লালমনিরহাট প্রতিনিধি, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
মেয়ে ধর্ষিত হওয়ার জন্য যুদ্ধ করিনি। কোনো কিছু পাওয়ার আশা বা লোভেও নয়। জীবন বাজি রেখে যুদ্ধ করেছি শুধু দেশমাতা আর তার সন্তানদের রক্ষা করতে।
সেই স্বাধীন দেশেই এই মুক্তিযোদ্ধাকে সহ্য করতে হচ্ছে নিজের মেয়ে ধর্ষিত হওয়ার কষ্ট, যার কোনো ক্ষতিপূরণ নেই।
কথাগুলো বলতে বলতে হাউমাউ করে কেঁদে ওঠেন ধর্ষণের শিকার এক কিশোরীর দরিদ্র মুক্তিযোদ্ধা বাবা।
গত বুধবার লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার ডাউয়াবাড়ি ইউনিয়নের চর ডাউয়াবাড়ি গ্রামে এ ঘটনা ঘটলেও হুমকির কারণে এবং লোকলজ্জায় মামলা করতে পারেনি পরিবারটি।
শনিবার রাতে মামলা হলে ‘ধর্ষক’ যুবকের বাবা স্থানীয় ডাউয়াবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য লোকমান হোসেনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
রোববার আদালতে হাজির করলে তাকে কারাগারে পাঠানো হয় বলে পুলিশ জানিয়েছে।
গুরুতর অসুস্থ ৬ষ্ঠ শ্রেণির ওই ছাত্রী (১৪) বর্তমানে হাতীবান্ধা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন আছে।
রোববার বিকালে হাসপাতালে মেয়েটি সাংবাদিকদের বলে, গত বুধবার (৩০ জানুয়ারি) তার বাবা-মা নানার বাড়ি গেলে সন্ধ্যায় প্রতিবেশী ইউপি সদস্য লোকমান হোসেনের ছেলে তিন সন্তানের জনক জাকির হোসেন (৩৫) তাদের বাড়ি ঢুকে ধর্ষণ করে পালিয়ে যায়।
গুরুতর অসুস্থ হলেও ধর্ষকের বাবার বাধায় তাকে হাসপাতাল নিতে পারেনি পরিবারের লোকজন। পরে বেশি অসুস্থ হয়ে পড়লে এলাকাবাসীর সহায়তায় তাকে হাতীবান্ধা হাসপাতালে ভর্তি করান বাবা-মা।
এলাকাবাসীর বরাত দিয়ে হাতীবান্ধা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) শহিদুল ইসলাম বলেন, ধর্ষকের বাবা ইউপি সদস্য লোকমান আলামত নষ্ট করতে মীমাংসার নামে সময়ক্ষেপণ করেছেন। মেয়েটিকে চিকিৎসা নিতে কিংবা মামলা করতেও বিভিন্নভাবে বাধা দিয়েছেন।
“ধর্ষক ছেলের পক্ষ নেয়ায় বাবাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পরে আদালত তাকে কারাগারে পাঠায়,” বলেন পুলিশ কর্মকর্তা।
জাকিরকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলেও তিনি জানান।
মেয়েটির মা’র অভিযোগ, তাদের নানাভাবে হুমকি-ধামকি দিচ্ছে ধর্ষকের প্রভাবশালী ওই পরিবার। তাই তারা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।
ডাউয়াবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান বাবলা রহমান ধর্ষকের শাস্তি দাবি করে বলেন, “এ ব্যাপারে মেয়েটির বাবাকে আইনি সহায়তা নিতে বলেছি।”