somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

শরীরচক্র

২৮ শে মে, ২০১৩ বিকাল ৩:২২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

৪টা ২০ অপরাহ্ণ
আমার হাত থেকে দড়িটা পড়ে গেল , সাথে বাঁধা বালতিটা , আমি প্রতিধ্বনির জন্য অপেক্ষা করছিলাম , ১ ২ ৩ হয়তো অনন্ত কাল , কুয়োর ভেতরটা উঁকি দিয়ে দেখবো বলে মাথা গলিয়েছি ওমনি আমার পতন শুরু হল , আমি অন্ধকারে তলিয়ে যেতে লাগলাম , ঢং ঢং করে বেল বাজছে , আমার মোজা তো ভেজা , আজকেও ঐ মোটা লোকটা বেত নিয়ে এসেছে , তুমি আঙ্গুল তুলে আমাকে দেখিয়ে দিলে , বললে হ্যাঁ হ্যাঁ এই ছেলেটাই দেয়ালে আমার বাজে ছবি এঁকেছে । আমি উত্তর করবো , কিন্তু চারিদিকে কিসের আওয়াজ , আমার কণ্ঠ শোনা গেলনা ।
আমি চোখ খুলে দেখলাম ৪টা ২০ , ফোনটা বেজে চলছে , আমার বুকের ভেতর হৃৎপিণ্ডের ধুকপুক
আমি সেই মুহূর্তে সিধান্ত নিয়ে নিলাম , আমি আর পৃথিবীতে থাকছিনা । ঐ ২৫০ পাউন্ড চর্বির স্তূপে তুমি খনি খনন প্রযুক্তিতে হৃদয় খুঁজে বের করো , হাসো কাঁদো যা ইচ্ছা তাই করো । আমি তোমাকে ঘেন্না করি , আমি যদি জানতাম , আমি যদি আগেই বুঝে ফেলতাম তুমি একটা লোভের টুকরো বৈ আর কিছু নও আমি তোমাকে কেবল খুন করে ফেলতাম ।

৬টা ৫৭
ডায়াজিপাম পেলাম , বাসায় পাতা খানেক আছে , আরও কয়েক পাতা লাগবে , এক দোকান থেকে বেশী নিতে ইচ্ছা করছেনা । ঐ দোকানদারটা ওভাবে তাকাল কেন ? ঐ শালা বুঝে ফেললো নাকি আমি হেরে গেছি ,
যাক সারা দুনিয়া বুঝে যাক আমি হেরে গেছি , আমি গোহারা হেরেছি । আমি ঐ লাল রঙের গাড়িটার কাছে হেরে গেছি , আমি ঐ গলফ ক্লাবটার কাছে হেরে গেছি , আমি নীল বড়িগুলোর কাছে হেরে গেছি , ব্যাংক বীমা , চকচকে জুতার পালিশ , আর শালা ঐ বুড়ো হাবড়াটা , নিশ্চিত ডাক্তার বলে দিয়েছে ওকে “উত্তেজনা থেকে সাবধান” , আমি ঐ বুড়োটার কাছে হেরে গেছি , তুমি কি ওর দিকেও দিগন্ত রেখার মত ঝুঁকে পড় ? মেয়েগুলো সব আস্ত বেশ্যা । বাড়ি ভাড়ার টাকাটা আর দিতে হচ্ছেনা , ঐ বুড়োবেটা বাড়িওয়ালা বেশ ঝামেলায় পড়বে , পড়ুক , সব বুড়োগুলো ঝামেলায় পড়ুক , মরুক ।
ডায়াজিপামের সাথে হুইস্কি , মরবই । তোমার কানে খবরটা যাবে তো , চিরকুট লিখে যাব নাকি , বেশ কেলেংকারী হোক , সবাই জানুক আমি তোমার বিরহে মারা পরলাম । কিন্তু সাফ সাফ জেনে রাখো আমি তোমাকে ঘেন্না করি , আমি পরাজয়কে ঘেন্না করি ।

৯টা ৫৯
লিফটে বাড়িওয়ালার ছেলের বউটাকে দেখলাম , মহসীনের হাত থেকে বোতলটা নিয়ে একটু খুলে দেখছিলাম , বউটার মনে হয় আকাশ দেখার ইচ্ছে হয়েছে , কে জানে পাশের ছাদে হয়তো কোন নাগর জুটেছে । এম্মা ঐভাবে কি দেখছে , তোমার হুলোটা তো প্রতি রাতেই টং হয়ে আসে , তুমি বুঝি দেখনা , নাকি তুমিও বুঝে গেলে আমি হেরে গেছি । বড় হারা হেরে গেছি ।

মেয়েটার শরীর থেকে হুবহু তোমার সুগন্ধ আসছিল , ও এও তাহলে সুগন্ধির কারবার , আমি তো ভেবেছিলাম ওটা কেবল তোমারই । শালা কত জানা বাকি থাকলো ।

১১টা ৪৭

এবার প্রস্তুতি নেয়া যাক , বোতলটা খুললাম , তোমার স্বাস্থ্য পান করছি । কিন্তু ঐ বাড়িওয়ালার ছেলের বউটার সুগন্ধ আমাকে বড় ভাবিয়ে তুলছে , ওর হুলোটা ফিরেছে ? মেয়েটা বেশ কিন্তু । ও কি ঘুমিয়েছে ? কে জানে , আমার বুকের ভেতর হা হা করছে , কেন ?
আহা মেয়েটা বুঝি বারান্দায় ।
বেশ চনমনে লাগছে , যাও তোমাকে ক্ষমা করে দিলাম , একটা চিরকুট লেখা যায় পৃথিবীকে সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করে , আচ্ছা আমি মরে গেলে ঐ বউটা কি ভাববে কালকে আমি বেশ জীবিত ছিলাম , হা হা হা , ঐ ২৫০ পাউন্ড চর্বির স্তূপটার নগ্নতা বেশ হাসির দৃশ্য তো , যাক ঐ বেটার কি দোষ , তোমারই বা দোষ কই । এই লাল চোখ তো বেশ মানায় আমাকে । কিন্তু ঐ বউটা মাথায় ঘুরছে কেন । আমার কি জ্বর এলো ?
কটা বাজে ১২টা ৩ , ঘড়িটা ৫ মিনিট ফাস্ট , আমি এটা জানি বলেই আমার অফিসে প্রতিদিন দেরি হয় ।
এটা ভুলে গেলেই তো বেশ হত আগের দিনগুলো ।
ওষুধের পাতাগুলো কি বিশ্রী দেখতে
আমার হাতটা কাঁপছে কেন , নাহ এতোটুকুতে তো আমার ধরেনা
আমার ভূগোলে বেশ একটা বৃক্ষের সাড়া পাচ্ছি ,
কোন ফোল্ডারে রেখেছি , ওহ ডি ড্রাইভে , কি নাম যেন লাতিন মেয়েটার

১টা ২৫
আয়নায় বেশ লাগছে দেখতে আমাকে , আমি তো আমিই , আমি আমার বিশেষণ সর্বনাম অব্যয় । কালকে অফিস যাব না , বস কে কি বাহানা দেই ? আচ্ছা প্রতি রাতে কি বাড়িওয়ালার ছেলের বউটা ছাদে যায় ?
৪টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×