চলতি বছরের কথা। খেলছিলেন ঘড়োয়া ক্রিকেটে, নিজের প্রিয় শহর ওয়াইন্ডহোক এ! হঠাত স্ট্রোক করেন, নিয়ে যাওয়া হয় হাসপাতালে। কিন্তু আর ফিরে আসেননি। যে ক্রিকেট কে সবচেয়ে বেশি ভালবাসতেন, সেই ক্রিকেট মাঠ থেকেই বিদায় নেন চিরদিনের জন্য। ক্রিকেট মাঠ থেকে বিদায় নেওয়া সংক্ষিপ্ত তালিকায় নিজের নাম লেখান রেমন্ড ভ্যান শোর।
নামিবিয়ার জার্সি গায়ে সবচেয়ে বেশিবার মাঠে নামার অভিজ্ঞতা রয়েছে তার। ফার্স্ট ক্লাস ক্রিকেটে তার আছে ৫টি শতক এবং ২০টি অর্ধ-শতক। রান-সংখ্যা প্রায় ১০ হাজার। এই ডানহাতি ব্যটসম্যান বোলিং টাও খারাপ করতেন না। মিডিয়াম পেসে উইকেট সংখ্যা একেবারে কম না। তার পিতা ছিলেন এক সময়ের নামিবিয়া দলের উইকেট-কিপার মার্ক ভ্যান শোর।
ক্রিকেট কে ভালবাসতেন সবচেয়ে বেশি। ক্রিকেট বিধাতাও তাকে শেষ বার মাঠ থেকেই বিদায় দিলেন। সহযোগি দেশের খেলোয়ার বলে তাকে নিয়ে খুব একটা আলোচনা হয়নি। কিন্তু তিনি ছিলেন অমূল্য একজন খেলোয়ার, যা তার ক্যারিয়ার পরিসংখ্যান বিশ্লেষন করলেই দেখা যায়। তার মৃত্যু নামিবিয়ার জন্য অনেক বড় ক্ষতির কারন।
পরপারে অবশ্যই ভাল থাকবেন রেমন্ড
লুইস ক্লাজিঙ্গাঃ
২৯ বছর বয়সী এই ফাস্ট বোলারের জন্ম দক্ষিন আফ্রিকায়। সেখানে প্রথম শ্রেনির ক্রিকেট খেলেছেন। ২০০৬ সালে ডাক পান নামিবিয়া দলে। এর আগে নামিবিয়ার প্রথম শ্রেনির ক্রিকেটেও খেলে নির্বাচকদের নজরে আসেন।
দলে এসেই দুর্দান্ত খেলতে থাকেন। নামিবিয়া জাতিয় দলের পেস বোলিং এর স্তম্ভ হলেন তিনি, নিয়মিত প্রথমে বোলিং করতেন। ২০০৭-০৮ ইন্টারকন্টিন্যান্টাল কাপে টুর্নামেন্ট সেরার খেতাব অর্জন করেন। ৭৩টি ফার্স্ট ক্লাস ম্যাচ খেলে তার অর্জিত উইকেট ২২৬, সেইসাথে ব্যাটিং ও করতেন ভাল। রানসংখ্যা ১২০০+।
চলতি বছর ২০১৬ টি-২০ বিশ্বকাপের বাছাই পর্ব অনুষ্ঠিত হয়, নামিবিয়ার খুব ভাল একটা সম্ভাবনা ছিল সেখান থেকে মূল পর্বে উঠে আসার, কিন্তু খেলোয়ারেরা সেইমত পারফর্মেন্স করতে না পারায় তা আর সম্ভব হয়নি! সেই দুঃখেই ক্রিকেট থেকে বিদায় নিয়ে বসেন এই ক্রিকেটার, বয়স হয়েছিল মাত্র ২৯ বছর!
স্যারেল বার্গারঃ
বার্গার ভাইত্রয়ের মধ্যে তিনি সর্বকনিষ্ঠ! তাদের মধ্যে দ্বিতীয় জন বাদে বাকি দুইজন খেলেছেন বিশ্বকাপে। তিনি বাকি দুইজনের চেয়ে মেধাবি ক্রিকেটার সার্বিক বিবেচনায়!
ফার্স্ট ক্লাস ক্রিকেটে তার ফিফটি আছে ১৬টি, সেইসাথে ২টি সেঞ্চুরী। রান সংগ্রহ প্রায় ৭হাজার। সেইসাথে ডানহাতি মিডিয়াম পেসে উইকেট সংখ্যা ১১৯! বর্তমানে নামিবিয়া দলের অন্যতম ভরষা তিনি।
স্টিফেন ব্যার্ডঃ
চলতি বছরে শেষ হওয়া ২০১৬ টি-২০ বাছাই টুর্নামেন্টের সর্বাধিক রান-সংগ্রাহক ছিলেন তিনি। টুর্নামেন্টে মোট ৩০৯ রান করেন তিনি, দ্বিতীয় স্থানে যে ছিলেন তারচেয়ে রান সংখ্যা ৯৯ বেশি!! বর্তমানে দলের অধিনায়ক ও তিনি।
মাত্র ২৩ বছরে অধিনায়ক এর দায়িত্বপ্রাপ্ত এই ব্যাটসম্যান ৩৭টি ফার্স্ট ক্লাস ম্যাচে ১৭২২ রান সংগ্রহ করেন। তার সামনে যে উজ্জ্বল ভবিষ্যত পরে আছে তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
নামিবিয়ার ক্রিকেটে পথচলা ১৯৯২ সাল থেকে। তারা ২০০৩ বিশ্বকাপে অংশগ্রহন করে। এ পর্যন্ত তারা বেশকিছু মেধাবি ক্রিকেটার পরিচয় করিয়ে দিয়েছে। কিন্তু কালের পথচলায় অনেক ক্রিকেটার হারিয়ে গেছেন। কিন্ত নামিবিয়ার সেই দিন আর এখনের মাঝে পার্থক্য গড়ে দিচ্ছেন বর্তমানের উঠতি ক্রিকেটাররা, তারা ক্রিকেট কে তাদের ধ্যান-জ্ঞানে পরিনত করেছেন। যার ফলে তাদের দেশের মানুষ ও ক্রিকেট কে চিনছে। সেইসাথে নামিবিয়ার সরকারের সহযোগিতায় দ্রুত উন্নতি করছে নামিবিয়ার ক্রিকেট। ক্রিকেট নামিবিয়ার উজ্জ্বল ভবিষ্যত কামনায় রইল
পূর্বের লেখাগুলি পড়তে চাইলে......
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে নভেম্বর, ২০১৫ রাত ৮:০৪