অনন্য মামুন পরিচালিত এবং এম এ জলিল অনন্ত প্রযোজিত-অভিনীত 'মোস্ট ওয়েলকাম' (২০১২) সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের অন্যতম আলোচিত একটি চলচ্চিত্র। দক্ষিণ ভারতীয় চলচ্চিত্রের কাহিনী ও নির্মাণশৈলী অনুকরণে নির্মিত এই অ্যাকশনধর্মী চলচ্চিত্রটি অনেক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। এই আলোচনায় জন্ম দিয়েছেন নায়ক-প্রযোজক নিজে এবং টেলিভিশন টক-শোর হোস্টরা। আর আলোচনায় অংশ নিয়েছেন দর্শক ও ব্লগাররা। চলচ্চিত্রটি প্রাথমিকভাবে দৃষ্টি আকর্ষণ করে গ্লোবাল কমার্শিয়াল চলচ্চিত্র হয়ে উঠতে চাওয়ার মধ্য দিয়ে। টেলিভিশনের প্রমোশনাল অনুষ্ঠানগুলোতে অনন্ত জলিল তেমনই দাবি করতে থাকেন, তার আগের চলচ্চিত্রগুলো এক্ষেত্রে রেফারেন্স হিসেবে হাজির ছিল। কিন্তু চলচ্চিত্রটি দ্রুত আলোচ্যবস্তুতে পরিণত হয় অনন্ত জলিলের ভুল ইংরেজির ব্যবহার, বিশেষত অপ্রমিত-আঞ্চলিক ইংরেজি উচ্চারণের কারণে। অনন্ত জলিল, তার চলচ্চিত্র, তার ইংরেজি উচ্চারণ অনলাইনে এবং অফলাইনে এক তামাশার বস্তুতে পরিণত হয়। এর মধ্যেই নায়ক-প্রযোজক তার গ্লোবাল স্ট্যান্ডার্ড বাংলা চলচ্চিত্র, আকর্ষণীয় লোকেশন, উন্নত প্রযুক্তি, ডিজিটাল সম্পাদনা, আর তার নিজস্ব দেশপ্রেমের পরাকাষ্ঠা বিষয়ে টেলিভিশনগুলোতে বলতে থাকেন, জলিলীয় উচ্চারণসমেত।
বাংলাদেশের নাগরিক মধ্যবিত্তের এফডিসিতে নির্মিত চলচ্চিত্রগুলোর ব্যাপারে যে সাধারণ উন্নাসিকতা, তার অনেকখানিই শ্রেণিঘৃণা থেকে উৎসারিত -- যে ঐ চলচ্চিত্রগুলো নিম্নবিত্তের লোকজনের জন্য নির্মিত, রুচিহীন-অমার্জিত ঐসব চলচ্চিত্র নিয়ে নাক সিঁটকানোই যেতে পারে বড়জোর। তো এই দফা অনন্ত জলিল হাজির হয়েছেন এই দাবি নিয়ে যে তার চলচ্চিত্র রিকশাওয়ালা বা মজুর শ্রেণির লোকজনের জন্য নির্মিত নয়, খোদ নাগরিক-শিক্ষিত মধ্যবিত্ত বা উচ্চ মধ্যবিত্তের লোকজনের জন্য নির্মিত বিশ্বমানের চলচ্চিত্র তার। কিন্তু কোথাকার কোন জলিলের এই দাবি মানতে নারাজ আমাদের এলিটসমাজ, অন্তত যার উচ্চারণে সমস্যা এতই প্রকট। বলাবাহুল্য, অনন্ত জলিলের বাংলা উচ্চারণেও অনেক সমস্যা আছে, তা নিয়ে কেউ তেমন ভাবিত নয়। ঔপনিবেশিক ধ্যান-ধারণার শেকলে আজও বন্দি আমাদের অগ্রসর এলিটরা, তাই অনন্ত জলিলকে ঘিরে চললো অবিরাম বিদ্রূপ-তামাশা। ‘ইউ পোম গানা’ পরিণত হয়েছ এই সময়ের অন্যতম শব্দবন্ধে। পানি অনেক দূর গড়িয়েছে, নভেম্বর, ২০১২ মাসের প্রথম সপ্তাহে এক রেস্টুরেন্টে উত্যক্তকারীদের শিকার হয়েছেন অনন্ত জলিল। জলিলের স্ত্রী ও তার চলচ্চিত্রের নায়িকা বর্ষা এসব সইতে না পেরে প্লেট ছুঁড়ে মেরেছেন উত্যক্তকারীকে। জলিল ক্ষমা চেয়ে রেহাই পেয়েছেন। দর্শকদের এই মনস্তত্ব, আমাদের চলচ্চিত্র সংস্কৃতি কোন স্থানে রয়েছে, তা নির্দেশ করছে। অনেক অসঙ্গতি, অনেক আজগুবি দৃশ্যে ভরপুর মোস্ট ওয়েলকাম। কিন্তু দর্শকদের মনস্তত্বও কম আজগুবি নয়। ফলে এই চলচ্চিত্রের শেষ অবদানমাত্র হিসেবে থেকে গিয়েছে ‘ইউ পোম গানা’ জাতীয় কিছু অদ্ভূত শব্দাবলি।
আলোচিত ব্লগ
বিজয়ের আগে রাজাকারের গুলিতে নিহত আফজাল

