"আশিটি বছর কেটে গেছে আমি ডাকি নি তোমায় কভু
আমার ক্ষুধার অন্ন তা বলে বন্ধ করো নি কভু।"
এইটাই হইল আসল কথা। ঈশ্বরের অস্তিত্ব নিয়া আপনি যদি নিঃসংশয় হয়ে থাকেন তাইলে এই কথাটা মনে রাইখেন, ঈশ্বর শুধু আস্তিকের একার না। উনি নাস্তিকেরও, উনি সংশয়বাদীদেরও, আপনি যেই ধর্ম অনুসরণ করেন সেই ধর্ম ছাড়া অন্য ধর্মের মানুষগুলারও। আপনি যখন একজন আস্তিক, আপনি যখন ঈশ্বরের অস্তিত্ব নিয়া পুরাপুরি নিঃসংশয়, তখন নিজেকে কি এই প্রশ্ন করছেন যে ঈশ্বর কেন তাঁর অবাধ্য, তাঁর অস্তিত্ব নিয়া প্রশ্নকারীদের সমূলে ধ্বংস করতেছেন না?
ব্লগের নাস্তিকদেরকে বলি, আপনারা চাইলেই রাতারাতি বিপ্লব আনতে পারবেন না। ঈশ্বর বিশ্বাস আসলে শুধুই একটা বিশ্বাস না, এইটা অধিকাংশ মানুষের জীবনযাপনের একটা অবলম্বন। কোন মানুষই স্বীকার করতে চায় না মারা যাওয়ার পরে সব শেষ। তারা বিশ্বাস করতে চায় মৃত্যুর পরে আছে আরো সুন্দরতর এক জীবন। সেই জীবনে ইহলৌকিক জীবনের কোন কষ্টের অস্তিত্ব নাই। পৃথিবীর বেশিরভাগ মানুষ এই বিশ্বাসটাকে অবলম্বন করেই সামনে এগিয়ে যায়।
ঈশ্বর প্রসঙ্গ আসামাত্র যাদের মানসচক্ষে কাবা শরীফ, ক্যাথলিক চার্চ কিংবা কৃষ্ণের মূর্তি ভেসে ওঠে আমি তাদের দলে নাই। আমার কাছে ঈশ্বরের প্রতিনিধি জোব্বা পরা মাওলানা, সোনালী পোশাক মুকুট পরিহিত পোপ কিংবা পৈতা পরিহিত সদব্রাহ্মণ নন। আমি ঈশ্বর খুঁজে পাইও সেইসব মানুষের মাঝে যাঁরা শত প্রতিকূলতার মাঝেও সততা এবং নিষ্ঠার সাথে নিজের দায়িত্ব পালন করে চলেছেন। চুরি করলেই কোটিপতি হওয়া যাবে এই তথ্য জানার পরেও ইনকাম ট্যাক্স অফিসের যেই কেরানী নিম্নমধ্যবিত্ত জীবন যাপন করেন, উনি আমার কাছে ঈশ্বরের একজন সরাসরি প্রতিনিধি। আমার কোন পীর পয়গম্বর দরকার নাই, আশেপাশের হাজার হাজার মানুষের মাঝে থেকেই আমি খুঁজে নিতে পারি ঈশ্বরের প্রতিনিধি।