বিশ্ব মানচিত্রে অপার এক সম্ভাবনার এক দেশ আমাদের প্রিয় এই মাতৃভূমি বাংলাদেশ। দীর্ঘ সংগ্রাম ও রক্তের বিনিময়ে জন্ম নেয়া এ দেশটির রয়েছে সুদীর্ঘ সোনালী অতীত।
এ দেশের নৈসর্গিক সৌন্দর্য, উর্বর ভূমি সমৃদ্ধ এক সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য। পৃথিবীর মানুষকে যা বার বার করেছে আকৃষ্ট। কিন্তু সম্ভাবনাময় এ দেশটি সাম্রাজ্যবাদী ও আধিপত্যবাদীদের দ্বারা বিভিন্ন সময়ে নানাভাবে আক্রান্ত হয়েছে। বহমান এ সময়ে ভিন্ন এক আগ্রাসনের মুখোমুখি হয়েছে আমাদের তরুণ প্রজন্ম। তরুণ-তরুণীদের একটা বড় অংশ পাশ্চাত্য জীবনধারার অন্ধ অনুকরণ করতে গিয়ে সমাজ ও নিজেদের জন্য ডেকে আনছে মারাত্মক বিপর্যয়।
বলা হয়ে থাকে রুচিশীল তথা শালীন পোশাক মানুষের ব্যক্তিত্বেরর বিকাশ ঘটায়। কিন্তু আকাশ সংস্কৃতির প্রভাবে নতুন প্রজন্মের একটা অংশ তার অন্ধ অনুকরণের শিকার।
তরুণীরা নিজেদের দেহ এমনভাবে দৃশ্যমান করে তুলছে। যা চিরায়ত বাঙালি সাংস্কৃতিক এবং সমাজ বিজ্ঞানীদের দৃষ্টিতে এক ধরনের মানসিক রোগ বা বিকৃতি। এমন প্রদর্শনপ্রিয়তা থেকে সমাজ শুধু রোগাক্রান্ত হবে এমন নয়, সমাজের অপরাধ প্রবণতাকে দ্রুত বৃদ্ধি করতে সহায়তা করবে।
সেক্স অরগান প্রদর্শনীর প্রতিযোগিতা পাশ্চাত্য সভ্যতা কিছুদিন আগে একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের জনৈক এক ছাত্র তার একজন দুষ্টু বান্ধবীর সহযোগিতায় অপর এক বান্ধবীর গোসলের দৃশ্য ওয়েব সাইটে ছেড়ে দেয়ার পর বেশ হই চই পড়ে গিয়েছিল। অথচ একটি বহুজাতিক কোম্পানি তাদের সাবানের বিজ্ঞাপনে এর চেয়েও স্বল্পবসনে একজন তরুণীর গোসলের দৃশ্যকে মডেল হিসেবে উপস্থাপন করে সুকৌশলে তাকে সমাজে স্বাভাবিক করে তুলে ধরে। এভাবে আকাশ সংস্কৃতি ও বহুজাতিক কোম্পানিগুলো অত্যন্ত সুকৌশলে যা কি না যেকোনো সুস্থ সমাজে মানসিক রোগ বা বিকৃতি হিসেবে বিবেচিত, তাকে আকর্ষণীয় তথা ফ্যাশন হিসেবে তুলে ধরছে।
