somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আত্মকথন-০১

২৮ শে জুন, ২০১৬ ভোর ৫:২৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আজ অনেকদিন পর নিজের জন্য কলম হাতে নিলাম। কারণটা আমি বলব। আমার স্মৃতিশক্তি একটু অদ্ভুত প্রকৃতির। যখন যেটা মনে করতে চাই, তার ধারে কাছেও যেতে পারি না।
আবার, প্রোগ্রামিং এর সময়সাপেক্ষ কোন সমস্যা সমাধানের সময়, নয়তো ক্লাসের মাঝে অন্যমনস্কতায়, অথবা ঢাকার কঠিন যানজটে ঘেমে-নেয়ে একাকার হয়ে থাকা অবস্থায় স্মৃতি ধরা দেয়। তবে তখন স্মৃতি আবিষ্কারের আনন্দ নিজের মাঝেই সীমিত রাখতে হয়।
বাসের মধ্যে পাশে বসে থাকা অথবা দাড়িয়ে থাকা মানুষটা, যার গা থেকে কাঁচা শুটকির সৌরভ ধেয়ে আসছে, তাকে বলা যায় না, “ভাই শুনুন, একটা কথা মনে পড়েছে। একবার বন্ধুর সাথে কি এক বাজি রেখে কাঁচা ঢেঁড়স খেয়েছি। ইংরেজিতে যাকে বলে লেডিস ফিঙ্গার। ভদ্রমহিলাগোছের এক ঢেঁড়স গাছের ফলগুলোকে হিংসুক বান্ধবীর আঙ্গুল কল্পনা করে কচ কচ করে চিবিয়ে খেয়েছি। কিন্তু ভদ্রমহিলা হতাশ করেছিল। কি যে বিস্বাদ ছিল রে ভাই!
কি বাজি ধরেছিলাম মনে পড়ছে না। মনে পড়লে বলব। তো যা বলতে চাচ্ছিলাম, আপনার গায়ের শুঁটকির কটু গন্ধ থেকেই ঐ ঘটনা মনে পড়ল। কাঁচা শুটকি আর কাঁচা ঢেঁড়সের মধ্যে কোন সাদৃশ্য আছে নিশ্চিত।”
অথবা প্রোগ্রামিং এর কোডের মাঝে কয়েকটা লাইন লিখে দিতে পারব না। পারব না ক্লাসের মাঝে বিরসমনা শিক্ষিকাকে স্মৃতির কথা বলতে। তাই লিখে রাখছি। অথবা লিখে জানাচ্ছি।
বান্দরবানের গহিনে কোন এক আদিবাসী পাড়ায়, নাহ গ্রাম থেকে একটু দূরে, একটু নির্জনতায়, কোন টিলার উপর, বাঁশের দেয়াল ঘেরা খড়ের ছাঁদের ঘরে, একগাদা বই নিয়ে, কয়েকটি খাতা আর কলম নিয়ে কিছু দিনের নির্বাসনে যাব।
বইগুলো পড়ে শেষ করবো শান্ত দুপুরে, ঘরের ছোট্ট মাচানের উপর বসে অথবা কাছের কোন মমতাময়ী ফুল গাছের ছায়ায় বসে, গাছের গায়ে হেলান দিয়ে।
অথবা বই এর পাতা খুলে অন্যমনস্ক হয়ে থাকব।

