somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ইসলামী খিলাফত সরকারের অর্থনৈতিক মডেল

২৩ শে জুন, ২০০৯ দুপুর ১:১৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বাংলাদেশের দ্রব্যমূল্য সংকটের সমাধান :

ইসলামের অর্থনৈতিক মডেল

খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা, চিকিৎসা আর যাতায়াত সংক্রান্ত খরচ যে কোন একটি
পরিবারের জন্য নিয়মিত একটি বিষয়। স্বল্প ও নির্দিষ্ট আয়ের মানুষের জন্য পরিবারের এই
মৌলিক চাহিদাগুলো মেটানো পার্থিব জীবনে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। বিশেষ করে যখন
বাজারে এই সব পণ্য ও সেবার দাম বাড়তে থাকে, তখন মানুষকে বেঁচে থাকার জন্য
রীতিমত সংগ্রাম করতে হয় Ñ কারণ বাজারের জিনিসপত্রের অগিড়বমূল্যের সাথে তাল মিলিয়ে
পরিবারের বেতন বা আয় বাড়ে না। বাংলাদেশের কোন সরকারই অতীতে নিত্যপ্রয়োজনীয়
জিনিসপত্রের দাম স্থিতিশীল রাখতে পারেনি। স¤প্রতি আমরা দেখেছি যে দ্রব্যমূল্যের
উর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণ করার অঙ্গীকার করে ক্ষমতায় আসা বর্তমান সরকার ইদানিং তা পাশ
কাটানোর চেষ্টা করছে। নির্বাচনের আগে চালের দাম কেজি প্রতি দশ টাকা করার কথা বলে
ক্ষমতায় এসে এখন বলা হচ্ছে চালের যুক্তিসংগত দাম কেজি প্রতি বিশ টাকা। যে সরকার
পুঁজিবাদী অর্থনৈতিক ব্যবস্থা বাস্তবায়ন করে তার কাছ থেকে এর চেয়ে বেশী কি আশা করা
যায়? আর পুঁজিবাদী ব্যবস্থা প্রকৃতিগতভাবেই অর্থনীতিতে মুদ্রাস্ফীতির জন্ম দেয়।
এমনই এক প্রেক্ষাপটে এই নিবন্ধে আমরা (১) দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির বাস্তবতা, (২)
প্রচলিত অর্থনৈতিক ব্যবস্থার আলোকে জিনিসপত্রের মূল্য বৃদ্ধির মৌলিক কারণসমূহ, (৩)
মূল্য বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে পুঁজিবাদী সমাধানের ব্যর্থতা, (৪) ইসলামী অর্থনীতির ভিত্তি এবং (৫)
দ্রব্যমূল্য সংকটের সমাধানে ইসলামের অর্থনৈতিক মডেল দেশবাসীর সামনে বিস্তারিতভাবে
তুলে ধরতে চাই।

১. দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির বাস্তবতা
বাংলাদেশে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করার জন্য বাংলাদেশ
পরিসংখ্যান ব্যুরো (ইধহমষধফবংয ইঁৎবধঁ ড়ভ ঝঃধঃরংঃরপং) তথ্য সংগ্রহ ও প্রকাশ করে
থাকে। প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশে ২০০৭-২০০৮ সালে মূল্যস্ফীতি (ওহভষধঃরড়হ)
ঘটেছিল পূর্ববর্তী বছরের তুলনায় দশ শতাংশ। এর মধ্যে খাদ্যদ্রব্যের মূল্যস্ফীতি ঘটেছে
চৌদ্দ শতাংশ এবং খাদ্য-বহির্ভূত নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বেড়েছে সাড়ে তিন
শতাংশ।১ পরিসংখ্যানের এই মারপ্যাঁচে দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি সম্পর্কে সুস্পষ্ট কোন ধারণা
পাওয়া যায় না এবং মূল্যস্ফীতি গণনা করার এই প্রক্রিয়া নিয়ে অনেক প্রশড়ব রয়েছে। বরং
পরবর্তী পৃষ্ঠার টেবিল থেকে আমরা আরো পরিষ্কার চিত্র পাই:
দ্রব্য (কেজি বা
লিটার)
২০০১ গড় জানুয়ারী ১১
২০০৭
জানুয়ারী
২০০৯
দাম বৃদ্ধির শতকরা
হার
মোটা চাল ১৩.৫০ ১৮.৫০ ২৮ ১০৮
চিকন চাল ১৮.৫০ ২৪ ৩৮ ১০৬
আটা ১৩.০০ ২৫.৫০ ২৬ ১০০
সয়াবিন তেল ৪০ ৬৫ ৯১ ১২৭
পেঁয়াজ ২০ ১৮ ৩৩ ৬৫
লবণ ১০ ১৩ ১৭ ৭০
ডাল ৩৯ ৬৫ ৯০.৫ ১৩২
আলু ৮.৫০ ১৮ ২০ ১৩৫

