কোকা-কোলার পূর্ব জেরুজালেমের আতারোট শিল্প অঞ্চলের কারখানাটিকে ঘিরে শুরু থেকেই তীব্র বিতর্ক আছে। এই এলাকাটি আন্তর্জাতিক আইনের অধীনে ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডের অধিকৃত এলাকা হিসেবে বিবেচনা করা হয়। রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, এবং নৈতিক বিবেচনায় এটি কোকের এন্টি ফিলিস্তিন ভূমিকাকে সামনে এনেছে। কোকা-কোলার সিদ্ধান্তকে অনেকেই ইসলাইলের পক্ষে বানিজ্যিক রণনীতি মনে করেন।
ইসরায়েলে বাজার অ্যাক্সেস বাড়াতে এবং সরবারহ ব্যবস্থা অপ্টিমাইজ করার জন্য লোকেশনটা বেছে নিয়েছে বলা হয়। এটি বৃহৎ আকারের উত্পাদনে সক্ষম। বাস্তবে অধিকৃত অঞ্চলের রাজনৈতিকভাবে জটিল এই অঞ্চলে শিল্প কারখানা স্থাপনে ইসরায়েল অর্থনৈতিক প্রণোদনা দেয় ( ট্যাক্স সুবিধা এবং অন্যান্য আর্থিক সুবিধা, এতে কোকের অপারেশনাল খরচ কম)।
কোকের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে শুরু থেকেই রাজনৈতিক এবং নৈতিক উদ্বেগ ছিল। পাশাপাশি এটি আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন। আটারোট শিল্প অঞ্চলটি পূর্ব জেরুজালেমে অবস্থিত, ১৯৬৭ সাল থেকে ইসরায়েলের দখলকৃত অঞ্চল।জাতিসংঘের অনেক প্রস্তাব সহ আন্তর্জাতিক আইন অনুসারে, দখলকৃত অঞ্চলে ইসরায়েলি বসতি এবং অর্থনৈতিক কার্যক্রম অবৈধ বলে বিবেচিত হয়।
উপরন্তু এটি ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র, স্ব-নিয়ন্ত্রণ অধিকার বা স্টেইট হুডকে অসমম্মান করে। এবং দখলদারিত্বকে স্বচ্ছভাবে সমর্থন করা হিসাবে দেখা হয়।
অর্থনৈতিক দিক থেকে বলতে গেলে, এটা ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারীদের অন্যায় সুবিধা দেয়। ফিলিস্তিনি জনসংখ্যার পরিবর্তে বসতি স্থাপনকারী সম্প্রদায়কে চাকরি এবং অর্থনৈতিক সুবিধা প্রদান করে। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থার রিপোর্ট মতে, কারখানারটির বেশিরভাগ কর্মচারী ইসরায়েলি, যার অর্থ কর্মসংস্থানের সুযোগ সহ অর্থনৈতিক সুবিধাগুলি ফিলিস্তিনিদের জন্য উল্লেখযোগ্যভাবে নাই।
অনেক আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অধিকৃত অঞ্চলে কোকা-কোলার এমন কার্যক্রমের সমালোচনা করেছে, আন্তর্জাতিক আইন এবং নৈতিক মানদণ্ডের সাথে সামঞ্জস্য রেখে কোককে তার ব্যবসায়িক অনুশীলন পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানিয়েছে।
শ্রম অধিকার, দখল এবং ফিলিস্তিনি স্বাধীনতার বিস্তৃত প্রেক্ষাপটে কোকের এমন সিদ্ধান্ত বয়কটের আহ্বানকে যৌক্তিকতা দিয়েছে। বিভিন্ন ফিলিস্তিনি গোষ্ঠী এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকার কর্মী এবং অ্যাক্টিভিস্টরা কোকাকোলার পণ্য বয়কটের আহ্বান জানিয়েছে, কোম্পানিটির ইজরায়েলি দখলে জড়িত থাকার অভিযোগ তুলেছে।
দুই
'ফিলিস্তিনে কোকের কারখানা আছে' এমনটা প্রচার করে কোক বাংলাদেশ আংশিক মিথ্যাচার করেছে। একটা মাল্টি ন্যাশনাল কোম্পানির টেকনিক্যালি কারেক্ট থাকা উচিত। অফিসিয়ালি এটা কোকের ইসরায়েলি ফ্যাক্টরি বলে- কোক বাংলাদেশের এই নিয়ে ক্ষমা চাওয়া উচিত। বিজ্ঞাপন প্রত্যাহার করা উচিত।