somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পাগলের প্রলাপ

২৯ শে জুন, ২০১২ দুপুর ১২:৩০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

নিজেকে আজকাল বড় অদ্ভুদ মনে হয়। সবার যেটা পচন্দ আমার ক্ষেত্রে তা বিপরীত। অফিসের কলিগদের দেখি মাস শেষে বেতন পেয়ে সবাই দেখি নতুন জামা-কাপড় কিনে আর আমি...! এই জিনিসটাকে কখনো পছন্দ করিনি। আমি কিনি বই অথবা প্রযোজনীয় অন্য কিছু। নিজেকে বদলাতে চেষ্টা করছি কিন্ত স্বভাব বদলাতে পারছিনা। জানিনা এটা আমার কোন ভাল গুন নাকি বদ অভ্যাস। কখনো কোন পোষাক একদম অনুপোযগী হওয়ার আগ পযর্ন্ত আমি সেটা ব্যবহার করি। পুরোপুরি অনুপোযগী হওয়ার পর নতুন পোষাক কিনতে যাই। অবশ্য কিনতে যাই বললে ভুল হয় কিনতে বাধ্য হই। শুনতে অবাক হলেও সত্যি এই পোষাক ক্রয় নিয়ে আমি বাড়িতে বকা খাই। আমার ৮০ বছরের দাদী ও আমাকে পোষাক কেনার জন্য জোর করেন। মাঝে মাঝে তিনি আবার টাকা দিয়ে বলেন কিনে আনার জন্য। তখন উনার কাছে প্রতিঞ্জা করি এইবার অবশ্যই কিনবো কিন্তু সেই কেনা আর হয়ে উঠেনা। প্রতি ঈদে বাড়ি যাবার সময় সবার জন্য কাপড় কিনে নিয়ে যাই। অতি উৎসাহ নিয়ে কাপড় কিনি। সবারটা কেনা শেষ হলে দেখা যায় আমারটা আর কেনা হয় না। ভাবি আগামী ঈদে অবশ্যই কিনবো। সেই ঈদ আর আসেনা। এই নিয়ে মাঝে মাঝে সমাজে নিজেকে বড্ড বেমানান লাগে। কি করবো ভাবতে পারছিন, নিজেকে বদলানো যে কঠিন।

বন্দী থাকাটা আমার স্বভাবের মধ্যে নাই। খুব ছোটবেলা যৌথ পরিবারের সদস্যদের কাছ থেকে বাচাঁর জন্য বিশাল বাড়ি ছেড়ে রেলষ্টেশনে বসে থাকতাম। বাহারী রংয়ের মানুষ দেখে আমার সময় কাটতো। জীবনের কুড়িটা বছর কেটে গেছে প্রকুতির প্রেমে হাবুডুবু খেতে খেতে। আর সেই কুড়ির পরে এল বিপদের ঝুড়ি। চার দেওয়ালের ভিতর এখন আমার বাস। ২৪ ঘন্টার মাঝে নির্ধারিত ৮ ঘন্টা কাটাতে হয় অফিস নামক দানবটার সাথে। বাকী থাকলো ১৬ ঘন্টা। এর মাঝ থেকে আধাঁরে কেটে যায় বাকী অর্ধেকটা। শেষ ৮ ঘন্টা কাটে খাওয়া-দাওয়া, গোসল এবং কম্পিউটারের সাথে। মাঝে মাঝে অসহ্য লাগে। হাফ ছেড়ে বাচার জন্য ছুটে যাই গ্রাম কিংবা নদীর দিকে। ফুসফুস ভর্তী বিশুদ্ধ অক্রিজেন নিয়ে ফিরে আসি পরবর্তী সপ্তাহের জন্য। দিন এগিয়ে যায় বয়স বাড়ে। টের পাই যখন মাথায় হাত দেই। এক পাশে খালি এবং অন্য পাশে সাদা কতিপয় বস্তুর উপস্থিতি আমাকে তেমন একটা ভাবিয়ে তুলেনা। ভাবি এই তো জীবন এগিয়ে যাক।

আমি যে কিছুটা পাগলা টাইপের সেটা মাঝে মাঝে নিজেও উপলব্ধি করতে পারি। যখন মাথায় কোন কিছু ঢুকে তখন তা সাথে সাথে করতে লেগে যাই। তবে আশার কথা হল সেটার স্থায়ীত্ব বেশী দিন হয়না। হাজার চেষ্টা করেও পারিনা সেটাকে ধরে রাখতে। এটাও আমার এক প্রকার সমস্যা বলা যায়। এখন মাথায় চায়নার ভুত খেলা করছে। নেটে কোথাও জানি পড়েছিলাম ফেসবুকের কর্নধার মার্ক জুকারবার্গ চায়নিজ মেয়ে বিয়ে করার আগে চায়নার ভাষা (মান্দারিন ভাষা) শিখে নিয়েছিল। ব্যাস মাথায় ঢুকে গেছে পোঁকা। আমিও শিখবো চায়নার ভাষা। বলে রাখা ভাল এর আগে আমি ইন্দোনেশিয়ান ভাষা ও শিখেছিলাম। তবে সেই ভুতটা মাথায় বেশী দিন না থাকায় সে যাত্রায় বেচে গেছি। জানিনা এই ভূতটা কতদিন থাকবে আমার মাথায় । চায়নিজ ভাষা শিখার আউটপুটটা নিয়ে চিন্তা করি। ভাবি চায়নিজ একটা মেয়ে বিয়ে করবো সুখের সংসার গড়বো আর মাঝে মাঝে..। মাঝে মাঝের জায়গা এসে থেমে যাই । আর যাই হোক আমি সাপ,ব্যাঙ্গ ইত্যাদি খেতে পারবোনা।