সুত্র : দি ডেইলী নিউ এজ, জানুয়ারী ৭, ২০০৯; টিসিবি ও ক্যাব এর তথ্যসূত্র অনুযায়ী
অর্থাৎ গত আট বছরে নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীর দাম দ্বিগুণ হয়েছে। অথচ এই সময়ে
একই হারে মানুষের আয় বাড়েনি।

২. প্রচলিত অর্থনৈতিক ব্যবস্থার আলোকে জিনিসপত্রের মূল্য বৃদ্ধির মৌলিক
কারণসমূহ
বিভিনড়ব মহল জিনিসপত্রের মূল্য বৃদ্ধির পিছনে অনেক কারণ উলে−খ করে থাকেন। মূলতঃ
পুঁজিবাদী অর্থনৈতিক ব্যবস্থা নিজেই জিনিসপত্রের মূল্য বৃদ্ধির জন্য দায়ী কয়েকটি কারণে Ñ
(১) বাজারে জিনিসপত্রের দাম সম্পর্কে পুঁজিবাদী দৃষ্টিভঙ্গি (২) কেন্দ্রীয় ব্যাংক অনুসৃত মুদ্রা
সরবরাহ নীতি (৩) বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফ-এর নীতিসমূহ (৪) আন্তর্জাতিক পুঁজিবাজারে
ফটকাবাজারী (ঝঢ়বপঁষধঃরড়হ) (৫) আন্তর্জাতিক বাজারে মজুতদারী এবং (৬) দেশের
অভ্যন্তরে মজুতদারী, পাচার ও সিন্ডিকেট।

২.১ বাজারে জিনিসপত্রের দাম সম্পর্কে পুঁজিবাদী দৃষ্টিভঙ্গি
পুঁজিবাদী অর্থনীতির অন্যতম প্রবক্তা অ্যাডাম স্মিথ তার বিখ্যাত An Inquiry into the
Nature and Causes of the Wealth of Nations (1776) eB‡Z e‡jb, ÒEvery
individual... neither intends to promote the public interest, nor knows how
much he is promoting it ... He intends only his own gain, and he is in this,
as many other cases, led by an invisible hand to promote an end which
was no part of his intention."

অর্থাৎ প্রতিটি ব্যক্তি... গণমানুষের স্বার্থ রক্ষার কোন ইচ্ছা পোষণ করেনা এবং সে জানেও
না যে সে গণমানুষের স্বার্থ হাসিলে কতটুকু সহায়তা করছে। ব্যক্তি শুধুমাত্র নিজের লাভ
পৃষ্ঠা : ০১ পৃষ্ঠা : ০২
নিয়ে সদাব্যস্ত। একটি অদৃশ্য হাতের কল্যাণে সে গণমানুষের স্বার্থের পক্ষে ভূমিকা রাখে Ñ
যা ব্যক্তি কখনোই স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে করে না, করার ইচ্ছাও পোষণ করেনা।
অ্যাডাম স্মিথের এই ‘অদৃশ্য হাত’ (ওহারংরনষব ঐধহফ) হচ্ছে বাজার - যখন বাজারে
অংশগ্রহণকারীরা নিজ নিজ পণ্য ও সেবা সরবরাহ করে এবং চাহিদা প্রকাশ করে, তখনই
অদৃশ্য হাতের মাধ্যমে জিনিসপত্রের দাম নির্ধারিত হয়, এতে সরকারের কোন ভূমিকা নেই।
ব্যক্তি শুধুমাত্র নিজ স্বার্থ ও লাভ নিয়ে ব্যস্ত Ñ এই রাজনৈতিক দর্শনই বাজার অর্থনীতির
বুদ্ধিভিত্তিক ভিত্তি।২ অর্থাৎ বাজারে চাহিদা ও সরবরাহই দাম ঠিক করবে, শুধুমাত্র এই
দামের মাধ্যমে সমাজে সম্পদ বন্টন হবে। গরীব যদি দাম দিতে না পারে তবে সে না খেয়ে
থাকবে।
পুঁজিবাদীরা মনে করে বাজার কর্তৃক মূল্য নির্ধারণের এই ব্যবস্থা উৎপাদককে উৎসাহিত
করে। কারণ মানুষের সকল কাজের একমাত্র উদ্দেশ্য হচ্ছে বস্তুগত লাভ। মানুষ যে নৈতিক
বা আধ্যাত্মিক কারণে কোন কাজ করতে পারে তা পুঁজিবাদে বিশ্বাসীরা কল্পনা করতে পারে
না। তারা আরো মনে করে যে মানুষ যত ভোগ করবে, সে তত সন্তুষ্ট ও সুখী। মূল্য
নির্ধারণের এই ব্যবস্থা জিনিসপত্রের সরবরাহেও মূল ভূমিকা পালন করে। উৎপাদক ও
ভোক্তার মধ্যেকার সম্পর্ক নির্ধারণ করে ‘দাম’। এটাই বাস্তব ক্ষেত্রেই পুঁজিবাদী অর্থনৈতিক
ব্যবস্থা তথা বাজার অর্থনীতির মূল ভিত্তি।৩ তাত্ত্বিকভাবে, এক্ষেত্রে সরকারের করার কিছুই
নেই। সরকার বাজার ব্যবস্থাকে রেগুলেট করে না, শুধুমাত্র বাজারের সুবিধাদি নিশ্চিত
করে। পুঁজিবাদী অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় মানুষকে মুনাফার দাস হিসেবে দেখা হয় এবং সরকার
সেই ব্যবস্থার রক্ষক ও বাস্তবায়নকারী। সীমাবদ্ধ চিন্তার অধিকারী ও স্বার্থবাদী মানুষ যখন
মানুষের জন্য ব্যবস্থা তৈরী করতে চায়, তখন এর চেয়ে ভাল ও উনড়বত আর কিইবা সে তৈরী
করতে পারে?

