডগুলো বের করে ফেলে। দেখা গেছে, ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের অনেকেই একাধিক ক্ষেত্রে একই পাসওয়ার্ড ব্যবহার করেন। আর এখানেই বিপদ। তা ছাড়া দেখা যায় পাসওয়ার্ড মনে রাখার জন্য চট করে মনে পড়ে এমন বিষয়, যেমন—নিজের নাম, বয়স, জন্মতারিখ, মুঠোফোন নম্বর, প্রিয় মানুষের নাম ইত্যাদি পাসওয়ার্ড হিসেবে ব্যবহার করি আমরা।
এ ছাড়া ফেসবুকে আরেকটি উপায়ে হ্যাকড হতে পারে আপনার পাসওয়ার্ড। অনেক সময় ইওর ফ্রেন্ড (বন্ধুর নাম) জাস্ট অ্যানসার্ড এ কোয়েশ্চেন অ্যাবাউট ইউ, এমন ধরনের কিছু পোস্ট আপনার চোখে পড়তে পারে। এ ধরনের প্রশ্নে বলা হয়, আপনার এক পুরোনো বন্ধু আপনাকে নিয়ে করা একটি প্রশ্নের জবাব দিয়েছে, যা কিনা কোনো কিছু আনলক করতে আপনার জানা প্রয়োজন। এ ক্ষেত্রে লিঙ্কে ক্লিক করলেই মুশকিল। পরবর্তী ধাপে কয়েকটি ব্যাপারে অনুমতি চাওয়া হবে আপনার কাছ থেকে। যেমন—ক. আপনার নাম, প্রোফাইল পিকচার, জেন্ডার, নেটওয়ার্কস, ইউজার আইডি, ফ্রেন্ডস ও অন্য যেকোনো তথ্য সবার সঙ্গে শেয়ার, খ. আপনাকে ই-মেইল ও আপনার ওয়ালে পোস্ট করার এবং গ. যখন তখন আপনার যেকোনো তথ্য পাওয়ার অনুমতি। এই তথ্যগুলো দিয়ে দিলে তো কথাই নেই। তবে না দিতে চাইলেও হ্যাকাররা আপনাকে ছাড়বে না। আরেকটি পথে এগোবে। সে ক্ষেত্রে আপনার পরিচিত ওই বন্ধুটির কিছু কিছু বিষয় জানাতে হবে আপনাকে। বন্ধু আপনার সম্পর্কে কী বলল, এটা জানার জন্য মুখিয়ে থাকলে ওই তথ্যগুলো হয়তো দিয়ে দিলেন। তাতে করে একদিকে বন্ধুর গোপনীয়তা তো আপনি ভাঙলেনই এবং বিপদে ফেললেন তাকেও। ওই তথ্যগুলো দিয়েই আপনার বন্ধুর বারোটা বাজাবে হ্যাকাররা।
ভিডিও লিঙ্ক পাঠিয়েও ঝামেলায় ফেলতে ওস্তাদ হ্যাকাররা। ব্লু কোটের মতে, হ্যাকারদের কাছে এই পথটি সবচেয়ে কার্যকর। এই লিঙ্ক বা মেসেজগুলো আসলে গুপ্তঘাতকের মতো কাজ করে। সতর্কতাই পারে এই ঝামেলাগুলো থেকে বাঁচাতে। একই পাসওয়ার্ড বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যবহার করা ভীষণ বোকামি। বিশেষ করে ই-মেইল ও ফেসবুকের পাসওয়ার্ড একদম আলাদা হতে হবে। ফেসবুকের ওইসব উটকো মেসেজ বা পোস্টে ক্লিক করা যাবে না কোনোক্রমেই। ব্যবহার করতে হবে হালনাগাদ করা নিরাপত্তা সফটওয়্যার। এ ছাড়া ফেসবুকও তাদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা বেশ জোরদার করছে। অ্যাকাউন্ট হ্যাকিং প্রতিরোধে শিগগিরই ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি। ফেসবুকের সিকিউরিটি পেজে হালনাগাদ পেয়ে যাবেন খুব সহজেই। সেখানে ছোট্ট সিকিউরিটি কুইজও থাকবে বলে জানা গেছে।


সূত্র: প্রথম আলো, ওয়েবসাইট অবলম্বনে মাহফুজ রহমান
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা এপ্রিল, ২০১১ দুপুর ১:৫৫
১২টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ব্লগার'স ইন্টারভিউঃ আজকের অতিথি ব্লগার শায়মা

লিখেছেন অপু তানভীর, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ১১:০৫



সামুতে ব্লগারদের ইন্টারভিউ নেওয়াটা নতুন না । অনেক ব্লগারই সিরিজ আকারে এই ধরণের পোস্ট করেছেন । যদিও সেগুলো বেশ আগের ঘটনা । ইন্টারভিউ মূলক পোস্ট অনেক দিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

...এবং উচ্চতায় তুমি কখনই পর্বত প্রমাণ হতে পারবে না

লিখেছেন নতুন নকিব, ০৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৫৬

...এবং উচ্চতায় তুমি কখনই পর্বত প্রমাণ হতে পারবে না

ছবি কৃতজ্ঞতাঃ অন্তর্জাল।

ছোটবেলায় মুরব্বিদের মুখে শোনা গুরুত্বপূর্ণ অনেক ছড়া কবিতার মত নিচের এই লাইন দুইটাকে আজও অনেক প্রাসঙ্গিক বলে মনে হয়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

লালনের বাংলাদেশ থেকে শফি হুজুরের বাংলাদেশ : কোথায় যাচ্ছি আমরা?

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:১৪



মেটাল গান আমার নিত্যসঙ্গী। সস্তা, ভ্যাপিড পপ মিউজিক কখনোই আমার কাপ অফ টি না। ক্রিয়েটর, ক্যানিবল কর্পস, ব্লাডবাথ, ডাইং ফিটাস, ভাইটাল রিমেইনস, ইনফ্যান্ট এনাইহিলেটর এর গানে তারা মৃত্যু, রাজনীতি,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪১


প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি! চুরি! সুপারি চুরি। স্মৃতি থেকে(১০)

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৪


সে অনেকদিন আগের কথা, আমি তখন প্রাইমারি স্কুলে পড়ি। স্কুলে যাওয়ার সময় আব্বা ৩ টাকা দিতো। আসলে দিতো ৫ টাকা, আমরা ভাই বোন দুইজনে মিলে স্কুলে যেতাম। আপা আব্বার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×