আমার চাচা মানুষটা আমার মতোই অদ্ভুদ। পাথর্ক্য শুধু উনি বোর্ড ষ্ট্যান্ড করা স্টুডেন্ট আর আমি কোন রকম ডিপ্নোমা পাস। উনার কাছ থেকে আমি একটা থিওরি ধার করেছি। জানি না এটা কোন সাবজেক্টের থিওরি। ব্যপারটা হল এই রকম যে আমাদের অনেক কিছু অনেক সময় করতে ভাল লাগেনা তারপর ও করতে হয়। ইঞ্জিনিয়ারিং এ কেমেষ্টি কেন দিল এই বিষয়টা নিয়ে আলোচনা সময় তিনি এটা বলেছিলেন। বলাবাহুল্য এই কেমেষ্টিতে পরপর দুইবার ডাব্বা খেয়ে তৃত্বীয় বার সাথে আরো তিনজনকে ডাব্বা খাওয়ার লজ্জা থেকে উদ্ধার করেছিলাম এই আমি। এই ক্ষেত্রে আমাদের পরীক্ষার হলের দায়িত্বরত ম্যাডামের ভুমিকা ছিল অবিষ্মরনীয়। প্রথমবার যখন হলে গিয়ে উনাকে দেখি তখন উনার সাথে মা কিংবা বোনের চরিত্র কল্পনা করেছিলাম। ভূল ভাঙ্গলো প্রশ্নপত্র হাতে পাওয়ার পর। উনাকে নতুন করে আবিষ্কার করলাম জল্লাদের ভুমিকায়। জল্লাদ যে কোন মেয়ে মানুষ ও হতে পারে সেদিনই সেটা প্রথম আবিষ্কার করেছিলাম। যাহোক পরের বার যখন একই সাবজেক্টের পরীক্ষায় উনাকে আবারো দেখি তখন পরীক্ষায় পাস নয় কিভাবে অতি দ্রুত হল থেকে বের হওয়া যায় সেই চিন্তায় বিভর ছিলাম। ঘুম ভাঙ্গলো ম্যাডামের কথায়। উনি হিসাব করে দেখিয়ে দিলেন ৬ মাস সমান ১৮০ দিন। আর সেই ১৮০ দিনে যদি ৯০টা না হয় ৪৫ টা প্রশ্নের উত্তর শিখতে পারতাম তবে আমার আজকের এই দশার উল্টোরুপ হত। ব্যাপারটা মনে ধরে গেল। পরের ৬ মাসে ঠিক পরিকল্পনা মত এগুলাম। ফলাফল যা হবার তাই হল। এই ঘটনাটা আমি প্রায় সবাইকে বলি। উদ্দেশ্য সময়টাকে সঠিকভাবে কাজে লাগানো। আমি জানি কেউ যদি তার নিধারির্ত সময়ের ১ পারসেন্ট ও কাজে লাগায় তবে সফলতা নিশ্চিত যদিও আমি সেটা আর পারিনি।
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=আকাশে তাকিয়ে ডাকি আল্লাহকে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:০১


জীবনে দুঃখ... আসলে নেমে
শান্তি গেলে থেমে;
আমি বারান্দায় দাঁড়িয়ে হই উর্ধ্বমুখী,
আল্লাহকে বলি সব খুলে, কমে যায় কষ্টের ঝুঁকি।

আমি আল্লাহকে বলি আকাশে চেয়ে,
জীবন নাজেহাল প্রভু দুনিয়ায় কিঞ্চিত কষ্ট পেয়ে;
দূর করে দাও সব... ...বাকিটুকু পড়ুন

"ছাত্র-জনতার বেপ্লবের" ১৮ মাস পরে, আপনার ভাবনাচিন্তা ঠিক আগের মতোই আছে?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:৫৭



২০২৪ সালের পহেলা জুলাই "ছাত্র-জনতার বেপ্লব শুরু হয়, "৩৬শে জুলাই" উহা বাংলাদেশে "নতুন বাংলাদেশ" আনে; তখন আপনি ইহাকে ব্যাখ্যা করেছেন, ইহার উপর পোষ্ট লিখেছেন, কমেন্ট করেছেন; আপনার... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের হাদিকে গুলি করা, আর আওয়ামী শুয়োরদের উল্লাস। আমাদের ভুল কোথায়?

লিখেছেন তানভির জুমার, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৫৩



৩০ জনের একটা হিটলিস্ট দেখলাম। সেখানে আমার ও আমার স্নেহের-পরিচিত অনেকের নাম আছে। খুব বিশ্বাস করেছি তা না, আবার খুব অবিশ্বাস করারও সুযোগ নাই। এটাই আমার প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

এ যুগের বুদ্ধিজীবীরা !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৪০


ডিসেম্বর মাসের চৌদ্দ তারিখ বাংলাদেশে বুদ্ধিজীবী দিবস পালন করা হয়। পাকিস্তান মিলিটারী ও তাদের সহযোগীরা মিলে ঘর থেকে ডেকে নিয়ে হত্যা করেন লেখক, ডাক্তার, চিকিৎসক সহ নানান পেশার বাংলাদেশপন্থী বুদ্ধিজীবীদের!... ...বাকিটুকু পড়ুন

টাঙ্গাইল শাড়িঃ অবশেষে মিললো ইউনস্কর স্বীকৃতি

লিখেছেন কিরকুট, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:৫৭



চারিদিকে যে পরিমান দুঃসংবাদ ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে এর মধ্যে নতুন এক গৌরবময় অধ্যায়ের সূচনা হলো বাংলাদেশের টাঙ্গাইলের তাতের শাড়ি এর জন্য, ইউনেস্কো এই প্রাচীন হ্যান্ডলুম বুননের শিল্পকে Intangible Cultural... ...বাকিটুকু পড়ুন

×