পোশাকের ক্ষেত্রে আমাদের সমাজে এই বিপর্যয় খুবই সাম্প্রতিক সময়ে ঘটেছে। তবে এর বিস্তৃতি প্রাদুর্ভাব অত্যন্ত আশঙ্কাজনক। এক সময়ে কেবল দেহপসারিনীরা তাদের উগ্র সাজ ও সেক্সঅর্গানগুলো কিছুটা প্রদর্শনের মাধ্যমে তাদের খদ্দেরকে আকর্ষণ করত। কিন্তু এখন শুধু তরুনীরা নয়, এমনকি মায়েরাও তাদের সেক্সঅর্গানগুলো যাতে দৃশ্যমান হয় সেভাবে পোশাক পরিধান করছেন।ফলে কারা আসল দেহপসারিনী তা সনাক্ত করা খদ্দেরদের জন্য কঠিন হয়ে পড়েছে।যেখানে সব পাগলেও বস্ত্রহীন থাকে না, সেখানে কিছু কিছু তরুণীর বস্ত্র পরিধান করেও বস্ত্রহীনতার চেয়ে বেশি দৃষ্টিকটু পোশাক পরিধান করাটা খুবই অসুস্থ তথা অশালীন আচরণ।
এ ছাড়া গাঁজা, ফেনসিডিল, হেরোইন, প্যাথেডিন, ইয়াবা প্রভৃতি মরণনেশা মহামারী আকারে নতুন প্রজন্মের মাঝে ছড়িয়ে পড়েছে। পাশাপাশি বিভিন্ন অশীল ছবি ও ম্যাগাজিনে বাজার সয়লাব। তার সবচেয়ে বড় ক্রেতা তরুণ সমাজ। ইন্টারনেট এবং মোবাইলের অপব্যবহার তরুণ-তরুণীদের অধঃপতনের ক্ষেত্রে নতুন মাত্রা যোগ করেছে।
বাংলাদেশী বংশোদ্ভ‚ত আমেরিকান একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক তার গবেষণায় দেখিয়েছেন, আমেরিকানরা তাদের এই পতনোন্মুখ অবস্থা থেকে উত্তরণের প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। এক্ষেত্রে তারা তাদের আর্থসামাজিক অবস্থার প্রোপটে হয়তো সফল হতে না পারলে অন্তত কোনোরকমে টিকে থাকতে পারবে।
কিন্তু বাংলাদেশের নতুন প্রজন্মকে এই অপসংস্কৃতির ছোবল থেকে রা করতে না পারলে আগামী ৫০ বছরে আমাদের অবস্থান হবে ধ্বংসের প্রান্তসীমানায়।
সুন্দরী প্রতিযোগীতায় অংশ নেয়া রমনীদের বাবাদের কাছে কয়েকটা প্রশ্ন রাখতে চাইঃ প্রতিযোগি মাত্র কয়েকজন হলেও এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে দেশের কোটি কোটি তরণীর মাঝে।
১) যখন আপনার মেয়েকে দেখে কেউ তালি বাজায়, অথবা শিশ দেয় তখন আপনার কি গর্বে বুক ভরে ওঠে ?
২) যখন আপনার মেয়ের পরণে থাকে টাইট ফিটিং কাপড় (যার মধ্যে দিয়ে তার শরীরের প্রতিটি অংশের আকার বোঝা যায়) আপনিও কি হাজার দর্শকের মত তা উপভোগ করেন ?
৩) যখন আপনার মেয়েকে স্মার্ট বানানোর নামে ছোট কাপড় পরানো হয়, বাংলা ইংলিশ মিশিয়ে কথা বলানো হয়, তখন আপনি কি মুচকি হাসেন ?
৪) যখন আপনার মেয়ে এসএমএস এর জন্য সবার কাছে কাকুতি-মিনতি করে তখন কি আপনার মনে হয় আপনারও সবার কাছে এসএমএস চাওয়া উচিৎ ?
৫) আপনারা নিশ্চই আপনার মেয়েকে মা ডাকেন, আপনার মা কে হাজার হাজার মানুষের মাঝে উন্মুক্ত করতে আপনাদের বিবেকে একটুও বাধে না?
