প্রায়ই পত্র পত্রিকায় দেখি , ভিজিডি ( Vulnerable Group Development ) মানে বিপন্ন জনগোষ্ঠির উন্নয়ন তথা দুস্থ মহিলাদের পুষ্টিমান উন্নয়নের জন্য অথবা ভিজিএফ ( Vulnerable Group Feeding ) মানে বিপন্ন জনগোষ্ঠির জন্য তথা দুস্থদের জন্য খাদ্য সরবরাহ নামক কর্মসূচিগুলিতে যে পরিমাণ চাল / গম দেয়ার কথা তার চেয়ে ওজনে অনেক কম দিয়ে এসব দুস্থদের ঠকানো হয়। ভিজিডি কর্মসুচিতে ৩১ কেজি এবং ভিজিএফ কর্মসূচিতে ১০ বা ২০ কেজি চাল / গম দেয়ার কথা। কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ভিজিডি তে ২২ / ২৩ কেজি এবং ভিজিএফ এ একই অনুপাতে চাল / গম কম দেয়া হয়। ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান / সদস্যগণ বলে থাকেন , খাদ্য গুদাম থেকে ওজনে কম আসে তাই আমরা কম দেই। কিন্তু তাদের এ বক্তব্য বিশ্বাসযোগ্য নয়। এটা বাস্তবে যাচাই করে দেখার জন্য আমি ১৯৯৬ এ যখন মাদারীপুর জেলার রাজৈর উপজেলায় TNO ছিলাম তখন এক ছুটির দিনে আমার জুনিয়ার সহকর্মী এসি, ল্যান্ড মেসবাহউদ্দিনকে ( বর্তমানে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক ) সাথে নিয়ে উপজেলার আমগ্রাম ইউনিয়নে ভিজিডি এর চাল বিতরণ করতে যাই। আমরা দু'জন সারাদিন আমাদের চোখের সামনে ওজন দিয়ে দুস্থদের প্রাপ্য ৩১ কেজি করে চাল বিতরণ করি। সন্ধ্যায় দেখা গেল তালিকাভুক্ত সকল দুস্থ মহিলাকে তাদের প্রাপ্য ৩১ কেজি করে চাল বিতরণ সম্পন্ন হয়েছে। চলের কোন ঘাটতি হয় নাই। এর পর প্রায়ই যেদিন যেখানে এসব কর্মসুচির চাল / গম বিতরণ করা হতো সেখানে আমি মোটর সাইকেলে হঠাৎ গিয়ে উপস্থিত হয়ে ওজনে সঠিক পরিমাণে দেয়া হচ্ছে কিনা তা পরীক্ষা করে দেখতাম। এর ফলে ওজনে কম দেয়ার এ প্রবণতা কমে গিয়েছিল। তার পরও আমি দু'জন চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অনুরুপ অভিযেগে তদানীন্তন দুর্নীতি দমন ব্যুরোতে মামলা দায়ের করেছিলাম। তাই দুস্থ মহিলাদের সহায়তার এসব কর্মসূচিতে চাল বা গম বিতরণে ওজনে কম দেয়া ঠেকাতে হলে স্থানীয় প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের ব্যক্তিগতভাবে এ রকম উদ্যোগ নিতে হবে।
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই অক্টোবর, ২০১৫ রাত ৯:২২