সিলেটের সবচেয়ে সুন্দর জায়গা কোনটা ? কেউ যদি আমাকে এই প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করে , তবে উত্তর দিতে এক মুহূর্ত সময় নিবো না । চোখ বন্ধ করে বলবো “বিছানাকান্দি” । বাংলাদেশ ভারত সিমান্তে মেঘালয় পাহার থেকে নেমে আসা ঠান্ডা পানির প্রবল স্রোত থরে থরে সাজানো পাথরের উপরদিয়ে বয়ে চলে। ঠিক যেন একটি পাথুরে নদী, যেখানে আপনি গা ভাসিয়ে দিতে পারবেন অনায়েশে ।
সিলেট নগরীর “আম্বরখানা পয়েন্ট” থেকে সিএনজি নিয়ে রউনা দেন “হাদারপাড়” নামক জায়গার উদ্দেশ্যে । আপ – ডাউন সিএনজি রিজার্ভ করলে ভাড়া পড়বে ৮০০ থেকে ১০০০ টাকা । (যেহেতু আপনি ঘুরতে আসছেন, সেহেতু আপনার কাছ থেকে ১০০০ টাকা দাবি করবে । কতো দিবেন সেটা আপনার ক্রেডিট ) । ১.৫ ঘণ্টা পর আপনাকে নামিয়ে দিবে “হাদারপাড় বাজারে” । এই ১.৫ ঘণ্টা রাস্তার দুইপাশের চা বাগান আর গ্রাম দেখে মোটেই ক্লান্ত হবেন না কথা দিচ্ছি । শুধু মাঝে মাঝে রাস্তাটা খারাপ :/ । মোটামুটি খাওয়া দাওয়ার জন্য সবকিছুই পাবেন বাজারে । ভালো কথা , আপ – ডাউন সিএনজি রিজার্ভ করলে ড্রাইভারকে অর্ধেক টাকা পরিশোধ করে ফোন নাম্বারটা নিয়ে রাখবেন ।
এখন “হাদারপাড়” থেকে বিছানাকান্দি যাবার পালা । ২ টা উপায় আছে ।
১/ নৌকা -
১০ জন যেতে পারে এমন সাইজের নৌকা আপ – ডাউনের জন্য যতই টাকা চাক না কেন , আপনি ৮০০ থেকে ১০০০ এর বেশি কখনই বলবেন না । ২০/২৫ মিনিট পর পৌঁছে যাবেন বিছানাকান্দি । এই সময়টুকু নদীর দুই পাশের অসাধারণ সুন্দর দৃশ্য থেকে খরচ করুন ।
২/ পায়ে হাটা –
আপনি যদি ৪০ /৪৫ মিনিট গ্রামের মধ্যে হাটতে রাজি থাকেন আর পকেটে টাকা পইসা কম থাকে , তাহলে হাটা ধরুন । রাস্তা চিনতে একটুও কষ্ট হবে না । ঐখানের মানুষজন অনেক ফ্রেন্ডলি । জিজ্ঞাসা করলেই হবে । দেখিয়ে দিবে রাস্তা ।
বি.দ্র-
# আপনার কপাল ভালো থাকলে আপনি বাংলাদেশ আর ইন্ডিয়ার বর্ডার খোলা পেতে পারেন (আসলে প্রতি ৪ দিন পর পর খোলা থাকে হাটের উদ্দেশ্যে) । ইচ্ছা হলে একটু ঘুরে আসতে পারেন বিদেশ থেকে । তবে অবশ্যই বিকাল ৪ তার ভিতর ফেরত আসবেন ।
# সাতার জানলে ভালো হয় । তবে না জানলেও আপনাকে কিছুক্ষণের জন্য ভাসিয়ে রাখতে পারে এমন ইকুয়েপমেন্ট নিয়ে যাওয়া বেটার । এক নৌকায় এমন বেশি লোক উঠবেন না । যেন কোন দুর্ঘটনায় পড়তে হয় ।
# দালাল প্রকৃতির কিছু লোক মদ বিক্রির জন্য আপনার কাছে আসবে । ফাঁদে পা দিয়েন না । বিজিবির হাতে ধরা পড়লে কি হবে অনুমান করে নিন ।
ছবি দেখে হতাশ না হতে বলা হলো । ছবিটা যখন তোলা তখন কাঠ ফাটা রোদে পানি অনেকটাই শুকিয়ে গেছে । বিছানাকান্দিতে যাবার সবচেয়ে ভালো সময় বর্ষাকালের শেষের দিকে । বিছানাকান্দির বিছানাটা পানি দিয়ে বানানো কিনা , তাই যত বেশি পানি তত বেশি মজা ।
সুন্দর হোক আপনার ভ্রমণ । আরো কিছু জানার থাকলে কমেন্টে জিজ্ঞাসা করতেই পারেন ।
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ রাত ২:৪৭