প্রতিযোগী মাত্র কয়েকজন হলেও এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে দেশের কোটি কোটি তরণীর মাঝে।
কিছু মানুষের কোন শরমবোধ নেই। তাদের কাছে এসব কোন ব্যাপার না।
দুর্নীতির সীমা, নির্লজ্জতার সীমা, অত্যাচার ও জুলুমের সীমা, অযোগ্যতার সীমা, প্রতিহিংসার সীমা, অন্যায়ের সীমা, অসভ্যতার সীমা, দলবাজি-টেন্ডারবাজির সীমা, ক্ষমতার সীমা এসবই বেশ কিছু দিন থেকেই লঙ্ঘিত হয়ে গেছে। এ সমাজে ভদ্র মানুষ দেখলে অবাক হই, সৎ মানুষ দেখলে অবাক হই, নির্মোহ মানুষ দেখলে অবাক হই, ন্যায়বিচার দেখলে অবাক হই, শালীন বেশে মহিলাদের দেখলে অবাক হই, শালীন ভাষায় রাজনৈতিক বক্তব্য শুনলে অবাক হই, আল্লাহকে ভয় ও ভক্তি করেন এমন মানুষ দেখলেও বিস্মিত হই।
বিশ্বে বিশ্ব সুন্দরী প্রতিযোগীতা টাই হচ্ছে একটা বেশ্যা প্রতিযোগিতা। এটা সবাই জানে। আর তাদের সৌন্দর্য দেখার জন্য তাদের বিভিন্ন সিকশনে বিভিন্ন সংক্ষিপ্ত পোশাকে পড়তে হয়।এটা বিশ্বের সব সুন্দরী প্রতিযোগীতায় ই আছে।ওদেরটা হয় ক্যামেরার সামনে আর আমাদের টা ক্যামেরার পিছনে।
প্রত্যেকেই তার মেয়ে'কে মা ডাকেন, তবে প্রগতিশীলতার ধ্বজাধারী বিশেষ একটি শ্রেনী সেই মাকে নিলামে তুলে অর্থ আয় করে গর্বিত হন "প্রথম আলো"র মতো।
মেয়েদেরকে দিয়ে তাদের জন্য অনুপযুক্ত চাকরি তথা জুলুম না করালেও দেশের উৎপাদন কমবে না। কারন দেশে এখনও অনেক যুবক বেকার বসে আছেন। ২৫% মহিলা চাকরিজীবীর স্থলে ২৫% যুবকের চাকরির ব্যবস্থা করা হলে মেয়েদের বিয়ের বাজার আরো সম্প্রসারিত হত। কারন বেকার যুবকদের পক্ষে যেমন বিয়ে করা সম্ভব হয় না, তেমনি চাকরিজীবি মেয়েরা কোন যুবকে সাধারনত বিয়ে করে না। কিন্তু চাকরিজীবি তরুনের পক্ষে বেকার তরুনীকে বিয়ে করাটা খুবই স্বাভাবিক। তাই দেশের ২৫% চাকরিজীবি তরুনীর স্থলে ২৫% তরুনের চাকরির ব্যবস্থা করা গেলে মেয়েদের ২৫% বিয়ের বাজার বৃদ্ধি পাবে। বাস্তবতা হচ্ছে প্রেমের বাজারে মেয়েদের চাহিদা বেশি হলেও তাদের বিয়ের বাজারটা খুবই নিষ্ঠুর রকমের সংকীর্ণ।
একজন তরুনী চাকরিজীবি হলে তার বিয়ে হয় কোন চাকরিজীবি তরুনের সাথে। কিন্তু তরুনীটির পরিবর্তে কোন বেকার তরুনের কর্মসংস্থান করা হলে ২ জন তরুনীর বিয়ের সুযোগ তৈরি হয়।
কিছু কিছু পেশা আছে, যেগুলোতে মেয়েরা তাদের স্বভাবগত কারণেই, সুযোগ পেলে যাওয়া উচিত। যেমন, ডাক্তার (বিশেষতঃ গাইনী), কিংবা কিন্ডারগার্টেন লেভেলে শিক্ষকতা...
দুঃখ হয়, একটি মেয়ে বর্তমান সমাজের দৃষ্টিভংগী কারণে, পড়াশোনা করে চাকরী করতে পারাকেই জীবনের সাফল্য ব্যর্থতার মাপকাঠি হিসেবে নেয়, আর, ফলাফল চাকুরীজীবি মায়ের অবহেলিত সন্তানেরা, একটি ট্রাবলড চাইল্ডহুড কাটায়!
আমরা মূর্খ পুরুষরা যতদিন না বুঝবো, হোম মেকিং এবং পরবর্তী জেনারেশনকে শিক্ষিত করে তোলার গুরুদায়িত্বের ওজন, ততদিন আমাদের স্ত্রী এবং মেয়েরা, পুত্রবধু এবং মায়েরা আরেকজনের দাসত্ব করাকেই জীবনের মোক্ষ হিসেবে জানবে, এবং তাই ই করতে চাইবে!