ফল গাছ নয়, তাদের মমতা তারা তাদের ফলে উৎসর্গ করে দেয়। বাকিটা হাড়কিপটের ন্যায় জমা রাখে আসন্ন ফুল-ফলদের আশায়। কোন আত্মপ্রেমী পড়ুয়ার প্রতি তাদের মায়া হ্য় না।
বিকেলবেলা ঘুরে বেড়াবো যেখানে খুশি, যদি হারিয়ে যেতে পারি এই উদ্দেশ্যে। সূর্যটা ডুবলেই ঘরে ফিরব। তারপর মন খারাপের ধ্যান করবো। রাতের অন্ধকারে আলো জ্বলবে না আমার ঘরে।
চাঁদ যদি আলো দেয় তবে দিবে, নাহয় না দিলো। ঘোর অমাবস্যায় অন্ধকারের কাছে, নির্জনতার কাছে কান্নার পাঠ নিব।
কে একজন বলেছিল, “কান্নাটা শুধু নিজের জন্য, কান্নায় কাউকে ভাগ দিতে নেই।” সে আমার প্রতি দুঃখিত ছিল, আমি কান্না জানি না বলে। আমায় আকুতি করে বলেছিল, “নিজের জন্য একদিন কেঁদ তুমি। এটা আমি চাই আমার জন্য। আমার আহ্বানে হলেও করো। এই চাই তোমার কাছে।”
ভোরের মেঘের স্পর্শে কান্নার সব স্মৃতি আবার মুছে ফেলব। এক কাপ কফি বানিয়ে সকাল হওয়া দেখব। প্রতিটা সকালকে নিজের মধ্যে নিতে চেষ্টা করবো। এক চুমুক কফি আর একটুখানি সকাল।
দিনের বেলা মানুষ দেখব। প্রান ভরে দেখব পাহাড়ি সহজ-সরল মানুষ, যাদের হিংস্রতা শুধুমাত্র অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার চেষ্টামাত্র। এটা হিংস্রতা নয়, প্রাকৃতিক সত্ত্বা।
ওহ, বলা হয়নি। ঘরে কোন আয়না থাকা চলবে না। আয়নাতে কেবল প্রতিবিম্ব দেখা যায়, নিজেকে দেখা যায় না। আমি তো নিজেকে দেখতে যাচ্ছি পাহাড়ে। প্রতিবিম্বের ভ্রম আমি নিব না।
আর খাতাগুলো? সেগুলো নাহয় খালি থাকবে। প্রতিটা খালি পৃষ্ঠা আমার প্রতিদিনের স্মৃতি বহন করল নাহয়। তবে একটুখানি অদৃশ্য অক্ষরে। সে আমি বুঝে নিব পরে।






সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে জুন, ২০১৬ ভোর ৫:২৫
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

৫০১–এর মুক্তিতে অনেকেই আলহামদুলিল্লাহ বলছে…

লিখেছেন বিচার মানি তালগাছ আমার, ০৩ রা মে, ২০২৪ বিকাল ৩:০০



১. মামুনুল হক কোন সময় ৫০১-এ ধরা পড়েছিলেন? যে সময় অনেক মাদ্রাসা ছাত্র রাজনৈতিক হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছিল। দেশ তখন উত্তাল। ঐ সময় তার মত পরিচিত একজন লোকের কীভাবে মাথায় আসলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঝিনুক ফোটা সাগর বেলায় কারো হাত না ধরে (ছবি ব্লগ)

লিখেছেন জুন, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৮:০৯

ঐ নীল নীলান্তে দূর দুরান্তে কিছু জানতে না জানতে শান্ত শান্ত মন অশান্ত হয়ে যায়। ১৯২৯ সালে রবার্ট মোস নামে এক ব্যাক্তি লং আইল্যান্ড এর বিস্তীর্ণ সমুদ্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

'চুরি তো চুরি, আবার সিনাজুরি'

লিখেছেন এমজেডএফ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৮


নীলসাধুকে চকলেট বিতরণের দায়িত্ব দিয়ে প্রবাসী ব্লগার সোহানীর যে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছিল তা বিলম্বে হলেও আমরা জেনেছি। যাদেরকে চকলেট দেওয়ার কথা ছিল তাদের একজনকেও তিনি চকলেট দেননি। এমতাবস্থায় প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বরাবর ব্লগ কর্তৃপক্ষ

লিখেছেন নীলসাধু, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২২

আমি ব্লগে নিয়মিত নই।
মাঝে মাঝে আসি। নিজের লেখা পোষ্ট করি আবার চলে যাই।
মাঝেমাঝে সহ ব্লগারদের পোষ্টে মন্তব্য করি
তাদের লেখা পড়ি।
এই ব্লগের কয়েকজন ব্লগার নিজ নিক ও ফেইক... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ অপেক্ষা

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২৩



গরমের সময় ক্লাশ গুলো বেশ লম্বা মনে হয়, তার উপর সানোয়ার স্যারের ক্লাশ এমনিতেই লম্বা হয় । তার একটা মুদ্রা দোষ আছে প্যারা প্রতি একটা শব্দ তিনি করেন, ব্যাস... ...বাকিটুকু পড়ুন

×