somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

প্রস্তাব এবং সেই প্রস্তাব সমর্থন এবং প্রয়োজনে যুদ্ধের মাধ্যমে ইসলাম কায়েম ও খেলাফত প্রতিষ্ঠিত হয়

১৮ ই অক্টোবর, ২০২৫ সকাল ১০:৩৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



রাসূল (সা.) মদীনা সনদের মাধ্যমে মদীনার শাসক হওয়ার প্রস্তাব করেন, অন্য সকল পক্ষ স্বাক্ষরের মাধ্যমে সেই প্রস্তাব সমর্থন করলে তিনি মদীনার শাসক পদে নিয়োগ লাভ করেন। তাঁর ইন্তেকালের পর আনসার নেতার নাম তাঁর খলিফা হওয়ার প্রস্তাব করা হয়। নেতা কুরাইশদের মধ্য থেকে হওয়ার হাদিস বলে হযরত ওমর (রা.) সেই প্রস্তাবের বিরোধীতা করেন।তিনি কুরাইশ নেতা হযরত আবু বকরের (রা.) খলিফা হওয়ার প্রস্তাব করলে হযরত আলী (রা.)গাদির খুমের হাদিসের ভিত্তিতে তাঁর খলিফা হওয়ার প্রস্তাব করেন। কিন্তু হযরত ওমরের (রা.) প্রস্তাবে জনসমর্থন বেশী পাওয়া গেলেও হযরত আলীর (রা.) প্রস্তাবে জনসমর্থন বেশী পাওয়া যায়নি বিধায় হযরত ওমরের (রা.) প্রস্তাব অনুযায়ী হযরত আবু বকরের খেলাফতের বায়াত গৃহিত হতে থাকে এবং হযরত আলীর (রা.) পক্ষে খেলাফতের বায়াত গৃহিত হয়নি। কিন্তু হযরত আলী (রা.) হযরত আবু বকরের (রা.) খেফাফতের বায়ত থেকে বিরত থাকলে হযরত ওমরের (রা.) চাপাচাপিতে পরে তিনি হযরত আবু বকরের (রা.) খেলাফতের বায়াতে সম্মত হন।এভাবে হযরত আবু বকর (রা.) প্রথম খলিফার নিয়োগ লাভ করেন। শিয়ারা তাঁর এ নিয়োগ লাভকে এখনো বৈধ বলে স্বীকার করে না। গাদির খুমের হাদিস অনুযায়ী তারা হযরত আলীকেই (রা.) প্রথম খলিফা হিসাবে স্বীকার করে। তাদের এ অস্বীকৃতি মুসলিমদেরকে শিয়া ও সুন্নী এ দু’দলে বিভক্ত করেছে। যারা হযরত আবু বকরের (রা.) খেলাফত স্বীকার করেছে তাদেরকে সুন্নী এবং যারা হযরত আবু বকরের (রা.) খেলাফত স্বীকার করে না তাদেরকে শিয়া বলে।

