somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

গালি খেতে আপত্তি নাই। সত্য কথা বলবই। রিপোষ্ট দিতে পারিনা তাই কপি পেষ্ট মারলাম। ১ম বার ক্ষমা করবেন।

২৬ শে জানুয়ারি, ২০১২ বিকাল ৫:২১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

1971 সালে বাংলাদেশে যুদ্ধ হয়েছিল সত্য। যুদ্ধে অনেকে অংশগ্রহণ করেছিল তাও সত্য। তাদেরই বলা হয় মুক্তিযোদ্ধা। মুক্তিযুদ্ধের পর অনেক মুক্তিযোদ্ধাদেরকে তাদের যোগ্যতানুযায়ী চাকরি দেয়া হয়েছিল। আরা যারা চাকরি পাননি তাদেরকে এখনও ভাতা পাচ্ছেন। বতর্মানে সরকারী চাকরিজীবিরাও ভাতা পাচ্ছেন। থাক সেসব কথা। আমার প্রশ্ন শুধু কি তারাই ত্যাগ স্বীকার করেছেন? আর দেশের সমগ্র জনগণ কি খুব সুখে ছিল কতটা আরামে ছিল? যে নারী সম্ভ্রম হারিয়েছেন, সন্তান হারিয়েছেন, যাদের ঘরবাড়ি আগুনে পুড়িয়ে দেয়া হয়েছিল তারা কি কষ্ট পাননি? স্বাধীনতার 40 বছর পরও আমরা দেখছি সব জায়গাতেই মুক্তিযোদ্ধাদের অগ্রাধিকার। 40 বছর আগে আমরা পশ্চিম পাকিস্তানীদের দ্বারা বৈষম্যের স্বীকার হয়েছি। আজ স্বাধীন দেশে নিজের স্বজাতি দ্বারাই বৈষম্যের স্বীকার হচ্ছি ঠিক যেন নিজের বাসায় নিজের বিছানায় নিজের স্বামী কর্তৃক ধর্ষিত আমরা। কিভাবে হচ্ছি? এখানে আমি শুধুমাত্র কয়েকটা উল্লেখ করব।

1। বতর্মানে সরকারী চাকরীতে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান, নাতিপুতি (চৌদ্দগুষ্টি) বয়স সীমা 32 বছর। অন্যদের বেলায় 30 বছর।

2। সরকারী চাকরীতে তাদের কোটা 30 শতাংশ। বাস্তবে নিয়োগ দেয়া হচ্ছে অর্দ্ধেকের বেশি।

3। তাদের জন্য বিশেষভাবে চাকরির বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হয়। যেখানে অন্যান্যরা দরখাস্ত করারই সুযোগ পাননা। কেন তারা কি গরু ছাগলের মত আলাদা কোন জাতের প্রাণী? নাকি আমাদের জন্মই আজন্ম পাপ?

1971 সালে আমাদের কারো জন্ম হয়নি। আমাদের কারো বাবার বয়স ছিল হয়তবা 5-7 বছর। ঐ বয়সে তো তার যুদ্ধে অংশগ্রহণ করা সম্ভব ছিল না। আমার দাদা, নানা, সরাসরি মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেননি। কিন্তু তাই বলে কি যুদ্ধে তার কোন ক্ষয়ক্ষতি হয়নি? এমতাবস্থায় দেখা যাচ্ছে যে, যাদের বাবা, নানা, দাদার মুক্তিযোদ্ধার সনদ আছে চাকরিতে তাদের অগ্রাধিকার দেয়া হচ্ছে। কিন্তু সত্য কথা হচ্ছে তাদের কোটা পূরণ করতে গিয়ে অনেক সময়ই যোগ্যতা সম্পন্ন, মেধাবী প্রার্থীরা চাকরী কিংবা কোন ভাল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়ার সুযোগ পায়না। এক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে যে বঞ্চিত হচ্ছে মেধাবীরা, সুযোগ পাচ্ছে তrকালীন সার্টিফিকেটধারীরা। কিন্তু সত্য কথাটা কেউ উপলব্ধি করেনা যে বাবা দাদার সনদের কারণে যে চাকরি কিংবা পড়ার সুযোগ পাচ্ছে তার যোগ্যতা বা মেধা কতটুকু? যদি সে নূন্যতম মেধাবী হয়েই থাকে তবে তার সনদ কেন? সে আসুক অন্য দশজন প্রার্থীর সাথে প্রতিযোগীতা করে দেখি কেমন চাকরি পায় (এসব কোটা সুবিধা গ্রহণকারীদের কি লজ্জাও করেনা সরকারী যাকাত গ্রহণ করতে? দুই হাত পেতে করুণা ভিক্ষা করতে?)