অনেক মেয়েরাই টিজিংয়ের প্রত্যাশায় টিজিং উপযোগী প্রগতিশীল তথা খোলামেলা পোশাক পরিধান ও সাজগোজ করার পরেও তাদের প্রত্যাশিত হট/সেক্সি বিভিন্ন বিশেষন থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
প্রায় ১০০% প্রেম শুরু হয় ইভটিজিং অর্থাৎ ছেলেদের নিবেদন ও মেয়েদের অপমান/প্রত্যাখানের মধ্যদিয়ে। ইভটিজিং এর আইন হওয়ার কারনে শাস্তির ভয়ে অনেক ছেলেরাই তাদের প্রেম নিবেদনে সাহস পাচ্ছেন না। ফলে বর্তমানে প্রেমের বাজারে ধস নেমেছে।
কেউ ল্যাংটা থাকলে কোন দোষ নাই, কিন্তু কোন ল্যাংটাকে কেউ ল্যাংটা বললেই যত দোষ।
অনেক মেয়েরাই টিজিংয়ের প্রত্যাশায় টিজিং উপযোগী প্রগতিশীল তথা খোলামেলা পোশাক পরিধান ও সাজগোজ করার পরেও ইভটিজিং এর আইন হওয়ার কারনে তাদের প্রত্যাশিত হট/সেক্সি বিভিন্ন বিশেষন থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। ফলে অনেক দামি ও টিজিং উপযোগী তথাকথিত প্রগতিশীল বা খোলামেলা পোশাক পরিধান ও কষ্টের উগ্র সাজগোজটাই মাটি হয়ে যাচ্ছে।
মহিলাদের আন্ডারগার্মেন্টসও কিনতে হয় কোন পুরুষ সেলস ম্যানের কাছ থেকে। তাদের শপিংয়ের জন্য আলাদা ফিমেল কর্নার হওয়া উচিত। এতে নারীদের কর্ম সংস্থানেরও সুযোগ হবে। অবশ্য নারীবাদীরা এর বিরোধিতাও করতে পারে।
মহিলাদের জন্য পৃথক বাসের দাবী করেন না কেন? ভিড় ঠেলে বাসে ওঠা কি স্বাভাবিক? গাউসিয়ার অবস্থা আরো খারাপ। সত্যিকার অর্থে তাদের জন্য বাসের অর্ধেক কিংবা সবগুলো সিট সংরক্ষণ করে কিছু সার্ভিস চালু হলে ভালো হতো। একবার মহিলাদের জন্য আলাদা বাস চালু করা হয়েছিল , কিন্তু প্রথম আলো পত্রিকার বিরোধীতা ও অপপ্রচারে সে সার্ভিস ভালো করতে পারেনি।
দেশের ২৫% চাকরিজীবি তরুনীর স্থলে ২৫% তরুনের চাকরির ব্যবস্থা করা গেলে মেয়েদের ২৫% বিয়ের বাজার বৃদ্ধি পাবে।
একেবারে হক কথা।
জাতি যত তাড়াতাড়ি এ বিষয় অনুধাবন করতে সক্ষম হবে,
তত তাড়াতাড়িই অবহেলিত নারী সমাজের বিহিত হবে,
বেকারত্ব দূর হবে,
ইভটিজিং হ্রাস পাবে,
দেশ ও সমাজের উন্নতি হবে।
এবার আমি কিছু যোগ করি,
দেখতে সেক্সী লাগার জন্য বাড়তি প্রচেষ্টা প্রায় সকল ক্ষেত্রে। হট গেটাপে থাকে আমার অতি কাছ থেকে পরিচিত বড় কর্মকর্তা যে ইভ টিজিং র্কোট পরিচালনা করে। সে নিজে ইভ টিজিং হতে পছন্দ করে। শুনা গল্প নয়। অতি কাছের অভিজ্ঞতা থেকে বলছি। বড় চাকুরীর সুবাদে স্বামী সন্তান থেকে দুরে থাকে। স্বী অতি গোপনে পরকীয়া করে নিড়ীহ স্বামীর বিশ্বাসে জুতা মেরে। মহা চালাক। সন্তান মানুষ অন্যের কাছে। মা হীন ডুকরে সন্তানের জীবন। সপ্তাহে ১/২ দিন মাকে দেখে কখনো ১৫ দিনে। স্বামীও বড় কর্মর্কতা, বউয়ের চাকুরীর দরকার নেই তবুও করে। ধারনা বা শুনা গল্প নয়। অপ্রয়োজনে চাকুরীতে নেয়া অনেক সংসার কে নরকে পরিনত করে।
(মূল লেখক: প্রতিবাদী বাংগালী ও রাইসা আক্তার)