হযরত আবু বকরের (রা.) পর খলিফা হিসাবে হযরত ওমরের (রা.) নাম তিনি প্রস্তাব করেন। এ প্রস্তাবের কোন বিরোধীতা না থাকায় তিনি খলিফা হিসাবে নিয়োগ লাভ করেন। হযরত ওমর (রা.) তাঁর পর খলিফা নিয়োগের জন্য দশ সদস্যের পরিষদের নাম ঘোষণা করেন। সেই পরিষদ হযরত ওসমানকে (রা.) খলিফা পদে নিয়োগ দান করেন।হযরত ওসমান (রা.) শহীদ হলে খলিফা হিসাবে হযরত আলীর (রা.) নাম প্রস্তাব করা হলে তিনি খেলাফতের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। কিন্তু হযরত আয়েশা (রা.) ও হযরত মুয়িাবিয়া (রা.) তাঁর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেন। হযরত আয়েশা যুদ্ধে পরাজিত হন। কিন্তু শালিশের মাধ্যমে হযরত আলী (রা.) ও হযরত মুয়াবিয়ার (রা.) মাঝে খেলাফত বিভক্ত হয়। হযরত আলী (রা.) শহীদ হলে তাঁর অংশে হযরত ইমাম হাসান (রা.) খলিফা নিযুক্ত হলে হযরত মুয়াবিয়া (রা.) এর বিরোধীতা করেন।অবশেষে হযরত ইমাম হাসানের (রা.) সাথে চুক্তির মাধ্যমে হযরত মুয়াবিয়া (রা.) একা খলিফা হন। পরে তিনি এ চুক্তি ভঙ্গ করে তাঁর পরে তাঁর পুত্র ইয়াজিদের খলিফা হওয়ার ঘোষণা প্রদান করলে হযরত ইমাম হাসানের (রা.) সাথে তাঁর করা চুক্তি অনুযায়ী হযরত ইমাম হোসেন (রা.) তাঁর খলিফা হওয়ার দাবী উপস্থাপন করেন। তখন তাঁর এ দাবী প্রত্যাহার করার জন্য ইয়াজিদ পক্ষ তাঁর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে তাঁকে শহীদ করে।তারপর যেটা হয় সেটা উমাইয়া রাজত্ব হিসাবে প্রচার পায়।আব্বসিয়রা উমাইয়া রাজত্বের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে আব্বাসীয় খেলাফত প্রতিষ্ঠিত করে। শিয়াগণ আব্বসীয় খেলাফতের বিরোধীতা করলেও তারা তাদেরকে উৎখাত করতে পারেনি।অবশেষে অটোমেনরা আব্বাসীয় খেলাফতের অবসান ঘটায়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর তুরস্কের কামাল আতুতুর্ক খেলাফতের অবসান ঘটায়। তালেবান আফগানিস্তানে খেলাফত প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টা চালালে আমেরিকা ও তালেবান বিরোধীদের সাথে তাদের যুদ্ধ হয়। সেই যুদ্ধে জয় লাভ করে তারা আফগানিস্তানে খেলাফত প্রতিষ্ঠিত করে যা এখনো বিদ্যমান। বাংলাদেশে খেলাফত মজলিশের মামুনুল হক তালেবান থেকে খেলাফত প্রতিষ্ঠার ছবক গ্রহণ করেন। তিনি এখনো সফল হননি। এদিকে জামায়াত গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় ইসলাম প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টা চালালে অন্যরা এর বিরোধীতা করে।জামায়াত নাকি তাদের বিরোধী পক্ষ বাংলাদেশে ইসলাম কায়েমে সক্ষম হয় সেটা ভবিষ্যতে দেখা যাবে।

হযরত আবু বকরের (রা.) জনসমর্থনের বিপরীতে হযরত আলী (রা.) তাঁর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা থেকে বিরত থেকেছেন। সেই হিসাবে জনসমর্থন ইসলামে গৃহিত।আর এটা শান্তির পদ্ধতি।হযরত ওমরও (রা.)জনসমর্থনে খলিফা ছিলেন। রাসুলও (সা.)জনসমর্থনে শাসক ছিলেন। যারা জনসমর্থনকে অস্বীকার করেন তাদের এ জনসমর্থনের অস্বীকারের ভিত্তি কি? জনসমর্থন অস্বীকার করলে যুদ্ধকে স্বীকার করতে হবে। সেইটা কি ভাল পদ্ধতি? ইসলামে জনসমর্থনের পদ্ধতি কি? সেটা হলো সাংগঠনিক দক্ষতায় যখন দেখা যাবে ইসলামী শাসনের বিরোধীতা পাওয়া যাবে না তখন ইসলামী শাসনের প্রস্তাব দিতে হবে। তখন সেই প্রস্তাব গৃহিত হয়ে ইসলামী শাসন প্রতিষ্ঠিত হবে। যখন দেখা যাবে ইসলামী শাসনের প্রস্তাব গৃহিত হবে না তখন ইসলামী শাসনের প্রস্তাব করা থেকে বিরত থাকতে হবে। তখন ইসলামী শাসনের চিন্তা বাদ দিয়ে ইনসাফের শাসনের চেষ্টা করতে হবে।

# ইসলাম প্রতিষ্ঠার পদ্ধতি হলো: ইসলাম প্রতিষ্ঠার মত সাংগঠনিক অবস্থা তৈরী করতে হবে যেন ইসলাম প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব উত্থাপন করলে এর বিরোধীতার কেউ না থাকে। রাসূল (সা.) এ পদ্ধতিতেই ইসলাম প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। খেলাফতের প্রস্তাবের ক্ষেত্রেও এর জনসমর্থন আবশ্যক। হযরত আলীর খেলাফতের প্রস্তাব কার্যকর হয়নি জনসমর্থনের অভাবে। সুতরাং প্রয়োজনীয় জনসমর্থন না পাওয়া ছাড়া খেলাফতের প্রস্তাব করা উচিত নয়।
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই অক্টোবর, ২০২৫ সকাল ১০:৪০
৪টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×