somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নান্টু ঘটকের কথা শুইন্যা.......................... (একখান বিবাহ বিরোধী প্রযোজনা)

১২ ই মার্চ, ২০১২ রাত ১১:১২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

কুত্তা-বিলাই বারিধারায় রবিবারের সাপ্তাহিক ছুটির দিন মাটি হইয়া যাওয়ায় মনটা ভীষণ খারাপ হইয়া ছিলো। সোমবার প্রত্যুষে পর্দা সরাইয়া দেখি রবিমামা আকাশ জুড়িয়া জ্বলমল করিতেছে। মুহুর্তে মনখানা প্রফুল্ল হইয়া উঠিলো। তাড়াতাড়ি স্নান সারিয়া সদ্য দাঁড়ি কামানো গালে আফটার সেভ লোশন ঘষিতেছিলাম আর গুনগুন করিয়া গান ভাজিতে ছিলাম ," মোর ঘুম ও ঘোরে এলে মনোহর.............." হঠাৎ করিয়া সীসার ভিতরে জ্বালামুখী দেখিতে পাইলাম। ঘোঁস-ফোঁস করিয়া কহিয়া উঠিল, "বলি মিনসের মনে আজ এতো রং কেনো? কোন মুখপুরির সহিত আজ ডেটিং মারিতে যাইবা?" উরে বাপ আমি কি ভাবিতেছি, আর কি হইতেছে? ভাবিয়াছিলাম, মরনিং শোজ দ্যা ডে। ঝকাঝকা দিন, কতই না সুন্দর দিন! অথচ মর্ণিং বেলায় জ্বালামুখীর মুখে পড়িতে হইলো। না জানি বাকী দিন কেমন যায়! কোনোরকমে জ্বালামুখীর লার্ভা কাটাইয়া আপিসের পথে গমন করিলাম। বাস স্টপে পৌছাইয়া দেখি বাসখানা পশ্চাৎপদ দেখাইয়া আমাকে জিহবা দেখাইয়া টাটা-বাইবাই করিয়া চলিয়া যাইতেছে। শুধুমাত্র ৩০সেকেন্ডের জন্য বাসখানা মিসাইয়া আরো ২০ মিনিট অপেক্ষা করিতে হইবে এবং আপিসে দেরীতে যাওয়ায় ম্যানেজারের চিরচরিত ঝাড়ি হজম করিতে হইবে। ইসরে যদি গিন্নীর জ্বালাময়ী ভাষণ আর একমিনিট কম শুনিতাম! যাহা হউক বুকে ফুঁক মারিয়া আপিসে প্রবেশ করিলাম। উমা এ দেখি অবাক কান্ড, খচ্চর ম্যানেজার দাঁত খিঁচাইয়া বসিয়া থাকার বদলে ক্যালাইয়া বসিয়া আছে। মনে মনে প্রফুল্ল হইবার বদলে কিন্চিত শংকিত হইলাম। গে' ব্যাটার কি আবার কু-মতলব চাপিয়াছে। ইয়া মাবুদে ইলাহী, মানী'র মান রক্ষা কর। চাকরী বিলাইয়া দিতে রাজি আছি, মাগার ইজ্জ্বত নহে। আমার ইজ্জ্বত লুটিবার আসিলে হাতে-পায়ে ধরিয়া কহিবো, দাদাজান দরকার হইলে আমার বেতনের অর্ধেক টাকা লইয়া লইস তবু আমার ইজ্জ্বত নহে। কিন্তু পরক্ষণেই টেবিলের উপর এভারেস্টসম ফাইল দেখিয়া কারণ আবিষ্কার করিয়া ফেলিলাম। রাজাধিরাজের মতো হুকুম চালাইয়া কহিলো, যেভাবেই হউক আজিকে এই সমস্ত ফাইলের কাজ সম্পাদন করিতে হইবে। মনে মনে উচ্চশব্দে কয়েকখানা গালি পাড়িতে গিয়া থমকাইয়া গেলাম। সামান্য কর্ম বেশী করিবার বিনিময়ে যদি ইজ্বতখানা বাঁচিয়া যায় তো কম কিসে।