যাদেরকে বাবার যোগ্যতার কারণে চাকরি দেয়া হয় তার নিজের যোগ্যতা কতটুকু? তাকে যে সরকারের বিভিন্ন গুরুত্বর্পূণ বিভাগে দেয়া হচ্ছে সে কতটুকু যোগ্য? এভাবে যদি মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তান নাতি নাতনীদের নিয়োগ দেয়া হয় তাহলে আমরা কোথায় যাব? এই বৈষম্য চলতে থাকলে দেশ একদিন অচল হয়ে যাবে। কারণ দেশ পরিচালনার জন্য প্রয়োজন সঠিক মেধা ও যোগ্যতা। কারো পূবর্পুরুষের সনদের অগ্রাধিকার নয়। এই দেশে শুধুমাত্র মুক্তিযোদ্ধা, তার সন্তান, নাতিপুতিরাই কি দেশপ্রেমিক, শুধু কি তারাই এদেশের সন্তান? আমরা তাহলে কি? আমরা যদি এদেশের সন্তানই হতাম তাহলে তাদের সাথে আমাদের এত বৈষম্য থাকবে কেন?

আমরা জানি, ভালবাসার কোন প্রতিদান হয়না। প্রতিদানের আশা না করে ভালবাসতে হয়। তাহলে 1971 সালে যে মুক্তিযোদ্ধারা মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিল তারা দেশকে ভালবেসেই করেছিল। তাহলে পরাধীন দেশটাকে তারা ভালবেসেছিল? স্বাধীন দেশকে নয়। যদি তারা ভালই বাসতো তারা কোন ভাতা, কোন কোটা, কোন বিশেষ সুবিধা (যেটা অন্য কোন নাগরিক পায়না) গ্রহণ করতে পারতনা। তারা নি:র্স্বাথভাবে দেশকে ভালবাসেনি, তাদেরও স্বার্থ্ ছিল না থাকলেও এখনতো সুবিধা ভোগ করছেন তাহলে তাদের দেশপ্রেম কতটুকু?

যুদ্ধের সময় আমাদের যাদের জন্ম হয়নি, আমাদের বাবাও যারা জন্মগ্রহণ করেননি বা ছোট ছিলেন আমাদের কি অপরাধ? আমরা কেন বঞ্চিত হচ্ছি? কেন মুক্তিযোদ্ধা সনদের কারণে চাকরির ইন্টারভিউতে লিখিত পরীক্ষায় 10 নম্বর যোগ করা হয়?

আজ আমরা মুক্তিযোদ্ধার পরের প্রজন্ম। মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের বলছি আসুন তো পূর্বসূরীদের সনদ ছাড়া মেধার প্রতিযোগীতায় উর্ত্তীণ হয়ে আমাদের সাথে প্রতিযোগীতা করতে। দেখি কে সফল হয়।

নাকি আমাদেরকে আবার যুদ্ধে নামতে হবে মুক্তিযোদ্ধাদের হাত থেকে দেশ স্বাধীন করতে? ব্যান্ডতারকা মাকসুদুল হক সত্যিই বলেছিলেন,

``তোরা সারা বাংলায় খবর দিয়ে দে
তোরা দেয়ালে দেয়ালে চিকা মেরে দে,
মোদের আবারও যুদ্ধে যেতে হবে‘


যারা আমার সাথে একমত আওয়াজ দিন এই ভিক্ষাবৃত্তির বিপক্ষে। কারণ দেশটা আমাদের সবার। আমাদের পরবর্তী প্রজন্মকে দিতে হবে সত্যিকারের স্বাধীন দেশ। আমরা ভিক্ষুক জাতি এই অপবাদ আমাদেরকেই ঘুচাতে হবে।আর এখনই সময়।
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে জানুয়ারি, ২০১২ রাত ১:০১
১৫টি মন্তব্য ১৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯




মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজীব নূর কোথায়?

লিখেছেন অধীতি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪

আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:০২



ইউটিউব হুজুর বললেন, মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে। তখন নাকি নিজ যোগ্যতায় ঈমান রক্ষা করতে হয়। আল্লাহ নাকি তখন মুমিনের সহায়তায় এগিয়ে আসেন না। তাই শুনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×