ঘটনা স্থল গাইবান্ধা জেলার ফুলছড়ি থানার উড়িয়া ইউনিয়নের গুণভরি ওয়াপদা বাঁধ।
১৯৭১সালের ১৬ই ডিসেম্বরের কয়েক দিন আগের ঘটনা। আফজাল নামের ভদ্রলোক এসেছিলেন শ্বশুর বাড়ি বেড়াতে। আমাদের পাশের গ্রামেই তার... ...বাকিটুকু পড়ুন
৫৫ বছর আগে কি ঘটেছে, উহা কি ইডিয়টদের মনে থাকে?

ব্লগের অনেক প্রশ্নফাঁস ( Gen-F ) ১ দিন আগে পড়া নিউটনের ২য় সুত্রের প্রমাণ মনে করতে পারে না বলেই ফাঁসকরা প্রশ্নপত্র কিনে, বইয়ের পাতা কেটে পরীক্ষার হলে নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন
নিজামী, মুজাহিদ, বেগম জিয়াও বিজয় দিবস পালন করেছিলো!!

মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে বেগম জিয়ার মুরগী মগজে এই যুদ্ধ সম্পর্কে কোন ধারণা ছিলো না; বেগম জিয়া বিশ্বাস করতো না যে, বাংগালীরা পাকীদের মতো শক্তিশালী সেনাবাহিনীকে পরাজিত করতে পারে;... ...বাকিটুকু পড়ুন
১৯৭১ সালে পাক ভারত যুদ্ধে ভারত বিজয়ী!

দীর্ঘ ২৫ বছরের নানা লাঞ্ছনা গঞ্জনা বঞ্চনা সহ্য করে যখন পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বীর বাঙালী অস্ত্র হাতে তুলে নিয়ে বীরবিক্রমে যুদ্ধ করে দেশ প্রায় স্বাধীন করে ফেলবে এমন সময় বাংলাদেশী ভারতীয়... ...বাকিটুকু পড়ুন
ইন্দিরা গান্ধীর চোখে মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশ-ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক: ওরিয়ানা ফলাচির সাক্ষাৎকার থেকে

১৯৭২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ইতালীয় সাংবাদিক ওরিয়ানা ফলাচি ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর সাক্ষাৎকার নেন। এই সাক্ষাৎকারে মুক্তিযুদ্ধ, শরনার্থী সমস্যা, ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক, আমেরিকার সাম্রাজ্যবাদী পররাষ্ট্রনীতি এবং পাকিস্তানে তাদের সামরিক... ...বাকিটুকু পড়ুন

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।