১.
প্রিজন ব্রেকের ২য় সিজন দেখতে গিয়ে বেশ পেইন খাইছিলাম । ভাবতাম ব্রেক আউট তো প্রথম সিজনেই দেখে ফেললাম । পরের এতোগুলা সিজন কি হুদাই বানাইছে ?
উত্তরটা পাই অনেক পরে , একটা ছবি দেখছিলাম হোমপেজ স্ক্রল করতে গিয়ে । একটা পাখি ছোট একটা খাচা ভেঙে বড় একটা খাঁচায় ঢুকে পড়ছে এবং এই বড় খাঁচাটা আরো অনেকগুলা খাঁচার মধ্যে ।
আমরা আসলে মুক্তি খুঁজি । একটা সীমারেখা টানি নিজের অজান্তে । ভাবি ঐ লাইনটা ক্রস করলে আমার মুক্তি । আসলে কি তাই ?
ছোট একটা রেস্পন্সিবিলিটি থেকে বের হয়ে বড় একটা রেস্পন্সিবিলিটিতে আঁটকে যায় আমরা । কাঙ্ক্ষিত মুক্তি কখনো মেলে না , মারা যাবার আগ পর্যন্ত ।
২.
লাস্ট ১ মাসে অনেক কিছু শিখছি লাইফ থেকে । এতোকিছু একসাথে এতো কমসময়ে শিখবো আশা করিনি কখনো । আমি সাস্ট ক্যাম্পাসে একটা ছোটখাটো অর্গানাইজেশনের ভাইটাল পোস্টে ছিলাম । লাস্ট দেড় বছর আমার লাইফে অনেক খারাপভাবে কাটছে । ডিপ্রেশনে নিজেকে গুটিয়ে ফেলার জন্য হইতো আমি ঐ অর্গানাইজেশনে আমার কাজটা করিনি । মাস দেড়েক আগে নিজের রেস্পন্সিবিলিটীটা পূরণ করার জন্যই হইতো আবার কাজ করা শুরু করি অর্গানাইজেশন্টার জন্য । ভাবতাম একটা প্রোগ্রাম নামাতে পারলে আমার দায়িত্ব শেষ । এরপর কমিটি ছেড়ে দিবো ।
যেদিন প্রোগ্রাম নামলো ,সেদিন রাতে ঘুমানোর সময় ভাবছিলাম ব্রেক আউট করেই ফেললাম । এখন মুক্ত ।
৩.
অথচ ঠিক পরের দিন সকালে ঘুম থেকে উঠে জানতে পারলাম ক্লাসের সবথেকে চুপচাপ হয়ে বসে থাকা ছেলেটার ক্যানসার । স্পস্ট দেখলাম আরেকটা খাঁচায় ঢুকে পড়ছি । ওর সাহায্যের জন্য ফান্ড কালেকশন করা লাগবে । অনেক টাকা লাগতো । আমরা আগাচ্ছিলাম ভালো ভাবেই । ১ম সপ্তাহেই আমরা ৫ লাখ ক্রস করে ফেলি । চোখ বন্ধ করে হিসাব করতাম এটার সাথে টিচার আর এলাম্নাই এসোসিয়েশনের টাকাটা যোগ করলে ফয়সালের চিকিৎসা প্রায় হয়ে যাবে । ভাবতাম, সামনেই মুক্তি ।
৪.
অথচ ফয়সাল বাঁচলো না । আমাদের তোলা টাকা আমাদের কাছেই পড়ে আছে । আর ফয়সাল অন্ধকার কবরে ।
অবশেষে ২ বছর যন্ত্রনা শেষ করার পর ফয়সাল পেলো মুক্তি , এই জঘন্য পৃথিবী থেকে মুক্তি ।
পিএস - মুক্তি বলে কিছু নায় । আমরা সময়ের সান্ত্বনা শুনে যেটার আশায় বসে থাকি, সেটা ক্ষণিকের জ্যোৎস্না হতে পারে ,মুক্তি না ।
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ রাত ১:২৪