রিকশা করে যাওয়ার সময় তাকে দেখি। প্রতিদিন বাসাটার নিচে দেখব দাড়িয়ে আছে। মনে হয় যেন মাত্র স্নান করে বেরিয়েছে। সাদামাটা চেহারা কিন্তু কেমন একটা স্নিগ্ধতার আভা ছড়ায়। আর সদ্য জলে ভেজা কৃষ্ণ কালো চুল। তখনও বিন্দু বিন্দু জল গড়াচ্ছে।
সেখানটিতে এসে দাড়ায় আর হতচ্ছাড়া রোদ হামলে পড়ে। চুল থেকে গড়িয়ে পড়া জলকণা রোদে ঝিকমিক করে দূর থেকেই জানান দেয় আমাকে। আমি তখন গলির আরেক প্রান্তরে। দূর থেকেই তাকিয়ে থাকি অম্লানবদনে। জানিনা কেন, কিন্তু সেই জলকণার ঝিকমিক, তার সদ্যস্নাত চুল আর চোখের বেশি আমি দেখতেই পারি না। রিকশা এগিয়ে যায় তার মাঝেই।
আমি তাকিয়ে থাকি আর সে কেবল এক পলক তাকিয়ে চোখ ফিরিয়ে নেয়।
মাঝে মাঝে ভাবি, বিরক্ত হচ্ছে না তো আমার বেহায়া কাণ্ড দেখে। কাল থেকে আর তাকাব না। নাহ, এই গলি দিয়েই আর যাব না।
আবার ভাবি, আমি দেখার আগে কখনও সে রিকশা পায় না কেন? অপেক্ষা করে না তো- কোনদিন আমি রিকশা থামাব আর ছাতা নিয়ে এসে তাকে রোদ থেকে বাঁচাব।
ভাবি কোনদিন সেই জায়গায় এসে রিকশার প্যাডেলের চেইন পড়ে যায় যেন। তার পাশেই যেন রিকশাওয়ালা রিকশা থামায়। রিকশা থেকে নেমে আমি বলব- দয়া করে আর দাঁড়াবেন না এখানে। এখন তো শুধু আমার চোখ ঝলসে যায়। কোনদিন হৃদয় ঝলসে গেলে আমি দায়ী থাকব না।
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৪:২৬