বিস্তারিতঃ
Click This Link

ধন্যবাদ সাইফ বাঙ্গালীকে। ভাল থাকবেন ভাই যাযাকালল্লা
ধন্যবাদ মাসুদকে আর সেতু জোহরা আমি কমেন্ট ব্যান তাই এখানে উত্তর দিচ্ছি
১. খলিফা নির্বাচন পদ্ধতি আমার পরবর্তী লেখায় পাবেন
২. হিযবুত তাহরীর গণ আন্দোলনের মাধ্যমে ক্ষমতা গ্রহন করবে আর নির্বাচনতো শুধু নেতা বাছায় করার প্রক্রিয়া মাত্র। ভাল থাকবেন কথা হবে।
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে জুন, ২০০৯ দুপুর ১:১৩
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মুসলিম কি সাহাবায়ে কেরামের (রা.) অনুরূপ মতভেদে লিপ্ত হয়ে পরস্পর যুদ্ধ করবে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪৯




সূরাঃ ৩ আলে-ইমরান, ১০৫ নং আয়াতের অনুবাদ-
১০৫। তোমরা তাদের মত হবে না যারা তাদের নিকট সুস্পষ্ট প্রমাণ আসার পর বিচ্ছিন্ন হয়েছে ও নিজেদের মাঝে মতভেদ সৃষ্টি করেছে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদে মসজিদে মোল্লা,ও কমিটি নতুন আইনে চালাচ্ছে সমাজ.

লিখেছেন এম ডি মুসা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সকাল ১০:২৩

গত সপ্তাহে ভোলার জাহানপুর ইউনিয়নের চরফ্যাশন ওমরাবাজ গ্রামের এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। লোকটি নিয়মিত মসজিদে যেত না, মসজিদে গিয়ে নামাজ পড়েনি, জানা গেল সে আল্লাহর প্রতি বিশ্বাসী ছিল, স্বীকারোক্তিতে সে... ...বাকিটুকু পড়ুন

গল্পঃ অনাকাঙ্ক্ষিত অতিথি

লিখেছেন ইসিয়াক, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ দুপুর ১:১২

(১)
মাছ বাজারে ঢোকার মুখে "মায়া" মাছগুলোর উপর আমার  চোখ আটকে গেল।বেশ তাজা মাছ। মনে পড়লো আব্বা "মায়া" মাছ চচ্চড়ি দারুণ পছন্দ করেন। মাসের শেষ যদিও হাতটানাটানি চলছে তবুও একশো কুড়ি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগে বিরোধী মতের কাউকে নীতি মালায় নিলে কি সত্যি আনন্দ পাওয়া যায়।

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১৮

ব্লগ এমন এক স্থান, যেখানে মতের অমিলের কারণে, চকলেটের কারণে, ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শের কারণে অনেক তর্কাতর্কি বিতর্ক কাটা কাটি মারামারি মন্তব্যে প্রতিমন্তব্যে আঘাত এগুলো যেনো নিত্য নৈমিত্তিক বিষয়। ব্লগটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগার'স ইন্টারভিউঃ আজকের অতিথি ব্লগার শায়মা

লিখেছেন অপু তানভীর, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ১১:০৫



সামুতে ব্লগারদের ইন্টারভিউ নেওয়াটা নতুন না । অনেক ব্লগারই সিরিজ আকারে এই ধরণের পোস্ট করেছেন । যদিও সেগুলো বেশ আগের ঘটনা । ইন্টারভিউ মূলক পোস্ট অনেক দিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×