নির্ধারিত আপিস সময়ের চেয়ে একঘন্টা বেশী সময় লাগাইয়া কর্ম সম্পাদন করিলাম। ক্লান্ত শরীরখানা টানিতে টানিতে লইয়া যাইবার সময় চিন্তা করিলাম গৃহে প্রবেশ করিয়া একখানা মিষ্ট হাসি দিয়া গিন্নীকে কহিবো গরমা-গরম সমুচা ভাজিয়া দিতে। চা সহযোগে তাহা খাইতে কেমন মজা হইবে তাহা ভাবিতেই জিবে জল চলিয়া আসিলো। কিসের কি, গৃহে পৌছাইবার পর দেখি সমুচা নহে বরং গিন্নী গরম হইয়া আছে। চিৎকার করিয়া কহিলো, যে মুখপুড়ির সহিত ডেটিং মারিয়াছো সে তোমাকে কিছু খিলাই নাই? মিন মিন করিয়া কহিলাম, আমি আবার কার সহিত ডেটিং করিবো? গিন্নী আরো দ্বিগুন তেজে জ্বলিয়া কহিলো, তাহলে আপিস হইতে বাড়ী আসিতে এত দেরী হইলো কেনো? যতই বুঝাইয়া কই ততই বরফ আরো জমাট বাঁধে। শেষে গরম সমুছা আর ঠান্ডা গিন্নীর হাল ছাড়িয়া হার মানিলাম।

বুঝিলাম এখন কর্মের অবসরের কারণে হিন্দী সিরিয়াল দেখিয়া গিন্নীর সন্দেহ প্রবনতা বাড়িয়াছে। তবে যে ঘটক ফুসলাইয়া আমার মুক্ত জীবন এমন পাকচক্রে বাঁধিয়াছে তাহার রক্ষা নাই। একবার সামনে পড়িলে তাহার দফারফা করিয়া ছাড়িবো। দিল্লীর লাড্ডু খাইয়া যখন লেন্জা কাটিয়াছি তখন তো ভুগিতে হইবে।

ঠিক তখনই তোর কথা মনে পড়িলো। ভাবিলাম একবার তোরে সাবধান করিয়া দিই। কোনো ঘটকের পাল্লায় পড়িবার পূর্বেই মুক্ত জীবন ভালোভাবে উপভোগ করিয়া লওয়া শ্রেয়।


সতর্কতা: যাহারা এই কাহিনী বাস্তবের সহিত মিলাইয়া আমাকে জিন্মী করিবার চেষ্টা করিবে তাহাদের কিলাইয়া ভূত তাড়াইবার ব্যবস্হা করা হইবে।
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা জুন, ২০১২ রাত ১১:২১
৮টি মন্তব্য ৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা করা সকলের দায়িত্ব।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৩৮



এগুলো আমার একান্ত মতামত। এই ব্লগ কাউকে ছোট করার জন্য লেখি নাই। শুধু আমার মনে জমে থাকা দুঃখ প্রকাশ করলাম। এতে আপনারা কষ্ট পেয়ে থাকলে আমি দায়ী না। এখনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

তাবলীগ এর ভয়ে ফরজ নামাজ পড়ে দৌড় দিয়েছেন কখনো?

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:২৬


আমাদের দেশের অনেক মসজিদে তাবলীগ এর ভাইরা দ্বীন ইসলামের দাওয়াত দিয়ে থাকেন। তাবলীগ এর সাদামাটাভাবে জীবনযাপন খারাপ কিছু মনে হয়না। জামাত শেষ হলে তাদের একজন দাঁড়িয়ে বলেন - °নামাজের... ...বাকিটুকু পড়ুন

ফেতনার সময় জামায়াত বদ্ধ ইসলামী আন্দোলন ফরজ নয়

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ১১:৫৮



সূরাঃ ৩ আলে-ইমরান, ১০৩ নং আয়াতের অনুবাদ-
১০৩। তোমরা একত্রে আল্লাহর রজ্জু দৃঢ়ভাবে ধর! আর বিচ্ছিন্ন হবে না। তোমাদের প্রতি আল্লাহর অনুগ্রহ স্মরণ কর।যখন তোমরা শত্রু ছিলে তখন তিনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

=নীল আকাশের প্রান্ত ছুঁয়ে-৭ (আকাশ ভালোবেসে)=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৬ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:১৯

০১।



=আকাশের মন খারাপ আজ, অথচ ফুলেরা হাসে=
আকাশের মন খারাপ, মেঘ কাজল চোখ তার,
কেঁদে দিলেই লেপ্টে যাবে চোখের কাজল,
আকাশের বুকে বিষাদের ছাউনি,
ধ্বস নামলেই ডুবে যাবে মাটি!
================================================
অনেক দিন পর আকাশের ছবি নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

পানি জলে ধর্ম দ্বন্দ

লিখেছেন প্রামানিক, ০৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৫২


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

জল পানিতে দ্বন্দ লেগে
ভাগ হলোরে বঙ্গ দেশ
এপার ওপার দুই পারেতে
বাঙালিদের জীবন শেষ।

পানি বললে জাত থাকে না
ঈমান থাকে না জলে
এইটা নিয়েই দুই বাংলাতে
রেষারেষি চলে।

জল বললে কয় নাউযুবিল্লাহ
পানি বললে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×